ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানায় গিয়ে বাবার মৃত্যু

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৪ ১০:৫৫:৫৮
ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানায় গিয়ে বাবার মৃত্যু

ফেনী জেলার শর্শদী ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা আলী হোসেন ফাহাদের (২০) গ্রেপ্তারের পর তাকে দেখতে এসে থানার ভেতরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার বাবা আলী আকবরের (৫৫)। ছেলের গ্রেপ্তারের খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে থানায় ছুটে গিয়ে এই মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হন তিনি।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২ জুলাই) রাতে ফেনী মডেল থানা চত্বরে। পরে বাবার আকস্মিক মৃত্যু ও মানবিক পরিস্থিতির বিবেচনায় ফাহাদকে আত্মীয়-স্বজনের জিম্মায় জামিনে মুক্তি দিয়েছে পুলিশ।

আলী হোসেন ফাহাদ শর্শদী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা বিকেলে শর্শদী স্কুলের সামনে থেকে তাকে আটক করে এবং পরে মডেল থানায় হস্তান্তর করে।

ছেলের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ফাহাদের বাবা আলী আকবর তাৎক্ষণিকভাবে থানায় ছুটে যান। ছেলেকে আটক অবস্থায় দেখে তিনি প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে স্ট্রোক করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ফেনী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আলী আকবরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে ফেনী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, “মডেল থানার অনুরোধে আমাদের সহায়তায় ফাহাদকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, “ফাহাদ সরাসরি কোনো মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে তার বাবার আকস্মিক মৃত্যু ও পারিবারিক শোকাবহ পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে শর্তসাপেক্ষে আত্মীয়ের জিম্মায় জামিন দিয়েছি।”

এই ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে গভীর শোক ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সন্দেহভাজন হিসেবে আটক হলেও যথেষ্ট প্রমাণ ও দায়বদ্ধতা ছাড়া একজন তরুণকে গ্রেপ্তার করা কতটা যৌক্তিক, বিশেষ করে তা যদি কোনো পারিবারিক ট্র্যাজেডির সূত্রপাত করে।

এদিকে ছাত্রলীগের স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ ও ‘বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একইসঙ্গে তারা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন, যাতে কোনো রকম হয়রানি বা অনভিপ্রেত পরিস্থিতি ভবিষ্যতে এড়ানো যায়।

এ ঘটনায় পরিবারটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ঘিরে সহানুভূতির ঢল নেমেছে, যেখানে অনেকে দ্রুত বিচার ও পুলিশি প্রক্রিয়ার মানবিক পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ