Banner

শীতে ঘরোয়া উপায়ে চুলের পূর্ণাঙ্গ যত্ন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:৫২:১৬
শীতে ঘরোয়া উপায়ে চুলের পূর্ণাঙ্গ যত্ন
ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল আমাদের চুল এবং ত্বকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ সময়। ঠাণ্ডা হাওয়া, শুষ্ক আবহাওয়া এবং ঘরের গরম পরিবেশ চুলের আর্দ্রতা কমিয়ে চুলকে ভঙ্গুর, রুক্ষ এবং দুর্বল করে তোলে। তাই শীতকালে নিয়মিত ও সচেতন চুলের যত্ন অপরিহার্য। ঘরে বসেই সামান্য যত্নে চুলকে রাখা যায় মসৃণ, কোমল এবং প্রাণবন্ত।

চুলে আর্দ্রতা যোগ করুন

শীতে চুলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আর্দ্রতা হারানো। আবহাওয়া যত শুষ্ক হয়, চুল ততই শক্ত, রুক্ষ এবং ভেঙে যায়। তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং পণ্য ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।

ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু

সাধারণ শ্যাম্পুর বদলে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা অক্ষুণ্ণ রাখে। মৃদু উপাদানযুক্ত শ্যাম্পু চুলকে পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তেল ধরে রাখতে সাহায্য করে।

সমৃদ্ধ কন্ডিশনার

প্রতিবার চুল ধোয়ার পরে পুষ্টিকর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এটি চুলের ক্ষতিগ্রস্ত স্তরকে মেরামত করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে চুল থাকে নরম, উজ্জ্বল এবং বাউন্সি।

চুলের মাস্ক

শীতকালে সপ্তাহে এক বা দুইবার গভীর পুষ্টিকর চুলের মাস্ক ব্যবহার করা খুবই উপকারী। বাজারে পাওয়া পুষ্টিকর মাস্কের পাশাপাশি ঘরোয়া মাস্কও বেশ কার্যকর। দই, কলা, মধু এবং নারকেল তেল দিয়ে তৈরি করা ঘরোয়া মাস্ক চুলে গভীর পুষ্টি জোগায় এবং আর্দ্রতা অনেকক্ষণ ধরে রাখে।

চুলের তেল এবং লিভ ইন কন্ডিশনার

হালকা তেল চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং শুষ্কতা কমায়। লিভ ইন কন্ডিশনার চুলকে সারাদিন নরম এবং আর্দ্র রাখে। বিশেষ করে যাঁরা বেণি বা প্রটেকটিভ স্টাইল করেন তাঁদের জন্য এটি খুবই কার্যকর।

শরীরকে আর্দ্র রাখুন

শীতে পানি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, ফলে শরীর যেমন শুষ্ক হয়, চুলও তেমন রুক্ষ হয়ে ওঠে। তাই নিয়মিত পানি পান করা চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়ক।

চুলকে পরিবেশের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিন

শীতকালে ঠাণ্ডা হাওয়া, ধুলোবালি এবং ঘরের শুষ্ক গরম পরিবেশ চুলের ক্ষতি বাড়িয়ে দেয়। তাই চুলকে যতটা সম্ভব পরিবেশগত ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন।

মাথা ঢেকে রাখুন

বাইরে বের হলে টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন। শীতের শুষ্ক বাতাস চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা নষ্ট করে। উলের টুপি ব্যবহার করলে এর ভেতরে সাটিন বা সিল্কের কাপড় লাগিয়ে নিতে পারেন যাতে চুলে ঘর্ষণ কম হয়।

বাড়িতে আর্দ্রতা বৃদ্ধি করুন

শীতের সময় ঘরের গরম পরিবেশ বাতাসকে শুষ্ক করে তোলে। এতে চুল এবং ত্বক আরও শুষ্ক হয়। ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করলে বাতাসে আর্দ্রতা ফিরে আসে যা চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন

অনেকেই শীতে গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়ার অভ্যাস করেন। কিন্তু খুব গরম পানি স্কাল্পের স্বাভাবিক তেল কমিয়ে দেয়। তাই চুল ধোয়ার সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।

ভেজা চুল নিয়ে বাইরে না যাওয়া

শীতকালে ভেজা চুল দ্রুত শক্ত হয়ে যায় এবং এতে চুলের ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে চুল পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।

ধোয়া এবং স্টাইলিং অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন

চুলের যত্নে সঠিক অভ্যাস বজায় রাখা খুব প্রয়োজন। শীতে এই অভ্যাসগুলো আরও সচেতনভাবে পালন করতে হবে।

চুল ধোয়ার সংখ্যা কমান

বারবার শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল কমে যায়। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবারের বেশি চুল ধোয়া উচিত নয়।

হিট স্টাইলিং কমান

ব্লো ড্রায়ার, স্ট্রেইটনার এবং কার্লিং টুল চুলকে শুষ্ক করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই যতটা সম্ভব চুল প্রাকৃতিকভাবে শুকাতে দিন এবং হিট স্টাইলিং কম ব্যবহার করুন।

নিয়মিত চুল কাটুন

শীতকালে চুলের ডগা ছেঁড়া বেশি দেখা যায়। তাই ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরপর চুলের ডগা ছেঁটে নিলে চুল থাকে স্বাস্থ্যকর, সুশৃঙ্খল এবং ভঙ্গুরতা কমে।

শীতকালে চুলের জন্য অতিরিক্ত টিপস

  • সাটিন বা সিল্কের বালিশকভার ব্যবহার করুন যাতে ঘর্ষণ কম হয়।
  • চুলে কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা কমিয়ে দিন, কারণ এগুলো চুলকে আরও শুষ্ক করে।]
  • অতিরিক্ত চিরুনি ব্যবহার করবেন না, এতে ভঙ্গুরতা বাড়ে।
  • দিনে বেণি বা বান ধরনের স্টাইল করলে চুল কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শীতকালে চুলের যত্ন নেওয়া মানে শুধু এক বা দুইটি পণ্য ব্যবহার করা নয়। বরং এটি একটি সামগ্রিক যত্ন পদ্ধতি যেখানে আর্দ্রতা যোগ করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এই গাইডে বর্ণিত প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করলে শীতেও আপনার চুল থাকবে নরম, উজ্জ্বল, মসৃণ এবং সুস্থ।


প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন বাড়ানোর সেরা খাবার

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩১ ১২:২৬:১১
প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন বাড়ানোর সেরা খাবার
ছবি: সংগৃহীত

অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই ওজন কম থাকা একটি বাস্তব সমস্যা, যা শারীরিক দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং কর্মক্ষমতা হ্রাসের কারণ হতে পারে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়িয়ে ওজন বাড়াতে হলে ক্যালোরি-সমৃদ্ধ কিন্তু প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার বেছে নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। এই ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট ফল ও সবজি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

কেন ফল ও সবজি ওজন বাড়াতে সহায়ক

ফল ও সবজিতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা, জটিল কার্বোহাইড্রেট, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ভিটামিন–মিনারেল শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি জোগায়। নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে এগুলো গ্রহণ করলে শরীর ধীরে ধীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চয় করতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। তবে এগুলো অবশ্যই সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা জরুরি।

যেসব ফল স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

কলা

কলায় রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি, যা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়। নিয়মিত কলা খেলে শরীরের শক্তির চাহিদা পূরণ হয় এবং ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডোকে ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ফলগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ক্যালোরি রয়েছে, যা হৃদযন্ত্রের জন্যও উপকারী।

আম

মিষ্টি স্বাদ ও উচ্চ ক্যালোরির কারণে আম ওজন বাড়াতে সহায়ক। এতে প্রাকৃতিক শর্করা থাকায় এটি শরীরের শক্তি ও ওজন দুটোই বাড়াতে পারে।

কাঁঠাল

কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর শর্করা ও ক্যালোরি। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

শুকনো ফল

খেজুর, কিশমিশ, এপ্রিকট, আলুবোখারা ইত্যাদি শুকনো ফলে ক্যালোরি ও পুষ্টিগুণ ঘন আকারে থাকে। অল্প পরিমাণেই এগুলো শরীরে বেশি শক্তি যোগাতে সক্ষম, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক।

ডালিম

ডালিমে প্রাকৃতিক শর্করা ও ক্যালোরির পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরকে সুস্থ রেখে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ওজন বাড়াতে সহায়ক স্টার্চি সবজি

শুধু ফলই নয়, কিছু সবজিও ওজন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, বিশেষ করে যেগুলোতে শর্করা ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি।

আলু ও মিষ্টি আলু

এই দুটি সবজিতে উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি রয়েছে, যা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

কচু (লতি ও মুখি)

কচু জাতীয় সবজিতে শর্করা, ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকায় নিয়মিত খেলে ওজন বাড়তে পারে।

ভুট্টা

ভুট্টা ক্যালোরি ও শর্করায় সমৃদ্ধ, যা শক্তি জোগানোর পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

মটরশুঁটি

মটরশুঁটিতে প্রোটিন ও সামান্য ফ্যাট থাকে, যা পেশি গঠনের পাশাপাশি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

অ্যাভোকাডো (সবজি হিসেবেও ব্যবহৃত)

ফ্যাট ও ক্যালোরিতে ভরপুর হওয়ায় এটি ওজন বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

সতর্কতা ও পুষ্টিবিদদের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে শুধু খাবারের ধরন নয়, রান্নার পদ্ধতি ও পরিমাণও গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত তেল-মশলা ব্যবহার বা অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই ফল ও সবজি পরিমিত পরিমাণে, নিয়মিত এবং সুষম খাদ্যতালিকার অংশ হিসেবে গ্রহণ করাই সর্বোত্তম উপায়।


ফুলকপি খাওয়ার যত উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩১ ১১:০৩:০৪
ফুলকপি খাওয়ার যত উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল এলেই বাজার ভরে ওঠে নানান পুষ্টিকর সবজিতে, যার মধ্যে ফুলকপি অন্যতম জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর একটি নাম। দেখতে সাধারণ হলেও পুষ্টিগুণের দিক থেকে ফুলকপি সত্যিকারের একটি সুপারফুড। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, ফোলেট, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

ফুলকপির সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো হজমশক্তি বাড়ানো। এতে থাকা উচ্চমাত্রার খাদ্যআঁশ অন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত হজমজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের খাদ্যতালিকায় ফুলকপি রাখা বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও ফুলকপির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করে তোলে। শীতকালে সর্দি-কাশি বা মৌসুমি অসুখ এড়াতে নিয়মিত ফুলকপি খাওয়া উপকারী।

হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিন হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং বয়সজনিত হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ ও নারীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।

হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার ক্ষেত্রেও ফুলকপি কার্যকর। এতে থাকা ফাইবার ও প্রদাহনাশক উপাদান শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে, ফলে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি হ্রাস পায়। নিয়মিত সবজি গ্রহণের অংশ হিসেবে ফুলকপি হার্টের জন্য নিরাপদ খাদ্য।

ক্যান্সার প্রতিরোধে ফুলকপির বিশেষ ভূমিকার কথাও উল্লেখযোগ্য। এতে থাকা সালফোরাফেন ও গ্লুকোসিনোলেট নামক প্রাকৃতিক যৌগ ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রতিহত করতে সহায়তা করে বলে গবেষণায় জানা গেছে। বিশেষ করে স্তন, কোলন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ফুলকপি উপকারী হতে পারে।

যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য ফুলকপি আদর্শ একটি খাদ্য। এতে ক্যালোরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি, ফলে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় খাওয়ার প্রবণতা কমায়। ডায়েট মেনে চলার সময় ভাত বা কার্বোহাইড্রেটের বিকল্প হিসেবেও ফুলকপি ব্যবহার করা যায়।

চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও ফুলকপির অবদান রয়েছে। সালফোরাফেন চোখের রেটিনা ও কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে, যা ছানি ও বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফুলকপি নিরাপদ একটি সবজি। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এবং ফাইবার বেশি হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়তে দেয় না। পাশাপাশি এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতেও সহায়ক।

ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও ফুলকপি ভূমিকা রাখে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক উপাদান ফুসফুসের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং ডায়াবেটিসজনিত রক্তনালীর ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।

তবে সব ভালো জিনিসের মতো ফুলকপিও পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত ফুলকপি খেলে কিছু মানুষের গ্যাস, পেট ফাঁপা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ভারসাম্য বজায় রেখে রান্না করে বা সেদ্ধ করে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।

সব মিলিয়ে বলা যায়, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী এই সবজিটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর পায় বহুমুখী সুরক্ষা। শীতের এই সময়ে ফুলকপি হতে পারে সুস্থ থাকার একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপায়।


দাঁত সাদা করার ঘরোয়া টোটকা কি বিপদ ডেকে আনছে: যা বলছেন চিকিৎসকরা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ২০:৩৯:১৯
দাঁত সাদা করার ঘরোয়া টোটকা কি বিপদ ডেকে আনছে: যা বলছেন চিকিৎসকরা
ছবি : সংগৃহীত

হাসিমুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সুস্থ দাঁতের বিকল্প নেই। তবে আধুনিক জীবনযাত্রায় দাঁতের নানা জটিলতা, বিশেষ করে এনামেল ক্ষয়ের সমস্যা এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দাঁতের উপরিভাগের এই শক্ত প্রতিরক্ষা স্তর বা এনামেল একবার নষ্ট হয়ে গেলে তা আর প্রাকৃতিকভাবে ফিরে আসে না। অবাক করার বিষয় হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাইরের কোনো আঘাত নয় বরং আমাদের দৈনন্দিন কিছু অবহেলিত অভ্যাসই নীরবে দাঁত নষ্ট করে দিচ্ছে।

দাঁতের ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে অতিরিক্ত জোরে ব্রাশ করার ভুল প্রবণতাকে চিহ্নিত করেছেন দন্তচিকিৎসকরা। অনেকের মধ্যে এমন একটি ধারণা প্রচলিত যে, জোরে ঘষলে দাঁত বেশি সাদা ও পরিষ্কার হবে। বাস্তবে শক্ত ব্রাশ ব্যবহার বা অতিরিক্ত চাপ দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল ক্রমশ পাতলা হতে থাকে। এর ফলে দাঁত অতিসংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং ঠান্ডা বা গরম খাবারে শিরশিরানি অনুভব হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সর্বদা নরম ব্রাশ ব্যবহার করা এবং বৃত্তাকার গতিতে আলতোভাবে ব্রাশ করা উচিত।

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনও দাঁতের স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরণের প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে ফিজি ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংক এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারের আধিক্য দাঁতের এনামেলকে সরাসরি আক্রমণ করে। এসব পানীয়তে থাকা অ্যাসিড দাঁতের খনিজ উপাদানগুলোকে গলিয়ে ফেলে। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান না করার ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয়ে গেলে লালা নিঃসরণ কমে যায়। লালা মূলত দাঁতের জন্য একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে যা ক্ষতিকারক অ্যাসিডের প্রভাব প্রশমিত করে। তাই দাঁত সুস্থ রাখতে চিনিযুক্ত খাবারের বদলে প্রচুর পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি।

সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথাকথিত ‘ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁত সাদা করা’র কৌশলগুলো নিয়েও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। লেবুর রস বা বেকিং সোডা ব্যবহার করে সাময়িকভাবে দাঁত ঝকঝকে মনে হলেও, এগুলো দীর্ঘমেয়াদে এনামেলের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে। দীর্ঘস্থায়ী ও উজ্জ্বল হাসির জন্য ঘরোয়া টোটকার পরিবর্তে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক মুখগহ্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র পথ। সচেতনতাই পারে আপনার অমূল্য দাঁতকে অকাল ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে।


প্রতিদিনের প্লেটেই লুকিয়ে আছে সুস্থ ভবিষ্যৎ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১৩:৪০:৫১
প্রতিদিনের প্লেটেই লুকিয়ে আছে সুস্থ ভবিষ্যৎ
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকা এখন আর কেবল ব্যায়ামের ওপর নির্ভরশীল নয়; বরং প্রতিদিন আমরা কী খাচ্ছি, কখন খাচ্ছি এবং কীভাবে খাচ্ছি এই তিনটি বিষয়ই আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মূল নিয়ামক হয়ে উঠেছে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটের আধিক্য রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে, শক্তি কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য কঠোর ডায়েট নয়, বরং সচেতন ও টেকসই খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাই সবচেয়ে কার্যকর কৌশল।

সকালের খাবারকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলা হয়। শুধুমাত্র রুটি, সিরিয়াল বা ফল দিয়ে দিন শুরু করলে দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়ে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই ক্লান্তি ও ক্ষুধা ফিরে আসে। তাই সকালের খাবারে প্রোটিন যুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। ডিম, দই, ডাল, বাদাম বা বীজের সঙ্গে শাকসবজি বা গোটা শস্য যুক্ত হলে হজম ধীর হয়, শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং মনোযোগ বাড়ে।

প্রতিটি খাবারে ভারসাম্য কেন জরুরি

একটি স্বাস্থ্যকর খাবার মানে শুধু কম খাওয়া নয়, বরং সঠিক অনুপাতে খাওয়া। কার্বোহাইড্রেট শক্তির উৎস হলেও একে একা খেলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বাড়ে। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবারের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে এই শোষণ ধীর হয়।

  • কার্বোহাইড্রেট: শক্তির জন্য
  • প্রোটিন: পেশি ও হরমোনের ভারসাম্যের জন্য
  • স্বাস্থ্যকর চর্বি: দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে
  • ফাইবার: রক্তে চিনির ওঠানামা কমাতে

ফাইবার: নীরব স্বাস্থ্যরক্ষক

ফাইবার বা আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি খাবারের পর রক্তে শর্করার তীব্র বৃদ্ধি রোধ করে এবং দীর্ঘসময় তৃপ্তি দেয়। শাকসবজি, ফলের খোসা, ডাল, লেবু ও গোটা শস্য নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে।

খাবার বাদ দেওয়া নয়, সময় মেনে খাওয়া জরুরি

অনেকেই ওজন কমানোর আশায় খাবার বাদ দেন। কিন্তু এতে উল্টো ফল হয়—রক্তে শর্করা কমে গিয়ে পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে অল্প অল্প করে খেলে গ্লুকোজের ভারসাম্য বজায় থাকে, হঠাৎ ক্ষুধা কমে এবং সারাদিন শক্তি নিয়ন্ত্রিত থাকে।

খাবারের মাঝে কী খাবেন

বিস্কুট, চিপস বা মিষ্টি জাতীয় খাবার রক্তে শর্করার দ্রুত ওঠানামার কারণ হয়। এর পরিবর্তে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, বীজ, সেদ্ধ ডিম, দই বা ভাজা ডাল বেছে নিলে শক্তি স্থির থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাকিং কমে।

পানি ও সচেতন খাওয়ার অভ্যাস

অনেক সময় আমরা তৃষ্ণাকে ক্ষুধা ভেবে ফেলি। পর্যাপ্ত পানি পান হজম, ত্বক ও শক্তির জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া, ভালো করে চিবানো এবং খাবারের সময় মোবাইল বা টিভি এড়িয়ে চলা তৃপ্তি বাড়ায় ও অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।

ঘরোয়া খাবার ও কম প্রক্রিয়াজাত খাদ্য

বাড়িতে রান্না করা খাবারে লবণ, চিনি ও তেলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার কমালে প্রদাহ, হরমোনের অস্থিরতা ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।

সুস্থ থাকার জন্য একদিনে সব বদলে ফেলার প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট পরিবর্তন সকালে প্রোটিন যোগ করা, ফাইবার বাড়ানো, সময়মতো খাওয়া ও পানি পান এই অভ্যাসগুলোই ধীরে ধীরে শরীর ও মনকে সুস্থতার পথে এগিয়ে নেয়। খাদ্য যখন জীবনধারার অংশ হয়ে ওঠে, তখন সুস্থতা আর লক্ষ্য নয় বরং স্বাভাবিক বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়।


ডায়াবেটিস ওঠানামা ঠেকাতে কী খাবেন প্রতিদিন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১২:৫০:২৭
ডায়াবেটিস ওঠানামা ঠেকাতে কী খাবেন প্রতিদিন
ছবি: সংগৃহীত

রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখা বর্তমানে শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয়, বরং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সবার ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেক পরিবারেই দেখা যায়, ঘুমানোর আগে কিংবা খাবারের পর কেউ না কেউ গ্লুকোমিটার হাতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করছেন। ক্লান্তি, হঠাৎ ক্ষুধা, মনোভাবের অস্বাভাবিক পরিবর্তন কিংবা অকারণ মানসিক চাপ এসবই অনেক সময় রক্তে শর্করার ওঠানামার নীরব সংকেত হতে পারে, এমনকি যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের ক্ষেত্রেও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের পর শরীরে দ্রুত শক্তি কমে যাওয়া এবং অস্বাভাবিক ক্ষুধা অনুভব হওয়া মূলত রক্তে গ্লুকোজের দ্রুত বৃদ্ধি ও পতনের ফল। তবে আশার কথা হলো প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু সচেতন পরিবর্তন আনলেই রক্তে শর্করার এই অস্থিরতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

১. শুধু কার্বোহাইড্রেট নয়, প্রোটিন দিয়ে দিন শুরু করুন

সকালের নাস্তায় কেবল টোস্ট, সিরিয়াল বা ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে আবার দ্রুত নেমে যেতে পারে। প্রোটিন যুক্ত করলে হজমের গতি ধীর হয় এবং শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সকালের খাবারে ডিম ও সবজি, দইয়ের সঙ্গে বাদাম বা বীজ, কিংবা ডাল, বিনস ও গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

২. প্রতিটি খাবারে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখুন

কার্বোহাইড্রেট একাই খেলে রক্তে শর্করার আকস্মিক স্পাইক দেখা দেয়। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ফাইবারের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে রক্তে প্রবেশ করে। শক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট, ইনসুলিন নিঃসরণ স্থিতিশীল রাখতে প্রোটিন, দীর্ঘ সময় তৃপ্তির জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং চিনির শোষণ কমাতে ফাইবার—এই চারটির সমন্বয়ই আদর্শ খাবারের ভিত্তি।

৩. খাবার এড়িয়ে না গিয়ে নির্দিষ্ট বিরতিতে খান

অনেকে ওজন কমানোর আশায় কিংবা ব্যস্ততার কারণে খাবার বাদ দেন, যা রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে। দীর্ঘ সময় না খেলে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ কমে যায় এবং পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। নিয়মিত বিরতিতে খাওয়ার অভ্যাস রক্তে শর্করা স্থিতিশীল রাখে এবং সারাদিন শক্তির সুষম সরবরাহ নিশ্চিত করে।

৪. নাস্তার সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন

খাবারের ফাঁকে বিস্কুট, কেক বা মিষ্টিজাতীয় খাবার রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায়। এর পরিবর্তে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, বীজ, সেদ্ধ ডিম, দই বা ভাজা ডাল গ্রহণ করলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং হঠাৎ ক্ষুধা কমে।

৫. প্রতিটি খাবারে ফাইবার বাড়ান

আঁশ বা ফাইবার রক্তে চিনির শোষণ ধীর করে এবং খাবারের পর গ্লুকোজের তীব্র ওঠানামা প্রতিরোধে সহায়তা করে। পাশাপাশি এটি দীর্ঘ সময় তৃপ্তি দেয়। শাকসবজি, খোসাসহ ফল, লেবু জাতীয় খাবার এবং গোটা শস্য ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত ও সুষম খাদ্যাভ্যাসই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। ছোট ছোট অভ্যাসগত পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে বড় স্বাস্থ্যগত সুফল এনে দিতে পারে।


শীতে সুস্থ থাকতে কেন দিন শুরু করবেন গরম পানি দিয়ে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৯:২০:২৭
শীতে সুস্থ থাকতে কেন দিন শুরু করবেন গরম পানি দিয়ে
ছবি : সংগৃহীত

শীতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে তাপমাত্রা কমে গিয়ে হাইপোথার্মিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে, এমনকি অনেকের হাতের আঙুল নীল হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের শারীরিক জটিলতা এড়াতে নিয়মিত কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। এটি কেবল শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে না, বরং শীতকালীন ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হওয়া সর্দি, কাশি ও গলাব্যথা কমাতেও দারুণ স্বস্তি দেয়।

কুসুম গরম পানির বহুমুখী উপকারিতার মধ্যে হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করা অন্যতম। শীতকালে সাধারণত মানুষের হজমশক্তি কিছুটা কমে যায়, যা পেট ফাঁপা ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা তৈরি করে। সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে বিপাকক্রিয়া বা মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, যা ওজন কমাতে এবং বাড়তি ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি শরীরের ভেতরে জমে থাকা বিষাক্ত টক্সিন বের করে দিয়ে লিভার ও কিডনিকে সতেজ রাখে এবং রক্ত সঞ্চালনের গতি বাড়ায়।

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়ও গরম পানির ভূমিকা অতুলনীয়। শীতের ঠান্ডা পানিতে অনেকের দাঁতে শিরশিরানি বা ব্যথা বাড়ে, যা কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করলে সহজেই উপশম হয়। পাশাপাশি এটি সাইনাস ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অস্বস্তি দূর করে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কুসুম গরম পানি রাখলে শরীর যেমন হাইড্রেটেড থাকে, তেমনি ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ে।


আঙুল ফোটানোর শব্দ নিয়ে কয়েক দশকের ভুল ভাঙল আধুনিক গবেষণায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৯:০৮:৫৭
আঙুল ফোটানোর শব্দ নিয়ে কয়েক দশকের ভুল ভাঙল আধুনিক গবেষণায়
ছবি : সংগৃহীত

আঙুল ফোটানোর অভ্যাসে হাড় মোটা হয়ে যাওয়া বা ভবিষ্যতে আর্থ্রাইটিস হওয়ার যে ভয় আমাদের দেখানো হয়, তা আসলে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন। বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, আঙুল বা পায়ের পাতা ফোটানোর সময় যে শব্দ তৈরি হয়, তা হাড়ের ঘর্ষণ বা তরুণাস্থির কোনো ক্ষতি থেকে হয় না। ২০১৫ সালে এমআরআই ইমেজিং ব্যবহার করে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, হাড়ের সন্ধিস্থল টানা বা প্রসারিত করলে সেখানে চাপ হঠাৎ কমে যায়।

আমাদের হাড়ের জোড়ায় সিনোভিয়াল ফ্লুইড নামে এক ধরণের পিচ্ছিল তরল থাকে। হাড়ের ফাঁকা জায়গা হঠাৎ বেড়ে গেলে সেখানে গ্যাসের একটি শূন্যস্থান বা বুদবুদ তৈরি হয়, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ট্রাইবোনিউক্লিয়েশন’ বলা হয়। এই বুদবুদ তৈরি হওয়ার মুহূর্তেই সেই পরিচিত ‘ফটফট’ শব্দ শোনা যায়। গবেষকরা একে অনেকটা ভ্যাকুয়াম বা শূন্যস্থান তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হয়—এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতে বিজ্ঞানী ডোনাল্ড উঙ্গার এক অনন্য পরীক্ষা চালিয়েছেন। তিনি টানা ৫০ বছর তাঁর বাঁ হাতের আঙুল দিনে দুবার করে ফোটালেও ডান হাতের আঙুল কখনোই ফোটাননি। দীর্ঘ পাঁচ দশক পর তিনি প্রমাণ করেন যে, দুই হাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই এবং কোনো হাতেই আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এই গবেষণার জন্য তিনি ২০০৯ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আইজি নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভ্যাস অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, তবে এটি হাড়ের কোনো ক্ষতির ইঙ্গিত দেয় না।


শীতের সুপারফুড মূলার অজানা উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৩:৪৬:৪৪
শীতের সুপারফুড মূলার অজানা উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুম মানেই টাটকা শাকসবজি, আর এই তালিকায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি হলো মূলা। ঝাঁঝালো স্বাদ ও পানিসমৃদ্ধ এই মূলজাতীয় সবজিটি শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, বরং মানবদেহে বহুমুখী স্বাস্থ্য উপকারও এনে দেয়। খাদ্যতালিকায় নিয়মিত মূলা যুক্ত করলে ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হৃদ্‌স্বাস্থ্য, হজম ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মূলা কেন এত উপকারী

মূলা (বৈজ্ঞানিক নাম Raphanus sativus) সরিষা পরিবারভুক্ত একটি সবজি। সাধারণত লালচে খোসা ও ভেতরে সাদা অংশবিশিষ্ট এই সবজিটি বাজারে বেশি দেখা যায়। এতে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন, খনিজ ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

১. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক

গবেষণায় দেখা গেছে, মূলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও উদ্ভিজ্জ সক্রিয় উপাদান রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণের হার কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তি বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে।

২. লিভার সুস্থ রাখতে কার্যকর

প্রাণীভিত্তিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, মূলায় থাকা গ্লুকোসিনোলেট ও আইসোথায়োসায়ানেট নামের যৌগ লিভারের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া মূলার লাল রঙের জন্য দায়ী অ্যান্থোসায়ানিন এবং কোএনজাইম কিউ১০ লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

৩. ক্যানসার প্রতিরোধে সম্ভাবনাময় খাদ্য

মূলার ঝাঁঝালো স্বাদের পেছনে থাকা কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে মূলার বীজে থাকা সালফোরাফেন কোষের ক্ষতিকর বৃদ্ধি দমন করতে সক্ষম হতে পারে।

৪. ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা

ল্যাবরেটরি পর্যায়ের গবেষণায় মূলার নির্যাস Candida albicans নামক ছত্রাকের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এটি মানবদেহে সরাসরি প্রয়োগযোগ্য কিনা, তা নিশ্চিত করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন, তবু ফলাফল আশাব্যঞ্জক।

৫. হৃদ্‌স্বাস্থ্য ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

মূলার পাতায় থাকা কিছু নির্যাস রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ কিছু জাতের মূলায় থাকা ট্রিগোনেলিন নামের উদ্ভিজ্জ উপাদান রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৬. হজমশক্তি ও অন্ত্রের সুস্থতায় উপকারী

প্রাচীনকাল থেকেই পেটের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরসনে মূলার ব্যবহার প্রচলিত। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, মূলার পলিস্যাকারাইড উপাদান প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, যা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বাড়ায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।

৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

মূলার নির্যাস শরীরের প্রতিরক্ষা কোষ যেমন টি-সেল, বি-সেল ও ইমিউনোগ্লোবুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণসহ নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।

৮. ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক সমাধান

মূলায় থাকা পলিফেনল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ও দূষণের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এসব উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক।

পুষ্টিগুণে ভরপুর মূলা

ইউএসডিএ অনুযায়ী, আধা কাপ কাঁচা কাটা মূলায় থাকে মাত্র ৯ ক্যালরি। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পানি, আঁশ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। কম ক্যালরির হওয়ায় এটি ডায়েট অনুসরণকারীদের জন্যও উপযোগী।

কীভাবে খাবেন মূলা

মূলা কাঁচা সালাদে, রান্নায়, ভাজি, স্যুপ কিংবা আচার হিসেবেও খাওয়া যায়। অনেকেই মূলার শাক ফেলে দিলেও গবেষণায় দেখা গেছে, এর পাতা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যে বিশেষ উপকারী।

সতর্কতা ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  • সরিষা পরিবারভুক্ত সবজিতে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে মূলা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে
  • অতিরিক্ত কাঁচা মূলা খেলে কিছু মানুষের থাইরয়েড কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে
  • গর্ভবতী নারীদের কাঁচা মূলা বা কাঁচা অঙ্কুর খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে

গাজর খেলেই সুস্থতা, জানুন ৫টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৩:০১:১২
গাজর খেলেই সুস্থতা, জানুন ৫টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শীত এলেই বাজারে ভরপুর হয়ে ওঠে কচকচে, মিষ্টি ও রসালো গাজর। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক-সব বয়সী মানুষের কাছেই এই সবজিটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টিগুণেও গাজর এক অনন্য সবজি। চোখের যত্নে গাজরের ভূমিকার কথা বহুদিন ধরেই পরিচিত হলেও, এর স্বাস্থ্যগুণ যে এখানেই শেষ নয়, তা অনেকেই জানেন না।

মূলজাতীয় সবজি হিসেবে গাজর শরীরের জন্য বহুমাত্রিক উপকার বয়ে আনে। এটি এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে স্বাদ ও সুস্বাস্থ্যের সমন্বয় ঘটায়। কাঁচা সালাদ, রান্না কিংবা হালকা স্ন্যাকস সব ক্ষেত্রেই গাজরের ব্যবহার সহজ ও কার্যকর। এর উচ্চ পুষ্টিমান ও সহজলভ্যতা একে শীতের অন্যতম সেরা সুপারফুডে পরিণত করেছে।

গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন, খাদ্যআঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে–১ এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গাজরের পুষ্টিগুণ: কী রয়েছে এই সবজিতে?

গাজর মূলত বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। শরীরে প্রবেশ করার পর বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখ ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন সি, লুটেইন, জিয়াজ্যানথিন, ভিটামিন কে, খাদ্যআঁশ এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান।

ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্য গাজর একটি আদর্শ খাবার। কম ক্যালোরিযুক্ত হলেও এতে পুষ্টির ঘাটতি নেই। জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম লাল গাজরে রয়েছে প্রায় ৩৮ কিলোক্যালোরি শক্তি, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ১ গ্রাম প্রোটিন, ০.৫ গ্রাম চর্বি, ৫ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৪৫১ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ এবং প্রায় ২৭০৬ মাইক্রোগ্রাম বিটা-ক্যারোটিন।

গাজরের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

গাজরে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ কমে যায়। পাশাপাশি এটি হজম প্রক্রিয়া সহজ করে ও বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।

২. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

গাজরের ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ শ্লেষ্মা ঝিল্লি সুস্থ রাখে, যা ভাইরাস ও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ দেয়।

৩. চোখের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ

ভিটামিন এ-এর ঘাটতি রাতকানা ও চোখ শুষ্ক হওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করে। গাজরে থাকা লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন চোখের রেটিনা ও লেন্সকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। American Journal of Ophthalmology-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে দুই বারের বেশি গাজর খাওয়া নারীদের গ্লুকোমার ঝুঁকি ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে গাজর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ায় না। এতে প্রাকৃতিক মিষ্টতা থাকলেও এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাদ্যাভ্যাস টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।

৫. হাড় শক্ত রাখতে সাহায্য করে

যদিও গাজরে ক্যালসিয়াম বা ফসফরাসের মাত্রা খুব বেশি নয়, তবু এতে থাকা ভিটামিন কে ও অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড়ের গঠন ও মেরামতে সহায়তা করে। নিয়মিত গাজর খাওয়া হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

শীতকালে গাজর নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা সুপারফুড। শুধু পুষ্টিগুণের জন্য নয়, সহজলভ্যতা ও বহুমুখী ব্যবহারযোগ্যতার কারণেও এটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। কাঁচা, সিদ্ধ, ভাজা কিংবা স্যুপ ও সালাদ—সবভাবেই গাজর খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা যায়। কম ক্যালোরি ও প্রাকৃতিক মিষ্টতার কারণে এটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবেও দারুণ।

এই শীতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় গাজর রাখলে শরীর পাবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের শক্তিশালী সমন্বয়।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত