জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে জাকসু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়। নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম স্বাক্ষর করেন।
নোটিশ অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে। তবে আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য।
জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করবেন। ২১টি আবাসিক হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ডোপ টেস্ট করবেন।
বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে ডোপ টেস্ট
নোটিশে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। এর বাইরে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের জাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা আছে যে মাদকাসক্ত কেউ জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এর পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। এরপর আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করি এবং কেউই এর বিরোধিতা করেনি। তাই কমিশন সব প্রস্তুতি শেষ করে আজকের মধ্যে ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে, প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া নির্বাচনী প্রার্থীদের স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কাছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে নির্ধারিত আটটি ভোটকেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি করেছে আলাদা উত্তেজনা ও প্রত্যাশার পরিবেশ।
নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি
ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। টিএসসি এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ, যাতে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। সকাল থেকেই স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করছে পুলিশ ও প্রশাসন।
ভোটার ও প্রার্থী সংখ্যা
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ৬২ জন ছাত্রী। অন্যদিকে ১৮টি হলে ১৩টি করে মোট ২৩৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। ফলে পুরো নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা ও প্রতিযোগিতা দুই-ই প্রবল।
ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া
ভোটাররা তাদের সুবিধাজনক সময়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট দেবেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ড বা পে-ইন স্লিপ এবং অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, বিশ্ববিদ্যালয় আইডি বা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় প্রমাণ করবেন। এরপর আঙুলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হবে এবং ভোটার তালিকায় সই করার পর ব্যালট প্রদান করা হবে।ভোটাররা গোপন কক্ষে প্রবেশ করে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেবেন। ব্যালট ভাঁজ না করে তা নির্ধারিত বাক্সে ফেলতে হবে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স রাখা হয়েছে। এবারের ব্যালট পেপারের আকারও বড়—ডাকসুর জন্য পাঁচ পৃষ্ঠা এবং হল সংসদের জন্য এক পৃষ্ঠার ব্যালট ব্যবহার করা হচ্ছে।
ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট
প্রথমবারের মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। যারা ব্রেইল পড়তে সক্ষম নন, তারা অন্যের সহযোগিতা নিয়ে ভোট দিতে পারবেন। এই কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
ভোটার ও প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা
সকালের দিকে টিএসসি, কার্জন হলসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। অনেক শিক্ষার্থী জানান, জীবনে প্রথমবার ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে ভিন্ন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ রাত জেগে প্রার্থী বাছাই করেছেন বলে জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে, যা প্রমাণ করে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ে আন্তরিক।
অন্যদিকে ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের জন্য আলাদা কোনো কার্ড তৈরি করা হয়নি, ফলে অনেক কেন্দ্রেই তারা প্রবেশে সমস্যায় পড়ছেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মোস্তাক গাউসুল হক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্যানেল
মোট ১০টির মতো আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শীর্ষ তিন পদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য এবং বামপন্থী সাত সংগঠন সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোটকেন্দ্র ও সময়
এবারই প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কার্জন হল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, টিএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, সিনেট ভবন, উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এই আটটি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত, তবে যারা চারটার মধ্যে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবেন, তারা সবাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও অংশগ্রহণমূলক চেতনার এক গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।
গুপ্ত রাজনীতি আর সন্ত্রাস নয়: উমামা ফাতেমা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে গুপ্ত রাজনীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত করে একটি আধুনিক ও দলীয়করণমুক্ত ক্যাম্পাসে রূপান্তর করবেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
স্ট্যাটাসে উমামা লেখেন, প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, এই ১২ দিনের নির্বাচনী সময়ের বহু আগে থেকেই আমি নিরলসভাবে কাজ করেছি একটি দলীয়করণমুক্ত ও একাডেমিক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। ক্যাম্পাসে আসার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আমি সবসময় লড়াই করেছি। এবারের ডাকসু নির্বাচন ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। প্রচারণা চলাকালে আমি শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও বাস্তব সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করেছি। দিন-রাত পরিশ্রম করে ও পরিকল্পনা সাজিয়ে ইশতেহার তৈরি করেছি এবং তা শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছি। আমি জানি না কতটা সফল হয়েছি, তবে সাধ্যমতো প্রতিটি শিক্ষার্থীর কথা শোনার চেষ্টা করেছি এবং তাদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে নিজের অবস্থান নির্ধারণ করেছি।
নারী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রতিটি হলের কক্ষপর্যায়ে গিয়ে তাদের দাবি জানার চেষ্টা করেছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত দুটি হল পুরোপুরি কভার করা সম্ভব হয়নি, তবুও মেয়েদের চাহিদা ও দাবি তার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত হয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণে শিক্ষার্থীরা দলে দলে অংশ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন উমামা। তিনি বিশ্বাস প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীরা সুবিবেচনার মাধ্যমে এমন প্রার্থীদের ভোট দেবেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয় রাজনীতি, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কবল থেকে মুক্ত করে একটি গতিশীল ও আধুনিক ক্যাম্পাস গড়তে সক্ষম।
শেষে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লিখেছেন, “আমি আপনাদেরই একজন। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি আপনাদের হয়ে কাজ করার সুযোগ পাই।”
-রাফসান
ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা: সেনাবাহিনী
আসন্ন ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের গুজব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে সোমবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা বলেছে, সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা বা ভূমিকা এই নির্বাচনে নেই।
এর আগে সেনাবাহিনী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সোমবার সেনাবাহিনীর সরকারি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে আবারও একই অবস্থান তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বারবার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করছে, যাতে নির্বাচনকেন্দ্রিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয় এবং পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। সেনাবাহিনী এ ধরনের গুজবকে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর এই স্পষ্ট ঘোষণা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং ভোটারদের মাঝে গুজবের প্রভাব নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
-সুত্রঃডেইলি সান
রঙিন প্রচারণায় বর্ণিল ডাকসু—ভোট মঙ্গলবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন–২০২৫-এর ১৩ দিনের প্রাণবন্ত প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে শনিবার রাত ১১টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী এখন অপেক্ষা করছে বহুল প্রতীক্ষিত ভোটগ্রহণের জন্য, যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী মঙ্গলবার। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে জানিয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
এইবারের ডাকসু নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীদের সৃজনশীলতা ও কৌশল ছিল চোখে পড়ার মতো। পোস্টার, লিফলেট ও প্রচারণার ধরনে এসেছে অভিনবত্ব। কোনো প্রার্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ডলার কিংবা টাকার নোটের আদলে লিফলেট ছাপিয়েছেন, কেউ বানিয়েছেন গাছের আকারে হ্যান্ডআউট, আবার কেউ পোস্টারে ব্যবহার করেছেন ওয়াই-ফাই চিহ্ন। পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বৃক্ষাকৃতির প্রচারপত্র বিলিয়েছেন, পরিবহন সম্পাদক প্রার্থী দিয়েছেন বাসের আদলে কার্ড, স্বাস্থ্য সম্পাদক প্রার্থী হৃদয়-আকৃতির পোস্টার বানিয়েছেন। এমনকি ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক প্রার্থী বিতরণ করেছেন বিড়ালের আকৃতির লিফলেট। কেউ বুকমার্কের মতো ডিজাইন করেছেন, কেউ আবার ক্রেডিট কার্ডের মতো প্রচারপত্র তৈরি করেছেন। আইন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী লিগ্যাল নোটিশের মতো পোস্টার ছাপিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রচারণায় সৃজনশীলতার এক রঙিন ছোঁয়া ছিল।
প্রার্থীদের প্রচারণায় প্রাণ সঞ্চার করেছে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনের উন্মুক্ত বিতর্কসভা। গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রার্থীরা সরাসরি শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের ভিশন ও প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন সেখানে।
প্রচারণায় অংশ নিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বামঘরানার বিভিন্ন সংগঠন, ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলন (বিডিএসএ) এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য। প্রতিটি প্যানেলই মিছিল, পথসভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও উন্মুক্ত আলোচনা আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের ইশতেহার উপস্থাপন করেছে।
ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রার্থীরা। আবাসিক হলগুলোতে দরজায় দরজায় প্রচারণার পাশাপাশি বাসে যাতায়াতরত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আলোচনাসভা আয়োজন করেছে কয়েকটি প্যানেল, যেখানে মেয়েদের প্রশ্ন ও সমস্যার উত্তর দিয়েছেন প্রার্থীরা।
ভোটারদের প্রতিক্রিয়া ছিল উৎসাহব্যঞ্জক। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এবারের ডাকসু নির্বাচন নিঃসন্দেহে সবচেয়ে উৎসবমুখর। প্রতিটি প্রচারপত্রই অভিনব ও আলাদা।” বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক শিক্ষার্থী শামসুল আলম জানান, “প্রার্থীরা যখন সরাসরি আমাদের কাছে এসে ক্যাম্পাস উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন ভালো লাগে। আসলে ডাকসু এক ভিন্ন মাত্রার সংযোগ তৈরি করে।”
ভিপি প্রার্থী আবদুল কাদের বলেন, “শিক্ষার্থীরা আমাদের চেনে, তাই নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হয়নি। আমরা আগে থেকেই কাজ করেছি। আমাদের কথা ও কাজে সামঞ্জস্য ছিল বলেই শিক্ষার্থীরা আমাদের বিশ্বাস করে।” তবে তিনি ভোটকেন্দ্রগুলো আবাসিক হলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন, যা অংশগ্রহণে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তানভীর বারি হামিম বলেন, “শিক্ষার্থীরা উষ্ণ অভ্যর্থনা দিচ্ছেন। আমরা অঙ্গীকার করছি নিরাপদ ও সবার জন্য সমান ক্যাম্পাস গড়ে তুলব।” একইভাবে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আল সাদি ভুইয়া জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশের প্রত্যাশায় তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন।
নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক জসীম উদ্দিন জানান, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ব্যালট বাক্স বিতরণসহ সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন দিবসে ক্যাম্পাস বহিরাগতদের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে, বাইরের যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে এবারের প্রচারণা ছিল বর্ণিল, সৃজনশীল ও প্রাণবন্ত। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—সত্যিকারের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে তাদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করবেন।
-এম জামান
চবিতে চতুর্মুখী আন্দোলন, উত্তাল ক্যাম্পাস
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চতুর্মুখী আন্দোলনে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক পক্ষ তাদের দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে শাখা ছাত্রদল এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো বিক্ষোভ করেছে। অন্যদিকে, শিক্ষক হেনস্তা ও নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদেও হয়েছে বিক্ষোভ।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন।
প্রশাসনকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়ে পদত্যাগের দাবি ছাত্রদলের
ছাত্রদল আবারও প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, রেজিস্ট্রার এবং প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলে পদত্যাগ দাবি করে। ছাত্রদল নেতারা বলেন, প্রশাসনকে তার ব্যর্থতার জন্য ‘লাল কার্ড’ দেখানো হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে মশাল মিছিল করেছিল শাখা ছাত্রদল।
প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
এদিকে, রোববার দুপুরে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বামপন্থী কিছু সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: আহতদের মানসম্মত চিকিৎসা, শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা, প্রকৃত অপরাধীদের বিচার, এবং প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) কলা ঝুপড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই ৭ দফা দাবি জানিয়েছিল।
শিক্ষক হেনস্তা ও স্লাট শেমিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কাননকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। তারা এ ঘটনার যথোপযুক্ত বিচার দাবি করেছে। এই ঘটনা ঘটেছিল যখন বামপন্থী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ নামকরণ করেছিল।
একই দিন দুপুর ১টার দিকে ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের স্লাট শেমিংয়ের প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে নারী শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানায়।
ভিপি পদে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী আবিদুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সামনে রেখে পরিচালিত এক জরিপে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ‘বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমি’ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘বেসরকারি’ এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই জরিপে ২৪০ জন ইচ্ছুক ভোটার অংশ নিয়েছিলেন।
জরিপে আবিদুল ইসলাম খান ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) আব্দুল কাদের ১৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা ১২ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় এবং শিবিরের মোঃ আবু সাদিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন।
আগামী মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টায় শেষ হচ্ছে সকল প্রকার প্রচারণা। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরতে ব্যস্ত। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান হাজী মুহম্মদ মহসিন হলে তার প্রচারণা শুরু করেন। তিনি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নারী হেনস্তা রোধে বিশেষ সেল গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সম্ভাব্য ষড়যন্ত্র নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ এখনও বিদ্যমান। কিছু প্রার্থী নারী ভোটারদের জন্য নিরাপদ ভোট পরিবেশ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
ডাকসু নির্বাচন: শেষ দিনের প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থী ও সমর্থকরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে এখন উৎসবের আমেজ। ভোটগ্রহণের দুই দিন আগে, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ছিল প্রচারণার শেষ দিন। এ কারণে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন ভোটারদের মন জয় করতে। সবার হাতে হাতে ঘুরছে প্রচারপত্র ও পোস্টার।
রোববার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, মল চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ব্যবসা অনুষদ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এবং হলপাড়াসহ সব জায়গায় এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা সরাসরি ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রচারপত্র ও লিফলেট পৌঁছে দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে তারা দোয়া ও সমর্থন চাইছেন।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোট নেওয়া হবে। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন, যার মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন।
রাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করল ছাত্রদল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এই প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শেখ নূর উদ্দিন আবীর (ভিপি)। এছাড়া, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়বেন নাফিউল ইসলাম জীবন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন জাহিন বিশ্বাস এষা।
রবিবার (৭ আগস্ট) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান এই প্যানেল ঘোষণা করেন।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রদল এই প্যানেল ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে, তারা ১৭টি হল সংসদের জন্যও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল চূড়ান্ত করেছে।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আছেন, তারা হলেন:
ক্রীড়া সম্পাদক: নার্গিস খাতুন
সাংস্কৃতিক সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল কাফী
মহিলা বিষয়ক সম্পাদক: স্বপ্না আক্তার
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক: গাজী ফেরদৌস হাসান
মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক: রাফায়েতুল ইসলাম রাবিত
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক: মারুফ হোসেন
বিতর্ক ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক: মাসুম বিল্লাহ
পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক: এআর রাফি খান
সদস্য: মিনারুল ইসলাম মেঘ, সাইদ হাসান ইবনে রুহুল, মাহবুব মোর্শেদ ইল্লিন, মো. আশরাফুল ইসলাম।
প্যানেল ঘোষণার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন, জানুন ইশতেহারের আটটি অঙ্গীকার
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ২০২৫। এ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত সাদি-বৈশাখী-সাজ্জাদ-ইকরা পরিষদ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভের পাশে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার উন্মোচন করেন। তারা বলেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচন কেবল নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া নয়, বরং শিক্ষার্থীদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার নির্বাচনী প্রত্যাশা
প্রার্থীরা জানান, ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। তারা প্রতিশ্রুতি দেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন এবং শিক্ষাঙ্গনকে গণতান্ত্রিক ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে রূপান্তরিত করাই হবে তাদের মূল লক্ষ্য।
ইশতেহারের আটটি অঙ্গীকার
প্রকাশিত ইশতেহারে শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়ন এবং শিক্ষাঙ্গনের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য আটটি মূল অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়:
- আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ও গবেষণা: আধুনিক পাঠ্যক্রম, আন্তর্জাতিক জার্নাল অ্যাক্সেস, এবং একাডেমিক সহযোগিতা বাড়ানো হবে।
- শিক্ষাবান্ধব ও নিরাপদ ক্যাম্পাস: সহিংসতা ও দমনমুক্ত পরিবেশে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে মত প্রকাশ করতে পারবেন।
- পরিকল্পিত আবাসন ও মানসম্পন্ন খাবার: হলের আবাসন সংকট নিরসন ও ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
- নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ: যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর নীতিমালা, সিসিটিভি, নিরাপত্তা টহল এবং হেল্পলাইন চালু করা হবে।
- স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ: বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রকে আধুনিকায়ন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ এবং জরুরি সেবা সহজলভ্য করা হবে।
- সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা: শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত বাস, সাশ্রয়ী ভাড়া এবং রুট সম্প্রসারণ করা হবে।
- ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার: শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও সৃজনশীলতার বিকাশে নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক উৎসব ও কর্মশালা আয়োজন করা হবে।
- পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ: ক্যাম্পাসে সবুজায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পরিবেশ রক্ষায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হবে।
প্রার্থীরা বলেন, এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শুধু দেশের ভেতরেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও একটি আধুনিক ও শিক্ষার্থী-কল্যাণমুখী শিক্ষাঙ্গন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তারা জোর দিয়ে বলেন, এ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের নিজস্ব ভবিষ্যৎ নির্মাণের সুযোগ এনে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন পর এ ধরনের ইশতেহার শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। তাদের প্রত্যাশা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে রূপ দেবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও সামাজিক পরিবেশে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
পাঠকের মতামত:
- যে ভোট রাতেই করা যায়, সেটা দিনে টেনে রাখা কেন?- ফারুকী
- মহাবিশ্বে নতুন দৈত্য কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান
- বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ
- গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- জাতিসংঘ ক্ষুব্ধ, স্পেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি—গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞ তীব্রতর
- পাকিস্তান–চীন যৌথ অনুসন্ধানে নতুন দিগন্ত
- রজনীকান্ত–কমল হাসান আবারও একসঙ্গে বড় পর্দায়
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- ভারত-নেপাল সীমান্তে সতর্কতা জারি
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- ভারতে ১২০০ টন ইলিশ পাঠাচ্ছে সরকার
- স্ত্রীর কাছে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি চাইলেন শরিফ ওসমান বিন হাদী, পেলেন শর্ত
- অনুমোদনের অপেক্ষায় রাশিয়ার ক্যান্সার ভ্যাকসিন
- নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ
- খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাম ভাঙিয়ে ১৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজি
- আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা’ মডেল? পুত্র জয় ও কন্যা পুতুলের দিকেই ইঙ্গিত
- নুরের শর্ট টাইম মেমোরি লস: ঢামেক পরিচালকের মন্তব্যে কাটল ধোঁয়াশা
- ডিএসই’র বাজার প্রতিবেদন: এক নজরে আজকের লেনদেন
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ইসরায়েলে বাসে হামলা: হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, চলছে ব্যাপক অভিযান
- সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় ঠেকানো যাবে না: রুমিন ফারহানা
- সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খান গ্রেপ্তার
- বাণিজ্যযুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ’, তবে চ্যালেঞ্জ আছে ৫টি
- দুর্গাপূজা নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- “একদিনও মাথা নত করেননি”-খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফখরুল
- তারেক রহমানের নেতৃত্বে টেকসই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব: মির্জা ফখরুল
- যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে এই শাবানা মাহমুদ
- ‘প্রতিযোগিতা বাড়িয়েই উন্নত হবে সেবা’—উপদেষ্টা এস কে বশির
- ইউএস ওপেনে নতুন সম্রাটের দাপট: আলকারাজের দ্বিতীয় শিরোপা
- বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের রঙিন রাত: স্পেনের দাপট, জার্মানির জয়, ডিপাইয়ের ইতিহাস
- গুপ্ত রাজনীতি আর সন্ত্রাস নয়: উমামা ফাতেমা
- ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্টের চেষ্টা: সেনাবাহিনী
- কক্সবাজার সৈকতে ক্রিকেটার মুশফিকুরের ভাতিজার মর্মান্তিক মৃত্যু
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- হাঁটার জাদু: সপ্তাহে পাঁচ দিনেই দূরে রাখুন হৃদরোগ ও চাপ
- রাশিয়ার নজিরবিহীন হামলার পর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
- কপ-৩০ ঘিরে ব্রাজিলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার অঙ্গীকার বাংলাদেশের
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথে নতুন রূপরেখা চূড়ান্ত
- রঙিন প্রচারণায় বর্ণিল ডাকসু—ভোট মঙ্গলবার
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি চোরে চোরে মাসতুতো ভাই: সারজিস আলম
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
- হামাসকে আত্মসমর্পণের আহ্বান ইসরায়েলের
- হোন্ডা-গুন্ডার রাজনীতি আর চলবে না: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসন ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা
- চার দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে গ্রাহক
- সুস্থ ফুসফুসের জন্য যে ৫ খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি
- চবিতে চতুর্মুখী আন্দোলন, উত্তাল ক্যাম্পাস
- শান্তির পুরস্কার চাইছেন, অথচ ঝামেলা পাকাচ্ছেন’ সালমানের খোঁচা ট্রাম্পকে
- যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ভ্যালু, ভলিউম ও ট্রেডে শীর্ষ ২০ কোম্পানি
- ডিএসই–৩০ সূচকের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর লেনদেনের চিত্র
- ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০২৪ সালের নগদ লভ্যাংশ বিতরণ সম্পন্ন
- শেয়ারবাজারে ফিরল স্বস্তি, শীর্ষে থাকা কোম্পানির তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- নোয়াখালীর সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুরের অবৈধ সম্পদের পাহাড়
- “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
- দেড় বছর পর ঢাকায় স্থায়ী রাষ্ট্রদূত পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ০২ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আজকের লেনদেন: বাজারের সামগ্রিক বিশ্লেষণ
- বাংলাদেশি ওষুধের সাফল্য: যুক্তরাজ্যে রেনেটার নতুন পদচারণা
- স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর আজ থেকে