ফের ইরানে হামলার হুমকি ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ০৭:৪১:১৭
ফের ইরানে হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ফের সামরিক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরান যদি আবারও তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালু করার চেষ্টা করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ‘কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়া’ জানাবে। তাঁর বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার আভাস স্পষ্ট।

টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ন্যাটোর এই উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “অবশ্যই, আমরা আবারও হামলা করব। ইরান এখন কোনো কিছু সমৃদ্ধ করতে পারছে না। তারা কেবলমাত্র নিজেদের অবস্থান পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করতে চাই তারা কোনো পারমাণবিক বোমা পাবে না, এমনকি ইউরেনিয়ামও সমৃদ্ধ করতে পারবে না।”

যদিও ট্রাম্পের বক্তব্যে দৃঢ় সামরিক অবস্থানের প্রতিফলন পাওয়া গেছে, তবুও তিনি ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনর্গঠনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠবে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সেটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।”

ট্রাম্প সম্প্রতি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে “সমতাভিত্তিক ও সময়োপযোগী” বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, উভয় দেশই যুদ্ধবিরতি চায় এবং স্বীকার করেছে যে, সংঘর্ষ এখন যথেষ্ট হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সাম্প্রতিক হামলাকে “একটি বিশাল কৌশলগত বিজয়” এবং “জবরদস্ত সামরিক আঘাত” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তবে সংঘাতে ইসরায়েলের ক্ষতির কথাও ট্রাম্প স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হয়েছে, বিশেষ করে গত কয়েক দিনে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহু ভবন ধ্বংস করেছে। এটা সহজ ছিল না।” এরপরও তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “তিনি দারুণভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁর গর্বিত হওয়া উচিত।”

একই সম্মেলনে ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিমুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ পদক্ষেপের কারণেই এই কূটনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমি মনে করি আমরা গাজা যুদ্ধবিরতির একটি ভালো চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। শিগগিরই এ বিষয়ে ইতিবাচক খবর পাওয়া যাবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এমন বক্তব্য আবারও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রশাসনগুলো ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ঠেকাতে আগ্রাসী নীতির দিকেই ঝুঁকতে পারে। যদিও সামরিক হুঁশিয়ারির পাশাপাশি সম্পর্ক উন্নয়নের পথ খোলা রাখার বার্তা একধরনের দ্বৈত কৌশলের ইঙ্গিত দেয়, তবুও ইরান ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক আবার নতুন করে জটিলতা ও উত্তেজনার মুখে পড়তে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে তেহরান এখনও এই বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যায়, ইরান এমন হুমকিকে স্বার্থান্বেষী ও একতরফা শক্তির প্রয়োগ হিসেবে দেখবে এবং নিজেদের সার্বভৌম অধিকার রক্ষার পক্ষেই অবস্থান নেবে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত