চীন–যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতার ভেতরে লুকানো নতুন ভারসাম্য

বিশ্ব অর্থনীতি আজ যেন এক অদৃশ্য দাবার ছকে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রতিটি চালের পেছনে লুকিয়ে আছে ক্ষমতা, কৌশল, এবং প্রযুক্তিনির্ভর রাজনীতি। একদা মুক্ত বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতিতে গঠিত এই বৈশ্বিক বাজার এখন হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মঞ্চ। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া মার্কিন–চীন বাণিজ্য যুদ্ধ এখন আর কেবল শুল্ক বা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে সীমাবদ্ধ নেই; এটি রূপ নিয়েছে প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও প্রভাব বিস্তারের জটিল প্রতিযোগিতায়।
ওয়াশিংটন এখন মরিয়া চীনের প্রযুক্তি আধিপত্য সীমিত করতে বিশেষত সেমিকন্ডাক্টর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), এবং উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে। অন্যদিকে বেইজিং পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রেয়ার আর্থ মেটাল বা বিরল খনিজের রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে যা ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি, স্মার্টফোন, ইলেকট্রনিক চিপ এমনকি যুদ্ধবিমানও কার্যত অচল। ফলে এই প্রতিযোগিতা আর শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত শক্তির নতুন সংজ্ঞা তৈরি করছে।
এই দ্বন্দ্বের প্রভাব সবচেয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খলে। বহুদিন ধরে “বিশ্বের কারখানা” হিসেবে চীন বৈশ্বিক উৎপাদনের কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো গ্রহণ করছে “চায়না প্লাস ওয়ান” কৌশল অর্থাৎ তারা উৎপাদন ঘাঁটি স্থাপন করছে চীনের পাশাপাশি অন্য দেশে, যাতে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস পায়। এই পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক শিল্প মানচিত্রে উঠে আসছে ভারত, ভিয়েতনাম, মেক্সিকো, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশের মতো উদীয়মান শক্তিগুলো।
বাংলাদেশের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক সুযোগ। দীর্ঘদিন ধরে পোশাকশিল্পে সাফল্য অর্জন করে দেশটি বিশ্ববাজারে দৃঢ় অবস্থান তৈরি করেছে। এখন সময় এসেছে উৎপাদনের নতুন খাতে বৈচিত্র্য আনার-ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রবেশের। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে দেখছেন স্থিতিশীল শ্রমবাজার, প্রতিযোগিতামূলক উৎপাদন ব্যয় ও কৌশলগত অবস্থানের দেশ হিসেবে। এজন্য প্রয়োজন সুদূরদর্শী শিল্পনীতি, নির্ভরযোগ্য অবকাঠামো ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক কাঠামো।
অর্থনীতিবিদদের মতে, চীন–যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতা কেবল দুটি দেশের সংঘাত নয়; এটি নতুন অর্থনৈতিক ভারসাম্যের জন্ম। বিশ্বায়ন এখন আর একমুখী নয়, বরং হয়ে উঠছে অঞ্চলভিত্তিক ও বহুস্তরীয়। উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বাড়লেও, দীর্ঘমেয়াদে এই পরিবর্তন বৈশ্বিক অর্থনীতিকে আরও স্থিতিশীল করবে এবং একক রাষ্ট্রনির্ভরতা হ্রাস করবে।
তথ্যসূত্র: দি ইকোনমিস্ট, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, রয়টার্স, IMF
দুই পারমাণবিক কেন্দ্রে রুশ ড্রোন হামলা
ইউক্রেনের দুটি প্রধান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভয়াবহ ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে কেন্দ্রগুলোর বাহ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পারমাণবিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে সতর্ক করেছে কিয়েভ। দেশটি বলছে, রাশিয়ার এই হামলা পরিকল্পিত ও ইচ্ছাকৃত, যা গোটা ইউরোপকে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, হামলাটি হয়েছে খমেলনিটস্কি ও রিভনে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এতে অন্তত ১২ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন। হামলার পর কিছু সময়ের জন্য উভয় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং বিকিরণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, “এটি ইউরোপজুড়ে পারমাণবিক নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে বিপন্ন করেছে। এখন সময় এসেছে চীন ও ভারতসহ যেসব দেশ পারমাণবিক নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়, তারা যেন রাশিয়ার এমন বেপরোয়া হামলার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেয়।” তিনি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA)-কে দ্রুত জরুরি বৈঠক ডাকতে আহ্বান জানান।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোর এই আক্রমণের নিন্দা জানিয়ে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা রাশিয়ার তেল ও জ্বালানি খাতের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তিনি বলেন, “রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ধ্বংস করে শীতের আগেই মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায়।”
-রফিক
যুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজায় ত্রাণে ইসরাইলের বাধা
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক মাস পার হলেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ইসরাইল এখনও নানা বাধা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মতে, সীমিত প্রবেশপথ, প্রশাসনিক জটিলতা, নিষেধাজ্ঞা এবং নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ)-এর তথ্য উদ্ধৃত করে জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যুদ্ধবিরতির এক মাস পেরিয়ে গেলেও গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম বাড়ানোর উদ্যোগ নানা জটিল প্রক্রিয়া ও নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত প্রবেশপথ ও অনিরাপদ পরিস্থিতি আমাদের কাজকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।”
তিনি জানান, এখনো অনেক এলাকায় জাতিসংঘের কর্মীদের প্রতিবার চলাচলের আগে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। গত সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর আটটি প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র দুটি পুরোপুরি অনুমোদন পায়। বাকি চারটি প্রচেষ্টা মাঝপথে বাধাগ্রস্ত হয়— এক ক্ষেত্রে দলটিকে অনুমতি পেতে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র আরও বলেন, “চলমান প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আমরা ও আমাদের সহযোগী সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি যাতে যতটুকু সম্ভব সহায়তা পৌঁছানো যায়। তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।”
বেশি সংখ্যক সীমান্তপথ খুলে দেওয়ার বিষয়ে ইসরাইলের অনীহা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফারহান হক বলেন, “সমস্যাটা ইসরাইলি পক্ষেই। আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনো তারা নতুন কোনো প্রবেশপথ খোলেনি। ফলে ত্রাণ কার্যক্রম ক্রমেই ধীর হয়ে যাচ্ছে।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজার অধিকাংশ এলাকা এখনও ধ্বংসস্তূপে পরিণত, হাসপাতাল ও স্কুলগুলো অচল, আর খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে দিন কাটাচ্ছে লাখো বেসামরিক মানুষ।
-রাফসান
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার অদূরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারতের রাজধানী ও সীমান্ত এলাকাজুড়ে চরম নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি হুন্দাই আই২০ গাড়িতে সংঘটিত এই বিস্ফোরণে নয়জন নিহত ও আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে কয়েকশ মিটার জুড়ে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়ে, আশপাশের একাধিক গাড়ি পুড়ে যায়, এবং রাস্তাজুড়ে দগ্ধদেহের বীভৎস দৃশ্য তৈরি হয়। ঘটনার পরপরই পুরো দিল্লি শহরসহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পাঞ্জাব ও রাজস্থানের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টহল ও নজরদারি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ–নেপাল সীমান্ত এবং পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সংলগ্ন সীমান্ত এলাকাতেও অতিরিক্ত নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। নতুন করে চেকপোস্ট বসানো, সেনা টহল জোরদার করা এবং সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (DIA) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (RAW) সীমান্তবর্তী অঞ্চলের যেকোনো সন্দেহজনক নড়াচড়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
দিল্লির উপ-প্রধান অগ্নিনির্বাপক কর্মকর্তা একে মালিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। “আমরা সন্ধ্যা ৬টা ৫৭ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। ৭টা ২৯ মিনিটের মধ্যে আগুন পুরোপুরি নিভে যায়,” বলেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, লাল কেল্লার পাশের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন মরদেহ, ভস্মীভূত যানবাহন ও চারপাশে ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পর্যটকদের ভিড় একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার ঘটনায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আরও সজাগ হয়ে ওঠে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, লাল কেল্লা বিস্ফোরণ এবং ফরিদাবাদে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের ঘটনার মধ্যে কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে। এদিকে, বিহারের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের ঠিক আগে এমন ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ও বিস্ফোরক উদ্ধার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনেও তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটিকে ‘জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করে তদন্তভার দিয়েছে আধাসামরিক বাহিনী ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর হাতে। এনএসজি এবং দিল্লি পুলিশের বোম্ব ডিটেকশন অ্যান্ড ডিসপোজাল স্কোয়াড ঘটনাস্থল থেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত গাড়ির ধাতব অংশ, রাসায়নিক অবশিষ্টাংশ এবং বোমার সম্ভাব্য উপাদান সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছে। এদিকে স্থানীয় পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে গাড়িটি কে বা কারা পার্ক করেছিল তা শনাক্তের চেষ্টা করছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ধরন দেখে মনে হচ্ছে এটি “ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (IED)” দ্বারা ঘটানো হতে পারে। তবে এখনো কোনো গোষ্ঠী আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি প্রায় ২০ মিনিট ধরে একই স্থানে পার্ক করা ছিল। আশপাশের দোকানপাটে তখন সন্ধ্যার ব্যস্ততা চলছিল, হঠাৎ একটি বিকট শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। রাস্তায় আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু হয়, অনেকে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। দিল্লির হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসায় বিশেষ মেডিকেল টিম নিয়োজিত করা হয়েছে।
এদিকে সীমান্তে বাড়তি সতর্কতার কারণে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালমুখী বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকেও কড়া তল্লাশির মুখে পড়তে হচ্ছে। পেট্রাপোল, রণাঘাট, সোনামসজিদসহ একাধিক সীমান্তপথে কাস্টমস ও বিএসএফ যৌথভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে। নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে, সীমান্ত দিয়ে কোনো বিস্ফোরক বা অবৈধ উপকরণ প্রবেশ করেছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
-রাফসান
ট্রাম্পের ঘোষণার পরই সরে দাঁড়াল স্থিতিশীলতা বাহিনী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই গাজা উপত্যকার জন্য প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগদানের কোনো পরিকল্পনা করছে না। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে তারা বাহিনীর কোনো স্পষ্ট কাঠামো বা কার্যপ্রণালী না থাকার কথা জানিয়েছে।
আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টার বক্তব্য
আবুধাবি কৌশলগত বিতর্ক ফোরামে আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ এই বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন:
"সংযুক্ত আরব আমিরাত এখনো স্থিতিশীলতা বাহিনীতে একটি স্পষ্ট কাঠামো দেখতে পাচ্ছে না এবং এই পরিস্থিতিতে সম্ভবত এই বাহিনীতে অংশগ্রহণ করবে না।"
এই বক্তব্যটি ইউএই-এর নীতিগত অবস্থানের প্রতিফলন, যা মূলত কোনো সামরিক মিশনে অংশগ্রহণের আগে এর উদ্দেশ্য, নিয়মাবলী এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়।
আন্তর্জাতিক বাহিনীর পরিকল্পনা
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় করা এই আন্তর্জাতিক বাহিনীতে মিশর, কাতার ও তুরস্কের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা ছিল। এই বাহিনীর লক্ষ্য হলো গাজায় সংঘাত-পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে এই বাহিনী খুব শিগগিরই গাজায় উপস্থিত হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই ইউএই তাদের অবস্থানের কথা জানাল।
ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্ক
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তি সই হওয়ার পর ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে তেলসমৃদ্ধ সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, গাজা ইস্যুতে ইউএই-এর এই সতর্ক সামরিক অবস্থান আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
দিল্লিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ আতঙ্ক লালকেল্লা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিস্ফোরণ এবং ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের কাছে একটি গাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় পাশে থাকা আরও তিন থেকে চারটি গাড়িতে দ্রুত আগুন ধরে যায়।
ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে:
মেট্রো স্টেশনের সামনে একাধিক গাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।
বিস্ফোরণের কারণে একটি ভ্যানের দরজা উড়ে গেছে।
সড়কের পাশে বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
দিল্লি পুলিশ এই বিস্ফোরণকে "একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরণ" হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
আহতদের উদ্ধার ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা
বিস্ফোরণে আহতদের দ্রুত লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম জানায়, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের ভবন থেকেও আগুনের বিশাল গোলা দেখা গেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন:
"আমি বারান্দা থেকে আগুনের বিশাল গোলা দেখেছি। বিস্ফোরণ এত জোরে হয়েছিল যে আশেপাশের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।"
কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, যেহেতু বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল খুব বেশি এবং এটি একটি জনবহুল এলাকা, তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ঘটনাস্থলের গুরুত্ব
লালকেল্লা পুরনো দিল্লির একটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং সংবেদনশীল এলাকায় অবস্থিত। এটি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা: মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ
সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে চালানো গণহত্যার তথ্য গোপন করার জন্য ‘মরিয়া প্রচেষ্টা’ চালানোর অভিযোগ করেছে দেশটির একটি চিকিৎসা সংস্থা। সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, আরএসএফ মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়া বা গণকবরে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করছে।
আল জাজিরার খবরে জানা গেছে, সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক রোববার ৯ নভেম্বর জানিয়েছে, গত ২৬ অক্টোবর রক্তাক্ত হামলার পর শহরটি দখলের পর আরএসএফ এল-ফাশেরের রাস্তা থেকে ‘শত শত মৃতদেহ’ তুলে নিয়ে গেছে।
সংস্থাটি বলেছে, সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর অপরাধ ‘গোপন বা পুড়িয়ে মুছে ফেলা যাবে না’। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, মৃতদেহ বিকৃত করা, পুড়িয়ে ফেলা বা গণকবর দেওয়া আন্তর্জাতিক এবং ধর্মীয় রীতিনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এল-ফাশেরে যা ঘটেছে, তা আরএসএফের একটি পূর্ণাঙ্গ গণহত্যার আরেকটি অধ্যায় মাত্র।
জাতিগত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আল জাজিরার হিবা মরগান রিপোর্ট করেছেন, এল-ফাশের থেকে উত্তরে আল দাব্বারের উদ্দেশ্যে পালিয়ে আসা অনেক লোক রাস্তায় মারা গেছেন। এর কারণ ছিল খাবার বা পানির অভাব, অথবা গুলিবর্ষণের কারণে তারা আহত হয়েছিলেন।
বাস্তুচ্যুতি: আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আইওএম ধারণা করছে, আরএসএফ এই অঞ্চলের শেষ সুদানি সামরিক ঘাঁটিটি দখল করার পর এল-ফাশেরের আড়াই লাখের বেশি জনসংখ্যার মধ্যে ৮২ হাজার মানুষই পালিয়ে গেছে।
সহিংসতার প্রকৃতি: ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের সিলভাইন পেনিকাড বলেন, পালিয়ে আসা অনেকেই বলেছেন, তাদের গায়ের রঙের কারণে হামলা চালানো হয়েছে। পেনিকাড বলেন, কেবল কালো হওয়ার কারণে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়।
এল-ফাশেরের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসান ওসমান বলেন, কালো ত্বকের বাসিন্দারা, বিশেষ করে জাঘাওয়ার বেসামরিক নাগরিকরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ‘জাতিগত অবমাননা এবং শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছে।’ তিনি বলেন, যদি আপনার ত্বক ফর্সা হয়, তাহলে তারা আপনাকে ছেড়ে দিতে পারে। এটি সম্পূর্ণরূপে জাতিগত।
উল্লেখ্য, আরএসএফের উৎপত্তি মূলত আরব-ভিত্তিক, সরকার-সমর্থিত মিলিশিয়া জানজাউইদ থেকে, যাদের বিরুদ্ধে দুই দশক আগে দারফুরে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০০৩ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার প্রচারণায় আনুমানিক তিন লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা
জাপানে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রোববার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর দেশটির উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে ছোট ছোট সুনামির ঢেউ দেখা দিয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, প্রশাসনিক অঞ্চল ইওয়াতের উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কবার্তায় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ঢেউ উপকূলে আসতে পারে। এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৮ পরিমাপ করেছে।
ভূমিকম্পের তীব্রতা ও আফটারশক
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, মূল ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পরেও ৫.৩ থেকে ৬.৩ মাত্রার কয়েকটি আফটারশকও আঘাত হেনেছে।
এর আগে, আজ সকালের দিকেও ইওয়াতে অঞ্চলে ৪.৮ থেকে ৫.৮ মাত্রার ছয়টি উপকূলীয় ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তবে সেগুলো ভূমিতে খুব বেশি অনুভূত হয়নি। এই অঞ্চলটি এখনো ২০১১ সালে সমুদ্রের তলদেশে ৯.০ মাত্রার বিশাল ভূমিকম্পের স্মৃতি বহন করে চলেছে, যার ফলে সৃষ্ট সুনামির তাণ্ডবে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ মারা যায় বা নিখোঁজ হয়েছিল।
টেকটোনিক সক্রিয়তা
ভূগোলবিদদের মতে, জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের 'রিং অফ ফায়ার'-এর পশ্চিম প্রান্তে চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের ওপরে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে টেকটোনিকভাবে সক্রিয় দেশগুলোর মধ্যে একটি। প্রায় ১২৫ মিলিয়ন মানুষের এই দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৫০০টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'
উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি আগামী বছর থেকে বহুল প্রতীক্ষিত একক পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটকরা একটিমাত্র ভিসা দিয়েই ছয়টি সদস্য রাষ্ট্র ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন। এই ছয়টি দেশ হলো—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং ওমান।
সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব জানিয়েছেন, চার বছরের যৌথ পরিকল্পনা ও দীর্ঘ প্রস্তুতির পর এই উদ্যোগটি এখন বাস্তবায়নের শেষ ধাপে পৌঁছেছে।
এক ভিসায় ছয় দেশের ভ্রমণ
নতুন এই ভিসার নাম হবে 'জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'। একবার অনুমোদন পেলে এটি পর্যটকদের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান—এই ছয়টি দেশ একসঙ্গে ভ্রমণ করার সুযোগ দেবে। প্রাথমিকভাবে এটি কেবল পর্যটন এবং পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে।
ভিসার আবেদন অনলাইনে করা যাবে। পর্যটকরা চাইলে একক দেশ অথবা ছয়টি দেশ একসঙ্গে বেছে নিতে পারবেন।
ভিসার মেয়াদ এক মাস থেকে শুরু করে তিন মাস পর্যন্ত হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, পৃথক পৃথক ভিসা নেওয়ার তুলনায় এই একক ভিসা খরচও কমাবে।
ভিসার জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট, আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার বা পরবর্তী গন্তব্যের টিকিট জমা দিতে হবে।
আঞ্চলিক যোগাযোগ ও ভ্রমণের সম্ভাবনা
আল-খাতিব জানিয়েছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিমান যোগাযোগ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ব্যাপক সম্ভাবনা এই একক ভিসা উদ্যোগকে সহজ ও কার্যকর করবে। গত বছর উপসাগরীয় চারটি বৃহৎ এয়ারলাইনস প্রায় ১৫ কোটি যাত্রী পরিবহন করেছে, যার মধ্যে ৭ কোটি ভ্রমণ করেছে উপসাগরীয় দেশগুলোর ভেতরে।
জিসিসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, একক ভিসা চালু হলে পর্যটকদের এই অঞ্চলে অবস্থানকাল বাড়বে, একাধিক শহরে ভ্রমণ বৃদ্ধি পাবে এবং ভ্রমণ ব্যয়ও সব সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই উদ্যোগের আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে এবং আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই আবেদন পোর্টালটি চালু হবে।
তথ্যসূত্র: এএফপি
গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প
ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পুরো এলাকা ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবারগুলো বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো তছনছ হয়ে গেলেও, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রভাব দেখা দিয়েছে মাটি ও পানির ওপর, যা স্থানীয়দের জীবনধারণের প্রধান উৎস। চার সপ্তাহের এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও, এই পরিবেশগত ক্ষতির চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যদিও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় আগে যেখানে একটি জীবনোজ্জ্বল সম্প্রদায় বসবাস করত, আজ সেখানে ধ্বংসস্তূপ আর দূষিত জল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
একসময় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য তৈরি হওয়া শেখ রাদওয়ান পুকুরটি এখন ময়লা এবং ফ্লুয়ের নোংরা পানিতে ভরে গেছে। বহু পরিবার নিরুপায় হয়ে এই পুকুরকে ঘিরে আশ্রয় নিলেও এটি তাদের জীবন বিপন্ন করছে।
প্রসূত মহিলা উম্ম হিশাম তার সন্তানদের সঙ্গে দূষিত পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তিনি জানান, "আমরা শেখ রাদওয়ান পুকুরের আশেপাশে আশ্রয় নিয়েছি। মশা, দূষিত পানি, চারপাশের ধ্বংস—সবই আমাদের জীবন ও সন্তানদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক।"
পুকুরটি মূলত বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং সাগরে ছাড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের বিমান হামলায় পাম্পগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে কাঁচা ময়লা ও নোংরা পানি জমছে। বিদ্যুৎ ও নিকাশি ব্যবস্থাও ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় পানির স্তর ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে এবং আশেপাশের ঘর ও তাঁবুগুলো ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজা সিটি মিউনিসিপ্যাল কর্মকর্তা মাহের সালেম জানান, "দূষিত পানি ছড়িয়ে দিচ্ছে দুর্গন্ধ, পোকামাকড় ও মশা। পানি ৬ মিটার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, বেড়া ধ্বংসপ্রাপ্ত। কোনো শিশু, নারী বা বৃদ্ধও পুকুরে পড়ে যেতে পারে।"
আল জাজিরার হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, "পরিবারগুলো জানে যে কূপ, জলবাহী ট্রাক বা পাত্রের পানি দূষিত, কিন্তু অন্য কোনো বিকল্প নেই।" স্থানীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, স্থির জল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।
পানির অব্যবস্থাপনা ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোতে আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় যোগ হয়েছে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত COP30 জলবায়ু সম্মেলনে প্যালেস্টাইন দূত ইব্রাহিম আল-জেবেন বলেন, "গাজায় পরিবেশগত দুর্যোগ চলছে, যা ইসরায়েলের গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ২.৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ ৬১ মিলিয়ন টনের বেশি, যার অনেক অংশে হুমকিস্বরূপ বর্জ্য রয়েছে।"
তিনি আরও জানান, স্যানিটেশন ও পানির নেটওয়ার্ক ধ্বংস হওয়ায় ভূ-জল ও উপকূলীয় পানি দূষিত হয়েছে, ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ইসরায়েলের হামলায় গাজার কৃষিজমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা সেখানে খাদ্য নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় মিঠাপানি সরবরাহ সীমিত এবং বাকি অনেকটাই দূষিত।
শেখ রাদওয়ানে ফিরে দেখা যায়, বাতাসে ঘোর বিষাদ ও দুর্গন্ধ ভাসছে। আল জাজিরার মাহমুদ বলেন, "প্রতিদিন পানি, খাবার ও রুটি খুঁজে বের করার জন্য লড়াই করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা দ্বিতীয় পর্যায়ে চলে আসে।"
পাঠকের মতামত:
- চীন–যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতার ভেতরে লুকানো নতুন ভারসাম্য
- খালি পেটে খেজুর খাওয়ার ৭টি অসাধারণ উপকারিতা
- দুই পারমাণবিক কেন্দ্রে রুশ ড্রোন হামলা
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- যুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজায় ত্রাণে ইসরাইলের বাধা
- বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি
- আওয়ামী লীগারদের উদ্দেশ্যে নুরের বিস্ফোরক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড়
- রাজধানীর তিন এলাকায় আরও বাসে আগুন এক দিনে ছয় বাসে অগ্নিসংযোগ
- জুলাই সনদ জট রাজনৈতিক দলগুলো অটল অবস্থানে অনিশ্চয়তা কাটাতে সরকারের শেষ চেষ্টা
- ট্রাম্পের ঘোষণার পরই সরে দাঁড়াল স্থিতিশীলতা বাহিনী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
- দিল্লিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ আতঙ্ক লালকেল্লা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি
- স্বর্ণের বাজারে অস্থিরতা চলতি বছরই ৭৪ বার দাম সমন্বয় করল বাজুস
- সাবেক মিত্র জামায়াত ও বিএনপি এবার পারিবারিক প্রতিদ্বন্দ্বী কুড়িগ্রামের ৪ আসনে মুখোমুখি দুই ভাই
- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিকে বাইরে রাখলে আমি নির্বাচনে যাব না: কাদের সিদ্দিকী
- ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে চলন্ত বাসে আগুন
- শীতের পোশাক: অ্যালার্জি এড়াতে জ্যাকেট, সোয়েটার পরিষ্কারের সঠিক পদ্ধতি
- তারেক রহমানের নেতৃত্বেই শহীদদের স্বপ্নের দেশ গড়া সম্ভব: মীর স্নিগ্ধের
- নব্য ফ্যাসিস্ট হতে চাইলে বসে থাকব না: বিএনপিকে জুলাই সনদ নিয়ে হুঁশিয়ারি এনসিপি নেতার
- জেনে নিন বৃহস্পতিবারের সদাকাহর গোপন রহমত
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় পতন, সূচক হারাল প্রায় ৪০ পয়েন্ট!
- ৬০ দিনে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি: জীবনযাত্রার চাপ কমাতে ৫টি বিশেষ খাবার
- এক কেজি আলুর দামে এখন পাওয়া যায় না এক আঁটি শাকও!
- আসন পুনর্বিন্যাস বাতিল: বাগেরহাটে ৪টি আসনই বহাল রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
- ভারতের আধিপত্য রুখতে হবে: নির্বাচনী লক্ষ্য নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর কড়া বার্তা
- কফি বিনের গোপন রহস্য: আপনার প্রিয় কাপেও কি লুকিয়ে আছে তেলাপোকার ক্ষুদ্র অংশ?
- ডিএমপি'তে রদবদল: পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে বদলি
- তিন দিনের অভিযানে মিলল লাশ: পশুর নদে নিখোঁজ সাবেক নারী পাইলটের মরদেহ উদ্ধার
- কিশমিশের জাদু: কেন এটি প্রাকৃতিক ওষুধ? এক মাসেই শরীরে আসে ৬ পরিবর্তন
- সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জিহাদ ঘোষণা করেছে ইসি
- নৌকার সমর্থকরা হতাশ হবেন না,ধানের শীষ আপনাদের পাশে আছে: মির্জা ফখরুল
- ফুটবল উন্মাদনা: ৬ মিনিটে সব টিকিট বিক্রি, তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
- গোলের রাজা কে, মেসি না রোনালদো? সংখ্যার হিসাবে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১০ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা: মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ
- ধানমন্ডি থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খুন: পুরান ঢাকায় দিনেদুপুরে গুলি করে হত্যা
- জিয়াউর রহমানের অর্ধাঙ্গিনী জননেত্রী শেখ হাসিনা: ভুল মন্তব্যে বিতর্কে কুমিল্লার বিএনপি নেতা
- ৭ শব্দের নায়ক আসিফ মাহমুদ: রাশেদ খান সমর্থন জানালেন তরুণ এই নেতার সিদ্ধান্তে
- মোহাম্মদপুরে আতঙ্ক: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে ককটেল হামলা
- নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশের সর্বনাশ: মির্জা ফখরুল
- ভ্যাট রিফান্ড এখন এক ক্লিকেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে, জানুন বিস্তারিত
- জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে আসছে যেসব বড় পরিবর্তন
- ঢাবির এক আবাসিক হলে ধূমপান নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত
- আগেভাগে জানুন আগামী বছরের ছুটির দিন
- বিদ্যুৎ খাতে বড় সিদ্ধান্ত, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুখবর
- সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করল ওরিয়ন ইনফিউশন
- মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
- রেকর্ড ডেট ঘিরে দুই দিন লেনদেন বন্ধ থাকবে
- বুক ধড়ফড়ের নেপথ্যে পানিশূন্যতা: হৃদস্পন্দন দ্রুত হলে যা করবেন, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- রিয়াল বনাম লিভারপুল: চ্যাম্পিয়নস লিগে হাইভোল্টেজ লড়াই আজ যখন
- কালো মুরগি কেন এত দামি: জেনেটিক বিস্ময়, ঐতিহ্য ও বিলাসিতার এক অনন্য সংমিশ্রণ
- ঘরে বসেই বানান ডিজিটাল NID: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানুন ধাপে ধাপে
- ০৪ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ০৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য








