সরকারি চাকরি আইন সংশোধন: চার অপরাধে চাকরি হারানোর ঝুঁকি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২২ ১৭:৩৩:১৭
সরকারি চাকরি আইন সংশোধন: চার অপরাধে চাকরি হারানোর ঝুঁকি

সত্য নিউজ: ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই খসড়াটি নীতিগতভাবে অনুমোদন পায়। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের আইনি মতামতের (ভেটিং) ওপর ভিত্তি করে এই অনুমোদন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

তবে সংশোধিত খসড়ার বিস্তারিত বিষয়বস্তু সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো না হলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের খসড়া প্রস্তাবে যেসব বিষয় রয়েছে, তা ঘিরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

খসড়ায় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদাচরণজনিত চারটি কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো:-

১. অন্য কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ সৃষ্টি করা।

২. সমবেত বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা অযৌক্তিক কারণে কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত থাকা বা কর্তব্যে অবহেলা করা।

৩. অন্য কর্মচারীকে দায়িত্ব পালন না করতে উসকানি দেওয়া বা প্ররোচিত করা।

৪. অন্য কর্মচারীর কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করা।

এই চারটি অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে নিম্ন পদে অবনমন, চাকরি থেকে অপসারণ, বা বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সাড়ে চার দশক আগের পুরোনো বিধানগুলো কিছুটা নতুন ভাষায় পুনঃস্থাপন করেই এই খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যা ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’-এর একটি সংশোধিত রূপ।

বলা হচ্ছে, খসড়ায় ব্যবহৃত কিছু ধোঁয়াটে শব্দ যেমন—‘অনানুগত্য’, ‘উসকানি’, কিংবা ‘শৃঙ্খলা বিঘ্ন’—এই সংজ্ঞাগুলো ব্যাখ্যার সুযোগ রেখে দিয়েছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক ক্ষমতা থাকবে, যা চাকরিজীবীদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারি চাকরি সংশোধনের নামে এতে কর্মচারীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের অধিকার ও চাকরির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে- এমন মন্তব্য এসেছে বিভিন্ন প্রশাসনিক মহল ও বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকেও।

বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নযোগ্য কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। এই পর্যবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে দফাওয়ারি মতামত দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই পুরো প্রক্রিয়ায় সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবে।

আজকের বৈঠকে আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খসড়া অনুমোদন পেয়েছে:

১. প্রোটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫

২. বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস নৌ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির খসড়া

৩. জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫

এইসব প্রস্তাবও একইভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মতামত ও আইনি পর্যালোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত রূপ পাবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত