ট্রাম্প বনাম মামদানি: নিউ ইয়র্কে উত্তাপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ১৮:১২:৫৪
ট্রাম্প বনাম মামদানি: নিউ ইয়র্কে উত্তাপ

নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রার্থী ডেমোক্র্যাট রাজনীতিক জোহরান মামদানি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি তাকে বিচলিত করতে পারবে না। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তাকে ‘পাগল’ এবং ‘কমিউনিস্ট’ বলে অভিহিত করেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, মামদানি যদি নিউ ইয়র্কে অভিবাসন সংস্থা আইসিই (ICE)-এর কার্যক্রমে বাধা দেন, তবে তাকে গ্রেফতার করে নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে।

এই মন্তব্যের জবাবে মামদানি বলেন, “প্রেসিডেন্ট আমাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন, শুধু এ কারণে যে আমি আমাদের শহরে আইসিই-এর তাণ্ডব থামাতে চাই। আমি কোনও আইন ভাঙিনি। আমি এই ভয়ভীতি মেনে নেব না।” তিনি এ-ও বলেন, এই হুমকি কেবল তার ব্যক্তি নয়, বরং প্রতিটি মানুষকে লক্ষ্য করে যারা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায়। তার মতে, এটা একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা যে ‘যদি তুমি মুখ খোলো, তারা তোমার পেছনে লাগবে’।

নিউ ইয়র্কের বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের প্রতি ট্রাম্পের প্রকাশ্য প্রশংসারও সমালোচনা করেন মামদানি। তার ভাষায়, “ট্রাম্পের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া আশ্চর্য নয় বরং এটা দেখায় কেন এরিক অ্যাডামসের সময় শেষ হওয়া দরকার।” মামদানি মনে করেন, বর্তমান নগর প্রশাসন জনস্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে এবং সময় এসেছে নতুন নেতৃত্বের।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি ১৯৯৮ সালে মাত্র সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। নিউ ইয়র্কে বসবাসরত তরুণ প্রগতিশীলদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা দ্রুত বেড়েছে। অনেকেই তাকে ‘আমেরিকান সমাজতন্ত্রের নতুন মুখ’ বলে উল্লেখ করছেন। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্ক রাজ্যের অ্যাসেম্বলি সদস্য এবং নিউ ইয়র্কে অভিবাসন অধিকার, আবাসন সংকট ও পুলিশি সহিংসতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

নিউ ইয়র্ক সিটি বহুদিন ধরেই ‘স্যাংচুয়ারি সিটি’ হিসেবে পরিচিত, যেখানে অভিবাসীদের সুরক্ষা দিতে আইসিই-এর সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা করা হয় না। মামদানি এই নীতিকে আরও শক্তিশালী করতে চান এবং আইসিই-এর উপস্থিতি সীমিত রাখতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। তার মতে, আইসিই-এর কার্যক্রম বর্বর এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী।

আগামী নভেম্বরের নির্বাচনকে ঘিরে মামদানির প্রার্থিতা ইতিমধ্যেই জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। তরুণ, অভিবাসী ও প্রগতিশীল ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। ট্রাম্পের হুমকি মামদানিকে থামাতে পারেনি, বরং তাকে আরও দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে।

তার ভাষায়, “এই শহর ধনীদের একচেটিয়া নয়। এটি শ্রমজীবী, অভিবাসী ও প্রান্তিক মানুষের শহর। আমি সেই শহরের প্রতিনিধি হতে চাই, যেখানে সবাই নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে।” মামদানি শুধু একটি পদ নয় নিউ ইয়র্কের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও ন্যায়বিচারের মূল্যবোধকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার লড়াইয়ে নেমেছেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ