ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন 'অবিলম্বে পদত্যাগ'

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ০৯:৫৮:২৫
ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন 'অবিলম্বে পদত্যাগ'

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে “অবিলম্বে পদত্যাগ” করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই আহ্বান তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ প্রকাশিত একটি পোস্টের মাধ্যমে সামনে আসে, যেখানে তিনি সরাসরি পাওয়েলকে আক্রমণ করে বলেন “‘টু লেট’, অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত!”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিছক রাজনৈতিক আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়। বরং এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ, এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিতর্কেরই ধারাবাহিকতা। পোস্টের সঙ্গে ট্রাম্প একটি সংবাদ প্রতিবেদনও যুক্ত করেন, যেখানে ফেডারেল হাউজিং ফিনান্স এজেন্সির পরিচালক বিল পল্টে কংগ্রেসের প্রতি জেরোম পাওয়েলের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ফেডের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরের সংস্কার ব্যয় সংক্রান্ত কংগ্রেশনাল শুনানিতে পাওয়েল মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জেরোম পাওয়েলকেই ২০১৭ সালে ফেডারেল রিজার্ভ প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই। তবে তার মেয়াদকালে সুদের হার কমাতে ব্যর্থ হওয়ায় ট্রাম্প বারবার তার সমালোচনা করে এসেছেন। যদিও ফেড মূলত স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, যার নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।

সম্প্রতি একটি অর্থনৈতিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে পাওয়েল ইঙ্গিত দেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি না থাকলে ফেড হয়তো সুদের হার আরও আগেই কমিয়ে দিত। এই বক্তব্য ট্রাম্পপন্থী মহলে ক্ষোভের জন্ম দেয়। একইসঙ্গে পাওয়েলের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক পক্ষপাত’ এবং ‘ভ্রান্ত তথ্য পরিবেশনের’ অভিযোগকে সামনে এনে তার অপসারণের দাবি আরও জোরালো হয়।

তবে জেরোম পাওয়েল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের চাপের মুখে তিনি পদত্যাগ করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ফেডের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব থেকে সরানো যেতে পারে শুধুমাত্র গুরুতর অসদাচরণের ভিত্তিতে এমনকি প্রেসিডেন্টের পক্ষেও তা সরাসরি সম্ভব নয়। ১৯৩৫ সালের একটি সুপ্রিম কোর্টের রায়েও সংস্থাটির স্বাধীনতার বিষয়ে এই সীমারেখা স্পষ্ট করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও মুদ্রানীতিকে ঘিরে আসন্ন নির্বাচনী বছরকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের এই চাপ প্রয়োগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। তবে এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

তবে এটাও সত্য, ফেডের সদর দপ্তরের সংস্কার ব্যয়, আর্থিক স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিল পল্টের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তি যখন প্রকাশ্যে তদন্ত দাবি করেন, তখন সেটি কংগ্রেস ও মিডিয়ার নজর এড়ায় না। এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক চাপের মুখে জেরোম পাওয়েল কীভাবে তার অবস্থান রক্ষা করেন এবং সংস্থার স্বাধীনতা বজায় রাখেন এবং কংগ্রেস এই বিতর্কে কী অবস্থান নেয়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ