একটি ব্যালকনি, তিনটি জীবন—যশোরে নির্মাণ বিভীষিকা!

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৫:৫৬:০১
একটি ব্যালকনি, তিনটি জীবন—যশোরে নির্মাণ বিভীষিকা!

জীবনের শেষ মুহূর্তে হয়তো তাঁরা বুঝতেও পারেননি, যে কাজের মধ্যেই তারা নিবিষ্ট ছিলেন—সেই ব্যালকনিই হবে তাঁদের মৃত্যু ফাঁদ।যশোর শহরের সার্কিট হাউজপাড়ায় নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনের পঞ্চম তলার ব্যালকনি হঠাৎ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই প্রকৌশলী ও এক শ্রমিকের। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান (৩৫), সাইট ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান (৩৫) এবং সাব-কন্ট্রাক্টর কাম হেড মিস্ত্রী নুরু মিয়া (৪৫)।তারা তিনজনই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার সময় হঠাৎ ব্যালকনিটি ধসে পড়ে। স্থানীয়রা দ্রুত হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শব্দটা এতটাই বিকট ছিল যে অনেকেই ভেবেছিলেন ভূমিকম্প বা বিস্ফোরণ হয়েছে।দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিনজনকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি কারও।

স্থানীয়দের অভিযোগ—নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী এবং নিরাপত্তাহীন পরিবেশই এই দুর্ঘটনার কারণ।যুবদল নেতা তমাল আহমেদ বলেন, “নির্মাণ সাইটে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না। ব্যালকনির কাঠামো ছিল দুর্বল।”

ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্য পদত্যাগকারী আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, “এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি নির্মাণ অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটেছে। ব্যালকনিতে চিকন রড, দুর্বল সংযোগ—সবই প্রমাণ করে ইচ্ছাকৃত অবহেলা।”

তদন্তে মাঠে নেমেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান জানান, “ত্রুটি পাওয়া গেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—ভবিষ্যতে আরও কত প্রাণ হারালে নির্মাণ নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের চেতনা ফিরবে?জীবন মানে শুধু শ্রমিকের হাতের কাজ নয়—তাদের নিরাপত্তাও রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।

—সত্য প্রতিবেদন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ