সম্পাদকীয়
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি

মঈন জামান
সম্পাদক

৩০ মে—এই তারিখটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক শোকগাথা, এক বেদনাবিধুর অধ্যায়। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক দেশি-বিদেশি চক্রান্তের শিকার হয়ে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে শহীদ হন একজন কিংবদন্তি রাষ্ট্রনায়ক—স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার এবং বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
আজ, তাঁর ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে যখন আমরা ফিরে দেখি তাঁর জীবনের প্রতিটি ধাপ—তখন চোখে পড়ে এক অনন্য জীবনের গাঁথা, যা শৈশবের নিরবতা থেকে শুরু হয়ে পৌঁছায় রাষ্ট্রনায়কত্বের চূড়ান্ত শিখরে। তাঁর শাহাদাৎ শুধু একজন রাষ্ট্রনায়কের জীবনাবসান নয়—এ ছিল আত্মনির্ভর, মর্যাদাশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সেই স্বপ্নের মৃত্যু, যার রূপকার তিনি নিজেই।
শৈশব, শিক্ষা ও সামরিক যাত্রার সূচনা
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি, বগুড়া জেলার গাবতলী থানার অন্তর্গত বাগবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। তাঁর জন্ম হয় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা মনসুর রহমান ছিলেন একজন উচ্চশিক্ষিত ও সম্মানিত সরকারি কেমিস্ট, যিনি কর্মরত ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতাতে।
জিয়ার শৈশব কাটে মূলত গ্রামবাংলার সহজ-সরল পরিবেশে। গ্রামীন জীবনের সরলতা, আত্মীয়তা, সংস্কার ও বাঙালিয়ানার গভীর ছোঁয়া তাকে একটি দৃঢ় মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। তাঁর মা জাহানারা খাতুন ছিলেন ধর্মভীরু, স্নেহময়ী এবং শিক্ষানুরাগী নারী, যিনি পুত্রের চারিত্রিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
পিতার বদলির কারণে তিনি পরবর্তীতে চলে যান কলকাতা, এবং সেখান থেকেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। এরপর পরিবার চলে যায় করাচি, যেখানে জিয়া মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা শেষ করেন। তরুণ বয়সেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও কর্তব্যবোধের প্রবল প্রকাশ দেখা যায়।
সামরিক জীবন: কঠোর অনুশীলন থেকে নেতৃত্বে উত্তরণ
১৯৫৩ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি (পিএমএ), কাকুল-এ ভর্তি হন। কঠোর অনুশীলন, একাগ্রতা ও শৃঙ্খলাবোধের মাধ্যমে ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন প্রাপ্ত হন। তাঁর সামরিক ক্যারিয়ার শুরু হয় সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে, কিন্তু দ্রুতই দক্ষতা, অধ্যবসায় ও সাহসিকতার মাধ্যমে তিনি সিনিয়র অফিসারদের আস্থা অর্জন করেন। তিনি ছিলেন নিরলস প্রশিক্ষক, বলিষ্ঠ কৌশলবিদ এবং একটি মিশন-ভিত্তিক ক্যারিয়ারের ধারক।
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমান ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তাঁর নেতৃত্বে কোম্পানিটি সীমান্ত যুদ্ধক্ষেত্রে যে সাহসিকতা দেখায়, তা আজও স্মরণীয়। তিনি শত্রুপক্ষের একাধিক আক্রমণ প্রতিহত করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে সেরা কোম্পানি হিসেবে নিজ ইউনিটকে প্রতিষ্ঠা করেন। এই অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একটি বিশেষ পিস্তল উপহার পান—যা তাঁর সাহস, দূরদৃষ্টি এবং কৌশলগত দক্ষতার প্রতীক হয়ে ওঠে। তাঁর অধীনস্থ সৈনিকেরা আজও তাঁকে একজন নেতার আদর্শ রূপ হিসেবে স্মরণ করেন।
১৯৭১: স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালীদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা ও মানুষের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি শুরু করলে জিয়া দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধে পরাজিত হলে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও সেদিন দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। স্ত্রী- সন্তানদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জানা সত্তেও জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য নিজ নামে জেড ফোর্স গঠন করেন। ২৬ মার্চ ভোররাতে তিনি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘোষণা দেন— “আমি মেজর জিয়া বলছি, আমি বাংলাদেশের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।” এই ঘোষণা ছিল প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক মুক্তিযুদ্ধের ডাক—যা দেশের জনগণকে সংঘবদ্ধ করে, সাহস জোগায়, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বিরত্বপুর্ণ অবদান রাখেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হলে লাল সবুজের পতাকায় শোভিত স্বাধীন দেশে তিনি পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে যান এবং ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে তিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান সরকার জিয়াউর রহমানকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করেন।
ক্ষমতার কেন্দ্রে 'প্রেসিডেন্ট জিয়া'
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিতট্রাজেডির পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ক্যু ও পাল্টা ক্যুর মাধ্যমে দেশ যখন চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকটে নিপতিত তখন জিয়াউর রহমান আবার দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব ও সংহতির মধ্যদিয়ে তিনি গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্ত হয়ে জনগনের আশা আকাংখার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পাদপিঠে আসীন করে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানিকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ বিনির্মানে'প্রেসিডেন্ট জিয়া'
একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ বিনির্মানে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কিছু গুরুত্ত্বপূর্ন অবদান তরুণ পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ
রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনর্গঠন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা:
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং পরবর্তী সেনা অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও সাংবিধানিক সংকটের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রযন্ত্র কার্যত ভেঙে পড়ে। জনগণ, প্রশাসন, এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যেও চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সর্বাগ্রে কাজ শুরু করেন রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক কাঠামোর পুনর্গঠনের দিকে। তিনি সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, শৃঙ্খলিত ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে পুনর্গঠন করেন এবং প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত অংশকে চিহ্নিত করে দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। একইসাথে, গ্রাম পর্যায়ে প্রশাসনকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় সরকার কাঠামোকে গণমুখী করে তোলেন। গ্রামের মানুষের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শহীদ জিয়া ১৯৭৬ সালে ভিডিপি বা গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠন করেন। সেদিনের সেই বাহিনী আজ গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা:
স্বাধীনতার পরে একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় গণতন্ত্র প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী তৎকালীন সরকার সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। বাকশাল প্রবর্তনে রুষ্ঠ সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনে ব্যাকুল ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জিয়াউর রহমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রথা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। গণমাধ্যমের উপর থেকে সকল কালাকানুন প্রত্যাহার করে মুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেন। শহীদ জিয়া ক্ষমতায় এসে প্রথম যে কাজটি করেন তা হলো—গণতন্ত্রকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা। তিনি রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন এবং সকল মত ও পথের মানুষের জন্য রাজনীতির দ্বার খুলে দেন। ১৯৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে তিনি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ফের সক্রিয় করে তোলেন। তাঁর সময়েই প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যা একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক দলের চেহারা পায় এবং বহুদলীয় রাজনৈতিক কাঠামোর ভিত শক্ত হয়।
কৃষি বিপ্লব ও খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন:
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি ছিল কৃষি। জিয়াউর রহমান এই সত্য অনুধাবন করে কৃষিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন। তাঁর শাসনামলে খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়। গ্রামে-গ্রামে খাল খনন করে শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সালের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে দেড় হাজারের বেশি খাল খনন করা হয়। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬ হাজার কিলোমিটার খাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খনন ও পুনঃখনন করা হয়। আর এ খাল খননের সরাসরি প্রভাব পড়েছিল কৃষিতে। এটা অপেক্ষাকৃত স্বল্পমূল্যের সেচসুবিধা ছিল কৃষকদের জন্য। ফলে অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যয় বহন করতে হয়নি কৃষকদের। শুধু সেচের আওতায় বৃদ্ধি নয়, গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্য সহায়তারও পথ খুলে দিয়েছিল খাল খনন কর্মসূচি। কার্যত খাল খনন কর্মসূচি একসঙ্গে অনেক সাফল্য অর্জনের একটি পরিকল্পিত কর্মসূচি ছিল। এর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। একইসাথে কৃষকদের জন্য সার, উন্নতমানের বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সহজলভ্য করা হয়। কৃষকদের উৎসাহিত করতে শুরু হয় প্রণোদনা কার্যক্রম। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে একদিকে খাদ্য উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির প্রয়োজন হ্রাস পেয়ে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যায়।
কৃষক যেন শস্য সংগ্রহের সময় তার ফসল বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য তিনি ১৯৭৮ সালে শস্য গুদাম ঋণ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্যের আপদকালীন মজুত গড়ে তোলার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। কৃষকদের শস্য উৎপাদনে উৎসাহিত করতে তিনি ভালো দামে তাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান-চাল ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। জিয়ার শাসনামলে ১৯৮০-১৯৮১ অর্থবছরে ধান/চাল সংগ্রহ অভিযানে রেকর্ড পরিমাণ (১.০৩ মিলিয়ন টন) চাল সংগ্রহ করা হয় (শাহাব উদ্দিন ও ইসলাম, ১৯৯১)। তার শাসনামলেই ধানের বাম্পার ফলনের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রথম চাল রপ্তানি করা হয়। তার গৃহীত কর্মসূচি ও নীতিমালার সুফল মাত্র দুই বছরের মধ্যেই দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছিল; যা দেশের সবুজ বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিল।
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন:
একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে শুধু ভাষাভিত্তিক ‘বাঙালি’ পরিচয়ে রাষ্ট্রীয় আদর্শকে সীমাবদ্ধ না রেখে, তিনি ভূখণ্ড, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সকল নাগরিকের পরিচয়ের ভিত্তিতে “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” দর্শনের প্রবর্তন করেন। এটি ছিল এক ধরনের অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রীয় চেতনা, যেখানে হিন্দু, মুসলিম, উপজাতি, বাঙালি ও অন্যান্য সকল ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের সমান নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, রাষ্ট্রীয় পরিচয় হতে হবে ভূখণ্ডনির্ভর, জাতিগত নয়। এই দর্শনই বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাম্প্রদায়িক সহনশীলতা এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি গড়ে দেয়।
অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা:
অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়া একটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়—এই বিশ্বাস থেকেই জিয়া ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নয়ন, গ্রামীণ অবকাঠামো এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগে শুরু হয় নদীশাসন, খাল ও নদী পুনঃখননের বৃহৎ প্রকল্প। এর মাধ্যমে পরিবহন খাতে পরিবর্তন আসে, এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নতুন যুগের সূচনা হয়। এছাড়া উপজেলা ভিত্তিক পরিকল্পনা পদ্ধতি চালু করে তিনি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও সমন্বিত উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেন। আজকের শিশু আগামীর রাস্ট্রনায়ক। তাইা শহীদ জিয়া শিশুদের মেধা বিকাশের জন্য ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ ও জনগণের দোরগোড়ায় রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা:
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা ছিল সীমিত ও শহরকেন্দ্রিক। গ্রামীণ জনপদের জনগণ ছিল প্রায় স্বাস্থ্যসেবার বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে শহীদ জিয়া গ্রহণ করেন জনমুখী স্বাস্থ্যনীতি, যার মূল লক্ষ্য ছিল স্বাস্থ্যসেবাকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়া। তাঁর শাসনামলে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। পাশাপাশি, তিনি টিকাদান কর্মসূচি, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা, এবং মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট চালু করেন, যা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের জন্য স্বাস্থ্যসেবাকে সহজলভ্য করে তোলে। চিকিৎসা ব্যবস্থাকে শুধু শহরকেন্দ্রিক হাসপাতালের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, তিনি চাইতেন প্রতিটি গ্রামে একজন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্যসেবার প্রাথমিক অবকাঠামো নিশ্চিত হোক। এই উদ্যোগগুলোর ফলে জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং দেশের স্বাস্থ্য সূচকের উন্নয়ন ঘটতে থাকে।
শিল্প ও বাণিজ্য খাতের বিকাশ:
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের শিল্প খাত প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় ছিল। শহীদ জিয়ার সময়েই এই খাতটি বেসরকারিকরণ, বিনিয়োগ, এবং বাজারমুখী অর্থনীতির দিকে ধাবিত হয়। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ঋণ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করেন। তৈরি পোশাক শিল্প, চামড়া শিল্প এবং হস্তশিল্পের প্রসারে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে গঠন করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড (BOI)। তাঁর সংস্কার পদক্ষেপের ফলেই পরবর্তী এক দশকে তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশে প্রধান রপ্তানি খাতে পরিণত হয়।
শিক্ষা, যুব উন্নয়ন ও মানবসম্পদ:
মানবসম্পদ উন্নয়ন ছিল শহীদ জিয়ার আরেকটি মূল অগ্রাধিকার। তিনি মনে করতেন, “শিক্ষা হতে হবে জাতীয় উন্নয়নের সরাসরি সহায়ক শক্তি।” সে উদ্দেশ্যে তিনি কারিগরি শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং গ্রামীণ যুব উন্নয়ন কেন্দ্র গড়ে তোলেন। নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এবং গবেষণামূলক শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি শিক্ষাকে প্রাসঙ্গিক ও বাস্তবভিত্তিক করে তোলেন। তাঁর সময়েই জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়, যেখানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করা হতো। যুব সমাজকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য ১৯৭৮ সালে তিনি দেশে প্রথমবারের মত যুব মন্ত্রনালয় চালু করেন। জেলায় জেলায় যুব কমপ্লেক্স চালু করে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তাদের স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায়্য করেন।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী আয়ের ভিত্তি রচনা:
বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈদেশিক কর্মসংস্থানকে একটি সংগঠিত রপ্তানি খাতে রূপান্তর করার কৃতিত্ব শহীদ জিয়াউর রহমানের। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, দেশের বিপুল শ্রমশক্তিকে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে পাঠিয়ে শুধু বেকারত্বই হ্রাস করা যাবে না, বরং তা হতে পারে জাতীয় আয়ের একটি অন্যতম উৎস। তাঁর শাসনামলে মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, লিবিয়া ও পূর্ব আফ্রিকায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়। এই কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াকে সংগঠিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং ব্যুরো (BMET), যা রেজিস্ট্রেশন, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা যাচাই ও বিদেশে পাঠানোর পূর্ব প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সমন্বয় করে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের কল্যাণে বিভিন্ন দূতাবাসে ওয়ার্কার্স উইলফেয়ার সেকশন চালু করা হয়। শহীদ জিয়ার এই উদ্যোগের ফলেই দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের সূচনা ঘটে, যা আজ বাংলাদেশ অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। বলা যায়, তিনি ছিলেন বাংলাদেশকে শ্রম রপ্তানিকারক দেশে রূপান্তরের পথিকৃৎ।
আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও বৈশ্বিক মর্যাদা:
শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে। তিনি ‘Bangladesh First’ নীতির ভিত্তিতে পশ্চিমা ও পূর্বপন্থী বলয়ের বাইরে থেকে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর সময়েই বাংলাদেশ OIC, NAM, SAARC, এবং UN-এর বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। তিনি আরব বিশ্ব, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন সাহায্য ও বিনিয়োগ আসে।
তিনি ক্ষমতায় এসেই ইন্দে-সোভিয়েত বলয় থেকে বের হয়ে আমেরিকা ও চীনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাতে তিনি সফলও হয়েছিলেন। তিনি তার সাহসী, চৌকস ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতির কারণে মুসলিম বিশ্বের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি তাঁর স্বল্প সময়ের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে একক মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভুমিকা পালন, আল কুদস কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া, ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন, ওআইসিকে একটি কার্যকরি সংগঠনে পরিনত করার ক্ষেত্রে শহীদ জিয়ার ভুমিকা মুসলিম বিশ্ব আজও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। তিনিই মুলত মুসলিম বিশ্বে শ্রমবাজার সৃষ্টি করে সরকারিভাবে কর্মী প্রেরণ করেন। শহীদ জিয়া দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ভু-রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টির জন্য সার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করেছিলেন। তাই তাঁকে সার্কের স্বপ্নগ্রষ্টা বলা হয়ে থাকে।
দেশকে যখন তিনি সামনের দিকে নিয়ে চলতে শুরু করেন সেই সময়ে তার বিরুদ্ধে শুরু হয় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। ১৯৮১ সালের ২৯ মে তিনি এক সরকারি সফরে চট্টগ্রামে যান। ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে গভীর রাতে একদল সেনাসদস্য তাকে হত্যা করে। বিপথগামী সেনাসদস্যরা তার লাশ চট্টগ্রামের রাউজানের গভীর জঙ্গলে কবর দেয়। তিন দিন পর ওই লাশ উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়, লাখ লাখ শোকার্ত মানুষ শেরেবাংলা নগরে তার জানাজায় শরিক হন। পরে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে তাকে সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও রাজনীতিকদের মধ্যে তিনিই অগ্রদূত যিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, মাঠেঘাটে, হেঁটে ছুটে বেড়িয়েছেন—কখনো লাঙল হাতে, কখনো কাস্তে হাতে; আবার কখনো কোদাল হাতে। জিয়া কৃষকের মাঠে গিয়ে কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছেন, সমস্যা জেনেছেন, কৃষকের সঙ্গে কাজে অংশ নিয়েছেন, কৃষকদের অনুপ্রাণিত ও জাগ্রত করেছেন। অত্যন্ত সৎ, নির্লোভ ও দূরদর্শী এ রাষ্ট্রনায়কের ডাকে জনগণ সাড়া দিয়েছিল ব্যাপকভাবে। তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে খাদ্য ঘাটতির দেশ পরিণত হয়েছিল খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ হিসেবে। আর এভাবেই জিয়া একজন জনবান্ধব রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, বরং প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিটি স্তরে তার ছাপ অমোচনীয়। তিনি ছিলেন জাতির প্রয়োজনে আবির্ভূত এক বাস্তববাদী, উদ্ভাবনী ও গণমুখী নেতা। তিনি নিজের কর্ম দিয়ে প্রমাণ করেন, শুধু স্বাধীনতা অর্জন নয়—একটি রাষ্ট্রকে গঠন করা, জনগণকে স্বনির্ভর করে তোলা এবং বিশ্বমঞ্চে মর্যাদার আসনে বসানোই প্রকৃত রাষ্ট্রনায়কের কাজ। আজ, ৪৪ বছর পরেও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি, সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন দর্শন বাংলাদেশে বহুলভাবে প্রাসঙ্গিক। তিনি কেবল একজন নেতা নন, তিনি ছিলেন রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি।প্রশ্ন একটাই—শহীদ জিয়ার অবদান, আদর্শ ও রাষ্ট্রদর্শনের উত্তরাধিকার তাঁর উত্তরসূরীরা কি সত্যিই বহন করতে পারবে?
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- নতুন নোটের ছবি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক