ডিজিএফআই সাবেক প্রধানের বিপুল সম্পদ জব্দ

২০২৫ জুলাই ০৭ ১৭:১২:২৫
ডিজিএফআই সাবেক প্রধানের বিপুল সম্পদ জব্দ

প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত জোরদার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই প্রেক্ষাপটে, ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব সোমবার (৭ জুলাই) এক গুরুত্বপূর্ণ আদেশে হামিদুল হকের চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা মোট ৪০ কোটি টাকার এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ) জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

দুদকের জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পূবালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় হামিদুল হকের নামে থাকা চারটি পৃথক অ্যাকাউন্টে প্রতি অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি টাকা করে মোট ৪০ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে।

এই বিপুল অঙ্কের অর্থের উৎস ও আইনসঙ্গততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুদকের সহকারী পরিচালক নওশাদ আলী আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, দুদকের কাছে তথ্য রয়েছে যে, হামিদুল হক ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টরা এই অর্থ উত্তোলন, স্থানান্তর কিংবা অন্যের নামে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে, সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও তদন্তের স্বার্থে এই অর্থ অবরুদ্ধ রাখা অত্যাবশ্যক। আদালত সেই যুক্তি আমলে নিয়ে জব্দের আদেশ দেন।

এর আগে, ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল আদালত হামিদুল হক ও তার স্ত্রী নূছরাত জাহান মুক্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারও আগে, ২০২৩ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই হামিদুল হককে ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের শেষদিকে তিনি ডিজিএফআইয়ের শীর্ষ পদে নিয়োগ পান। তবে দায়িত্ব পালনের সময় তার বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ আর্থিক লেনদেন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠতে থাকে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান আরও গতি পায়।

এই জব্দাদেশকে বিশ্লেষকরা রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি দমনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বিশেষত, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক কর্মকর্তাদের আর্থিক কার্যকলাপের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এই ধরনের তদন্ত আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি নজির স্থাপন করতে পারে।

দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামিদুল হকের অন্যান্য সম্পদ ও বিনিয়োগ সম্পর্কেও অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হবে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ