ত্রিপক্ষীয় বৈঠক: আফগান স্থিতিশীলতায় চীন-পাকিস্তান ঐক্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ২১:৫৪:৩৭
ত্রিপক্ষীয় বৈঠক: আফগান স্থিতিশীলতায় চীন-পাকিস্তান ঐক্য

সত্য নিউজ: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অনুষ্ঠিত হলো পাকিস্তান, চীন ও আফগানিস্তানের মধ্যকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক, যেখানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে পারস্পরিক ঐকমত্যের নতুন বার্তা উঠে এসেছে।

শনিবার (১০ মে) আয়োজিত এই বৈঠকে আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি স্বাগতিকের ভূমিকা পালন করেন। এতে চীনের পক্ষে আফগানিস্তানে নিযুক্ত বিশেষ দূত ইয়ুই সিয়াওইয়ং এবং পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো পারস্পরিক বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়। তিন দেশের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকটি ছিল ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সংলাপ কাঠামোর অংশ, যা রাজনৈতিক আস্থা বৃদ্ধি এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল।

বৈঠকের মূল আলোচনা ও অগ্রাধিকার

পাকিস্তানের প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া বার্তায় জানান, “এই বৈঠকের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে কার্যকর সংলাপ ও বাস্তবসম্মত সমঝোতার পথ উন্মুক্ত হয়েছে।”

চীন–পাকিস্তান–আফগানিস্তান তিন দেশের পক্ষ থেকেই পরস্পরের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং বিদ্যমান প্রতিশ্রুতিগুলোর পুনর্মূল্যায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ভবিষ্যতে ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের বিষয়েও নীতিগত সম্মতি তৈরি হয়েছে, যা এ অঞ্চলের কৌশলগত সংলাপকে আরও গভীর ও ফলপ্রসূ করে তুলতে পারে।

সন্ত্রাস ও নিরাপত্তা প্রশ্নে সমন্বিত অবস্থান

বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষত আফগানিস্তানে সক্রিয় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর হুমকি মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। তিন দেশই এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং চরমপন্থা প্রতিরোধে যৌথ কৌশল গঠনের ওপর জোর দেয়।

ভবিষ্যৎ পর্যালোচনার রূপরেখা

আফগান সংবাদমাধ্যম আরিয়ানা নিউজ জানায়, বৈঠকে পূর্ববর্তী ত্রিপক্ষীয় আলোচনাগুলোর অগ্রগতি ও প্রতিশ্রুতিগুলো পর্যালোচনা করা হয়। এতে পূর্ব পরিকল্পিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন সংক্রান্ত আলোচনা হয় এবং স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে ওঠে।

আঞ্চলিক ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি কেবল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়, বরং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বৃহত্তর নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সম্ভাবনা তৈরি করেছে বলে বিশ্লেষকদের মত। ত্রিপক্ষীয় এই সংলাপ কাঠামো একটি টেকসই আঞ্চলিক সংহতির ভিত্তি রচনায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ