এবার চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ১৭:০৪:৩৫
এবার চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আগামী ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকার। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত এই বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল ও নিরাপদ করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।

বুধবার (২ জুলাই) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্বে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে (CPA) পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়েছে। সেই কর্তৃত্বের অধীনে কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত অপারেটর নিয়োগ করবে। সরকার এ পর্যায়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ওই দায়িত্ব পালনের জন্য ‘উপযুক্ত’ হিসেবে বিবেচনা করছে।

উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে এনসিটি টার্মিনালে কর্মরত কোনো শ্রমিক বা কর্মচারীর চাকরিতে কোনো ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়বে না। চাকরি ও দায়িত্ব বহাল থাকবে আগের মতোই। বরং প্রয়োজনে বাংলাদেশ নৌবাহিনী অতীতে যেসব অপারেটর এই টার্মিনাল পরিচালনা করেছে, তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সহযোগিতা নিতে পারবে।

সরকারি পর্যায়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, এনসিটির ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অপারেটর নিয়োগের প্রাথমিক আলোচনা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। উপদেষ্টা জানান, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড (Dubai Port World)-এর সঙ্গে এনসিটি পরিচালনা নিয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনা চলছে। তবে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এখনো কোনো ধরনের চুক্তি সম্পাদন হয়নি।

এই বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে এখনো পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে এমন কিছু করার প্রশ্নই আসে না। বর্তমান সরকার কখনোই দেশবিরোধী কোনো চুক্তিতে যাবে না। জনগণকে আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ আশ্বস্ত করছি।”

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিশ্বের উন্নত দেশের বহু সমুদ্রবন্দর আজ ডিপি ওয়ার্ল্ড, AD Ports-এর মতো বৈশ্বিক অপারেটরদের অধীনে চুক্তিভিত্তিকভাবে সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশও একটি চুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য অপারেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মডেল অনুসরণ করতে পারে। তবে মালিকানা ও নীতিগত কর্তৃত্ব থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতেই।

সরকারের ভাষ্যমতে, এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার মূল কারণ হলো—চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কার্যক্রমের দক্ষতা বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক মানের লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করা। যদি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপারেটর নিয়োগ করা যায়, তাহলে পণ্য খালাসের গতি বাড়বে, বড় বড় আন্তর্জাতিক জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে, জাহাজ ভাড়া কমে আসবে এবং নতুন নতুন নৌরুট তৈরি হবে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টিইইউএস (TEUs) কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়। নতুন ব্যবস্থাপনা চালু হলে এই সংখ্যা ছয় হাজারে উন্নীত হতে পারে বলে আশা করছে সরকার। অর্থাৎ বার্ষিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ-ও নিশ্চিত করেন যে, এনসিটির এ পরিবর্তনের ফলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিদ্যমান অন্য কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (যেমন সাইফ পাওয়ারটেক) চুক্তিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। পূর্বের মতোই সব চুক্তি বহাল থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের একটি বাণিজ্যিক হাবে রূপান্তর করতে আমরা ইতোমধ্যে বহুমুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বর্তমান কাঠামোতে শুধু আধুনিক প্রযুক্তি নয়, অপারেটর ব্যবস্থাপনাতেও পরিবর্তন আনা দরকার।”

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ফলে এর কার্যক্রমে সামান্য পরিবর্তনও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

এই বাস্তবতা মাথায় রেখে সরকার বন্দর পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে বলে জানান উপদেষ্টা।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক


শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করল অন্তর্বর্তী সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১৯:২০:২৫
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করল অন্তর্বর্তী সরকার

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে গণমাধ্যমকে কড়া সতর্কতা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ সতর্কবার্তা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার একটি ভাষণ প্রচার করেছে। ওই ভাষণে তিনি মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন, যা গণমাধ্যমে প্রচার করা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং আরও জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তিনি বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি আসামি। আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ অনুসারে, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য, কার্যক্রম বা প্রচারণা প্রচার বা পুনঃপ্রচার করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামি শেখ হাসিনার অডিও বা ভিডিও প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বৈরশাসক কর্তৃক ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়ানোর বক্তব্য প্রচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যে, তারা যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করে। শেখ হাসিনার যেকোনো বক্তব্য বা মন্তব্য প্রচার করা কেবল দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে হুমকি সৃষ্টি করবে না, বরং সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সহিংসতা ও অরাজকতাকে উসকে দিতে পারে।

বিবৃতিতে আরও সতর্ক করা হয়, ‘তার (শেখ হাসিনা) মন্তব্য, বক্তৃতা কিংবা উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার বা পুনঃপ্রচার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি তৈরি করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জনসাধারণকে ভুল পথে পরিচালিত করে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। সুতরাং এ বিষয়ে আইনি নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী যেকোনো গণমাধ্যম বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কঠোর জবাবদিহির আওতায় আসবে।’


সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য সুখবর!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১৩:২৫:৪৩
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য সুখবর!
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে সরকার ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি, ২০২৫’ গঠন করেছে। এ কমিটি সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধার পুনর্বিন্যাসে কাজ করবে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নবগঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন— মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জহির উদ্দিন, এয়ার ভাইস মার্শাল রুসাদ দীন আছাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং চ ছা মং, এয়ার কমডোর জামিল উদ্দিন আহম্মদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিলিয়া শারমিন এবং ক্যাপ্টেন মো. তৌহিদ সাগর। কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিশাদুল ইসলাম খান।

কমিটিকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রস্তাবিত সুপারিশ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা, পারিবারিক পেনশনসহ সামগ্রিক আর্থিক প্রণোদনা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, উৎসব ভাতা প্রভৃতি ভাতা যৌক্তিকীকরণ এবং বেতনক্রমের যে কোনো অসংগতি দূরীকরণে বিস্তারিত সুপারিশ প্রণয়নেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিটি জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫-এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে। প্রয়োজনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য আলাদা সাব-কমিটি গঠন করা যাবে এবং প্রাসঙ্গিক কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির সহায়তাও নেওয়া যাবে।

এছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ দায়িত্ব ও ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে সুপারিশ চূড়ান্ত করার জন্য কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

-শরিফুল


রাজধানীর বাজারে সবজির আগুন, খালি হাতে ফিরছেন অনেকে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১১:৪৩:২৬
রাজধানীর বাজারে সবজির আগুন, খালি হাতে ফিরছেন অনেকে
ছবি: সংগৃহীত

‘কবে শেষবার এত দামে সবজি কিনেছি মনে নেই। এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতারা যেন একই বুলি আওড়ে যাচ্ছেন যা-ই চাই দাম শুরু হচ্ছে কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি।’ রাজধানীর রামপুরা বাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা আলামিনের এই মন্তব্যেই ফুটে উঠছে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির চিত্র।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম নিয়ে ভুক্তভোগী প্রত্যেক ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে না পেরে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য এটি এখন নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।

মুনি আক্তার নামের এক গৃহিণী জানান, ‘আয় সীমিত। সংসারে খরচ সামলানোই কঠিন হয়ে পড়ে। সবজির দাম বাড়ায় আগের মতো আর কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে রান্না চালাতে বাধ্য হয়ে অল্প অল্প করে কিনছি।’

অন্যদিকে বিক্রেতারা দাবি করছেন, আবহাওয়ার প্রভাব এবং টানা বৃষ্টিতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সবজির সরবরাহ কমেছে। রামপুরার ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বলেন, ‘এখন কম উৎপাদনের মৌসুম। এর ওপর অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে জমি প্লাবিত হয়েছে। ফলে সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি।’

বর্তমানে বাজারে আলু, বই কচু ও কাঁচা পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। গ্রীষ্মকালীন ঢ্যাঁড়স-পটোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। বরবটি, বেগুন, উস্তা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল ও কাঁকরোল বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একই সঙ্গে কাঁচামরিচের দামেও নজিরবিহীন উল্লম্ফন ঘটেছে। কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২০০ থেকে ৩২০ টাকার মধ্যে উঠেছে। চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, লাউ ১০০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার ফালি প্রতি কেজি ৪০ টাকায়।

শুধু সবজি নয়, ডিমের বাজারেও লাফিয়ে দাম বেড়েছে। আগে প্রতি ডজন ডিম ১৪০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন দাম দাঁড়িয়েছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। মহল্লার দোকানে হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা দরে। অথচ এক মাস আগেও প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।

ডিম বিক্রেতা বুলু মিয়া জানান, ‘সবজির দাম বেড়ে গেলে মানুষ ডিমের দিকে ঝুঁকেন। চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ কমেছে। তাই দামও বেড়েছে।’

মুরগির বাজারেও একই চিত্র। ব্রয়লার মুরগি এখন প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি। অন্যদিকে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়।

সব মিলিয়ে মৌসুমি প্রভাব ও টানা বৃষ্টিজনিত উৎপাদন হ্রাসের কারণে রাজধানীর বাজারে সবজি, ডিম ও মুরগির দামে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়েছেন এবং প্রতিদিনের বাজার করা হয়ে উঠছে কঠিন এক চ্যালেঞ্জ।

-শরিফুল


জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলনের উদ্যোগে ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২২ ১১:৩৩:৪৫
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলনের উদ্যোগে ইউনূস
ছবিঃ সংগৃহীত

মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ। সাক্ষাৎকালে তিনি ড. ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সংকটকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগ ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যান্ড্রুজ মনে করিয়ে দেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদফতরে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ যেমন মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের আশা টিকিয়ে রাখতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্ববাসী কৃতজ্ঞ।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে আশা প্রকাশ করেন যে জাতিসংঘের আসন্ন সম্মেলন দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের একটি সুস্পষ্ট সমাধানের পথ তৈরি করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশে আশ্রিত শরণার্থীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক সেবায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এ সময় তিনি অ্যান্ড্রুজকে অনুরোধ জানান, প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করতে যেন তিনি তার প্রচেষ্টা জোরদার করেন।

অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রশংসা করলেও রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য যে পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ জাতিসংঘ মহাসচিব নিয়েছিলেন, তা বিভিন্ন মহলের দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণার কারণে প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে দ্রুত একটি স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান সম্ভব হবে। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বকে এই প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা ধরে রাখার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য স্টেকহোল্ডার সংলাপে অংশ নেবেন। এই সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

-রফিক


ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এরপর কোনো পদে থাকব না: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৯:৫২:৪৪
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এরপর কোনো পদে থাকব না: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যেখানে তিনি গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব গ্রহণ এবং বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রকাশিত এই নিবন্ধে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এবং এর পর তিনি আর কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকবেন না।

ড. ইউনূস লিখেছেন, “আমি স্পষ্ট করেছি: জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।”

তিনি তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

নিবন্ধে ড. ইউনূস বলেন, গত বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং সমাজের অগণিত মানুষের সমর্থনে বাংলাদেশে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটে। আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট একজন স্বৈরাচার দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এই ঘটনার পর সৃষ্ট ক্ষমতার শূন্যতায় ছাত্রনেতারা তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানান। তরুণদের জীবন উৎসর্গের কথা ভেবে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।

এই গণআন্দোলনকে তিনি বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লব হিসেবে উল্লেখ করেন, যা দেখিয়েছে কীভাবে তরুণরা মানবজাতির বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ড. ইউনূস তার সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার কথা বলেন। একই সঙ্গে বিগত সরকারের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে এবং এই অর্থ পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি অব্যবস্থাপনার মাত্রা দেখে হতবাক হয়েছিলেন। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল এবং অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ধীরে ধীরে তারা পুনর্গঠন শুরু করেছেন এবং যারা স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, সেসব রাজনৈতিক দলসহ নতুন দলগুলো নতুন ধারণা ও শক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন, যারা ৫ আগস্ট গণহত্যা চালাতে দেয়নি এবং আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।

পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনার পরিকল্পনা রয়েছে, যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়। তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে যারা তাদের সঙ্গে আছেন, তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে এবং তারাই বাংলাদেশের জন্য সর্বোত্তম আশা।

সূত্র: ডেসারেট


বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা চুক্তির মাধ্যমে পেয়েছিল অবৈধ সুবিধা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৭:৫৮:০৮
বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা চুক্তির মাধ্যমে পেয়েছিল অবৈধ সুবিধা
প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

বিগত সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে পাওয়ার প্ল্যান্ট ক্যাপাসিটি চুক্তির মাধ্যমে তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অবৈধ সুবিধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি মন্তব্য করেন, এসব চুক্তি কার্যত তাদের “চুরির লাইসেন্স” হিসেবে কাজ করেছে এবং এই খাতেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বর্তমান সরকারের উদ্যোগে গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন।

প্রেস সচিব জানান, সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই নানা খাতে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন ব্যতীত বাকি ১০টি কমিশনের ৩৬৭টি সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িতও হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, সংস্কার কার্যক্রম শুধু কমিশনের সুপারিশের ওপর নির্ভর করে নেই। প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্বভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ই কয়েক শতাধিক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে এবং সেগুলোর অনেকগুলোই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বসে থাকার মনোভাব দেখা যায়নি।

আইন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের (Special Power Act) মাধ্যমে সর্বাধিক দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে। এ আইনের সুযোগ নিয়ে বিগত সরকার তাদের পছন্দের ব্যবসায়ীদের জন্য অনিয়মের পথ খুলে দিয়েছিল এবং তাদের হাতে প্রকৃতপক্ষে “চুরির লাইসেন্স” তুলে দিয়েছিল।

সংস্কার বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তিনি জানান, এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে নিয়মিতভাবে তথ্য জানানো হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

-রফিক


এবার ভিসা ছাড়াই যাবেন পাকিস্তানে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৬:২৮:১১
এবার ভিসা ছাড়াই যাবেন পাকিস্তানে
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরা উভয় দেশের মধ্যে আর ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়া চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়ায় সম্মতি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পর্যায়ের ভ্রমণ আরও সহজতর হবে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে এই ভিসামুক্ত চুক্তিটি প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ভারতসহ ৩১টি দেশের সঙ্গে একই ধরনের ভিসামুক্ত চুক্তি কার্যকর করেছে। সেই তালিকায় এবার পাকিস্তানও যুক্ত হচ্ছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শুধুমাত্র কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবং অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরাই এই সুবিধা পাবেন। ফলে সরকারি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের জন্য আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ আরও স্বচ্ছন্দ হবে।

এ ছাড়া প্রেস সচিব আরও জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে ১০টি সংস্কার কমিশনের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, কমিশনগুলো শুধু প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বসে নেই, বরং বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার কাজ নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

-রাফসান


বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চায় পাকিস্তান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৬:০৭:০৯
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চায় পাকিস্তান
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান ও ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সংস্কৃতি ও জীবনাচরণের দিক থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে, যা বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বাজারে পাকিস্তানের তৈরি টেক্সটাইল ও জুয়েলারি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাসকীন আহমেদ দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নে সরাসরি বিমান ও কার্গো যোগাযোগ চালুর ওপর জোর দেন।

পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দেশই তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই রপ্তানি বহুমুখীকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে ইউরোপ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃব্যবহারযোগ্য নতুন ডিজাইনের পোশাকের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দুই দেশের উদ্যোক্তারা যদি যৌথভাবে কাজ করে, তবে আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, পূর্ব আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার উদীয়মান বাজারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একসঙ্গে কাজ করলে রপ্তানির পরিধি বাড়ানো সম্ভব। এ ছাড়া পাকিস্তান সিমেন্ট, চিনি, পাদুকা ও চামড়াজাত শিল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, যেখান থেকে বাংলাদেশ সহজেই পণ্য আমদানি করতে পারে। অপরদিকে, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প পাকিস্তানের বাজারে কার্যকর অবদান রাখতে সক্ষম।

কৃষি খাত প্রসঙ্গে জাম কামাল খান বলেন, নতুন প্রযুক্তি ও মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়ের রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তিনি জানান, শিগগিরই বাংলাদেশে পাকিস্তানের একক প্রদর্শনী (সিঙ্গেল কান্ট্রি এক্সিবিশন) আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে এবং পারস্পরিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের জন্য নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এবং পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

-শরিফুল


পিআর পদ্ধতি ভয়ংকর, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ এর ফল: ড. বদিউল আলম মজুমদার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১৩:০৬:০৮
পিআর পদ্ধতি ভয়ংকর, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ এর ফল: ড. বদিউল আলম মজুমদার
ছবিঃ সংগৃহীত

সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতি দেশের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। তিনি বলেন, ইসরায়েলে যে গাজা যুদ্ধ অব্যাহত আছে, সেটি এই পিআর পদ্ধতির কারণেই হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদে তার এই মন্তব্য উঠে আসে।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি হলো একটি নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবস্থা। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না, এতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে। সকালে একজন প্রধানমন্ত্রী, বিকেলবেলা আরেকজন প্রধানমন্ত্রী—এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, এই পদ্ধতির কারণে নেপালের মতো অনেক দেশই বর্তমানে সমস্যার মধ্যে আছে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই পদ্ধতির সবচেয়ে ভয়ানক উদাহরণ হলো ইসরায়েল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ছোট ছোট ধর্মীয় দলের কাছে জিম্মি হয়ে গেছেন, যার কারণে তারা যুদ্ধ বন্ধ করতে দিচ্ছে না। অর্থাৎ, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে বড় দলগুলো ছোট দলের কাছে জিম্মি হয়ে যেতে পারে।

/আশিক

পাঠকের মতামত: