কারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, স্পষ্ট করল নির্বাচন কমিশন

নির্বাচন কমিশনের জারি করা সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ী আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক হিসেবে ঘোষিত কোনো ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদে বহাল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এসব জনপ্রতিনিধি নিজ নিজ পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করলে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে কর্মরত ব্যক্তিরাও পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। কেউ যদি একসঙ্গে তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হন, তাহলে তার দাখিল করা সব মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। মনোনয়নপত্র জমাদানের ক্ষেত্রেও কঠোর বিধান আরোপ করা হয়েছে। প্রার্থী নিজে অথবা তার প্রস্তাবক কিংবা সমর্থককে সশরীরে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলবে।
পরিপত্রে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানের ৬৬(১) ও ৬৬(২) অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হন এবং তার বয়স ন্যূনতম ২৫ বছর পূর্ণ হয়, তাহলে তিনি সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি এই যোগ্যতার আওতায় পড়বেন না।
এছাড়া যেসব ব্যক্তি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত ব্যক্তি, দেউলিয়া ঘোষিত হয়ে দায়মুক্ত না পাওয়া ব্যক্তি, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ বা আনুগত্য স্বীকারকারী ব্যক্তি এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যদি তার মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিক্রান্ত না হয়।
১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীনে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর পূর্ণ না হলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। দুর্নীতির অভিযোগে প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও পাঁচ বছর না পার হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। পাশাপাশি ঋণখেলাপি এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিসহ সরকারি সেবার বিল বকেয়া থাকা ব্যক্তিরাও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন না।
-রফিক
পরাজয় নিশ্চিত জেনে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে পাকিস্তানি বাহিনী
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর। বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা। চারদিকে বাঙালির বিজয় নিশান উড়ছে। পাকিস্তানকে রক্ষায় মরিয়া মার্কিন ও চীনের কূটনৈতিক চেষ্টাও ব্যর্থ করে দিয়েছে বাঙালির অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন। একাত্তরের রক্তঝরা এ দিনে পাকিস্তানের চলমান যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রাশিয়া তৃতীয় বারের মতো ভেটো দেয়। রাশিয়ার এই ভেটোতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ হয়ে না গেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্ন আরও দেরি হতো বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।
এদিকে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় যতই স্পষ্ট এবং ঘনিয়ে আসতে লাগল বুদ্ধিজীবী অপহরণের পরিমাণ ততই বাড়তে লাগল। একাত্তরের এই দিনে বিবিসির সংবাদদাতা নিজামউদ্দিন আহমদ এবং দৈনিক পূর্বদেশের শিফট ইনচার্জ এ এন গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে আলশামস ও আলবদর বাহিনী অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাঁরা আর কখনোই ফিরে আসেননি। বাংলাদেশ নামের দেশের অভ্যুদয় ঠেকাতে না পেরে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা ঘৃণ্য ও বর্বর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মেতে ওঠে।
যুদ্ধের মাঠেও চিত্র দ্রুত বদলাতে থাকে। দেশের বেশির ভাগ এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে ঢাকা দখলের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে এগোতে থাকে শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধজয়ের নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখে মিত্রবাহিনী যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করে জানমালের ক্ষতি কমিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। বালিগঞ্জে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের স্টুডিওতে বসে বার্তা বিভাগীয় প্রধান কামাল লোহানী আলী যাকের ও আলমগীর কবির ঘনঘন সংবাদ বুলেটিন পরিবেশন করে চলেছেন। আজ থেকে রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
উত্তর দিক থেকে জেনারেল নাগরার বাহিনী ও কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা এদিন সন্ধ্যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হালকা প্রতিরোধ ব্যর্থ করে কালিয়াকৈর পর্যন্ত এসে পৌঁছান। একই দিনে বাংলাদেশের নিয়মিত বাহিনীর প্রথম ইউনিট হিসেবে ২০ ইবি ঢাকার শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড়ে মুড়াপাড়ায় পৌঁছায়। তবে পূর্বদিকে ডেমরা ফেরির দিকে অগ্রসরমাণ ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানি প্রতিরোধের মুখে পড়ে। সমুদ্রপথে শত্রুদের পালানোর সুযোগ কমে যাওয়ায় ঢাকায় পাকিস্তানি হানাদারদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও দ্রুত বাড়ে।
ঢাকার আকাশ ভারতীয় বিমান বাহিনীর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে থাকায় তারা পাকিস্তানি সামরিক অবস্থানের ওপর তীব্র আক্রমণ চালাতে থাকে। পাকিস্তানি সেনানায়কদের মনোবল উঁচু রাখার সামান্যতম অবলম্বন কোথাও ছিল না। তাদের একমাত্র ভরসা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ। কিন্তু এ কাজেও ব্যর্থ যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক বৃহৎ নৌযান ২৪ ঘণ্টা নিশ্চল রাখার পর এদিন সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোতে শুরু করে। ইসলামাবাদ থেকে সামরিক কর্তারা ঢাকায় অবস্থানরত ঘাতকদের আশ্বস্ত করে বলছিল আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা কর পশ্চিম খণ্ডে ভারতীয় বাহিনীকে এমন মার দেওয়া হবে যে তারা নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য সেদিন আর আসেনি।
যুদ্ধজয়ের নিশ্চয়তা জেনেই বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এক বিবৃতিতে বলেন বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘের যেসব কর্মী ও বিদেশি নাগরিক নিরাপদে সরে আসতে চান বাংলাদেশ সরকার তাদের সম্ভাব্য সব রকমের সুযোগ সুবিধা দেবে। প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে মুক্তাঞ্চলে বেসামরিক প্রশাসন শুরু করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এবং আজ সাতক্ষীরার বেসামরিক প্রশাসন কাজ শুরু করে। শান্তি কমিটি ডা. মালিক মন্ত্রিসভা ও স্বাধীনতাবিরোধী দালালদের বেশির ভাগই অবস্থা বেগতিক দেখে গা ঢাকা দিলেও ঘাতক আলবদর চক্র তখনো সক্রিয় ছিল হত্যাযজ্ঞে।
তিন আসনে লড়ার স্বপ্ন যাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হতে পারে: জানাল ইসি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো ব্যক্তি একই সময়ে তিনটির অধিক নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হতে পারবেন না। শুক্রবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত জারি করা এক পরিপত্রে এই কঠোর নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১৩ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি একই সময়ে তিনটির বেশি নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হলে তাঁর সবগুলো মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে রাষ্ট্রীয় লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্র বা সরকার নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠানে সার্বক্ষণিক পদে থাকলে তা লাভজনক পদ হিসেবে গণ্য হবে এবং এ ধরনের ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে অযোগ্য হবেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদ জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রসহ বিভিন্ন সরকারি বা আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রার্থী হতে হলে নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগ করতে হবে।
প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও পরিপত্রে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৪৪খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নির্বাচনি এজেন্টকে বা এজেন্ট না থাকলে প্রার্থীকে নিজে তফসিলি ব্যাংকে একটি পৃথক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ব্যক্তিগত ব্যয় ব্যতীত নির্বাচন সংক্রান্ত সব ব্যয় এই অ্যাকাউন্ট থেকেই পরিশোধ করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় ব্যয়ের সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী এবং প্রার্থীর সম্পদ ও দায় দেনার বিবরণী দাখিল করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র দাখিলের নিয়মে বলা হয়েছে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট প্রার্থী প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী কর্তৃক সরাসরি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। ঢাকা চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীর নির্বাচনি এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার এবং অন্যান্য এলাকায় জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ছুটিসহ প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ ও গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচনে বাধ্যতামূলকভাবে ছবিসহ ভোটার তালিকা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পরিপত্রে বলা হয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমানে প্রণীত ছবিসহ ভোটার তালিকাই ব্যবহার করতে হবে। তবে প্রার্থী বা পোলিং এজেন্টরা ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করে মুদ্রণপূর্বক ব্যবহার করবেন।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। গত বৃহস্পতিবার রাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে পূর্বে প্রকাশিত সীমানা পুনঃনির্ধারণের প্রজ্ঞাপন আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে বাগেরহাট জেলায় একটি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং গাজীপুর জেলা থেকে একটি আসন কমানো হয়েছে। সংশোধনের পর মোট ৩০০ আসনের সীমানার হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হলো।
তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হলে বাতিল হবে সব মনোনয়ন
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধ ও শর্ত স্পষ্ট করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি একসঙ্গে তিনটির বেশি সংসদীয় আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না। নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সব মনোনয়নপত্র একযোগে বাতিল হয়ে যাবে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব বিধান আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। এতে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে লাভজনক বা নির্বাহী পদে থাকা যাবে না।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়ররা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দাখিলের আগে এসব পদ থেকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
এছাড়া সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশন কিংবা সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও নির্বাচনে অংশ নিতে হলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পদত্যাগ করতে হবে। একই নিয়ম বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
একাধিক আসনে প্রার্থিতার বিষয়ে ইসি স্পষ্ট করে জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ১৩(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি একসঙ্গে সর্বোচ্চ তিনটি নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থী হতে পারবেন। কেউ যদি একই সময়ে তিনটির বেশি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তাহলে সব আসনের জন্য জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী বাতিল বলে গণ্য হবে।
নির্বাচনী ব্যয় পরিচালনার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করেছে কমিশন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৪৪(খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে, প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য তফসিলি ব্যাংকে একটি পৃথক ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। প্রার্থী নিজে অথবা তার নির্বাচনি এজেন্ট এই হিসাব পরিচালনা করবেন।
নির্বাচনী প্রচারণা ও কার্যক্রমসংক্রান্ত সব ব্যয়, ব্যক্তিগত ব্যয় ব্যতীত, ওই নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব থেকেই পরিশোধ করতে হবে। ব্যাংকের বাইরে নগদ বা বিকল্প কোনো উপায়ে ব্যয় করলে তা আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীদের নির্দিষ্ট ফরমে বিভিন্ন তথ্য জমা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যয়ের সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী (ফরম-২০) এবং প্রার্থীর সম্পদ, দায়-দেনা ও বাৎসরিক ব্যয়ের বিবরণী (ফরম-২১)।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাচনে স্বচ্ছতা, সমতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা হবে। কোনো প্রার্থী নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে সতর্ক করা হয়েছে।
-শরিফুল
হাদির ওপর সশস্ত্র হামলায় মুখ খুললেন ডিএমপি কমিশনার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে গণমাধ্যমকে তিনি জানান, গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান বিন হাদি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মাথায় গুলি লাগার কারণে তিনি গভীর অচেতন অবস্থায় আছেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এই নৃশংস হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক ইউনিট মাঠে কাজ করছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। হামলাকারীরা যেখানেই আত্মগোপন করুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোড এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেলে করে আসা দুই অস্ত্রধারী রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. হারুন অর রশিদ জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলার সময় শরিফ ওসমান হাদির সঙ্গে আরেকজন ব্যক্তি ছিলেন। রিকশাটি কালভার্ট রোড এলাকায় পৌঁছামাত্র হামলাকারীরা কাছ থেকে গুলি চালায়। ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য ও হামলাকারীদের পরিচয় জানতে সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোশতাক আহমেদ জানান, মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারণে শরিফ ওসমান হাদি কোমায় চলে গেছেন। তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনকারীরা ঢামেক হাসপাতালে জড়ো হতে শুরু করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে ঘটনার নিন্দা জানান এবং আহত প্রার্থীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বর্তমানে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
-শরিফুল
ব্যালট পেপারে ভোট, সংসদ ও গণভোট আলাদা বাক্সে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। তার ঘোষণায় জানানো হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলা এ ভোটে প্রচলিত ব্যালট পেপার ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহৃত হবে। ভোটারদের সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের ব্যালট দুটি আলাদা ব্যালট বাক্সে প্রদান করতে হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর। এর পরদিন ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে সম্পন্ন হবে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই। প্রার্থীরা ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন। ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে এবং ২২ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা ভোট প্রচারণা শুরু করবেন।
সিইসি তার ভাষণে বলেন, একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই এ কমিশনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এজন্য ইতোমধ্যে নতুনভাবে তৈরি করা নির্ভুল ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হবে। বহু বছর ধরে কার্যকারিতা হারানো পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থাকেও পুনর্গঠন ও সক্রিয় করা হয়েছে, যাতে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সব ভোটার ভোটের সুযোগ পান।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ২৭৬ জন।
ভোটারদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ভোটদান কেবল নাগরিক অধিকার নয়, এটি একটি সম্মানিত দায়িত্ব এবং জনগণের প্রতি অর্পিত পবিত্র আমানত। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের ভোটাররা দায়িত্বশীলভাবে ও সচেতনতার সঙ্গে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবেন।
-শরিফুল
১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট, তফসিল ঘোষণা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দেশের প্রথম গণভোটের আনুষ্ঠানিক তফসিল প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন এ সময়সূচি ঘোষণা করেন, যা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সরাসরি প্রচারিত হয়। ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শেষ সময় ১১ জানুয়ারি, আর এসব আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত সময় ২০ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২১ জানুয়ারি, আর ২২ জানুয়ারি শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা, যা চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
দেশে এবারই প্রথম একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট হবে সাদা-কালো এবং গণভোটের ব্যালট হবে গোলাপি রঙের। ভাষণটি আগের দিন নির্বাচন ভবনে রেকর্ড করা হয়। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাত করে নির্বাচন প্রস্তুতির সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং রাষ্ট্রপতি তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সাক্ষাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিবসহ রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এবারও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার মুহূর্তে তিন লাখের বেশি প্রবাসী অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন বলে ইসি জানিয়েছে।
তফসিল ঘোষণার আগে আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে কয়েকটি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনে উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন। আদালতের নির্দেশে বাগেরহাটের চারটি আসন এবং গাজীপুরের একটি আসনের পূর্বঘোষিত কাঠামোকে অবৈধ ঘোষণা করে আইনি গেজেটে সংশোধন আনা হবে। হাইকোর্টও বাগেরহাটের চার আসন পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয় এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয়।
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিনের ব্যবধান বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ছিল। প্রথম সংসদ নির্বাচনে এ ব্যবধান ছিল ৬০ দিন, দ্বিতীয়তে ৫৪ দিন, তৃতীয়তে ৪৭ দিন, চতুর্থতে ৬৮ দিন এবং পঞ্চমে ৫২ দিন। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে ৩৯ দিন, সপ্তমে ৪৭ দিন, অষ্টমে ৪২ দিন, নবমে ৩৭ দিন এবং দশমে ৪২ দিন সময় রাখা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যবধান ছিল ৪৯ দিন। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তফসিল হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর এবং ভোটগ্রহণ হয় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি, মোট ৫৩ দিনের ব্যবধানে।
সেই নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ছিল ১৪ দিন, যাচাই-বাছাই ৪ দিন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় ছিল ১৩ দিন, আপিল ও নিষ্পত্তি ছিল ১১ দিনের মধ্যে। প্রতীক পাওয়ার পর প্রচারণার সময় ছিল ১৯ দিন।
-রফিক
শুক্রবার থেকে মেট্রোরেলের সব যাত্রীসেবা স্থগিত, জানুন বিস্তারিত
স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা চলতে থাকায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি এবং সব ধরনের যাত্রীসেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি মানার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন না করায় পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ডিএমটিসিএলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার এক যুগ পরেও প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৯০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য কোনো স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু হওয়ার পর থেকে তারা উন্মুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিয়ে দিনে–রাতে পরিশ্রম করে দায়িত্ব পালন করলেও ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট অ্যালাউন্স, ওভারটাইম, গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সসহ ন্যূনতম পেশাগত সুবিধাগুলো পাচ্ছেন না।
কর্মচারীরা জানান, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে সার্ভিস রুল চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। পরে ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীরা আন্দোলনে নামলে কর্তৃপক্ষ ২০ মার্চের মধ্যে চাকরি-বিধিমালা চূড়ান্ত করার আশ্বাস দেয়। তবে সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা হয়নি। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণায় উপনীত হয় তারা।
কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রতিদিন ডিএমটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি, যতদিন না চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হবে, ততদিন তাদের আন্দোলন থামবে না। ফলে শুক্রবার থেকে মেট্রোরেলের যাত্রীসেবায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
-শরিফুল
প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নিয়ে সুখবর!
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সিদ্ধান্তে নীতিগত সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশের মোট ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষক এখন থেকে দশম গ্রেড অনুযায়ী বেতন পাবেন। বুধবার ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা এক চিঠিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করে। সভায় জানানো হয়, আদালতের রিট পিটিশন অনুসরণ করে ইতোমধ্যেই ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল গ্রেড ১১ থেকে গ্রেড ১০ এ উন্নীত করে সরকারি আদেশ জারি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই বাকি ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড একইভাবে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা শাখা বিষয়টিতে সম্মতি জানায়। অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগও এই বিপুলসংখ্যক পদে বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে। আলোচনার পর সভায় সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি অনুমোদনযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রধান শিক্ষকদের বেতন কাঠামো উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়।
সম্মত সিদ্ধান্তে বলা হয়, গ্রেড উন্নীতকরণ বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং অর্থ বিভাগের দেওয়া শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
-শরিফুল
দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ গ্রহণ, ড. ইউনূসের আবেগঘন বার্তা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপস্থিত হয়ে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই পদত্যাগপত্র হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে তাদের দায়িত্ব–পর্ব আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়।
প্রেস সচিব আরও জানান, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এই পদত্যাগ কার্যকর হবে। উল্লেখ্য, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ছাত্রনেতা হিসেবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকা এই দুই উপদেষ্টার বিদায়কে নির্বাচনী পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংকেত হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দুই তরুণ উপদেষ্টার ভূমিকার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে তোমরা যে ভূমিকা রেখেছ, তা ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতিকে মুক্তির পথে একটি ঐতিহাসিক অবদান। জাতি তোমাদের সেই সাহস ও নেতৃত্ব কখনও ভুলবে না। তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিদায়ী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজকের দিনটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অন্তর্বর্তী সরকার তোমাদের অবদান চিরস্মরণীয় রাখবে। তিনি দুই জনের সাফল্যময় ভবিষ্যতের শুভকামনা জানিয়ে বলেন, এত অল্প সময়ে তোমরা যে অপরিমেয় অবদান রেখে গেছ, তা জাতির ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।
তিনি আরও যোগ করেন, এটি কেবল একটি রূপান্তর। আগামীতে জাতীয় পরিসরে আরও বৃহত্তর ভূমিকা রাখার জন্য তিনি দুই ছাত্রনেতাকে অনুপ্রাণিত করেন। পাশাপাশি সরকারের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা পরিষদে মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ দায়িত্ব পালন করছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রনেতাদের অংশগ্রহণ ছিল জুলাই আন্দোলনের প্রতীকী প্রতিনিধিত্ব, আর তাদের পদত্যাগ নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- কারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, স্পষ্ট করল নির্বাচন কমিশন
- নির্বাচন ও প্রার্থীর নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের কাছে মির্জা ফখরুলের জরুরি বার্তা
- ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শনিবারের নামাজের সঠিক সময়সূচি
- ঢাকায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হলো আজ
- বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের সব খেলার সময়সূচি
- সকালে বের হওয়ার আগে জেনে নিন আজ রাজধানীতে কোথায় কী হচ্ছে
- ভারত থেকে আমদানির খবরেও কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ
- পরাজয় নিশ্চিত জেনে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে পাকিস্তানি বাহিনী
- তিন আসনে লড়ার স্বপ্ন যাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হতে পারে: জানাল ইসি
- ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করেছে পুলিশ
- ওসমান হাদির ওপর হামলা দেশের অস্তিত্বের ওপর আঘাত: ডক্টর ইউনূস
- ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
- টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬: টিকিট বিক্রি শুরু, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে
- এশিয়া কাপে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান যেদিন
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
- ২৩ ছক্কায় বিধ্বস্ত প্রতিপক্ষ, ঝড় তুললেন এডওয়ার্ডস
- তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হলে বাতিল হবে সব মনোনয়ন
- নির্ধারিত সূচিতে জবি ভর্তি পরীক্ষা, কাল ‘ই’ ইউনিট
- হাদির ওপর সশস্ত্র হামলায় মুখ খুললেন ডিএমপি কমিশনার
- শরিফ ওসমান হাদী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামছে বিএনপি
- শরিফ হাদীর ওপর হামলায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তারেক রহমানের
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ
- যে আসনের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন আসিফ মাহমুদ
- শীতে গলা ব্যথা সারাতে কোন পানীয় সবচেয়ে উপকারী
- শীতে ত্বক ফাটা বন্ধ করতে ঘরোয়া সহজ উপায়
- আগামী কয়েক দিন কেমন থাকবে দেশের আবহাওয়া
- শেয়ারবাজারের সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ডলার–ইউরোসহ বিদেশি মুদ্রার নতুন দর প্রকাশ
- কত দামে মিলবে ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ? দেখুন দাম
- বিএনপি ধর্মের নামে বিভাজন চায় না: সালাহউদ্দিন
- শীতকালে সাইনাস বাড়লে ঘরে কী করবেন
- শুক্রবারে রাজধানীতে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ঠাসা, জেনে নিন তালিকা
- ভারতের ওপর আবারও ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ হল
- স্টার্কের রেকর্ডে অনুপ্রেরণা পেলেন শাহীন আফ্রিদি
- দক্ষিণ আফ্রিকার দাপটে ভারতের বড় হার চণ্ডীগড়ে
- দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- আজকের নামাজের সব সময়সূচি এক নজরে
- কর্মবিরতির ঘোষণার পর মেট্রোরেল চলাচল নিয়ে নতুন বার্তা
- ঢাকায় ভোরের হাওয়ায় আজ যেন নতুন বার্তা
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আজ শুরু, একটি আসনের জন্য লড়াই যতজনের
- শুক্রবার সূরা কাহাফ পড়লে যে সওয়াব লাভ হয়
- মুমিনের জন্য কুরআনের ৪ স্থায়ী আমল
- লটারিতে নির্বাচিতদের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে যেদিন থেকে
- তানোরে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার শিশুসাজিদ, কেমন আছে সে
- আইইউবিতে মঞ্চে ইবসেনের ‘হেলেন’, মুগ্ধ দর্শক
- শীতে ঘর গরম রাখার সহজ কৌশল, খরচ কম ফল বেশি
- গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন তৈরিতে ট্রাম্পের নতুন বোর্ড
- রিজার্ভ ফের শক্তিশালী, আমদানি ব্যয় মেটাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- যেভাবে জানা যাবে স্কুল ভর্তি লটারির ফল
- দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- স্কুলভর্তির ডিজিটাল লটারি শুরু, ফল প্রকাশের সময় জানা গেল
- রাজশাহীতে নলকূপে আটকে পড়া শিশুকে বের করতে সুরঙ্গ খনন
- দেশে ফেরা নিয়ে যা জানালেন সাকিব আল হাসান
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- আজকের রাশিফল: ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
- তানোরে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার শিশুসাজিদ, কেমন আছে সে
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আজ শুরু, একটি আসনের জন্য লড়াই যতজনের
- ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
- সপ্তাহের শুরুতে স্বর্ণের বাজার দর ও বিস্তারিত মূল্য তালিকা
- আজকের রাশিফল: ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- ৭ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান








