ট্রাম্পের ঘোষণার পরই সরে দাঁড়াল স্থিতিশীলতা বাহিনী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ২১:৫১:৫২
ট্রাম্পের ঘোষণার পরই সরে দাঁড়াল স্থিতিশীলতা বাহিনী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
ছবিঃ সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই গাজা উপত্যকার জন্য প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগদানের কোনো পরিকল্পনা করছে না। এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে তারা বাহিনীর কোনো স্পষ্ট কাঠামো বা কার্যপ্রণালী না থাকার কথা জানিয়েছে।

আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টার বক্তব্য

আবুধাবি কৌশলগত বিতর্ক ফোরামে আমিরাতের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ এই বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন:

"সংযুক্ত আরব আমিরাত এখনো স্থিতিশীলতা বাহিনীতে একটি স্পষ্ট কাঠামো দেখতে পাচ্ছে না এবং এই পরিস্থিতিতে সম্ভবত এই বাহিনীতে অংশগ্রহণ করবে না।"

এই বক্তব্যটি ইউএই-এর নীতিগত অবস্থানের প্রতিফলন, যা মূলত কোনো সামরিক মিশনে অংশগ্রহণের আগে এর উদ্দেশ্য, নিয়মাবলী এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়।

আন্তর্জাতিক বাহিনীর পরিকল্পনা

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় করা এই আন্তর্জাতিক বাহিনীতে মিশর, কাতার ও তুরস্কের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সৈন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা ছিল। এই বাহিনীর লক্ষ্য হলো গাজায় সংঘাত-পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে এই বাহিনী খুব শিগগিরই গাজায় উপস্থিত হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই ইউএই তাদের অবস্থানের কথা জানাল।

ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্ক

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তি সই হওয়ার পর ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে তেলসমৃদ্ধ সংযুক্ত আরব আমিরাত অন্যতম। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, গাজা ইস্যুতে ইউএই-এর এই সতর্ক সামরিক অবস্থান আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।


দিল্লিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ আতঙ্ক লালকেল্লা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ২১:৪৫:২৫
দিল্লিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ আতঙ্ক লালকেল্লা এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি
ছবি: এনডিটিভি

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এই ঘটনার পর পুরো এলাকায় উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিস্ফোরণ এবং ক্ষয়ক্ষতির চিত্র

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের কাছে একটি গাড়িতে এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় পাশে থাকা আরও তিন থেকে চারটি গাড়িতে দ্রুত আগুন ধরে যায়।

ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে:

মেট্রো স্টেশনের সামনে একাধিক গাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

বিস্ফোরণের কারণে একটি ভ্যানের দরজা উড়ে গেছে।

সড়কের পাশে বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

দিল্লি পুলিশ এই বিস্ফোরণকে "একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরণ" হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

আহতদের উদ্ধার ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা

বিস্ফোরণে আহতদের দ্রুত লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম জানায়, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের ভবন থেকেও আগুনের বিশাল গোলা দেখা গেছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন:

"আমি বারান্দা থেকে আগুনের বিশাল গোলা দেখেছি। বিস্ফোরণ এত জোরে হয়েছিল যে আশেপাশের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।"

কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, যেহেতু বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল খুব বেশি এবং এটি একটি জনবহুল এলাকা, তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঘটনাস্থলের গুরুত্ব

লালকেল্লা পুরনো দিল্লির একটি ঘনবসতিপূর্ণ এবং সংবেদনশীল এলাকায় অবস্থিত। এটি ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।


সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা: মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৪:৫৮:৪৫
সুদানে গণহত্যার প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা: মরদেহ পুড়িয়ে ফেলছে আরএসএফ
ছবি: আল জাজিরা

সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহরে চালানো গণহত্যার তথ্য গোপন করার জন্য ‘মরিয়া প্রচেষ্টা’ চালানোর অভিযোগ করেছে দেশটির একটি চিকিৎসা সংস্থা। সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, আরএসএফ মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়া বা গণকবরে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করছে।

আল জাজিরার খবরে জানা গেছে, সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক রোববার ৯ নভেম্বর জানিয়েছে, গত ২৬ অক্টোবর রক্তাক্ত হামলার পর শহরটি দখলের পর আরএসএফ এল-ফাশেরের রাস্তা থেকে ‘শত শত মৃতদেহ’ তুলে নিয়ে গেছে।

সংস্থাটি বলেছে, সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর অপরাধ ‘গোপন বা পুড়িয়ে মুছে ফেলা যাবে না’। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, মৃতদেহ বিকৃত করা, পুড়িয়ে ফেলা বা গণকবর দেওয়া আন্তর্জাতিক এবং ধর্মীয় রীতিনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এল-ফাশেরে যা ঘটেছে, তা আরএসএফের একটি পূর্ণাঙ্গ গণহত্যার আরেকটি অধ্যায় মাত্র।

জাতিগত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আল জাজিরার হিবা মরগান রিপোর্ট করেছেন, এল-ফাশের থেকে উত্তরে আল দাব্বারের উদ্দেশ্যে পালিয়ে আসা অনেক লোক রাস্তায় মারা গেছেন। এর কারণ ছিল খাবার বা পানির অভাব, অথবা গুলিবর্ষণের কারণে তারা আহত হয়েছিলেন।

বাস্তুচ্যুতি: আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আইওএম ধারণা করছে, আরএসএফ এই অঞ্চলের শেষ সুদানি সামরিক ঘাঁটিটি দখল করার পর এল-ফাশেরের আড়াই লাখের বেশি জনসংখ্যার মধ্যে ৮২ হাজার মানুষই পালিয়ে গেছে।

সহিংসতার প্রকৃতি: ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের সিলভাইন পেনিকাড বলেন, পালিয়ে আসা অনেকেই বলেছেন, তাদের গায়ের রঙের কারণে হামলা চালানো হয়েছে। পেনিকাড বলেন, কেবল কালো হওয়ার কারণে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়।

এল-ফাশেরের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসান ওসমান বলেন, কালো ত্বকের বাসিন্দারা, বিশেষ করে জাঘাওয়ার বেসামরিক নাগরিকরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ‘জাতিগত অবমাননা এবং শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছে।’ তিনি বলেন, যদি আপনার ত্বক ফর্সা হয়, তাহলে তারা আপনাকে ছেড়ে দিতে পারে। এটি সম্পূর্ণরূপে জাতিগত।

উল্লেখ্য, আরএসএফের উৎপত্তি মূলত আরব-ভিত্তিক, সরকার-সমর্থিত মিলিশিয়া জানজাউইদ থেকে, যাদের বিরুদ্ধে দুই দশক আগে দারফুরে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ২০০৩ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার প্রচারণায় আনুমানিক তিন লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা


শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা 

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১৭:১১:৪৪
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা 
ছবিঃ সংগৃহীত

জাপানে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রোববার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর দেশটির উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে ছোট ছোট সুনামির ঢেউ দেখা দিয়েছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, প্রশাসনিক অঞ্চল ইওয়াতের উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কবার্তায় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ঢেউ উপকূলে আসতে পারে। এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৮ পরিমাপ করেছে।

ভূমিকম্পের তীব্রতা ও আফটারশক

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, মূল ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পরেও ৫.৩ থেকে ৬.৩ মাত্রার কয়েকটি আফটারশকও আঘাত হেনেছে।

এর আগে, আজ সকালের দিকেও ইওয়াতে অঞ্চলে ৪.৮ থেকে ৫.৮ মাত্রার ছয়টি উপকূলীয় ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তবে সেগুলো ভূমিতে খুব বেশি অনুভূত হয়নি। এই অঞ্চলটি এখনো ২০১১ সালে সমুদ্রের তলদেশে ৯.০ মাত্রার বিশাল ভূমিকম্পের স্মৃতি বহন করে চলেছে, যার ফলে সৃষ্ট সুনামির তাণ্ডবে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ মারা যায় বা নিখোঁজ হয়েছিল।

টেকটোনিক সক্রিয়তা

ভূগোলবিদদের মতে, জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের 'রিং অফ ফায়ার'-এর পশ্চিম প্রান্তে চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের ওপরে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে টেকটোনিকভাবে সক্রিয় দেশগুলোর মধ্যে একটি। প্রায় ১২৫ মিলিয়ন মানুষের এই দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৫০০টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।


এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১৪:৫৩:০৬
এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'
ছবিঃ সংগৃহীত

উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি আগামী বছর থেকে বহুল প্রতীক্ষিত একক পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটকরা একটিমাত্র ভিসা দিয়েই ছয়টি সদস্য রাষ্ট্র ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন। এই ছয়টি দেশ হলো—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং ওমান।

সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব জানিয়েছেন, চার বছরের যৌথ পরিকল্পনা ও দীর্ঘ প্রস্তুতির পর এই উদ্যোগটি এখন বাস্তবায়নের শেষ ধাপে পৌঁছেছে।

এক ভিসায় ছয় দেশের ভ্রমণ

নতুন এই ভিসার নাম হবে 'জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'। একবার অনুমোদন পেলে এটি পর্যটকদের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান—এই ছয়টি দেশ একসঙ্গে ভ্রমণ করার সুযোগ দেবে। প্রাথমিকভাবে এটি কেবল পর্যটন এবং পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে।

ভিসার আবেদন অনলাইনে করা যাবে। পর্যটকরা চাইলে একক দেশ অথবা ছয়টি দেশ একসঙ্গে বেছে নিতে পারবেন।

ভিসার মেয়াদ এক মাস থেকে শুরু করে তিন মাস পর্যন্ত হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, পৃথক পৃথক ভিসা নেওয়ার তুলনায় এই একক ভিসা খরচও কমাবে।

ভিসার জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট, আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার বা পরবর্তী গন্তব্যের টিকিট জমা দিতে হবে।

আঞ্চলিক যোগাযোগ ও ভ্রমণের সম্ভাবনা

আল-খাতিব জানিয়েছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিমান যোগাযোগ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ব্যাপক সম্ভাবনা এই একক ভিসা উদ্যোগকে সহজ ও কার্যকর করবে। গত বছর উপসাগরীয় চারটি বৃহৎ এয়ারলাইনস প্রায় ১৫ কোটি যাত্রী পরিবহন করেছে, যার মধ্যে ৭ কোটি ভ্রমণ করেছে উপসাগরীয় দেশগুলোর ভেতরে।

জিসিসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, একক ভিসা চালু হলে পর্যটকদের এই অঞ্চলে অবস্থানকাল বাড়বে, একাধিক শহরে ভ্রমণ বৃদ্ধি পাবে এবং ভ্রমণ ব্যয়ও সব সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই উদ্যোগের আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে এবং আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই আবেদন পোর্টালটি চালু হবে।

তথ্যসূত্র: এএফপি


গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১৪:১৯:০৮
গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি শিবিরে একটি ছেলে প্লাস্টিকের বোতলে পানি ভরছে। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পুরো এলাকা ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবারগুলো বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো তছনছ হয়ে গেলেও, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রভাব দেখা দিয়েছে মাটি ও পানির ওপর, যা স্থানীয়দের জীবনধারণের প্রধান উৎস। চার সপ্তাহের এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও, এই পরিবেশগত ক্ষতির চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যদিও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় আগে যেখানে একটি জীবনোজ্জ্বল সম্প্রদায় বসবাস করত, আজ সেখানে ধ্বংসস্তূপ আর দূষিত জল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

একসময় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য তৈরি হওয়া শেখ রাদওয়ান পুকুরটি এখন ময়লা এবং ফ্লুয়ের নোংরা পানিতে ভরে গেছে। বহু পরিবার নিরুপায় হয়ে এই পুকুরকে ঘিরে আশ্রয় নিলেও এটি তাদের জীবন বিপন্ন করছে।

প্রসূত মহিলা উম্ম হিশাম তার সন্তানদের সঙ্গে দূষিত পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তিনি জানান, "আমরা শেখ রাদওয়ান পুকুরের আশেপাশে আশ্রয় নিয়েছি। মশা, দূষিত পানি, চারপাশের ধ্বংস—সবই আমাদের জীবন ও সন্তানদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক।"

পুকুরটি মূলত বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং সাগরে ছাড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের বিমান হামলায় পাম্পগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে কাঁচা ময়লা ও নোংরা পানি জমছে। বিদ্যুৎ ও নিকাশি ব্যবস্থাও ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় পানির স্তর ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে এবং আশেপাশের ঘর ও তাঁবুগুলো ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজা সিটি মিউনিসিপ্যাল কর্মকর্তা মাহের সালেম জানান, "দূষিত পানি ছড়িয়ে দিচ্ছে দুর্গন্ধ, পোকামাকড় ও মশা। পানি ৬ মিটার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, বেড়া ধ্বংসপ্রাপ্ত। কোনো শিশু, নারী বা বৃদ্ধও পুকুরে পড়ে যেতে পারে।"

আল জাজিরার হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, "পরিবারগুলো জানে যে কূপ, জলবাহী ট্রাক বা পাত্রের পানি দূষিত, কিন্তু অন্য কোনো বিকল্প নেই।" স্থানীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, স্থির জল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।

পানির অব্যবস্থাপনা ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোতে আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় যোগ হয়েছে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত COP30 জলবায়ু সম্মেলনে প্যালেস্টাইন দূত ইব্রাহিম আল-জেবেন বলেন, "গাজায় পরিবেশগত দুর্যোগ চলছে, যা ইসরায়েলের গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ২.৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ ৬১ মিলিয়ন টনের বেশি, যার অনেক অংশে হুমকিস্বরূপ বর্জ্য রয়েছে।"

তিনি আরও জানান, স্যানিটেশন ও পানির নেটওয়ার্ক ধ্বংস হওয়ায় ভূ-জল ও উপকূলীয় পানি দূষিত হয়েছে, ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ইসরায়েলের হামলায় গাজার কৃষিজমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা সেখানে খাদ্য নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় মিঠাপানি সরবরাহ সীমিত এবং বাকি অনেকটাই দূষিত।

শেখ রাদওয়ানে ফিরে দেখা যায়, বাতাসে ঘোর বিষাদ ও দুর্গন্ধ ভাসছে। আল জাজিরার মাহমুদ বলেন, "প্রতিদিন পানি, খাবার ও রুটি খুঁজে বের করার জন্য লড়াই করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা দ্বিতীয় পর্যায়ে চলে আসে।"


দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির নায়ক ট্রাম্প- পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১১:০৯:১৩
দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির নায়ক ট্রাম্প- পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী
ছবি: চ্যাট জিপিটি

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন, যিনি সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করে “একটি বড় যুদ্ধ রোধ করেছেন” বলে দাবি করেছেন। শনিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের প্যারেডে ভাষণ দিতে গিয়ে শাহবাজ বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। তার কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ লাখো মানুষের জীবন রক্ষা করেছে এবং অঞ্চলটিতে আপাত শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।”

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, “যুদ্ধ কখনোই সমাধান নয়। আমাদের প্রয়োজন কূটনৈতিক সংলাপ ও আস্থার পরিবেশ। ট্রাম্পের পদক্ষেপ প্রমাণ করেছে, সাহসী নেতৃত্ব চাইলে সংঘাত রোধ করা সম্ভব।” তার বক্তব্যে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

এর আগে ১০ মে ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, “উভয় দেশই যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।” এরপর থেকেই পাকিস্তান প্রকাশ্যে একাধিকবার ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করে আসছে।

তবে ভারত শুরু থেকেই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। নয়াদিল্লি বলেছে, মে মাসের সংঘর্ষের অবসানে কোনো তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা ছিল না এবং যুদ্ধবিরতি এসেছে দ্বিপাক্ষিক সামরিক আলোচনার ফলেই। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা কখনোই আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা গ্রহণ করিনি, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট কাশ্মীরসহ সব বিষয়ই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে ৭ মে ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিন্দুর’, যা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। টানা চার দিন স্থল ও আকাশপথে সংঘর্ষ চলার পর উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

সূত্র:ডন,দ্য ইকোনমিক টাইমস


পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগানিস্তানের বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৯ ১০:৩৯:৫৩
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগানিস্তানের বার্তা
ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলেও বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। শনিবার কাবুলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ কাতার ও তুরস্ককে মধ্যস্থতা করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। তাদের প্রচেষ্টার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যদিও আলোচনা প্রত্যাশিত ফল দেয়নি, তবে পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্বে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে।”

মুজাহিদ আলোচনার ব্যর্থতার জন্য ইসলামাবাদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসহযোগিতামূলক’ মনোভাবকে দায়ী করেন। তার ভাষায়, “আমরা সংযম দেখিয়েছি, কিন্তু পাকিস্তান বারবার প্ররোচনামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের এই আচরণই আলোচনার ব্যর্থতার মূল কারণ।” সংবাদ সম্মেলনে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, এটি বহাল থাকবে।”

অন্যদিকে ইসলামাবাদ ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো এখনো আলোচনার ব্যর্থতা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ অক্টোবর কাতারের দোহায় তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়। সেই চুক্তির চূড়ান্ত পর্যালোচনার জন্য দুই দেশ ৬ নভেম্বর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠক করে, কিন্তু বৈঠকটি ব্যর্থ হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ব্যর্থতা দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা নতুন করে বাড়াতে পারে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংবেদনশীল ভূরাজনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এই সীমান্তে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার সংঘর্ষ, গোলাবর্ষণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড থেকে জঙ্গি সংগঠনগুলো, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে তালেবান সরকার এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে।

মুজাহিদ বলেন, “আমরা কখনোই প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কোনো জঙ্গি কার্যক্রমকে সমর্থন দিইনি এবং ভবিষ্যতেও দেব না। ইসলামাবাদের উদ্বেগ যদি বাস্তব হয়, তবে তা সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত, সংঘাতের মাধ্যমে নয়।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তালেবানের এই অবস্থান মূলত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আঞ্চলিক গ্রহণযোগ্যতা রক্ষার কৌশল। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতা অব্যাহত থাকলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমতে পারে বলে তারা আশা করছেন।

-শরিফুল


বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক থাকার বার্তা রাজনাথ সিংয়ের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৮ ১২:৪৭:২২
বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক থাকার বার্তা রাজনাথ সিংয়ের

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের উত্তেজনা চায় না। তবে একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তাঁর বিবৃতির শব্দ চয়ন নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

শুক্রবার ভারতীয় সাংবাদিক এবং নেটওয়ার্ক ১৮ গ্রুপের শীর্ষ সম্পাদক রাহুল জোশিকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং এই মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারে ভারত ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সতর্কবার্তা

সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না। তবে ইউনূসের উচিত হবে নিজের বিবৃতির শব্দ চয়ন নিয়ে সতর্ক থাকা।"

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ভারত যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। তবে এরপরও ভারতের মূল লক্ষ্য হলো প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুরু থেকেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এক ধরনের টানাপোড়েন চলছে।

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এই টানাপোড়েনকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফস কমিটি (সিজিসিএসসি)-এর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তুরস্কের পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক। উভয় দেশের সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে শীতল।

তুর্কি পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন তুরস্কের এমপি মেহমেত আকিফ ইলমাজ। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। সাক্ষাৎ শেষে তিনি তুর্কি প্রতিনিধিদলের সব সদস্যকে এক কপি করে ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামের একটি বই উপহার দিয়েছেন। ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ বইটি মূলত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন ছবি ও গ্রাফিতির সংকলন।

সূত্র: ফার্স্টপোস্ট


ব্লাড ব্যাংকের রক্তে এইচআইভি: সরকারি হাসপাতালের রক্ত নিয়ে আক্রান্ত হলো ৫ শিশু

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৮ ১১:৪১:৫৯
ব্লাড ব্যাংকের রক্তে এইচআইভি: সরকারি হাসপাতালের রক্ত নিয়ে আক্রান্ত হলো ৫ শিশু
হতাশায় পরিবার। প্রতীকী ছবি

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পর পাঁচজন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর দেহে এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এই পাঁচ শিশুর সকলের বয়স আট বছরের নিচে। নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের জন্য তাদের হাসপাতালে যেতে হতো, কিন্তু এই মারাত্মক ভুলের কারণে ভুক্তভোগী শিশু ও তাদের পরিবারগুলো এখন গভীর দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ভুগছে।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে।

ভুল শনাক্ত ও বরখাস্তের নির্দেশ

পশ্চিম সিংভূম জেলা সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পরই এই শিশুরা সংক্রমিত হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর চাইবাসার সিভিল সার্জন, এইচআইভি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ইতোমধ্যে প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।

তদন্তে জানা গেছে, রক্ত পরীক্ষার সময় পুরনো 'প্রি-কিট' ব্যবহারের কারণেই সংক্রমণটি শনাক্ত করা যায়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ সচিব ডা. নেহা অরোরা জানিয়েছেন, এখন থেকে এই ধরনের কিট ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পরিবারগুলোর দুর্ভোগ ও ক্ষোভ

পশ্চিম সিংভূমের মঞ্ঝরি ব্লকের সাত বছর বয়সী শশাঙ্ক (ছদ্মনাম) সংক্রমিত রক্ত পাওয়ার পর এইচআইভি আক্রান্ত হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই তাদের বাড়িওয়ালা পরিবারটিকে বাসা খালি করার নির্দেশ দেন। শশাঙ্কের বাবা দশরথ (ছদ্মনাম) বলেন, "আমি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু বাড়িওয়ালা রাজি হননি। শেষে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছি।" বর্তমানে এই পরিবারটিকে মাসে দুইবার চিকিৎসার জন্য ২৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। দশরথের অভিযোগ, সরকারি ভুলের কারণে এখন তাঁর ছেলেকে থ্যালাসেমিয়া আর এইচআইভি—দুই রোগের সঙ্গেই লড়াই করতে হবে।

একইভাবে হাটগামহারিয়া ব্লকের সাত বছরের দিব্যা (ছদ্মনাম) সংক্রমিত রক্ত সঞ্চালনের ফলে এইচআইভি পজিটিভ হয়েছে। তার মা সুনীতা (ছদ্মনাম) বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালের নার্সরা দিব্যাকে ছোঁয়া এড়িয়ে চলছিলেন এবং ডাক্তাররা গ্লাভস পরে দূর থেকে পরীক্ষা করছিলেন। তখনই তাঁর সন্দেহ হয়। অক্টোবরে হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয়, ভুলবশত সংক্রমিত রক্ত দেওয়া হয়েছিল।

সুনীতা বলেন, "শুরুতে আমি বুঝিনি, পরে বুঝেছি এই রোগ কত ভয়ঙ্কর। এখন আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি আতঙ্কে আছি।" ঝিকপানি ব্লকের শ্রেয়া (ছদ্মনাম) নামের এক শিশু ও তার মা শ্রদ্ধাও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শ্রদ্ধা বলেন, "হাসপাতালের ভুলে আমার মেয়ে এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। এর জন্য আমি দুই লাখ টাকার চেক পেয়েছি, কিন্তু একটা শিশুর জীবনের মূল্য কি এতটুকু?"

দশরথ আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "মন্ত্রীদের ছেলেদের জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, আর আমাদের বাচ্চাদের জন্য দুই লাখ! একটা শিশুর জীবনের মূল্য কি এতটুকু?"

মাননিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও আদালতের উদ্বেগ

জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ওই জেলায় মোট ২৫৯ জন রক্তদাতা রক্ত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজন এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন।

বিবিসি জানিয়েছে, রাজ্যের নয়টি ব্লাড ব্যাংকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলেও সেগুলোতে কার্যক্রম চালু ছিল। এ বিষয়ে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট ইতোমধ্যে রাজ্য সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে। মানবাধিকারকর্মী অতুল গেরা বলেন, লাইসেন্স নবায়ন ও মান নিয়ন্ত্রণের অভাবই এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। তিনি জানান, ঝাড়খণ্ডে পাঁচ হাজারেরও বেশি থ্যালাসেমিয়া রোগী আছে, কিন্তু চিকিৎসার জন্য পুরো রাজ্যে মাত্র একজন হেমাটোলজিস্ট রয়েছেন।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, আবাসন, রেশন, শৌচালয়সহ সব সরকারি সুবিধা দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

কল্পনা করুন এমন একটি প্রাইভেট কোম্পানির কথা, যা এতটাই শক্তিশালী যে সে তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, দেশ... বিস্তারিত

৬০ দিনে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি: জীবনযাত্রার চাপ কমাতে ৫টি বিশেষ খাবার

৬০ দিনে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি: জীবনযাত্রার চাপ কমাতে ৫টি বিশেষ খাবার

আজকের ব্যস্ত জীবনধারা এবং সেডেন্টারি লাইফস্টাইলের কারণে মানবদেহে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। জাঙ্কফুডের বৃদ্ধি এবং চলাফেরার অভাবে লিভারের ওপর চাপ... বিস্তারিত