বিশেষ প্রতিবেদন

ডলারের যুগের অবসান? পাঁচ শতাব্দীর আর্থিক ইতিহাসে পুনরাবৃত্ত পতনের ছন্দ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১২:০৬:২০
ডলারের যুগের অবসান? পাঁচ শতাব্দীর আর্থিক ইতিহাসে পুনরাবৃত্ত পতনের ছন্দ

কল্পনা করুন, সময়টা ১৯৪৪ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। ৪৪টি মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা সমবেত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের পাহাড়ি শহর ব্রেটন উডসের মনোরম মাউন্ট ওয়াশিংটন হোটেলে। সেই বৈঠকে তাঁরা এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন, যা পরবর্তী আশি বছরের জন্য পৃথিবীর অর্থনীতির ভাগ্য নির্ধারণ করবে। সভাকক্ষের ভেতরে ইতিহাস যেন থমকে আছে। ব্রিটেন, যে দেশ একসময় পৃথিবীর আর্থিক হৃদস্পন্দন ছিল, এখন প্রায় নিঃস্ব। তার জাতীয় ঋণ জিডিপির ২৪৯ শতাংশে পৌঁছেছে। পরপর দুটি বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায় সাম্রাজ্যটির অর্থনীতি প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায়। যে দেশ শতাব্দীর পর শতাব্দী সমুদ্রপথ শাসন করেছিল, তার রিজার্ভ শেষ, ব্যাংক শূন্য এবং জনগণ ক্লান্ত। সেই মুহূর্তে উপস্থিত সবাই বুঝেছিল, এক যুগের অবসান ঘনিয়ে এসেছে।

তখন ঘটে ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা। বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রার মুকুট এক সাম্রাজ্য থেকে অন্য সাম্রাজ্যের হাতে হস্তান্তরিত হয়। ব্রিটিশ পাউন্ড, যা দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের মেরুদণ্ড ছিল, হারায় তার মর্যাদা। সেই শূন্যস্থান পূরণ করে মার্কিন ডলার। তবে এটি কেবল আর্থিক হস্তান্তর নয়। এটি ছিল মানবসভ্যতার আর্থিক ইতিহাসে বারবার পুনরাবৃত্ত এক চক্রের ধারাবাহিকতা। এই চক্রের চারটি ধাপ উত্থান, শিখর, অতিবিস্তার এবং পতন যুগে যুগে সাম্রাজ্য থেকে সাম্রাজ্যে পুনরাবৃত্ত হয়েছে। ইতিহাসে পর্তুগাল, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ব্রিটেন সবাই এই একই ধাপের মধ্য দিয়ে গেছে। আজ মার্কিন ডলার সেইসব পূর্বসূরির মতোই একই সতর্ক সংকেত দেখাতে শুরু করেছে।

এই চক্রটি বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে অতীতে, প্রায় ছয় শতাব্দী পেছনে, ইউরোপের পশ্চিম উপকূলে, পর্তুগালের উত্থানের কাহিনিতে।

পর্তুগালের রিয়াল ও আবিষ্কারের যুগ

১৪৫০ সালের দিকে পর্তুগিজ রিয়াল হয়ে ওঠে বিশ্বের প্রথম প্রকৃত রিজার্ভ মুদ্রা। পরবর্তী আশি বছর পর্তুগাল ছিল বৈশ্বিক বাণিজ্যের অবিসংবাদিত নেতা। তাদের সাফল্যের রহস্য ছিল নৌচালনা ও বৈদেশিক বাণিজ্যে উদ্ভাবন। ১৪৫৩ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর প্রাচীন মশলার বাণিজ্যপথ বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপীয় বণিকদের জন্য এটি ছিল এক বিশাল ধাক্কা, কিন্তু পর্তুগাল খুঁজে পেল নতুন পথ। তারা আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে সমুদ্রপথে এশিয়ায় পৌঁছে দেয় বাণিজ্যের নতুন দ্বার, শুরু হয় আবিষ্কারের যুগ।

লিসবন তখন হয়ে ওঠে বিশ্বের বাণিজ্যকেন্দ্র। পর্তুগিজ রিয়াল ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত গৃহীত হতে শুরু করে। সাম্রাজ্য ছড়িয়ে পড়ে আফ্রিকা, ভারত, মালয়েশিয়া, জাপান এবং চীনের ম্যাকাও পর্যন্ত। কিন্তু ইতিহাসের চিরন্তন নিয়ম অনুযায়ী সাফল্যই হয়ে ওঠে পতনের সূচনা। চারটি মহাদেশে সামরিক ঘাঁটি রক্ষা করতে করতে তাদের ভাণ্ডার ফুরিয়ে যায়। প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি ডাচ, ফরাসি ও ব্রিটিশরা ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ১৫৩০-এর দশকে রাজপরিবারে উত্তরাধিকার সংকট সৃষ্টি হলে দেশটি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ১৫৮০ সালে স্পেনের হাতে পর্তুগাল আত্মসমর্পণ করে, গঠিত হয় আইবেরিয়ান ইউনিয়ন। প্রায় আশি বছরের আধিপত্যের পর ইতিহাসের মঞ্চ থেকে হারিয়ে যায় পর্তুগালের রিয়াল। তার জায়গা নেয় স্প্যানিশ রূপা।

স্প্যানিশ রূপার সাম্রাজ্য

স্পেনের উত্থান শুরু হয় আন্দিজ পর্বতমালার কোলে বলিভিয়ার পোটোসি নামের এক পাহাড়ে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ রূপার খনি আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। ১৫৪৫ সালে আবিষ্কৃত এই খনি ১৫৭৫ থেকে ১৬৩৫ সালের মধ্যে উৎপাদন করেছিল বিশ্বের প্রায় অর্ধেক রূপা। এই রূপা দিয়ে তৈরি হয় বিখ্যাত “পিস অফ এইট”, যা বিশ্বের প্রথম বৈশ্বিক মুদ্রা হিসেবে পরিচিত হয়। এই স্প্যানিশ ডলার এতটাই নির্ভরযোগ্য ছিল যে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিল।

স্পেনের আধিপত্য স্থায়ী হয় প্রায় ১১০ বছর। কিন্তু অতিবিস্তার ও ঋণের বোঝা তাদের পতন ডেকে আনে। রাজা চার্লস প্রথম রেখে যান ৩৬ মিলিয়ন ডুকাট ঋণ এবং প্রতি বছর এক মিলিয়ন ডুকাটের ঘাটতি। তাঁর পুত্র ফিলিপ দ্বিতীয় এই বোঝা সামলাতে গিয়ে চারবার দেউলিয়া ঘোষণা করেন ১৫৫৭, ১৫৬০, ১৫৭৫ এবং ১৫৯৬ সালে। রূপার অবিরাম প্রবাহ দেশে সৃষ্টি করে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি। ফিলিপ দ্বিতীয়ের রাজত্বকালে পণ্যের দাম চারগুণ বেড়ে যায়। ফিলিপ তৃতীয়ের আমলে রূপার সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসতেই অর্থনীতি ধসে পড়ে এবং ১৬০৭ সালে আবার দেউলিয়াত্ব ঘোষণা করতে হয়। ১৬৪১ সালে আইবেরিয়ান ইউনিয়ন ভেঙে যায়। স্পেনের রূপার রাজত্বের অবসান ঘটে এবং আর্থিক শক্তির মঞ্চে উঠে আসে ডাচ প্রজাতন্ত্র।

নেদারল্যান্ডসের সোনালি যুগ

১৭ শতকে নেদারল্যান্ডস হয়ে ওঠে বিশ্বের আর্থিক রাজধানী। আমস্টারডাম তখন বাণিজ্যের নতুন কেন্দ্র এবং ডাচ গিল্ডার ইউরোপের কার্যত রিজার্ভ মুদ্রা। আমস্টারডাম ব্যাংক প্রবর্তন করে আন্তর্জাতিক অর্থপ্রদানের আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা। ডাচ বণিকেরা প্রথম গঠন করে শেয়ারবাজার, সামুদ্রিক বীমা এবং শেয়ার কোম্পানির ধারণা।

১৬৪২ থেকে ১৭২০ পর্যন্ত, প্রায় আট দশক ধরে, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হতো ডাচ মুদ্রায়। কিন্তু একই চক্র পুনরায় দেখা দেয়। চতুর্থ ইংরেজ-ডাচ যুদ্ধের (১৭৮০ থেকে ১৭৮৪) ফলে দেশটি দেউলিয়া হয়ে পড়ে। বিশাল ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভেঙে যায়। এই শূন্যস্থান পূরণ করে ব্রিটেন, যে তখন শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল।

ব্রিটিশ পাউন্ড ও শিল্পবিপ্লবের শতাব্দী

দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ পাউন্ড ছিল বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রধান মুদ্রা। শিল্পবিপ্লব, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও উপনিবেশ সাম্রাজ্যের শক্তিতে ব্রিটেন গড়ে তোলে পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতি। ১৮১৬ সালের গ্রেট রিকয়েনেজের পর স্বর্ণমান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পাউন্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রায় পরিণত করে। ১৯২২ সালের মধ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শাসন করত বিশ্বের এক চতুর্থাংশ ভূমি ও এক পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা, প্রায় ৪৫৮ মিলিয়ন মানুষ।

তবে দীর্ঘস্থায়ী এই আধিপত্যের অবসান ঘটাতে শুরু করে দুটি বিশ্বযুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ঋণ বেড়ে যায় ৬৫০ মিলিয়ন পাউন্ড থেকে ৭ বিলিয়নে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে সরকারি ঋণ দাঁড়ায় জিডিপির ২৭০ শতাংশে। ব্রিটেন যুদ্ধ জিতলেও হারায় তার আর্থিক নেতৃত্ব।

ব্রেটন উডস ও ডলারের যুগ

১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে ৭০০ প্রতিনিধি জড়ো হন ব্রেটন উডসে। লক্ষ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত বিশ্ব অর্থনীতির পুনর্গঠন। সেই সম্মেলন থেকেই জন্ম নেয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্বব্যাংক (World Bank)। চুক্তি অনুযায়ী সব বড় মুদ্রা বাঁধা হয় মার্কিন ডলারের সঙ্গে, আর ডলার বাঁধা হয় স্বর্ণে প্রতি আউন্স ৩৫ ডলার দরে। এই মুহূর্তেই ব্রিটিশ পাউন্ডের যুগের সমাপ্তি ঘটে এবং সূচনা হয় আমেরিকান যুগের।

এরপরের পঁচিশ বছর ডলার রাজত্ব করে নিরঙ্কুশভাবে। ১৯৭১ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের স্বর্ণ-রূপান্তরযোগ্যতা স্থগিত করেন এবং স্বর্ণমান বিলুপ্ত হয়। তবু ডলার ধসে পড়েনি। বরং খুঁজে নেয় নতুন ভিত্তি, তেল।

১৯৭৩ সালের ওপেক তেল সংকটের পর যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে এক কৌশলগত চুক্তি করে। মার্কিন সামরিক সুরক্ষার বিনিময়ে সৌদি তেল বিক্রি হবে কেবল ডলারে। ১৯৭৫ সালের মধ্যে সব ওপেক সদস্য এই চুক্তি মেনে নেয়। জন্ম নেয় পেট্রো-ডলার ব্যবস্থা। তেল ছিল সবার প্রয়োজন, তাই ডলারও হয়ে ওঠে সবার প্রয়োজন। এই কৃত্রিম চাহিদা যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বিশাল ঘাটতি বহনের সুযোগ দেয় যা অন্য কোনো দেশের পক্ষে অসম্ভব ছিল।

২০০০ সালের দিকে বিশ্বের বৈদেশিক রিজার্ভের ৭০ শতাংশ ছিল ডলারে। কিন্তু ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫৭ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ট্রেজারির অর্ধেকেরও বেশি ধারণ করত, অথচ ২০২৫ সালে তা নেমে আসে মাত্র ৩০ শতাংশে।

ডি-ডলারাইজেশনের দ্রুত অগ্রযাত্রা

একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী জোট ব্রিকস, যার সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা, সম্প্রতি যুক্ত করেছে মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। তারা গড়ে তুলছে ব্রিকস ব্রিজ, একটি পেমেন্ট নেটওয়ার্ক যা সেন্ট্রাল ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন করবে, ডলার ছাড়াই। ২০২৫ সাল নাগাদ এই জোট ও তাদের ১৩টি অংশীদার দেশ এই উদ্যোগে যুক্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিজেই ঋণে ডুবে আছে। ২০২৫ সালের মার্চে মার্কিন সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা জিডিপির ১২৪ শতাংশ। এটি সেই একই সূচক যা ইতিহাসে প্রতিটি সাম্রাজ্যের পতনের আগে দেখা গেছে, অতিরিক্ত ঋণ, সামরিক অতিবিস্তার এবং উৎপাদনশীলতার পতন।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

পর্তুগাল, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ব্রিটেন সবাই একই পথে হেঁটেছে। তাদের রিজার্ভ মুদ্রার আয়ু ছিল ৭৮ থেকে ২২০ বছর পর্যন্ত, গড়ে প্রায় ৯৫। মার্কিন ডলার এখন ৮১ বছরে পা দিয়েছে। ইতিহাসের চক্র আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

প্রত্যেক রিজার্ভ মুদ্রার চারটি ধাপ থাকে। প্রথম ধাপ উত্থান, যখন একটি দেশ বাণিজ্য, অর্থনীতি বা সামরিক শক্তিতে উদ্ভাবনের মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে তোলে। পর্তুগাল নৌচালনায় বিপ্লব ঘটায়, স্পেন রূপার জোগান নিয়ন্ত্রণ করে, ডাচরা আধুনিক অর্থব্যবস্থা তৈরি করে, ব্রিটেন শিল্পবিপ্লব ঘটায় এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ-পরবর্তী শিল্পশক্তিতে উত্থান ঘটায়। দ্বিতীয় ধাপ শিখর, যখন সেই মুদ্রা হয়ে ওঠে বৈশ্বিক মানদণ্ড এবং বিশ্বের ৬০ শতাংশ বাণিজ্য এতে পরিচালিত হয়। তৃতীয় ধাপ অতিবিস্তার, যেখানে সামরিক ব্যয়, ঋণ এবং উৎপাদনশীলতার পতন দেখা দেয়। পর্তুগাল চার মহাদেশে সামরিক বোঝা বইতে পারেনি, স্পেন বারবার দেউলিয়া হয়েছে, ডাচরা ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধ করে নিঃশেষ হয়েছে, ব্রিটেনের ঋণ পৌঁছেছিল জিডিপির ২৭০ শতাংশে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ১২৪ শতাংশ এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ব্যয় আট ট্রিলিয়ন ডলার। শেষ ধাপ পতন, যখন আস্থা হারিয়ে যায় এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার কেন্দ্র সরে যায় অন্যত্র।

পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থা: একমেরু না বহুমেরু

স্পেনের হাতে পতনের পর পর্তুগাল আর কখনো মাথা তুলতে পারেনি। স্পেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধুঁকেছে, নেদারল্যান্ডস ধনী থেকেও আঞ্চলিক শক্তিতে সীমিত হয়েছে, আর ব্রিটেনের সাম্রাজ্য ১৯৪৫-এর পর গলে গেছে। ১৯৫০-এর দশকে এখনও বিশ্বের ৫৫ শতাংশ রিজার্ভ ছিল স্টার্লিংয়ে, কিন্তু দুই দশকের মধ্যেই তা অর্ধেকে নেমে আসে। ব্রিটিশ শতাব্দী শেষ, শুরু হয় আমেরিকান শতাব্দী।

তবে এমন পরিবর্তন একদিনে ঘটে না। ব্রিটেনের পতন ছিল ধীর, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে তাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল বহু আগেই, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ডলার পাউন্ডকে প্রতিস্থাপন করে পরে। আজ একই ধীর রূপান্তর সম্ভবত আবার ঘটছে, এইবার চীনের দিকে, কিংবা একাধিক শক্তির সম্মিলিত নেতৃত্বে নতুন এক বহুমেরু বিশ্বব্যবস্থার দিকে।

ইতিহাসে রিজার্ভ মুদ্রার গড় আয়ু প্রায় ৯৫ বছর। মার্কিন ডলার সেই সীমার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। বৈশ্বিক রিজার্ভে ডলারের অংশীদারিত্ব কমছে, বিদেশি ট্রেজারি বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে, ব্রিকস বিকল্প গড়ে তুলছে, পেট্রো-ডলার ব্যবস্থা দুর্বল হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ১৩০ দেশে ৯০০ সামরিক ঘাঁটি ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এই চিত্র যেন ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি, একই ছন্দে, নতুন মুখে।

তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, এই পরিবর্তন কত দ্রুত ঘটবে এবং পরবর্তী আর্থিক যুগের নেতৃত্ব নেবে কে। এটি কি হবে ব্রিটেনের মতো ধীর অবসান, নাকি নেদারল্যান্ডসের মতো আকস্মিক পতন। একটি একক শক্তি কি আবার বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষে উঠবে, নাকি ভবিষ্যৎ হবে বহুমেরু, যেখানে কয়েকটি রিজার্ভ মুদ্রা ভাগাভাগি করবে বৈশ্বিক প্রভাব।

ইতিহাস কখনো ঠিক একরকম পুনরাবৃত্তি হয় না, কিন্তু তার ছন্দ ফিরে আসে। আর যদি সেই ছন্দ এবারও সত্য প্রমাণিত হয়, তবে পৃথিবী এখন দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে, ডলারের আধিপত্যের শেষ অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে।


জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৮:০০:৪৭
জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

জেন-জি বা তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মেক্সিকো। একজন মেয়রের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা এখন দেশটির একাধিক শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভে অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। রোববার (১৬ নভেম্বর) বিবিসি একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, শুধু রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেই জেন-জির ডাকা প্রতিবাদে অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ কর্মকর্তা। শনিবার হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন এবং দেশে ক্রমবর্ধমান সহিংস অপরাধ ও প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছেন, তার সরকারের বিরোধিতা করছেন এমন ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা এই বিক্ষোভে অর্থায়ন করছেন এবং তারাই এটি সংগঠিত করেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছে জেন-জির তরুণদের বিভিন্ন সংগঠন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে উরুয়াপানের মেয়র কার্লোস মানজোর হত্যার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়। মেয়র মানজো প্রকাশ্যে মাদক কার্টেল এবং সশস্ত্র পাচারকারী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলতেন এবং তাদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাতেন। গত ১ নভেম্বর 'ডে অব দ্য ডেড' (মৃতদের দিবস) উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা 'আমরা সবাই কার্লোস মানজো' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অনেকে নিহত মেয়রের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাউবয় হ্যাট পরেও বিক্ষোভে অংশ নেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসকে রক্ষা করার জন্য স্থাপন করা ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে ফেলেন। ন্যাশনাল প্যালেস প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের সরকারি বাসভবন হওয়ায় এলাকাটি বিশেষ নিরাপত্তায় সুরক্ষিত ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে।

মেক্সিকো সিটির নিরাপত্তা প্রধান পাবলো ভাসকেজ জানিয়েছেন, লুটপাট, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভের আগে প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছিলেন যে, অনলাইন বট ব্যবহার করে এসব বিক্ষোভের প্রচারণা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, "যুবকদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন কে সংগঠিত করছে? জনগণের জানা জরুরি যেন তারা ব্যবহৃত না হয়।"

বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই শেইনবাউমের প্রতি ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের সমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে ফেন্টানিল পাচারের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রশংসা পেয়েছে। তবে, দেশব্যাপী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তিনি সমালোচিতও হচ্ছেন। একই সময়ে প্রতিবেশী দেশ পেরুর সঙ্গেও মেক্সিকোর কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। চলতি মাসের শুরুতে পেরুর কংগ্রেস শেইনবাউমকে 'পারসোনা নন গ্রাটা' বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করে। এর আগে মেক্সিকো অভিযুক্ত একজন সাবেক পেরুভিয়ান প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল।


বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৭:১৫:৩১
বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা

সৌদি আরব বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পুরোনো নীতি থেকে সরে আসছে। একটা সময় দেশটি উচ্চ বেতনের আকর্ষণীয় প্রস্তাব বা 'স্যালারি প্রিমিয়াম' দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করত। কিন্তু এখন সেই বাস্তবতার পরিবর্তন হচ্ছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্স চারজন নিয়োগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, সৌদি আরব এখন খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে এবং তাদের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো নতুন করে সাজাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো উদার প্রস্তাব আর দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে নির্মাণ, উৎপাদন এবং দেশটির বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোতে এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক এই দেশটি তাদের 'ভিশন ২০৩০' নামের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো তেলের ওপর থেকে দেশের নির্ভরতা কমিয়ে আনা। একইসঙ্গে পর্যটন, রিয়েল এস্টেট, খনন ও আর্থিক খাতের মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান তৈরি করা। এই লক্ষ্য পূরণে দেশটি এরই মধ্যে শত শত বিলিয়ন ডলারের মেগা প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। তবে, রয়টার্সের মতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি, যা এখনকার এই ব্যয় সংকোচনের একটি কারণ হতে পারে।

নিয়োগ খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন, আগে এমন একটা সময় ছিল যখন কেউ সৌদিতে চাকরি নিয়ে গেলে তার বর্তমান বেতনের চেয়ে ৪০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত বেশি বেতন পাওয়াটা খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখনকার প্রস্তাবগুলো অনেক বেশি সংযত।

বয়ডেন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ম্যাগদি আল জায়েন বলেন, এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৌদি অর্থনীতি এখন খরচ কমাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, প্রচুর সংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রার্থী সৌদিতে কাজ করতে আগ্রহী। এই সুযোগে কোম্পানিগুলো তাদের বেতন কাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ পাচ্ছে।

দুবাইভিত্তিক টাস্কান মিডল ইস্টের সিইও হাসান বাবাত একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যিনি ৬০ হাজার ডলার বেতনে ম্যানেজারের চাকরি করতেন, তিনিই সৌদিতে অনায়াসে ১ লাখ ডলারের চাকরির প্রস্তাব পেতেন। কিন্তু এখন সেই সুযোগ আর নেই।

তবে, বেতন কমানোর এই প্রবণতার মধ্যেও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা প্রার্থীদের জন্য সৌদি আরব এখনও একটি আকর্ষণীয় বাজার। দেশটির অর্থনীতি ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

একইসঙ্গে, সরকার দেশের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান বাড়ানোর দিকেও ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকদের অংশগ্রহণ ৩১ শতাংশ বেড়েছে এবং দেশটিতে বেকারত্বের হার ঐতিহাসিকভাবে কমে এসেছে।

ম্যাচেস ট্যালেন্টের সিইও লুইস নুটসন এই পরিবর্তনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, এখনকার বেতন প্যাকেজগুলো বাস্তব বাজার দর, কর্মীর পারফরম্যান্স এবং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হচ্ছে। বাইরে থেকে এটাকে 'সংকোচন' মনে হলেও, এটি আসলে সৌদি আরবের বাজার 'পরিপক্ক' হয়ে ওঠার লক্ষণ।

তিনি আরও বলেন, এখন সৌদিতে সেরা প্রতিভাদের আকর্ষণ করতে হলে কোম্পানিগুলোকে শুধু বেশি বেতনের প্রস্তাব দিলেই হবে না, বরং পারিবারিক জীবনযাপনের ভারসাম্য, জীবনযাত্রার খরচ মেটানোর সুবিধা এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে।


সাগর যেখানে সমাধিক্ষেত্র: ভূমধ্যসাগরে আবারও ডুবল স্বপ্নের নৌকা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৫:৫০:৪৬
সাগর যেখানে সমাধিক্ষেত্র: ভূমধ্যসাগরে আবারও ডুবল স্বপ্নের নৌকা
ছবিঃ সংগৃহীত

পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর আশা এবং উন্নত এক ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা অনেক মানুষকে ইউরোপে যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ পথে ঠেলে দেয়। এই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার মতো চরম বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত নেন।

চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাজি রেখে অনেকেই এই কঠিন পথ বেছে নেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো সৌভাগ্যক্রমে গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন, কিন্তু বেশিরভাগেরই জীবনযাত্রা সাগরের মাঝপথেই থেমে যায়।

সম্প্রতি এই ভয়াবহ বাস্তব চিত্রটি আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল-খুমস উপকূল থেকে প্রায় ১০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহনকারী দুটি নৌকা ইউরোপের পথে সাগরে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝপথেই একটি নৌকার স্বপ্নযাত্রা থেমে যায়। চোখের পলকে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে নৌকাটি উল্টে গেলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কমপক্ষে চারজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, প্রথম নৌকাটিতে ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ওই নৌকায় থাকা বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

ত্রিপোলির উপকূলীয় এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপে যাওয়ার অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য একটি প্রধান ট্রানজিট রুট হিসেবে পরিচিত। একারণে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নিয়মিতই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে, যা ইউরোপীয় দেশগুলোরও গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে প্রশ্ন হলো, লিবিয়া কেন এমন একটি ট্রানজিট রুটে পরিণত হলো?

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার একটি পরিচিত ও জনপ্রিয় রুট হিসেবে লিবিয়াকে ব্যবহার করা হয়। ২০১১ সালে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশটি ইউরোপগামী অভিবাসীদের প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়।

একসময় গাদ্দাফির শাসনামলে তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা সহজে কাজের সুযোগ পেত। কিন্তু তার পতনের পর দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীর সংঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে আট লাখেরও বেশি অভিবাসী লিবিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিভিন্ন অধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লিবিয়ায় আশ্রয় নেওয়া এই শরণার্থী ও অভিবাসীরা স্থানীয় মিলিশিয়াদের হাতে নিয়মিতভাবে চরম নির্যাতন, ধর্ষণ এবং চাঁদাবাজির শিকার হন।

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অর্থসহায়তা দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অভিযোগ উঠেছে যে এই কোস্টগার্ড বাহিনীর সঙ্গেই নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়াদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়া উপকূলে একের পর এক নৌডুবিতে বহু অভিবাসীর প্রাণহানি ঘটায়, জাতিসংঘের সভায় বেশ কয়েকটি দেশ লিবিয়ার অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলো বন্ধ করার জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।


গাজা–ইরান ইস্যুতে রহস্যময় ফোনালাপ নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১২:৩৮:৪৬
গাজা–ইরান ইস্যুতে রহস্যময় ফোনালাপ নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের
ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই সংলাপকে দুই দেশের নীতিমালা ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্বিন্যাসের একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। খবর সামাটিভির।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশেষ করে গাজা উপত্যাকার বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দুই নেতা হামাস–ইসরাইল নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির অগ্রগতি, বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ভূমিকা বিষয়ে মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বহুপাক্ষিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন তারা।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, পুতিনের উদ্যোগেই শনিবার সন্ধ্যায় ফোনালাপটি অনুষ্ঠিত হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একাধিক বার যোগাযোগ হলেও এই আলাপটি মধ্যপ্রাচ্য–ভিত্তিক জটিল নিরাপত্তা পরিবেশে ইসরাইল–রাশিয়া সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আলাপের সময় নেতানিয়াহু গাজার নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা কাঠামো এবং যুদ্ধবিরতির কার্যক্রম নিয়ে পুতিনকে অবহিত করেন।

উল্লেখ্য, পুতিন ও নেতানিয়াহুর সর্বশেষ ফোনালাপ হয়েছিল ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর, হামাসের আকস্মিক আক্রমণের ঠিক পরদিন। সেসময় পুতিন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে রাশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনে গাজায় প্রাণহানি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছায়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাবে, এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রে ধারাবাহিক বোমাবর্ষণের কারণে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে।

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। চুক্তির প্রথম ধাপে পারস্পরিক বন্দি বিনিময় চলছে, যার মাধ্যমে ইসরাইলের কাছে আটক ফিলিস্তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্ত করা হচ্ছে এবং হামাস আটক ইসরাইলি বন্দিদের ফেরত দিচ্ছে।

চুক্তির অন্যান্য ধাপের মধ্যে রয়েছে গাজার পুনর্গঠন কার্যক্রম, অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে হামাসবিহীন নতুন শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠা। এসব বিষয়ে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

-রাফসান


১,৪৪৪ টন সোনার সবচেয়ে বড় স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:৩০:৪৯
১,৪৪৪ টন সোনার সবচেয়ে বড় স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার
ছবি: সংগৃহীত

চীন তার আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বর্ণ ভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে। লিয়াওনিং প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আবিষ্কৃত এই বিশাল স্বর্ণমজুতকে ১৯৪৯ সালের পর দেশের বৃহত্তম আবিষ্কার হিসেবে ঘোষণা করেছে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভান্ডার শুধু পরিমাণে নয়, ভবিষ্যত অর্থনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকেও চীনের জন্য একটি নতুন কৌশলগত অধ্যায়ের সূচনা করবে।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দাদংগোউ নামে পরিচিত এলাকায় পাওয়া এই খনিতে মোট ২৫.৮৬ লাখ টন আকরিক রয়েছে, যেখানে প্রতি টনে গড়ে ০.৫৬ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যাবে। সব মিলিয়ে স্বর্ণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১,৪৪৪ টন, যা বিশ্বের অনেক দেশের জাতীয় রিজার্ভের সঙ্গে তুলনীয়। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারদরে এই স্বর্ণের মূল্য ১৬৬ বিলিয়ন ইউরোর বেশি, যা চীনের স্বর্ণ কৌশলে একটি বড় সংযোজন।

লিয়াওনিং জিওলজিক্যাল অ্যান্ড মাইনিং গ্রুপের অধীনে প্রায় এক হাজার প্রযুক্তিবিদ ও কর্মী মাত্র ১৫ মাসে অনুসন্ধান কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত অল্প সময়ে এত বড় ভান্ডার শনাক্ত করা অত্যন্ত বিরল ঘটনা, যা চীনের আধুনিক খনিজ অনুসন্ধান প্রযুক্তি ও শ্রমশক্তির দক্ষতার প্রমাণ।

তবে আকরিকের মান তুলনামূলকভাবে কম হলেও এর অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ‘উচ্চ’ এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। খনন–উত্তোলন প্রকল্পটি ভবিষ্যতে চীনের শিল্প উৎপাদন, বৈদেশিক রিজার্ভ বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সাইটটির নির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।

এই আবিষ্কার এসেছে এমন সময়ে যখন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল মার্কিন ডলার, মুদ্রাস্ফীতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনার প্রবণতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু চলতি বছরেই স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। উদীয়মান অর্থনীতিগুলো নিজেদের রিজার্ভ সুরক্ষিত করতে স্বর্ণ কেনায় আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণ অনুসন্ধান উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালে দেশটি হুনান প্রদেশে ১,০০০ টনের বেশি মজুতের একটি স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার করে। একই বছরের অক্টোবরে গানসু প্রদেশে পাওয়া যায় আরও একটি ৪০ টনের ভান্ডার। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে চীন ৩৭৭.২৪ টন স্বর্ণ উৎপাদন করে, যা আগের বছরের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি। তবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা ছিল প্রায় এক হাজার টন, যার ফলে আমদানি ও মজুদ গঠন চীনের অর্থনৈতিক কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বার ও কয়েনের চাহিদা বছরে ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে রয়েছে চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে সম্পদ সুরক্ষার তীব্র আগ্রহ। বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তায় ডুবে থাকায়, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ এখন চীনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

-শরিফুল


আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২১:৫১:২৮
আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আবারও সীমান্ত সংঘাত শুরু হয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশ দুটির নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় নেতাকে শান্তিচুক্তিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

সম্প্রতি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখা গিয়েছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মালয়েশিয়াতে দেশ দুটি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু সেই চুক্তিটি গত সপ্তাহে থাই সরকার স্থগিত করে দেয়। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সীমান্তে একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণের অভিযোগ তোলার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

যুদ্ধবিরতি স্থগিত হওয়ার পর বুধবার (১২ নভেম্বর) উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ আনে। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, থাইল্যান্ডের গুলিবর্ষণে তাদের একজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান 'এয়ার ফোর্স ওয়ানে' ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প জবাবে বলেন, "শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে, আজই আমি একটি যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম।" তিনি আরও যোগ করেন, "ওরা দারুণ করছে। আমার মনে হয় ওরা ঠিক হয়ে যাবে।"

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে এই বিরোধটি শতাব্দী প্রাচীন। মূলত ফ্রান্সের উপনিবেশিক শাসনামলে তৈরি করা মানচিত্রের ওপর ভিত্তি করে এই সীমান্ত নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু উভয় দেশই সীমান্তের কিছু অংশের মালিকানা দাবি করায় দীর্ঘদিন ধরে এই উত্তেজনা চলে আসছে।


প্রকাশ হলো ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২০:২৬:৪৬
প্রকাশ হলো ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ
ছবি : সংগৃহীত

এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে যে, ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতর আগামী ২০ মার্চ (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হতে পারে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান বলেছেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব অনুযায়ী, ১৪৪৭ হিজরির রমজান মাসের চাঁদ ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, সেদিন খালি চোখে চাঁদ দেখা কঠিন হতে পারে।

এই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের রমজান মাস ১৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হতে পারে। এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি আরও পূর্বাভাস দিয়েছে যে, এ বছর রমজান মাস ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা-ই হয়, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী ঈদের ছুটি একদিন বাড়তে পারে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রমজান ৩০ দিন পূর্ণ হলে ১৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে ২২ মার্চ (রোববার) পর্যন্ত টানা চার দিনের ঈদ ছুটি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে, ২৩ মার্চ (সোমবার) থেকে দেশটিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে।

যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই পূর্বাভাস দিয়েছেন, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদের আনুষ্ঠানিক তারিখ সেদেশের 'মুন-সাইটিং কমিটি' বা চাঁদ দেখা কমিটিই চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করবে। তা সত্ত্বেও, হিসাব অনুযায়ী ২০ মার্চ তারিখেই শাওয়াল মাসের প্রথম দিন বা ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঈদুল ফিতর মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এর সঙ্গে যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতি গভীরভাবে জড়িত, তাই চাঁদ দেখার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করবে না।


২০ হাজার সেনা প্রস্তুত: গাজা নিয়ে জর্ডানের সাথে তথ্য বিনিময়ে ইন্দোনেশিয়া

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১৯:০৫:০৮
২০ হাজার সেনা প্রস্তুত: গাজা নিয়ে জর্ডানের সাথে তথ্য বিনিময়ে ইন্দোনেশিয়া
ইসরায়েলি বাহিনী ও তাদের সামরিক যান। ছবি : সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, দেশটি গাজার জন্য ২০ হাজার সৈন্য প্রস্তুত করছে। তবে আন্তর্জাতিক অনুমোদন পাওয়ার পরেই এই বাহিনীকে উপত্যকায় মোতায়েন করা হবে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যাফরি স্যামসুদ্দিন জানিয়েছেন, এই সেনা মোতায়েনের জন্য ইন্দোনেশিয়া দুটি সম্ভাব্য পথ নিয়ে অনুসন্ধান করছে। প্রথমটি হলো জাতিসংঘের অধীনে এবং দ্বিতীয়টি হলো এমন একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অধীনে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে গঠিত হতে পারে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় বিকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে।

তিনি বলেন, আরব দেশগুলো—বিশেষ করে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত—যদি এই পদক্ষেপে সবুজ সংকেত দেয়, তবে ইন্দোনেশিয়া তাতে আনন্দের সঙ্গে অংশ নেবে। এর পাশাপাশি, এই সেনা মোতায়েনের জন্য ইসরায়েলের অনুমতিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পুরো পরিকল্পনাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য প্রস্তাবিত ২০ দফা উদ্যোগের প্রথম ধাপের অংশ। এই উদ্যোগের আওতায় গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।

সম্প্রতি জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ জাকার্তা সফর করেছেন। এই সফরে তিনি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই বৈঠকে দুই দেশ গাজা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ইউসুফ আহমেদ আল-হুনাইতির সঙ্গে বৈঠকের পর ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমরা যৌথভাবে একটি কমিটি গঠন করব, যা গোয়েন্দা তথ্য ও হালনাগাদ পরিস্থিতি বিনিময় করবে।" তিনি আরও বলেন, গাজা সীমান্তের খুব কাছের দেশ হওয়ায় জর্ডানের তথ্য ইন্দোনেশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি জানান, ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ইন্দোনেশিয়ার এই গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে এই দুই দেশ ড্রোন প্রযুক্তি উন্নয়নেও একসঙ্গে কাজ করবে। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পিটিআই পিন্দাদ এবং জর্ডানের প্রতিষ্ঠান ডিপ এলিমেন্ট যৌথভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।


ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১২:২২:০৬
ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির

পাকিস্তানের ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী নিঃসন্দেহে দেশটির রাজনৈতিক যাত্রাপথে একটি নতুন ও অত্যন্ত বিতর্কিত অধ্যায়। বৃহস্পতিবার আইনে স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকেই সংশোধনীটি পাকিস্তানি রাজনীতিকে গভীর আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। কারণ এটি শুধু সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আজীবন অ-গ্রেফতারযোগ্য ও অ-অভিযোগযোগ্য করে তুলছে না, বরং তাকে তিন বাহিনীর কার্যত সর্বোচ্চ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করছে। পাশাপাশি দেশের বিচারব্যবস্থায় এমন কাঠামোগত পরিবর্তন আনছে যা সমালোচকদের মতে পাকিস্তানকে আরও গভীরভাবে সেনা-প্রধানতন্ত্র বা স্বৈরাচারী শাসনের দিকে ঠেলে দেবে।

এই সংশোধনীটি একদিকে সেনাবাহিনীর জন্য নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর যুক্তি তৈরি করেছে, অন্যদিকে আদালতগুলোর স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ফলে পাকিস্তান আবারও সেই পুরনো বিতর্কে ফিরে গেছে, যেখানে বেসামরিক ও সামরিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রাষ্ট্রশাসনের প্রকৃত চরিত্র নির্ধারণ করে।

সামরিক আধিপত্যের নতুন স্থাপত্য

পাকিস্তানের ইতিহাসে সামরিক বাহিনী সবসময়ই একটি সর্বগ্রাসী প্রভাবশালী শক্তি। কখনো প্রকাশ্যে ক্ষমতা দখল, কখনো নেপথ্য নিয়ন্ত্রণ, আর কখনো ‘হাইব্রিড সিস্টেম’ নামের আংশিক গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর দিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে।কিন্তু ২৭তম সংশোধনী নিয়ে বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যানের মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলছেন, পাকিস্তান এখন আর হাইব্রিড নয়, বরং “পোস্ট–হাইব্রিড” বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তার ভাষায়, “এখন বেসামরিক–সামরিক ভারসাম্য যতটা অসম হতে পারে, ঠিক ততটাই অসম অবস্থায় পৌঁছে গেছে।

এই সংশোধনী অনুসারে আসিম মুনির শুধু সেনাবাহিনী নয়, নৌ ও বিমানবাহিনীও তত্ত্বাবধান করবেন। তার ফিল্ড মার্শাল উপাধি আজীবন বহাল থাকবে। এমনকি অবসর নিলেও রাষ্ট্রপতির পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী তার নতুন দায়িত্ব নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ পাকিস্তানের জনজীবনে তিনি আজীবন একটি কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী চরিত্র হিসেবে অবস্থান করবেন।

সমর্থকদের মতে, এটি সামরিক কমান্ড কাঠামোকে আধুনিক ও স্পষ্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, এটি “আধুনিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রতিরক্ষাকে পুনর্গঠন” করার অংশ।কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এটি স্পষ্টতই সামরিক কর্তৃত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেখানে বেসামরিক সমাজ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দুর্বল হবে। মানবাধিকার কমিশনের সহ-সভাপতি মুনিজায়ে জাহাঙ্গীর সোজাসাপটা বলেছেন, “এটি সামরিক ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে এমন এক সময়ে, যখন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি ছিল।”

বিচারব্যবস্থায় অস্থিরতা: স্বাধীনতার অবসান?

সংশোধনীর দ্বিতীয় ও সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো বিচারব্যবস্থায় রদবদল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক প্রশ্নের সর্বোচ্চ বিচারক ছিল। কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী গঠিত হচ্ছে একটি নতুন আদালত, ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট (FCC), যার বিচারপতি ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। সমালোচকদের মতে, এটি আদালতের স্বাধীনতাকে কার্যত নির্বাসিত করেছে।

জাহাঙ্গীরের ভাষায়,

রাষ্ট্র যখন বিচারপতি ও সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্ধারণ করবে, তখন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি কোন ন্যায়বিচারের আশা করবো?

অন্যদিকে বিশ্লেষক আরিফা নূর বলছেন, পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা এখন “কার্যত নির্বাহী শাখার অধীনস্থ।” এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব সংকুচিত হয়ে পড়েছে, আর বিচারকদের স্বাধীনতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া এসেছে বিচারপতিদের দিক থেকেও। আইন স্বাক্ষর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুজন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। জাস্টিস আথার মিনাল্লাহ তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন,

“যে সংবিধান রক্ষা ও প্রতিরক্ষার শপথ নিয়েছিলাম, সেটি আর বিদ্যমান নেই।”

অন্যদিকে জাস্টিস মানসুর আলী শাহ বলেছেন, ২৭তম সংশোধনী “সুপ্রিম কোর্টকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে”।

নতুন আইনে বিচারকদের জোরপূর্বক বদলি করা যাবে, আর যদি তারা বদলিতে রাজি না হন, তাহলে তাদের অবসরে পাঠানো হতে পারে। এটি বিচারকদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন অনেক আইনজীবী।

কারাচির আইনজীবী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন,

“এটি বিচারকদের শাসকের ইচ্ছানুযায়ী পরিচালিত হওয়ার দিকে ঠেলে দেবে। এবং এটি পাকিস্তানের ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরও নাজুক করে তুলবে।”

সামাজিক অস্থিরতার ঝুঁকি

বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী শুধু সামরিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাই বাড়ায়নি, বরং সাধারণ মানুষের অসন্তোষ, অবিশ্বাস ও বঞ্চনার অনুভূতিও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কুগেলম্যান সতর্ক করে বলেছেন, “অবরুদ্ধ ক্ষোভ সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।”

এদিকে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি—ইমরান খানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন, আদালতের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ, এবং ক্ষমতার নতুন পুনর্বিন্যাস—সবই মিলিয়ে একটি অস্থিরতার ছবি তৈরি করছে।

পাকিস্তান কোথায় যাচ্ছে?

২৬তম সংশোধনীতে সংসদকে প্রধান বিচারপতি নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার পর এবার ২৭তম সংশোধনী কার্যত নির্বাহী–সামরিক ক্ষমতার পূর্ণ সমন্বয় ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮তম সংশোধনী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

এ থেকে স্পষ্ট—বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী গণতন্ত্রগুলো যখন বেসামরিক শাসনের উন্নয়নের পথে হাঁটছে, পাকিস্তান তখন উল্টো দিকে হাঁটছে, আরও শক্তভাবে ‘এস্টাবলিশমেন্ট’-কেন্দ্রিক শাসনের দিকে।

প্রশ্ন হলো, সাধারণ মানুষ, বিচারব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম—এই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে কিভাবে খাপ খাইয়ে নেবে? ইতিহাস বলছে, পাকিস্তানে ক্ষমতার একচ্ছত্রতা কখনো স্থায়ী স্থিতিশীলতা আনতে পারেনি। বরং অস্থিরতা, অবিশ্বাস এবং রাজনৈতিক সংহতির ভাঙ্গনই সৃষ্টি করেছে।

আজকের পাকিস্তান কি সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি দেখতে যাচ্ছে?আগামী মাসগুলোই এর উত্তরের ইঙ্গিত দেবে।

তথ্য সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

ডাইনোসরের যুগে আকাশে রাজত্ব করত বিশাল আকৃতির উড়ন্ত সরীসৃপ 'টেরাসর'। এই রহস্যময় প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতি আবিষ্কৃত হলেও তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে... বিস্তারিত