বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক আইনি পরিবর্তনের প্রসঙ্গে যা রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সোমবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ উদ্বেগ ব্যক্ত করেন।
টুর্ক তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ শুরু হওয়া একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে এই আলোচনার ধারা গণতন্ত্রের পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মানসূচক করে তুলতে অর্থবহ এবং গভীর সংস্কারের জন্য আহ্বান জানান।
তবে তিনি তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাম্প্রতিক এমন এক আইনি সংশোধন নিয়ে, যা রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার আইনি ভিত্তি তৈরি করেছে। তার মতে, এ ধরনের আইন মৌলিক মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংগঠন গঠনের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার এই তিনটি অধিকার গণতন্ত্রের ভিত্তি। এসব অধিকারকে সীমাবদ্ধ করা হলে তা কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও সমালোচনামূলক চর্চার পথও রুদ্ধ করে দিতে পারে।
ফলকার টুর্ক বলেন, “সংগঠনের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক উপাদান নয়, এগুলো একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত। আমি উদ্বিগ্ন যে, বাংলাদেশে যে ধরনের আইনি পরিবর্তন আনা হয়েছে তা এই অধিকারগুলোকে অযথাভাবে খর্ব করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক বিরোধ বা মতভিন্নতা দমন করতে আইনের অপব্যবহার গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয় এবং জনআস্থা হ্রাস পায়। এই পরিস্থিতি একটি স্থিতিশীল সমাজ ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এই প্রেক্ষাপটে, হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্মান করে এবং মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন।
তাঁর এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল ইতোমধ্যে এই বিষয়টিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনীতিতে নতুন অক্ষ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত সপ্তাহে যখন রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করেন, সেটি ছিল কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যের ছবি নয়—বরং এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ঘোষণা। এর কিছুক্ষণ আগে স্বাক্ষরিত হয়েছে একটি “কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি”, যা মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র পাকিস্তানকে উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী শক্তি সৌদি আরবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে যুক্ত করেছে।
চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হলেও এর অন্তর্নিহিত বার্তা বহুমাত্রিক। ইসলামাবাদের জন্য এটি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ভরসা, রিয়াদের জন্য এটি পারমাণবিক শক্তির এক প্রকার “বীমা”। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার আরেক পরাশক্তি ভারতকে এটি সরাসরি কৌশলগত চাপে ফেলেছে।
ভারতের বাড়তে থাকা অস্বস্তি
চুক্তির মূল ধারা অনুযায়ী, “দুই দেশের যেকোনো একটির ওপর আগ্রাসনকে উভয়ের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।” অর্থাৎ পাকিস্তান যদি ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তবে সৌদি আরবকেও সেই সংঘাতের অংশ হতে হতে পারে।
ভারতীয় কৌশলবিদ ব্রহ্মা চেলানি মন্তব্য করেছেন, “এটি পাকিস্তানের শক্তির প্রতিফলন নয়, বরং সৌদি আরবের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রকাশ। পাকিস্তান অর্থনৈতিক দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে, অথচ রিয়াদ তার সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতার ওপর ভরসা করছে। এর মাধ্যমে সৌদি একসঙ্গে জনশক্তি ও পারমাণবিক নিরাপত্তা অর্জন করছে।”
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব কানওয়াল সিবাল আরও কড়া ভাষায় বলেছেন, “রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল ও অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর পাকিস্তানকে নিরাপত্তা সহযোগী বানানো সৌদিদের কৌশলগত ভুল। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তায় এর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।”
দিল্লির সতর্ক প্রতিক্রিয়া
নয়াদিল্লি যদিও প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিবাদ জানায়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিষয়টিকে “জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাবের দিক থেকে মূল্যায়ন করছে।” একই সঙ্গে তারা আশা করেছে, সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারিত্বে ভারতের সংবেদনশীলতাকে বিবেচনায় নেবে।
ভারতের সতর্ক অবস্থান মূলত সৌদির সঙ্গে তাদের গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে। ভারত সৌদির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিশাল তেল আমদানিকারক দেশ। তাই দিল্লি সরাসরি সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইছে না।
কেন সৌদির এই পদক্ষেপ?
সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত কারণ:
- মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় ভরসা কমে যাওয়া: উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো মনে করছে, সংকটকালে যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো প্রতিরক্ষা নিশ্চয়তা দিতে পারবে না বা দেবে না। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা এবং দোহায় ইসরায়েলি আঘাত রিয়াদের শঙ্কা বাড়িয়েছে।
- ইরান ও ইসরায়েলকে প্রতিহত করার কৌশল: সৌদি নেতৃত্ব এখন স্পষ্টভাবে দুই দেশকেই হুমকি হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক ক্ষমতা এবং দীর্ঘ সামরিক অভিজ্ঞতা রিয়াদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুরক্ষা বলয় তৈরি করছে।
- বহুমুখী নিরাপত্তা অংশীদারত্ব গড়ে তোলা: রিয়াদ এখন যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক নীতি থেকে বের হয়ে নতুন অক্ষ তৈরি করছে—যেখানে পাকিস্তানের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা: পাকিস্তানকে পাশে নিয়ে সৌদি আরব মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব আরও দৃঢ় করতে চাইছে।
পাকিস্তানের জন্য কী লাভ?
পাকিস্তানের অর্থনীতি এখনো গভীর সংকটে। দেউলিয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে দেশটি বারবার সৌদি অর্থনৈতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করেছে। ফলে এই প্রতিরক্ষা চুক্তি ইসলামাবাদের জন্য কেবল সামরিক নয়, অর্থনৈতিক বীমাও বটে।
- ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তান–সৌদি সম্পর্ক সামরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
- ১৯৬০-এর দশক থেকে সৌদি মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের মোতায়েন।
- ১৯৭৯ সালে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ অবরোধ দমনে পাকিস্তানি কমান্ডোদের অংশগ্রহণ।
- সৌদি বিমানবাহিনী গঠনে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের পরামর্শ।
২০১৭ সালে সৌদির নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী জোটে অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের নিয়োগ।
এই দীর্ঘ ইতিহাস প্রমাণ করে, সৌদি আরব সবসময় পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার ওপর ভরসা করেছে। নতুন চুক্তি সেই আস্থা আরও আনুষ্ঠানিকভাবে স্থায়ী করছে।
ভারতের ভূরাজনৈতিক দুশ্চিন্তা
যদিও বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ বলছেন, চুক্তিটি ভারতের জন্য তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি নয়। দিল্লি এখনও সৌদির প্রধান অর্থনৈতিক অংশীদার। কিন্তু ভূরাজনীতির দিক থেকে এটি নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে।
ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “এই চুক্তি পাকিস্তানের পক্ষে আঞ্চলিক ভারসাম্য বদলে দিয়েছে। পাকিস্তান এখন একসঙ্গে চীন, তুরস্ক এবং সৌদি আরবের সমর্থন পাচ্ছে। ফলে ভারতকে কৌশলগতভাবে নতুন হিসাব কষতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ভারত অবশ্য রাশিয়া, ইসরায়েল, ফ্রান্স ও উপসাগরের অন্য মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে এর ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু কূটনৈতিক বার্তা হিসেবে এটি দিল্লির জন্য মোটেও ইতিবাচক নয়।
আঞ্চলিক মেরুকরণের নতুন অধ্যায়
বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি শুধু পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে না, বরং আঞ্চলিক মেরুকরণকে নতুন রূপ দেবে। সৌদি আরবের আর্থিক শক্তি ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা একত্রিত হলে দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগর উভয় অঞ্চলেই ভারতের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।
একই সঙ্গে এই পদক্ষেপ মুসলিম বিশ্বের ভেতরে এক ধরনের “ইসলামিক ন্যাটো” ধারণার পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। এতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কৌশলগত করিডরজুড়ে ভারতের পশ্চিমমুখী কূটনৈতিক নীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।
সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি কেবল দুটি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয় নয়—এটি দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। পাকিস্তানের জন্য এটি সামরিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা, সৌদির জন্য এটি বহুমুখী কৌশলগত বীমা। তবে ভারতের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা—অঞ্চলীয় শক্তির ভারসাম্য বদলাচ্ছে, এবং দিল্লিকে তার কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদ্ধতি নতুন করে সাজাতে হবে।
গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘গণহত্যা ঠেকাতে’ দখলদার ইসরায়েলের ওপর পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্পেন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকার এ নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়ে ডিক্রি জারি করেছে।
নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত
স্প্যানিশ অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ার্পো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইসরায়েলে স্পেন কোনো সামরিক সরঞ্জাম, দ্বৈত-ব্যবহারের সামরিক পণ্য এবং প্রযুক্তি পাঠাবে না। এছাড়া স্পেনও এ ধরনের কোনো পণ্য বা প্রযুক্তি আমদানি করবে না।”
নিষেধাজ্ঞার আওতায় সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন বিমানের জ্বালানির অনুরোধও আটকে দিয়েছে স্পেন। সঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্য আমদানি এবং সেগুলোর বিজ্ঞাপনও স্পেনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
স্প্যানিশ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র তৈরির ক্ষেত্রে স্পেনের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বড় পদক্ষেপ।”
আইনি ভিত্তি ও হতাহতের সংখ্যা
২০২৩ সালে গাজায় দখলদার ইসরায়েল বর্বরতা শুরুর পর স্পেন সরকার ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকায় স্পেন থেকে ইসরায়েলে সামরিক কাজে ব্যবহৃত পণ্য গেছে। এতদিন যে নিষেধাজ্ঞাটি ছিল আজকের ডিক্রির মাধ্যমে সেটি ‘আইনি ভিত্তি’ পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকে থাকায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ধারণার চেয়ে বেশি বলে আশঙ্কা করা হয়।
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েল তাদের অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যহত রাখায় যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ ১০টির বেশি দেশ দুইদিনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।
সূত্র: এএফপি
গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হামাসের জন্য অনেক বড় পুরস্কার হবে।’ তিনি গাজায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে আটক জীবিত বা মৃত জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
‘যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি’র আহ্বান
ট্রাম্প গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘যারা শান্তির পক্ষে ছিলেন তাদের জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘যেন অব্যাহত সংঘাতকে উৎসাহিত করার জন্য, এই সংস্থার কিছু সদস্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে। হামাস সন্ত্রাসীদের জন্য তাদের নৃশংসতার জন্য এই পুরস্কার অনেক বড় হবে।’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি নিয়ে বিতর্ক
জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এখন নিউইয়র্কে। এর আগে জাতিসংঘে ভাষণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।
সম্প্রতি অনেক দেশই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করতে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং আরো কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আছে।
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী গাজার পরিকল্পনা নিয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা হবে তার।
ট্রাম্পের বৈঠকের এজেন্ডা
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা হবে। দেশগুলো হলো- সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তান।
সংবাদমাধ্যম এক্সিওস এবং চ্যানেল-১২-কে আরব ও ইসরায়েলি কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে- ভবিষ্যতে গাজা থেকে কীভাবে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা হবে, গাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মুসলিম নেতাদের সেনা পাঠানো নিয়ে তার চাওয়া এবং কিভাবে গাজা পুনর্গঠন এবং এর অর্থ আসবে সেগুলো নিয়ে ট্রাম্প আলোচনা করতে পারেন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তো গতকাল সোমবার ফ্রান্স ও সৌদির আয়োজিত সম্মেলনে বলেছিলেন, গাজায় তার দেশ শান্তিরক্ষী পাঠাতে প্রস্তুত আছে।
ফিলিস্তিন অথরিটির ভূমিকা ও হামাসের বর্জন
ট্রাম্প যে পরিকল্পনা নিয়ে মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এতে ফিলিস্তিন অথরিটি (পিএ)-কে কিছু দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গাজার বর্তমান শাসক হামাসকে যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় সরকার পরিচালনার কোনো অংশেই রাখা হয়নি।
সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, এ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে অবহিত করা হয়েছে। যদিও ইসরায়েল আগে জানিয়েছিল ফিলিস্তিন অথরিটিকেও গাজার কোনো দায়িত্বে তারা চায় না।
সূত্র: এক্সিওস, চ্যানেল-১২
কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিদেশে ১৩ বছরের কিশোর
কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিপদে পড়েছে ১৩ বছর বয়সী এক আফগান কিশোর। বিমানটি চলা শুরু করলেও সে আর বেরোতে পারেনি। এভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে ভারতের দিল্লিতে পৌঁছায় সে। দিল্লির কর্মকর্তারা, ল্যান্ডিং গিয়ারে কিশোরকে পেয়ে হতবাক হয়ে পড়েন। তার এমন যাত্রা এবং বেঁচে থাকা নিয়ে তাজ্জব বনে যান তারা।
কাবুল থেকে দিল্লিতে বিপজ্জনক যাত্রা
সোমবার ভারতের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ১৩ বছর বয়সী এক আফগান কিশোরের কৌতূহল তাকে আফগানিস্তান থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসে। সে কোনোভাবে কাবুল থেকে উড্ডয়নকারী একটি বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার বগিতে ঢুকতে সক্ষম হয় এবং আর বেরোতে পারেনি। খবর এনডিটিভির।
রোববার বেলা ১১টার দিকে কেএএম এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট নম্বর আরকিউ-৪৪০১) বিমানটি ২ ঘণ্টা যাত্রার পর ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক (আইজিআই) বিমানবন্দরে পৌঁছালে এই ঘটনা ধরা পড়ে। সূত্র জানিয়েছে, রোববারই একই ফ্লাইটে কিশোরটিকে আফগানিস্তানে ফিরিয়ে আনা হয়।
আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ
বিমান কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে খবর দেয়, বিমানটি অবতরণের পর ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে সেখানে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা ওই কিশোরকে বিমান সংস্থার কর্মীরা আটক করে কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীদের হাতে তুলে দেয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালে নিয়ে আসে কর্মীরা।
সে কর্মকর্তাদের জানায়, কাবুল বিমানবন্দরে লুকিয়ে কোনোভাবে বিমানের পেছনের কেন্দ্রীয় ল্যান্ডিং গিয়ার বগিতে ঢুকতে সক্ষম হয় সে। কৌতূহলবশত এই কাজ করেছে বলে সে দাবি করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর, আফগান ছেলেটিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছেড়ে যাওয়া একই ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়।
কেএএম এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ল্যান্ডিং গিয়ার কম্পার্টমেন্টের নিরাপত্তা পরীক্ষা করেন এবং একটি ছোট লাল রঙের স্পিকার পান। সম্ভবত এটি ওই কিশোরের ছিল। বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিদর্শন এবং নাশকতাবিরোধী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিমানটিকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে।
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ আর নেই
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান বলে সৌদি রাজকীয় আদালতের বরাতে আল আরাবিয়া জানিয়েছে।
বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্সের সমবেদনা
সৌদি বাদশাহ সালমান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গ্র্যান্ড মুফতির পরিবার, সৌদি জনগণ এবং মুসলিম বিশ্বের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, “গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খের ইন্তেকালে সৌদি আরব এবং মুসলিম বিশ্ব একজন বিশিষ্ট পণ্ডিতকে হারালো যিনি ইসলাম এবং মুসলমানদের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।”
জানাজার নামাজ
জানা যায়, রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ মসজিদে আজ ʿআসর নামাজের পর তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিসহ দেশের সব মসজিদে তার গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এ মর্মে বাদশাহ নির্দেশও জারি করেছেন।
শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ ১৯৮১ সাল থেকে টানা ৩৫ বছর হজের খুতবা দিয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নেন।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বনেতারা
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে সমর্থন জানাতে সোমবার নিউইয়র্কে কয়েক ডজন বিশ্বনেতা একত্রিত হন। গাজা যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পর এটি একটি উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যা ইসরায়েল এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফ্রান্সের স্বীকৃতি ও ম্যাক্রোঁর বার্তা
বিশ্বনেতাদের সমাবেশের মধ্যে ফ্রান্স ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে এই ঘোষণা দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই শান্তির পথ প্রশস্ত করতে হবে” এবং “ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু করতে হবে যাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে।”
ম্যাক্রোঁ একটি নবায়নকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাঠামোর রূপরেখা তুলে ধরেন। এর অধীনে ফ্রান্স সংস্কার, যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার জন্য একটি দূতাবাস খুলবে।
অন্যান্য দেশের সমর্থন ও ইসরায়েলের বিরোধিতা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়া, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও জানান, সাম্প্রতিক স্বীকৃতির পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার বামপন্থি সরকার ২০২৪ সালে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আগে লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, বেলজিয়াম ও মোনাকোসহ অন্যান্য দেশও ১৯৩ জাতিসংঘ সদস্যের তিন-চতুর্থাংশের বেশি দেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, যারা ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
অপরদিকে, ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থি সরকার ঘোষণা দিয়েছে যে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকবে না। তেল আবিব বলেছে, এই ধরনের পদক্ষেপ সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাকে দুর্বল করবে।
গাজা যুদ্ধ, ইসরায়েলের নিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের বয়কট
গাজায় সামরিক অভিযানের কারণে ইসরায়েল বিশ্বব্যাপী নিন্দার মুখে পড়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬৫,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েল গাজা সিটিতে দীর্ঘ স্থল আক্রমণ শুরু করেছে, যেখানে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা খুবই কম।
সোমবারের বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বয়কট করেছে। জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশে ফিরে আসার পর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার এই পদক্ষেপ আরও জটিলতা সৃষ্টি করবে।
হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধরত স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও তার মিত্রদের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক সম্মেলনে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান।
‘এক আইনে চলবে রাষ্ট্র’
আব্বাস বলেন, “হামাস এবং তার মিত্রদের অবশ্যই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। আমরা চাই একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র— যেখানে সাধারণ নাগরিকদের কাছে কোনো অস্ত্র থাকবে না, রাষ্ট্র চলবে এক আইনের অধীনে এবং থাকবে একটি বৈধ নিরাপত্তা বাহিনী।”
তিনি আরও জানান, “গাজায় যুদ্ধ শেষ হলে তিন মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হবে প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচন আয়োজন করা। শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না। হামাসকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।”
যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা
সম্মেলনে আব্বাস যুদ্ধবিরতির তাগিদ দেন এবং বলেন, “আমাদের গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে হবে, জিম্মিদের মুক্ত করতে হবে।”
তিনি মিশর, কাতার, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যস্থতা ও ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনার বিরোধিতার প্রশংসা করেন।
ট্রাম্প প্রশাসন আব্বাসের ভিসা বাতিল করায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিউইয়র্কে সরাসরি যোগ দিতে পারেননি তিনি। তাই অধিবেশনে ভাষণ দেন ভিডিও বার্তায়।
‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি
ইরানের শীর্ষ জেনারেল শত্রুদের যে কোনো হুমকির ‘সময়োপযোগী এবং সিদ্ধান্তমূলক’ জবাব দেওয়ার জন্য ইরানের পূর্ণ প্রস্তুতি নিশ্চিত করেছেন। আইআরএনএ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে এক বার্তায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মুসাভি জোর দিয়ে বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী তাদের ক্ষমতা এবং কৌশলগত উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে, সময়োপযোগী ও সিদ্ধান্তমূলক প্রতিক্রিয়া প্রদানের জন্য প্রস্তুত, যা শত্রুদের তাদের কর্মের জন্য অনুতপ্ত করবে।”
ইরান-ইরাক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও আত্মনির্ভরশীলতা
তিনি দীর্ঘ আট বছরের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়টিকে ‘বিশ্বব্যাপী অহংকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং স্থিতিস্থাপকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়’ হিসাবে বর্ণনা করেন। মুসাভি উল্লেখ করেন, এই অভিজ্ঞতা ইরানের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা ও জাতীয় ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এটি ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে প্রতিরক্ষামূলক স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং উন্নত প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে নিয়েছে।
ইসরায়েলের সংঘাত ও হাইব্রিড যুদ্ধ মোকাবেলার প্রস্তুতি
তিনি সাম্প্রতিক সংঘাত, বিশেষ করে ইসরায়েলি সরকারের আরোপিত ১২ দিনের যুদ্ধকে ‘জাতীয় শক্তি প্রদর্শনের জন্য হুমকিকে সুযোগে রূপান্তরিত করার ইরানের ক্ষমতার আরও প্রমাণ’ বলে বর্ণনা করেন। শীর্ষ কমান্ডার ব্যাপক প্রতিরক্ষা, উন্নত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং হাইব্রিড যুদ্ধ, বিশেষ করে ‘জ্ঞানীয় যুদ্ধ’ মোকাবেলার প্রস্তুতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
কমান্ডারের মতে, ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার নেতৃত্বে ইরানের সামরিক বাহিনী প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে অঞ্চল ও বাইরেও বর্ধিত নিরাপত্তার সুযোগে রূপান্তর করতে প্রস্তুত।
পাঠকের মতামত:
- সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনীতিতে নতুন অক্ষ
- কোথায় হচ্ছে আগামী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন? সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত!
- তারেক রহমানের নির্দেশে: পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বিএনপি নেতাকর্মীরা
- ডাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ আনলেন তিন ভিপি প্রার্থী
- ঐক্য ধরে রাখতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বিএনপি নেতার ‘খিচুড়ি কূটনীতি’
- গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
- নিউইয়র্কের জাতিসংঘের মঞ্চে ড. ইউনূস: বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
- গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
- নিউইয়র্কের লাঞ্ছনা: সফরসঙ্গীদের ঘটনায় সরকারের ‘বিশেষ বার্তা’
- বিসিবি নির্বাচনে চমক: খসড়া ভোটার তালিকা ঘিরে চলছে নানা জল্পনা!
- ‘এই সময়’-এর সংবাদে ভুল? মির্জা ফখরুলের নতুন বক্তব্যে দানা বাঁধছে কৌতূহল
- ‘দ্য রেড জুলাই’র প্রতিবাদ: যুক্তরাষ্ট্রে লাঞ্ছনার জবাবে টিএসসিতে এক বিশেষ কর্মসূচি
- ‘দাওয়াত পেলেও যেতাম না’: প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে রনির কড়া মন্তব্য
- দেশের জ্বালানি খাতে আসছে নতুন গতি: ৪১৩ কোটি টাকার এক বড় চুক্তি
- গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
- কারাগারে মহিলা লীগ নেত্রী লিমাসহ ১০
- ৩৩ বছরের অপেক্ষার অবসান! অবশেষে কিং খানের ঘরে সেই কাঙ্ক্ষিত সম্মান
- শাহবাগে এনসিপি’র বিক্ষোভ: নিউইয়র্কে নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদ
- মানবদেহে নতুন অঙ্গের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা: ক্যানসার চিকিৎসায় আশার আলো
- মির্জা ফখরুলের অভিযোগ: ভারতের পত্রিকা সাক্ষাৎকার বিকৃত করেছে
- যুক্তরাষ্ট্রে আখতার ও জারাকে লাঞ্ছিত: নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
- প্রতীক ‘শাপলা’ না হলে নির্বাচন কীভাবে হয় দেখে নেবো: সারজিস
- চাকসু ও রাকসু নির্বাচনে নতুন সময়সূচি
- কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিদেশে ১৩ বছরের কিশোর
- সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ আর নেই
- আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করলে রাজনীতি নাই হয়ে যাবে: নাহিদ ইসলাম
- ডিএসইতে আজকের শেয়ারবাজারের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিসিবির কোষাগারে ১৩৯৮ কোটি টাকা রেখে দায়িত্ব ছাড়ছে বিদায়ী পর্ষদ
- পুলিশ পাবে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা: নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে সরকারের নতুন উদ্যোগ
- শাপলা প্রতীক পাবে না এনসিপি
- টানা বৃষ্টি ও নতুন লঘুচাপ: তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অফিসের সতর্ক বার্তা
- আখতারের ওপর হামলা নিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের কড়া হুঁশিয়ারি
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নির্বাচন চান মির্জা ফখরুল
- জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বনেতারা
- সিরি আ’তে টানা চতুর্থ জয়ে শীর্ষে নাপোলি
- কক্সবাজারে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রতিশ্রুতি
- বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত নয়, ‘সবুজ সংকেত’ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর ষড়যন্ত্র: রিজভী
- ফিলিস্তিনবিরোধী অবস্থান: ম্যানেজারকে ছাঁটাই করলেন ডুয়া লিপা
- এনসিপি নেতা আখতারের উপর হামলা: হাসনাত আব্দুল্লাহর তীব্র ক্ষোভ ও হুঁশিয়ারি
- কড়া নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে জোড়া খুনের আসামি পালালো বগুড়া আদালত থেকে
- ফোলা পা থেকে শ্বাসকষ্ট: কিডনি বিকল হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৫ ইঙ্গিত
- হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের
- “আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার দায়িত্ব”—শোকাহত পরিবারকে প্রধান উপদেষ্টা
- ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
- বিশ্ব বদলের ডাক: তরুণদের ‘থ্রি-জিরো ক্লাব’ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের
- নিউইয়র্কে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বেলজিয়ামের রানি ম্যাথিল্ডের বৈঠক
- ‘ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া, ওভাবে চিন্তা করছি না’: প্রতিপক্ষ নিয়ে নির্ভার মাহেদী
- মাকে পাশে নিয়ে ব্যালন ডি’অর হাতে নিলেন উসমান ডেম্বেলে
- রেনেসাঁর দর্শন ও দিশা: গ্রিক-রোমান জ্ঞান, মুসলিম দার্শনিকদের ভূমিকা ও আধুনিকতার উন্মেষ
- অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস: উত্থান, পতন ও সভ্যতা–বিজ্ঞানে অবদান
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- আফগানিস্তানে নারী লেখকদের বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
- বরিশালে ১৭ বিয়ে কাণ্ড: বন কর্মকর্তা কবির হোসেন বরখাস্ত
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বলিউডের গ্ল্যামার থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প: জিনাত আমানের জীবন ও ভালোবাসা
- ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- “অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
- ট্রাম্পের তালিকায় ভারত–পাকিস্তান ‘মাদক পাচারকারী’ রাষ্ট্র
- চরিত্র বদলের খেলায় শুভশ্রী গাঙ্গুলি
- ১৮ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে ১০টি শেয়ারে বড় দরপতন