‘দ্বিতীয় শেখ মুজিব’ দাবি, পরিষদে বন্ধ পরিষেবা!

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ১৪:৪৮:৩৬
‘দ্বিতীয় শেখ মুজিব’ দাবি, পরিষদে বন্ধ পরিষেবা!

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উঠেছে। পরিষদের আট ইউপি সদস্য সোমবার (২৩ জুন) লিখিত অভিযোগসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে প্রস্তাবটি দাখিল করেন। এতে উঠে এসেছে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অশোভন আচরণ এবং সেবাবঞ্চনার গুরুতর অভিযোগ।

অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান পরিষদ পরিচালনায় বেপরোয়া এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছেন। পরিষদের মধ্যে নিয়মিত মাদকসেবীদের আড্ডা বসানো, ইউপি সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, পুরাতন চেয়ারম্যানের রেখে যাওয়া কংকর ও মূল্যবান কাঠ আত্মসাৎসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি নিজেকে 'দ্বিতীয় শেখ মুজিব' হিসেবে পরিচয় দেন এবং মাসিক সভা, উন্মুক্ত বাজেট বা স্থায়ী কমিটির কোনো সভা আহ্বান করেননি। ইউনিয়নের ১, ৩, ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি সেবাও ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

সদস্যদের দাবি, এসব সেবা বন্ধ করার কারণ হিসেবে চেয়ারম্যান ঐ ওয়ার্ডবাসীর ‘বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের’ কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তার ব্যক্তিগত জমিকে ‘স্টেডিয়াম’ হিসেবে দেখিয়ে টিআর, কাবিখা, ভিজিডি ও ভিজিএফ প্রকল্পের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে, যার প্রমাণ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে নথিভুক্ত রয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান অবশ্য অভিযোগের কিছু অংশ সত্য এবং কিছু মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, “সাবেক চেয়ারম্যানের রেখে যাওয়া সামগ্রী পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল, আমি সেগুলো পিলার তৈরিতে ব্যবহার করেছি। আমার বাবা ও ওয়ারিশদের জমিতে মাঠ করেছি, তাই হস্তান্তর সম্ভব নয়। আমি প্রকৃত ক্রীড়াপ্রেমী, সেখানে ৪০-৫০ লাখ টাকা খরচ করেছি।”

অন্যদিকে, তার বাবা ইলিয়াস চৌধুরী স্বীকার করেছেন, জমিটি পরিবারের ওয়ারিশভুক্ত হলেও সেটি তার নামে ‘কবালায়’ দেওয়া হয়নি।

রামুর ইউএনও রাশেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অনাস্থা প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, মুজিবুর রহমান ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই পরিষদে কর্তৃত্ববাদী আচরণ, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও গণসেবায় অস্বচ্ছতা নিয়ে বারবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত