বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ০৯:৫৫:৩১
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক আইনি পরিবর্তনের প্রসঙ্গে যা রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সোমবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ উদ্বেগ ব্যক্ত করেন।

টুর্ক তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ শুরু হওয়া একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে এই আলোচনার ধারা গণতন্ত্রের পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মানসূচক করে তুলতে অর্থবহ এবং গভীর সংস্কারের জন্য আহ্বান জানান।

তবে তিনি তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাম্প্রতিক এমন এক আইনি সংশোধন নিয়ে, যা রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার আইনি ভিত্তি তৈরি করেছে। তার মতে, এ ধরনের আইন মৌলিক মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংগঠন গঠনের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার এই তিনটি অধিকার গণতন্ত্রের ভিত্তি। এসব অধিকারকে সীমাবদ্ধ করা হলে তা কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও সমালোচনামূলক চর্চার পথও রুদ্ধ করে দিতে পারে।

ফলকার টুর্ক বলেন, “সংগঠনের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক উপাদান নয়, এগুলো একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত। আমি উদ্বিগ্ন যে, বাংলাদেশে যে ধরনের আইনি পরিবর্তন আনা হয়েছে তা এই অধিকারগুলোকে অযথাভাবে খর্ব করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক বিরোধ বা মতভিন্নতা দমন করতে আইনের অপব্যবহার গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয় এবং জনআস্থা হ্রাস পায়। এই পরিস্থিতি একটি স্থিতিশীল সমাজ ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এই প্রেক্ষাপটে, হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সম্মান করে এবং মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন।

তাঁর এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল ইতোমধ্যে এই বিষয়টিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত