১২০ বার পেছালো সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার শুনানি

২০২৫ আগস্ট ১১ ২১:৪২:৩৫
১২০ বার পেছালো সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার শুনানি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি। পুরোনো ছবি

ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে ২০১২ সালে নির্মমভাবে নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় আদালত এ মামলার তারিখ ১২০ বার পিছিয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইর অতিরিক্ত এসপি মো. আজিজুল হক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এর ফলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান ১৪ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতের দিকে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় গলাকেটে হত্যা হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিরা হলেন বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ (হুমায়ুন কবির), রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু (বারগিরা মিন্টু/মাসুম মিন্টু), কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ।

প্রাথমিকভাবে মামলার তদন্তভার ছিল শেরেবাংলা নগর থানার একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) কাছে। চার দিন পর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করেও রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলার তদন্তভার র‌্যাবের কাছে দেওয়া হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট নির্দেশ দেন, মামলার তদন্তে বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এর পর ১৮ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করে এবং তদন্ত শেষ করার জন্য ছয় মাসের সময় দেয়। তবে এখন পর্যন্ত ওই টাস্কফোর্স তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।

/আশিক


জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলায় আসামিরা ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন

২০২৫ আগস্ট ১১ ১৮:৩৫:১৮
জুলাই গণঅভ্যুত্থান মামলায় আসামিরা ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত পৃথক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ভার্চুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ছিলেন সালমান এফ রহমানসহ মোট ১১ জন আসামি। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামানের আদালতে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে হাজিরা নেওয়া হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাঈন উদ্দিন চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন।

মাঈন উদ্দিন চৌধুরী জানান, উচ্চপ্রোফাইল মামলার আসামিদের হাজিরা থেকে শুরু করে আগামীদিনে ভার্চুয়াল পদ্ধতি চালু থাকবে, তবে রিমান্ড শুনানি সরাসরি আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে। ভার্চুয়াল হাজিরা দেওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, সাদেক খান, এবং নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা আবুল হাসনাত আদনান ও মোস্তফা কামাল।

মামলার বিস্তারিত অনুযায়ী, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, পলক, ইনু, মেনন ও শাজাহান খান যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা চেষ্টা মামলায় হাজিরা দিয়েছেন। কামাল মজুমদার মিরপুর মডেল থানার হত্যা মামলায়, সাদেক খান কলাবাগান থানার চেষ্টা-হত্যা মামলায়, কাজী মনিরুল ইসলাম মনু যাত্রাবাড়ী থানার চেষ্টা-হত্যা মামলায়, আর আদনান ও মোস্তফা কামাল কলাবাগান থানার হত্যা মামলায় হাজিরা দিয়েছেন।

এর আগে চলতি বছর ৭ আগস্ট ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান জঙ্গি ও হাই-প্রোফাইল রাজনৈতিক মামলার আসামিদের কারাগারে রেখে ভার্চুয়াল হাজিরার অনুমতি প্রদান করেন। এই সুবিধার জন্য ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের ২৮ নম্বর কক্ষ ডিজিটালাইজ করা হয়েছে।

/আশিক


আদালতে দীপু মনিকে কঠোর ভাষায় দুষলেন কলিমউল্লাহ

আইন ও পরামর্শ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ২১:৫৭:১৩
আদালতে দীপু মনিকে কঠোর ভাষায় দুষলেন কলিমউল্লাহ
আদালতে বেরোবির সাবেক ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। ছবি: সমকাল

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় শুনানি শেষে এ আদেশ দেন বিচারক।

শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে কলিমউল্লাহ সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেন। আদালতে উপস্থিত থাকাকালে তিনি জানান, ২০১৭ সালে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করেছেন; কোনও অনিয়ম বা দুর্নীতি করেননি।

দুদকের পক্ষে আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমী জানান, মামলায় মোট পাঁচজন আসামি রয়েছে, যারা যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিগ্রস্ত কাজ দিয়েছেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন ও কারাগারে ডিভিশনের আবেদন করেন।

বিচারক মামলার জটিলতাসহ একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। কলিমউল্লাহ জানান, তাঁর ক্যাম্পাসে উপস্থিতি কম ছিল কারণ তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি তাঁর কাছে অন্যায় দাবি করতেন এবং এই কারণে ক্যাম্পাসে যেতেন কম। তিনি বলেন, “আমি সারাদিন কাজ করে রাতে টকশো করতাম।”

বিচারক আরও জানতে চান, তিনি কীভাবে একই সঙ্গে উপাচার্য, বিভাগের চেয়ারম্যান এবং অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করতেন। কলিমউল্লাহ বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর নিয়ন্ত্রণে নয়।

বিচারক নকশা ও উন্নয়ন কাজের বিষয়ে প্রশ্ন করলে কলিমউল্লাহ জানান, অনেক কাজ পূর্ববর্তী উপাচার্যের আমলের, নকশাও আগের। তিনি দাবি করেন, ভর্তি ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করেছেন, এজন্যই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।

আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকায় তদন্ত হবে জানিয়ে বিচারক বলেন, “আপনি জানেন কী করেছেন, কিছুদিন পর দুদক জানবে, তারপর বাকি মানুষও জানবে।”

গ্রেপ্তারের সময় তিনি অপ্রস্তুত ছিলেন এবং দুদক থেকে তলব না হওয়ার বিষয়েও আপত্তি জানান। তবে বিচারক স্পষ্ট করে বলেন, যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদেরকে জেলেই থাকতে হবে।

অবশেষে বিচারক কলিমউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং জানান, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা জেল কর্তৃপক্ষ দেবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে কলিমউল্লাহকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। একই আদালত বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতির মামলায় কলিমউল্লাহসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু, সাবেক উপাচার্য এ কে এম নূর-উন-নবী এবং এম এম হাবিবুর রহমান।

/আশিক


দুর্নীতির অভিযোগে শেখ সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব জব্দ

২০২৫ আগস্ট ০৬ ২১:৪৪:২৭
দুর্নীতির অভিযোগে শেখ সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব জব্দ
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক ও ২৩টি শেয়ার হিসাব অবরুদ্ধ করলো আদালত

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাদের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব ও ২৩টি বিও (শেয়ার) হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৬ আগস্ট) ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ।

দুদকের পক্ষে উপপরিচালক খায়রুল হক আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, শেখ সেলিম ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

অনুসন্ধান চলাকালে দুদকের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা এসব সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। তাই অনুসন্ধান শেষ হওয়ার আগে এসব সম্পদের কোনো অংশ যাতে বিক্রি বা স্থানান্তর না করা যায়, সে কারণে তাদের ব্যাংক ও শেয়ার হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

দুদক মনে করছে, তদন্ত চলাকালে সম্পদ স্থানান্তর হয়ে গেলে তা পুনরুদ্ধার কঠিন হয়ে পড়বে। তাই সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

/আশিক


ভোক্তার অধিকার হরণ? জানুন কীভাবে দায়ের করবেন ভোক্তা-অভিযোগ!

২০২৫ আগস্ট ০৬ ১৮:২৬:৫০
ভোক্তার অধিকার হরণ? জানুন কীভাবে দায়ের করবেন ভোক্তা-অভিযোগ!
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন রয়েছে- ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯। এই আইনের আওতায় প্রতিটি নাগরিক, যিনি একজন সচেতন ভোক্তা হিসেবে বিবেচিত হন বা হতে পারেন, তার ক্রয়কৃত পণ্য বা সেবায় কোনো অনিয়ম, প্রতারণা বা মানহীনতা দেখা দিলে, তিনি সরকারের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

আইনের ধারা ৭৬ (১) অনুযায়ী, সাধারণ নাগরিকরা সরাসরি মহাপরিচালক বা তার নিযুক্ত প্রতিনিধির কাছে ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে পারেন। এর মাধ্যমে সরকার নাগরিকদের অধিকার রক্ষা, প্রতারক ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

কোথায় অভিযোগ দায়ের করা যাবে?

অভিযোগ দায়েরের জন্য দেশে কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে একাধিক দপ্তর নির্ধারিত রয়েছে, যেখানে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। নিচে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অফিসের ঠিকানা ও যোগাযোগের মাধ্যম তুলে ধরা হলো:

কেন্দ্রীয় দপ্তর:মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরটিসিবি ভবন (৮ম তলা), ১ কারওয়ান বাজার, ঢাকাফোন: +৮৮০২ ৮১৮৯৪২৫

জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রটিসিবি ভবন (৯ম তলা), ১ কারওয়ান বাজার, ঢাকাফোন: ০১৭৭৭ ৭৫৩৬৬৮ই-মেইল: [email protected]

বিভাগীয় কার্যালয়সমূহ:

চট্টগ্রাম: বন্দরটিলা, ফোন: +৮৮ ০২৩৩ ৩৩৪১২১২

রাজশাহী: শ্রীরামপুর, ফোন: +৮৮ ০২৫৮ ৮৮০৭৭৪

খুলনা: শিববাড়ী মোড়, ফোন: +৮৮ ০২৪৭ ৭৭২২৩১১

বরিশাল: মহিলা ক্লাব ভবন, ফোন: +৮৮ ০২৪৭ ৮৮৬২০৪২

সিলেট: বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, ফোন: +৮৮ ০২৯৯ ৬৬৪৩৪৫৬

রংপুর: নিউ ইঞ্জিনিয়ার পাড়া, ফোন: +৮৮ ০৫২১-৫৫৬৯১

প্রতিটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসেও অভিযোগ দায়ের করা যায়।

কীভাবে অভিযোগ দায়ের করবেন?

ভোক্তার দায়েরকৃত অভিযোগটি অবশ্যই লিখিত আকারে হতে হবে। তবে বর্তমান প্রযুক্তির যুগে তা শুধু হাতে লেখা বা মুদ্রিত না হয়ে ই-মেইল, ফ্যাক্স, ওয়েবসাইট বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পাঠানো যেতে পারে।

অভিযোগে যেসব বিষয় থাকতে হবে:

  • অভিযোগকারীর পূর্ণ নাম, পিতা-মাতার নাম, পেশা ও বর্তমান ঠিকানা
  • যোগাযোগের তথ্য: ফোন নম্বর, ফ্যাক্স ও ই-মেইল (যদি থাকে)
  • অভিযোগের বিবরণ: কোন পণ্য বা সেবা বিষয়ে অভিযোগ, কী ধরনের সমস্যা হয়েছে
  • প্রমাণস্বরূপ রশিদ বা বিল সংযুক্ত করতে হবে

উল্লেখ্য, ভোক্তা-অধিকারের অধিদপ্তর অনলাইনেও অভিযোগ গ্রহণ করে। এজন্য নিচের লিংকে প্রবেশ করতে হবে:? http://dncrp.com


আদালতে পলক-মনিরুল, জুলাই আন্দোলনের হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়

২০২৫ আগস্ট ০৬ ১২:৪৮:০৪
আদালতে পলক-মনিরুল, জুলাই আন্দোলনের হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়
ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের আলোচিত জুলাই গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত দুইটি নৃশংস ঘটনার তদন্তে নতুন গতি এসেছে। ফরিদ আহমেদ হত্যা এবং আব্দুর রাজ্জাক হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা দুই পৃথক মামলায় সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে, ঢাকার সাবেক পুলিশ উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ এবং যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানকেও একই আদেশের আওতায় আনা হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ এই আদেশ দেন। এর আগে পুলিশ পক্ষ থেকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে পৃথক দুটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। শুনানিকালে আদালতের চারপাশে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে কড়া প্রহরায় আদালতে আনা হয় পলকসহ অন্যান্য আসামিদের। উপস্থিত আত্মীয়দের উদ্দেশ্যে পলক কুশল বিনিময় করেন এবং আদালতে আইনজীবীদের সঙ্গে মামলার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেন। অন্যদিকে, মনিরুল ও বাকি আসামিরা ছিলেন নীরব ও অনুচ্চকণ্ঠ।

ফরিদ আহমেদ হত্যা মামলা:

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর ‘জুলাই গণআন্দোলন’-এর একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন ফরিদ আহমেদ। মামলার এজাহার অনুসারে, মিছিল চলাকালে আসামিদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি এবং পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রায় আট মাস পর, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল যাত্রাবাড়ী থানায় এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের করা হয়।

আব্দুর রাজ্জাক হত্যাচেষ্টা মামলা:

একই দিনে, ৫ আগস্ট, আব্দুর রাজ্জাক নামের অপর এক ব্যক্তি যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে, ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ তিনি নিজেই আদালতে উপস্থিত হয়ে একটি পৃথক মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতার ও আইনি প্রক্রিয়া:

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জুনাইদ আহমেদ পলককে গত বছরের ১৫ আগস্ট, এবং কাজী মনিরুল ইসলাম মনুকে ২১ এপ্রিল গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এছাড়া, পুলিশের সাবেক উপ-কমিশনার শহিদুল্লাহকে ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রমনা এলাকা থেকে আটক করা হয়। আর যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসানকে গ্রেফতার করা হয় ২০২৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর।


‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ কেলেঙ্কারিতে হাইকোর্টে রিট

২০২৫ আগস্ট ০৫ ১০:২১:৫৯
‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ কেলেঙ্কারিতে হাইকোর্টে রিট
ছবি: সংগৃহীত

নতুন একটি গুরুতর অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দেশের অন্যতম বড় অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট লিমিটেড’। শতকোটি টাকা নিয়ে মালিকপক্ষ দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী পাভেল মিয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট আবেদন করেন, যেখানে ফ্লাইট এক্সপার্ট লিমিটেড ও এর পরিচালকদের সমস্ত আর্থিক হিসাব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং এবং পেমেন্ট গেটওয়ের হিসাবসমূহ জব্দ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদনও করা হয়েছে। রিট আবেদনের বিবাদী হিসাবে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পুলিশের বিশেষ শাখার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ঢাকা জেলা প্রশাসক ও পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ঘটনাটি ২ আগস্টে সংবাদমাধ্যমে প্রথম প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়, দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ করেই অফিস বন্ধ করে ফেলে এবং তাদের ওয়েবসাইটও হঠাৎ অচল হয়ে যায়। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির একাধিক এজেন্সি ও বিনিয়োগকারী শত শত কোটি টাকা এতে বিনিয়োগ করেছিলেন, যা বর্তমানে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে আছে। প্রতিষ্ঠানটির সেলস ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, ১ আগস্ট রাতে প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং তারা এখন বিষয়টি আইনগত পর্যায়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, ফ্লাইট এক্সপার্টের সিইও সালমান তার সহকর্মীদের উদ্দেশে একটি অভ্যন্তরীণ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রকাশ করেন যে, তার কয়েকজন সহযোগী সাঈদ, হোসাইন এবং সাকিব তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সালমান দাবি করেন, তারা গত ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পরিকল্পিতভাবে সমস্ত দোষ তাঁর ওপর চাপিয়েছেন এবং তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়নি। ওইদিন সকালে তারা প্রায় ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়ে নিজেদের কাছে রাখে, যার কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

-রফিক


শেখ হাসিনা–কামালের বিচার শুরু, রাজসাক্ষী হিসেবে আজ আদালতে মামুন

আইন ও পরামর্শ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১১:৫০:০৫
শেখ হাসিনা–কামালের বিচার শুরু, রাজসাক্ষী হিসেবে আজ আদালতে মামুন
ছবিঃ সংগৃহীত

আলোচিত জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় আজ দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সোমবার সকালে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করা হয় সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে, যিনি এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন, পরে রাষ্ট্রপক্ষের স্বার্থে সাক্ষ্য দিতে সম্মত হন।

এর আগে রোববার মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং চীফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তারা শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। প্রসিকিউশন বলছে, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ছিল একটি সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় অপারেশন, যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন শেখ হাসিনা।

রোববারের শুনানিতে আহত প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনার শিকার ব্যক্তি খোকন চন্দ্র বর্মনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তিনি ট্রাইব্যুনালে বলেন, “আমি নিজ চোখে দেখেছি কীভাবে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সেনা ও পুলিশ বাহিনী হামলা চালায়। ৫ আগস্ট সকালে শাহবাগে আমার পায়ে গুলি লাগে। সে মুহূর্তে আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি।” তিনি স্পষ্টভাবে শেখ হাসিনাকে এই গণহত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে বিচারের দাবি জানান।

এ মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশব্যাপী পরিচালিত গণআন্দোলন দমন করতে পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয় হত্যাকাণ্ড, গুম, ধর্ষণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ সব ঘটনা। অভিযুক্তদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। অন্যদিকে তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন কারাগারে আটক থাকাকালীন রাষ্ট্রের সাথে চুক্তিতে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে সম্মত হন।

উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন। মামলাটি জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

-রফিক


গণআন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাস উঠে আসছে ট্রাইব্যুনালে

আইন ও পরামর্শ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৩ ১২:০১:২১
গণআন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাস উঠে আসছে ট্রাইব্যুনালে

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ থেকে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর অনুমোদনে এই বিচার রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়, যা বাংলাদেশে একটি ঐতিহাসিক নজির সৃষ্টি করেছে। বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষ বিস্তারিতভাবে অভিযোগপত্র উপস্থাপন করে, যা ট্রাইব্যুনাল কক্ষে উপস্থিত জনগণ এবং টেলিভিশন দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়।

Link:https://www.facebook.com/share/v/16dq8bCvPh/

এই মামলায় প্রধান আসামি শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন অভিযুক্ত। মামুন ইতোমধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হয়েছেন। এই স্বীকারোক্তি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মামলার আলামত হিসেবে তাঁর সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণ ভবিষ্যতের বিচারকে আরও গতিশীল ও সুপ্রমাণিত করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত পাঁচটি গুরুতর অভিযোগের মধ্যে প্রথমটিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যায়িত করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। এই বক্তব্যের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সংগঠিতভাবে নিরীহ আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়, যেখানে দেড় হাজার মানুষ নিহত ও প্রায় ২৫ হাজার আহত হন। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনা ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, যার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি এই আদেশ বাহিনীর মধ্যে প্রেরণ করেন এবং এর ফলে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ ও অনুমোদনের দায়ও এই তিনজনের ওপর বর্তায়। একইভাবে চতুর্থ অভিযোগে রাজধানীর চানখাঁরপুলে আন্দোলনরত ছয়জন নিরস্ত্র যুবককে গুলি করে হত্যার এবং পঞ্চম অভিযোগে আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও মামুন অভিযুক্ত হয়েছেন।

এটি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একমাত্র মামলা নয়। এর আগে ২ জুলাই আদালত অবমাননার একটি মামলায় তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক দণ্ড। এছাড়া শেখ হাসিনা ও আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে গুম-নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় তদন্ত চলছে, যার প্রতিবেদন ২৪ আগস্ট দাখিল করার নির্ধারিত তারিখ রয়েছে। একইসঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ওপর সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আরেকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১২ আগস্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা এই বিচারকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, যা নতুন বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সাধারণ মানুষ এবং যুবসমাজ যে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা নিয়ে রাজপথে নেমেছিল, সেই দাবির প্রতিফলন হতে পারে এই বিচার প্রক্রিয়া। এ বিচারিক ব্যবস্থা শুধু একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর বিষয় নয়, বরং এটি একটি শাসনব্যবস্থা, একনায়কতন্ত্র এবং নিষ্ঠুর দমননীতির দায়ের মুখোমুখি করার ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া।

এই বিচার থেকে রাষ্ট্র ভবিষ্যতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের পথে অগ্রসর হতে পারে কি না, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক মানে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং প্রমাণভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করা গেলে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন যাত্রা শুরু করার আলোকবর্তিকা হয়ে উঠতে পারে।


গুলশান কেলেঙ্কারিতে ছাত্রনেতা গ্রেপ্তার আরও ১

আইন ও পরামর্শ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০১ ১৩:১০:৩৮
গুলশান কেলেঙ্কারিতে ছাত্রনেতা গ্রেপ্তার আরও ১
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মি আহমেদের বাসা থেকে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও ১০ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় আবারও নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত। সর্বশেষ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় অভিযুক্ত জানে আলম অপু দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে এবং মামলার প্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্ত চলছে।

এর আগে ২৬ জুলাই গুলশান থানা পুলিশ একই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই সরাসরি ছাত্রনেতা হিসেবে সক্রিয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত। গ্রেপ্তাররা হলেন— ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. আমিনুল ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ। এদের মধ্যে মুন্না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক, সিয়াম ও সাদাব একই কমিটির সদস্য এবং রিয়াদ সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জুলাই সকালে তারা গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে শাম্মি আহমেদের বাসায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে গিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করেন। তারা হুমকি দেন, টাকা না দিলে সাবেক এমপিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের নামে সামাজিকভাবে অপদস্থ করা হবে, এমনকি পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান। প্রথম দফায় তারা ১০ লাখ টাকা আদায় করেন এবং কিছুদিন পর দ্বিতীয় দফা চাঁদা তুলতে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে।

চাঁদা আদায়ের সেই সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে স্পষ্ট দেখা যায়, দুজন যুবক গেস্ট রুমে বসে টাকার বান্ডিল গ্রহণ করছেন। গুলশান থানার এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ভিডিওটি শাম্মি আহমেদের বাসায় ধারণ করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে রাজনৈতিক ও শিক্ষার্থী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি চালানোর অভিযোগে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছে তথাকথিত ‘বৈষম্যবিরোধী’ সংগঠনগুলো।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, এ চক্রটি কেবল শাম্মি আহমেদের ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সাবেক জনপ্রতিনিধি ও বিত্তশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকেও একই কায়দায় চাঁদা দাবি করত। সংগঠনের পরিচয় ব্যবহার করে জনমনে ভয় ও সামাজিক লজ্জার আশঙ্কা সৃষ্টি করে চাঁদা আদায়ের কৌশলই ছিল তাদের মূল পদ্ধতি।

এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৬ জন গ্রেপ্তার হলেও তদন্তকারীরা বলছেন, এটি একটি বৃহৎ চক্রের অংশ এবং আরও অনেকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তদন্ত শেষে পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে ডিবি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সামাজিক বা রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দাবি আরও জোরালোভাবে সামনে এসেছে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত: