ঢাকায় ১৪৮৩ জুলাই যোদ্ধা ও ৮২ শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা দিল জেলা প্রশাসন

রাজধানী ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৫ ২২:৩১:৩১
ঢাকায় ১৪৮৩ জুলাই যোদ্ধা ও ৮২ শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা দিল জেলা প্রশাসন
জুলাই যোদ্ধাকে সংবর্ধনাকালে। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা জেলার ৮২ শহীদ পরিবার ও এক হাজার ৪৮৩ জন জুলাই যোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেওয়া হয় এই সংবর্ধনা।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার। বিগত ১৬ বছরে দেশে মাফিয়াতন্ত্র গড়ে তোলা হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট শুধু একটি স্মরণ দিবস নয়, এটি গণজাগরণের প্রতিজ্ঞা, ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নতুন করে দাঁড়িয়ে যাওয়ার দিন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলছি—এই জাতি আর কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না।”

অনুষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধারা আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ শহীদ পরিবার ও যোদ্ধাদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করেন।

শহীদ শুভর মা রেনু বলেন, “গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে আমার ছেলের গুলিবিদ্ধ হয়। হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসা হয়নি। পরদিন আমার ছেলে মারা যায়। গোসল করাতেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। আজও কোনো বিচার হয়নি। ছাত্রদের ডাকে সাড়া দেওয়া কি আমার ছেলের অপরাধ ছিল?”

শহীদ আকরাম খান রাব্বির মা বলেন, “আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত মৃত, শুধু নিশ্বাস আছে। সন্তান হারানোর কষ্ট কেউ বোঝে না। আমরা আনন্দ করতে আসিনি, এসেছি বিচার চাইতে। শেখ হাসিনার বিচার চাই—এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে পৃথিবী কেঁপে উঠে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

জেলা প্রশাসক বলেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়ায় প্রশাসনে শূন্যতা দেখা দেয়। সেই শূন্যতা মোকাবিলা করে নাগরিক সেবা চালু রাখা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ, যা আমরা সফলভাবে পার করেছি।”

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ