তরুণরা হবে দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশের পথপ্রদর্শক: আসিফ মাহমুদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১২ ১৬:৪৯:৪৬
তরুণরা হবে দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশের পথপ্রদর্শক: আসিফ মাহমুদ
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব

স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে প্রযুক্তিনির্ভর ও উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে তরুণরাই নতুন বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি হবেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশই ৩৫ বছরের নিচে। এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীই দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই তাদের প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানে এগিয়ে এসে দেশের উন্নয়নের নেতৃত্ব নিতে হবে।

উপদেষ্টা জানান, সরকার ইতোমধ্যে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম এবং ইন্টারনেট খরচ কমানোর মতো আধুনিক প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি ই-স্পোর্টসকেও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ৭৪ লাখের বেশি যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেছেন এবং বিভিন্ন ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে ১১ লাখেরও বেশি যুবক ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঋণ পেয়েছেন। এছাড়া ২৪ লাখের বেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক আত্মকর্মসংস্থানে যুক্ত হয়েছেন।

তরুণদের যুব নীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আগামী অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ইয়ুথ সামিটের আয়োজন করা হবে। একই সঙ্গে দেশের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিসি কম্পিটিশনের আয়োজনের কথা জানানো হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৬ জন কৃতিত্বপূর্ণ যুব ও যুব সংগঠককে জাতীয় যুব পুরস্কার প্রদান করা হয়।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যেমন তরুণরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত করেছে, তেমনি তারা দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথপ্রদর্শকও হবেন।’

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ও রেলপথ মন্ত্রণালয়) শেখ মইনউদ্দিন এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. গাজী সাইফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

/আশিক


‘বেআইনি নির্দেশনা দেব না, কোনো দলের পক্ষেও কাজ নয়’: সিইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৭:১৭:২০
‘বেআইনি নির্দেশনা দেব না, কোনো দলের পক্ষেও কাজ নয়’: সিইসি
ছবি: সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কোনো ধরনের বেআইনি বা অন্যায় নির্দেশনা দেবেন না। একইসঙ্গে তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও কোনো বিশেষ দলের পক্ষে কাজ না করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এই মন্তব্য করেন।

‘অর্ধেক ভরা পানি দেখি’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আমি পরিবারের প্রধানের জায়গায় থেকে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করি।” তিনি বাংলাদেশের মতো জায়গায় কাজ করার চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে বলেন, “আমরা অনেক দেখা, অদেখা বহু চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। আমি পজিশন মানুষ। গ্লাসে আমি সব সময় অর্ধেক ভরা পানি দেখি।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের ওপর আস্থা আছে বলেই প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন ঐতিহাসিক নির্বাচন করব। আমরা অনুরাগ, বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, আইন মেনে কাজ করব। আমরা অন্যায় নির্দেশনা দেব না। বেআইনি নির্দেশনা, কারো পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেব না। সঠিক কাজটি সঠিকভাবে করার নির্দেশনা দেব।”

নিরপেক্ষতার শপথ

সিইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কারো পক্ষে কাজ করবেন না। কোনো দলের পক্ষে কাজ করবেন না। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষভাবে, বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই কাজ করতে হবে।” তিনি নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য উপস্থিত কর্মকর্তাদের হাত তুলে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে শপথ করার আহ্বান জানান। কর্মকর্তারা সিইসির নির্দেশনা অনুসারে হাত তুলে শপথ গ্রহণ করেন।


চলতি মাসে তৃতীয়বার: দেশে ফের ভূমিকম্প

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৭:০৯:৪৫
চলতি মাসে তৃতীয়বার: দেশে ফের ভূমিকম্প
ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেশে আরও একবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৫, আর উৎপত্তিস্থল ছিল যশোরের মনিরামপুর উপজেলায়। বেলা ২টা ২৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। চলতি মাসে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হলো।

চলতি মাসের ভূমিকম্পের চিত্র

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের আসামে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। সাত দিনের মাথায় ২১ সেপ্টেম্বর আবার ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিলেট অঞ্চলে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল সুনামগঞ্জের ছাতক। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪।

ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, “আজ ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এটি নিম্ন মাত্রার ভূমিকম্প।”


আর কখনো পচা নির্বাচন হবে না: ইসি সানাউল্লাহ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৫:২১:১২
আর কখনো পচা নির্বাচন হবে না: ইসি সানাউল্লাহ
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কারণ হিসেবে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ‘পচা নির্বাচন’ এবং ‘নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া’কে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “পক্ষপাতমূলক দুষ্ট নির্বাচনের জন্য ইসি আপনাদের (কর্মকর্তাদের) চাপ দেবে না, নির্বাচনের নামে প্রহসনই জুলাই আন্দোলনের প্রধান কারণ।”

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আর কখনো পচা নির্বাচন করব না’

ইসি সানাউল্লাহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা সময়ের ক্রসরোডে দাঁড়িয়ে আছি। নির্বাচনী ব্যবস্থার ভেঙে পড়া এবং পচা নির্বাচনই জুলাই অভ্যুত্থানের মূলে রয়েছে। চোখ বন্ধ করে দেখুন, জুলাই আন্দোলন কেন হলো, তার প্রধান কারণ পচা নির্বাচন বা নির্বাচনের নামে প্রহসন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আর কখনো পচা নির্বাচন করব না। পক্ষপাতমূলক দুষ্ট নির্বাচনের জন্য ইসি আপনাদের চাপ দেবে না, ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বলবে না।” তিনি সতর্ক করে বলেন, নির্বাচনে যদি কেউ অনিয়ম করে, তাহলে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে, ইসি কোনো দায়িত্ব নেবে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিনা আহমেদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।


“আমরা আপনার পাশে আছি”—নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের বার্তা প্রধান উপদেষ্টাকে 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১০:৫৫:১৭
“আমরা আপনার পাশে আছি”—নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের বার্তা প্রধান উপদেষ্টাকে 
ছবিঃ ডেইলি সান

বিশ্বের নানা দেশের প্রভাবশালী নেতারা শুক্রবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অধ্যাপক ইউনূসের হোটেল স্যুইটে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তাঁরা বাংলাদেশের বর্তমান রূপান্তরের সময়ে সহযোগিতা, দক্ষতা ও পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিজামি গঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের (এনজিআইসি) সহ-সভাপতি ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবার্গা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোর, সার্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরিস তাদিচ, লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এগিলস লেভিটস, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রেউ, বুলগেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট রোজেন প্লেভনেলিয়েভ ও পেতার স্টোইয়ানোভ, ক্রোয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো যোসিপোভিচ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট এমলাদেন ইভানিচ এবং মরিশাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমিনা গুরিব-ফাকিম।

এছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমনওয়েলথের সাবেক মহাসচিব, জর্জিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চার সাবেক সভাপতি, বেশ কয়েকজন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এনজিআইসি সহ-সভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন, রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি।

নেতারা অধ্যাপক ইউনূসের আজীবন দারিদ্র্য দূরীকরণ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। এক নেতা বলেন, “আমরা আপনাকে ও বাংলাদেশের মানুষকে সমর্থন করতে এখানে এসেছি। আমরা পুরোপুরি আপনার পাশে আছি।”

তাঁরা উল্লেখ করেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পরিবর্তনের পথে এগিয়েছে। তবে গত ১৬ বছরের দুর্নীতি, শাসনব্যর্থতা ও অপশাসনের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বৈঠকে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন নেতা বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। “যা কিছু করার প্রয়োজন, আমাদের বলুন। আমরা প্রস্তুত,” বলেন আরেকজন নেতা।

কেরি কেনেডি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক মানবাধিকার অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, “আপনারা মানবাধিকার নিয়ে অসাধারণ অগ্রগতি করেছেন।” জর্জটাউন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মেলান ভারভিয়ার ঘোষণা দেন যে প্রতিষ্ঠানটি শিগগিরই বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানাবে। এনজিআইসি সহ-সভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন বলেন, “আপনার প্রয়োজন হলে আমরা আছি।”

অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বনেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “এটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আপনাদের এভাবে একত্রিত হয়ে সমর্থন দেওয়া আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। আমি সত্যিই আবেগাপ্লুত।” তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে দীর্ঘ এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “দেশটি যেন ১৫ বছর ধরে একটানা ভূমিকম্পের মধ্যে ছিল, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৯।”

তিনি স্বীকার করেন, জনগণের প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি: “মানুষ রাতারাতি পরিবর্তন দেখতে চায়। কিন্তু সীমিত সম্পদ নিয়েও আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করতে হবে। তারা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়।”

অধ্যাপক ইউনূস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সমর্থন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের আপনার পরামর্শ ও নৈতিক সমর্থন প্রয়োজন। আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান হবে।” বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।

-সুত্রঃ ডেইলি সান


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘মাই প্রফেসর’ বললেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১০:১৩:৪৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘মাই প্রফেসর’ বললেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
ছবিঃ বি এস এস

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং তোবগে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) হলে দুই দেশই বড় সুবিধা পাবে। পাশাপাশি দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সরাসরি সংযোগের প্রস্তাব দেন তিনি, যাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়ে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটিকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সুযোগ তৈরি হবে।

অধ্যাপক ইউনূস এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ ও ভুটান উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে।”

বৈঠকে তোবগে আরও বলেন, ভুটান ধর্মীয় পর্যটন বাড়াতে চায় এবং বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ইতিহাসে ভুটানে ধর্ম প্রচারে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ভুটানে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের বিনিয়োগকে স্বাগত জানান এবং ভুটানের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি ভুটানে ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সহায়তা চান।

রোহিঙ্গা ইস্যুতেও দুই নেতা আলোচনা করেন। তোবগে জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভুটান অংশ নেবে।

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন “সঠিক হাতে” রয়েছে। তিনি ইউনূসকে নিজের “রোল মডেল” আখ্যা দিয়ে ডাকেন “মাই প্রফেসর” নামে।

তোবগে সম্প্রতি থিম্পুতে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস ভবনের নকশার প্রশংসা করেন। ভবনটির নকশা ‘বঙ্গোপসাগর ও হিমালয়ের পাদদেশের মিলন’ থিমে তৈরি হয়েছে।

বৈঠকের শেষে অধ্যাপক ইউনূস প্রধানমন্ত্রী তোবগেকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তোবগে জানান, তিনি ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন।

-নাজমুল হোসেন


আজ ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ০৮:৪৪:৩৪
আজ ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট মহানগরীতে বিকল্প সোর্স লাইন নির্মাণকাজের জন্য আজ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ থেকে জানানো হয়েছে, এই কাজ চলায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

বিউবোর পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেটের বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩৩/১১ কেভি শেখঘাট উপকেন্দ্রের বিকল্প সোর্স লাইন নির্মাণকাজের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই

শেখঘাট উপকেন্দ্রের অধীন পুলিশ লাইনস, ভাতালিয়া, লালাদিঘীর পাড় ও নবাব রোড ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলো হলো:

পশ্চিম শেখঘাট, নবীন আবাসিক এলাকা, ভাঙ্গাটিকর, লালাদিঘীর পাড়, ইগুলাল রোড, কুয়ারপাড়, লামাবাজার, বিলপাড়।

লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, ওসমানী মেডিকেল রোড, কাজলশাহ, মুন্সিপাড়া, পুলিশ লাইনস, মধুশহীদ, রিকাবী বাজার।

দরগা মহল্লা, শাপলার গলি, উদ্দ্যম আবাসিক এলাকা, নয়াপাড়া, ভাতালিয়া, দক্ষিণ কাজলশাহ, ইসকন মন্দির, সৌরভ আবাসিক এলাকা, নবাব রোড, বর্ণমালা পয়েন্ট।

মনিপুরী বস্তি, সাগরদিঘীর পাড়, সুরাম আবাসিক এলাকা, প্রেসক্লাব, মীরের ময়দান, কেওয়া পাড়া, ডিজিএফআই অফিস, এসএমপি ও তৎসংলগ্ন এলাকা।

বিউবো জানিয়েছে, নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেলে নির্ধারিত সময়ের আগেও বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হতে পারে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গ্রাহকদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।


‘স্মার্টফোন মারণাস্ত্র’: মেধাহীনতা ও আত্মহত্যার ঝুঁকিতে শিশু-কিশোররা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ০৮:৩৫:০৬
‘স্মার্টফোন মারণাস্ত্র’: মেধাহীনতা ও আত্মহত্যার ঝুঁকিতে শিশু-কিশোররা
ছবি: সংগৃহীত

দেশে শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্মার্টফোন আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর ফলে একদিকে যেমন পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে, তেমনি কমছে মেধাচর্চার প্রবণতাও। ছোটখাটো প্রশ্নেই তারা ‘দেখি গুগল কী বলে’ বলে মা-বাবার ফোন হাতড়ে বেড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এই প্রজন্মের জন্য এক বড় ধরনের বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষাবহির্ভূত কাজে স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। মা-বাবার যথেষ্ট সময় না দেওয়া এবং খেলার মাঠের অভাবে ৮৫ ভাগ শিশু মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে।

ভয়ংকর পরিসংখ্যান ও বাস্তব উদাহরণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ নাজমুল হকের তত্ত্বাবধানে করা এক গবেষণায় উঠে আসে যে, বাংলাদেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত, যার মধ্যে ২৯ শতাংশের মারাত্মক আসক্তি রয়েছে। এই শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা ইউনিসেফ কর্তৃক সুপারিশ করা সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় তিন গুণ।

আসক্তির ধরন: গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৯ শতাংশ শিশু কার্টুন দেখার জন্য, ৪৯ শতাংশ গেম খেলার জন্য এবং ৪৫ শতাংশ ভিডিও বা গান শোনার জন্য ফোন ব্যবহার করে। অথচ পড়াশোনার কাজে ফোন ব্যবহার করে মাত্র ১৪ শতাংশ শিশু।

বিপজ্জনক পরিণতি: গত বছর শেরপুরের ১০ বছরের এক শিশু নতুন মডেলের মোবাইল কেনার লোভে বাবার ট্রাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একা ঢাকায় চলে আসে। অন্যদিকে, মোবাইল ফোন না পাওয়ায় যশোর ও কুষ্টিয়ায় নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। গোপালগঞ্জে দশম শ্রেণির এক ছাত্র ৫৫ হাজার টাকার মোবাইল না পেয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

পারিবারে অশান্তি ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

অভিভাবকরা বলছেন, ফোন ছাড়া তাদের সন্তানরা খায় না, ঘুমায় না বা পড়ালেখায় মনোযোগ দেয় না। ফোন থেকে বিরত থাকতে বললে তারা আক্রমণাত্মক আচরণ করে। ইন্টারনেট না থাকলে বা চার্জ শেষ হলে তারা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বলেন, “গুগল-ইউটিউব নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বইমুখী পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। স্মার্টফোন এখন শিশুদের জন্য ‘মারণাস্ত্রের’ মতো দাঁড়িয়েছে, যা তাদের মানসিক বিকাশ ও সামাজিক আচরণ নষ্ট করছে।”

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবনের প্রথম পাঁচ বছরে মস্তিষ্কের ৯৫ শতাংশ বিকাশ ঘটে। এই সময়ে মোবাইল ব্যবহার করলে সেই বিকাশ ব্যাহত হয়। এর ফলে চোখের সমস্যা, মাথাব্যথা, মনোযোগের ঘাটতি ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ার বিষয়েও গবেষকরা সতর্ক করেছেন।

গবেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে, সন্তানকে সময় দিতে হবে, খেলাধুলার সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং পড়াশোনার জন্য সীমিত ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।


ড. ইউনূসের আহ্বান: পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হোক মধ্যপ্রাচ্য-দক্ষিণ এশিয়ায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ০৮:০৩:৫৮
ড. ইউনূসের আহ্বান: পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হোক মধ্যপ্রাচ্য-দক্ষিণ এশিয়ায়
ছবি: সংগৃহীত

সময়ের সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়া বৈশ্বিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এই আহ্বান জানান। খবর বাসস।

পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চলের গুরুত্ব

ড. ইউনূস বলেন, “শুধু মিয়ানমার নয়, এ বছর আমরা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তেই সংঘাত প্রত্যক্ষ করেছি—ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া কিংবা মধ্যপ্রাচ্যে।” তিনি বলেন, “বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে আমরা বাস করি। বিশ্বের আর কোনো অঞ্চলেই এত সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র এত অল্প দূরত্বে অবস্থান করছে না।” তাই নিরস্ত্রীকরণ ও পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধের গুরুত্ব আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।

তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে আমরা পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের যে অধিকার প্রতিটি দেশের রয়েছে, তার প্রতি সমর্থন জানাই।

নিরাপত্তায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি

ড. ইউনূস বলেন, “একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে, আমাদের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার আগেই, এই বছর, আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) আওতাধীন পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত যৌথ কনভেনশনে যোগদান করেছি।”

তিনি যোগ করেন, “এই যোগদানের মাধ্যমে সর্বোচ্চ মানের পারমাণবিক নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার প্রতি আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।” অধ্যাপক ইউনূস পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধ ও নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।


ডঃ ইউনূসের জাতিসংঘ ভাষণ: নির্বাচন, সংস্কার ও বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ২৩:৪৩:১৬
ডঃ ইউনূসের জাতিসংঘ ভাষণ: নির্বাচন, সংস্কার ও বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের বার্তা

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তিনি স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

রূপান্তরের যাত্রা

ভাষণের শুরুতে ইউনূস উল্লেখ করেন, এক বছর আগে তিনি যখন সাধারণ পরিষদের মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন বাংলাদেশ সদ্য গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তনের পথে পা বাড়িয়েছিল। আজ তিনি বিশ্বকে জানালেন, কীভাবে ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠন করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই সংস্কারের পথে অগ্রসর হচ্ছে দেশ। তার ভাষায়, “সহজ পথ ছিল নির্বাহী আদেশে পরিবর্তন আনা, কিন্তু আমরা বেছে নিয়েছি কঠিন পথ—জনগণের অংশগ্রহণমূলক পথ।”

সংস্কার কমিশন ও গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি

ইউনূস জানান, ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণে কাজ চলছে। লক্ষ্য একটাই—কোনো স্বৈরশাসকের প্রত্যাবর্তন রোধ করা এবং জনগণের রক্ষক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতান্ত্রিক জবাবদিহির আওতায় রাখা। তিনি মনে করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঘোষিত “জুলাই ঘোষণা” নিশ্চিত করেছে যে ভবিষ্যতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

অর্থনৈতিক সংস্কার ও পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনা

অন্তর্বর্তী সরকারের উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রে রয়েছে সুশাসন ও টেকসই উন্নয়ন। বিগত দেড় দশকে জবাবদিহিহীন অবকাঠামো প্রকল্প কীভাবে অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করেছে, তা উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতির মাধ্যমে পাচার হওয়া শত শত কোটি ডলার ফেরত আনার প্রক্রিয়ায় কাজ করছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতা এবং গচ্ছিত দেশগুলোর সদিচ্ছা ব্যতীত এ প্রচেষ্টা সফল হবে না। তিনি উন্নয়নশীল দেশ থেকে অর্থপাচার রোধে কঠোর আন্তর্জাতিক বিধিবিধান প্রণয়নের আহ্বান জানান।

বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ও ডিপফেকের হুমকি

বর্তমান বিশ্বে মিথ্যা সংবাদ, অপপ্রচার এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ডিপফেককে তিনি গুরুতর হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার মতে, এ ধরনের কার্যক্রম সামাজিক আস্থা ও সম্প্রীতি দুর্বল করছে। এজন্য বৈশ্বিক সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন।

রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে ফেলেছে এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন আরও অনিশ্চিত হয়েছে। রাখাইনে বৈষম্যমূলক নীতি ও অধিকারবঞ্চনা অব্যাহত থাকায় রোহিঙ্গারা আরও প্রান্তিক হচ্ছে। ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনোভাবেই বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় সমস্যা নয়; এটি বৈশ্বিক মানবিক সংকট। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, তহবিলের ঘাটতি পূরণে অবিলম্বে এগিয়ে আসতে। নইলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সুরক্ষা ও নিরাপত্তাঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।

গাজা ও বৈশ্বিক ন্যায়বিচার

গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইউনূস। শিশুদের মৃত্যু, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ এবং হাসপাতাল-স্কুল ধ্বংসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটি সবার চোখের সামনেই একটি গণহত্যা।” বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনি পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবি জানান।

তরুণদের জন্য নিরাপদ বিশ্ব গড়ার আহ্বান

ভাষণের শেষ অংশে ইউনূস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের জন্য একটি নিরাপদ, ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যমুক্ত বিশ্ব গড়া শুধু রাষ্ট্রের নয়, সমগ্র মানবজাতির দায়িত্ব।

পাঠকের মতামত:

নিউইয়র্কে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস রাউন্ডটেবিলে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টা

নিউইয়র্কে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস রাউন্ডটেবিলে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি আজ নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ইউএস-বাংলাদেশ এক্সিকিউটিভ... বিস্তারিত