মতিঝিল অফিসে সঞ্চয়পত্র ফ্রড, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১১:১৬:৩৪
মতিঝিল অফিসে সঞ্চয়পত্র ফ্রড, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের সঞ্চয়পত্র রক্ষণাবেক্ষণ সিস্টেমে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাতে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই জব্দ করা হয়েছে, যাতে অর্থের স্থানান্তর ও আত্মসাতের চক্র শনাক্ত করা যায়।

এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে, যা গতকাল বুধবার কার্যকর করা হয়। একই সঙ্গে তদন্তে জড়িত মতিঝিল অফিসের তিন কর্মকর্তার কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে, যেগুলি তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, সঞ্চয় অধিদপ্তরের ন্যাশনাল সেভিংস সার্ভিস (এনএসসি) সিস্টেমের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন জালিয়াতি প্রতিরোধ করা যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনা শুরু হয় মতিঝিল অফিস থেকে কেনা একটি সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে। এই সঞ্চয়পত্রটি মূলত অগ্রণী ব্যাংকের প্রেস ক্লাব শাখার গ্রাহকের নামে খোলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কেনা হয়েছিল।

তবে, গত সোমবার গ্রাহকের অনুমতি ছাড়াই তার সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে যুক্ত অগ্রণী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করা হয়। এরপর তা এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখায় ‘আরিফুর রহমান’ নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। একই দিন ব্যাংকের শ্যামলী শাখা থেকে সম্পূর্ণ অর্থ উত্তোলন করা হয়, যা জালিয়াত চক্রের অংশ হিসেবে ঘটানো হয়েছে।

এছাড়া, একই প্রক্রিয়ায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ লাখ টাকা এবং এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎপর নজরদারির কারণে এগুলো রোধ করা সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, “কীভাবে এই জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যে অর্থ স্থানান্তরিত হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে মামলা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই মতিঝিল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।”

তদন্ত সূত্রে আরও জানা গেছে, এই ধরনের জালিয়াতি সাধারণত সঞ্চয়পত্র রক্ষণাবেক্ষণ ও হিসাব ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে করা হয়। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর তৎপরতা বাড়াচ্ছে এবং সিস্টেমের সুরক্ষা আরও জোরদার করার পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো জালিয়াতি সংঘটিত না হয়।


একাই থামিয়ে দিলেন পাকিস্তানি বহর: বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:২৮:২৩
একাই থামিয়ে দিলেন পাকিস্তানি বহর: বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ
ছবি : সংগৃহীত

আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৭ সালের আজকের এই গৌরবোজ্জ্বল দিনে ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই অকুতোভয় বীর যার আত্মত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য ইতিহাস। সেনাবাহিনীর হাবিলদার হাবিবুর রহমান ও মালেকা বেগমের জ্যেষ্ঠ সন্তান মোস্তফা কামালের শৈশব কেটেছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে যেখানে বাবার কর্মস্থলের সুবাদে সেনাদের কুচকাওয়াজ ও মার্চপাস্ট দেখে তার মনেও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দানা বেঁধেছিল। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় খুব বেশি দূর না এগোলেও দেশপ্রেমের টানে মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৬৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর নিজের জন্মদিনে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক হিসেবে তার চাকরি চূড়ান্ত হয়।

একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে যখন দেশজুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজছিল তখন মোস্তফা কামালের ইউনিটকে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থানান্তর করা হয় এবং ১৮ এপ্রিল দরুইন গ্রামে তিনি যে বীরত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। সেদিন মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন মর্টারের গোলাবর্ষণ ও ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুক্তিবাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন মেজর শাফায়াত জামিলের নির্দেশে এবং নিজের অসামান্য সাহসিকতার কারণে মোস্তফা কামালকে মৌখিকভাবে ল্যান্সনায়েকের দায়িত্ব দিয়ে দশজন সৈনিকের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে যখন টিকতে না পেরে সহযোদ্ধারা পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছিলেন তখন মোস্তফা কামাল সঙ্গীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নিজের এলএমজি নিয়ে একাই শত্রুর মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নেন।

নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে মোস্তফা কামাল ট্রেঞ্চে অবস্থান নিয়ে অবিরাম গুলি চালিয়ে শত্রুবাহিনীর অগ্রগতি রুখে দেন এবং তার নিখুঁত নিশানায় প্রায় ২০-২৫ জন পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হলে হানাদারদের মনোবল ভেঙে পড়ে। একনাগাড়ে যুদ্ধ করতে করতে একসময় তার এলএমজির গুলি শেষ হয়ে যায় এবং তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন যার সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনারা ট্রেঞ্চে ঢুকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে এই বীরযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তার ক্ষতবিক্ষত দেহটি পরবর্তীতে স্থানীয় গ্রামবাসী দরুইন গ্রামে সমাহিত করেন যেখানে আজ তার স্মৃতিসৌধ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। শাহাদাতের সময় তিনি বাবা-মা, স্ত্রী পেয়ারা বেগম ও মাত্র দেড় মাস বয়সী শিশুসন্তান মোশারেফ বাচ্চুসহ ভাই-বোনদের রেখে গিয়েছিলেন। কালের পরিক্রমায় তার পরিবারের অনেকেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানও মারা যান।

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান 'বীরশ্রেষ্ঠ' উপাধিতে ভূষিত করে। তার স্মৃতিরক্ষার্থে ভোলা সদরের আলীনগর ইউনিয়নে জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে একটি জাদুঘর এবং ভোলা শহরে একটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামটির নামকরণও এই মহান বীরের নামে করা হয়েছে যা তরুণ প্রজন্মের কাছে তার বীরত্বগাথা পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখছে।


১ বছরের শিশুও মুক্তিযোদ্ধা: ৫৪ বছরের লজ্জাজনক চিত্র

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:০৩:১৮
১ বছরের শিশুও মুক্তিযোদ্ধা: ৫৪ বছরের লজ্জাজনক চিত্র

স্বাধীনতার পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি বরং ভুয়া সনদের দাপটে প্রকৃত ইতিহাস আজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স ছিল মাত্র এক বা দুই বছর তারাও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় নাম লিখিয়েছেন এবং এমন ভুয়া সনদধারীর সংখ্যা প্রায় আট হাজার বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে বিগত সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যথেচ্ছভাবে কাটছাঁট করা হয়েছে এবং বিশেষ করে চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগ-সুবিধা থাকায় এই জালিয়াতির মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটায় প্রায় দশ হাজার মানুষ চাকরি পেয়েছেন যাদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় নথিপত্র নেই এবং এদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার আটশ জনকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে যা নিয়ে বর্তমানে প্রায় চার হাজার মামলা চলমান রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক এই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে কমান্ডারদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণেই মূলত এই অনিয়মগুলো ডালপালা মেলেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভুয়াদের দাপট দেখা তার জন্য চরম গ্লানিকর এবং পরিতাপের বিষয় হলো এরা আদালতের মাধ্যমে নামের আগে ‘বীর’ শব্দ যুক্ত করিয়েছে যা বাতিলের জন্য এখন সরকারকে আইনি লড়াই চালাতে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছেন তবে চার হাজার মামলার জটিলতার কারণে এই প্রক্রিয়াটি কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে যদিও সরকার মামলাগুলোর ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে এবং দু-একটি রায় পেলেই তা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে বাকি ভুয়াদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৬৮ জন যার মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ১৪৭ জন ইতিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন এবং জীবিত আছেন ৮৬ হাজার ৫২১ জন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের দৌরাত্ম্য কমাতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বা জামুকা এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার আওতায় এখন থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলার সরকারি ওয়েবসাইটের পাশাপাশি স্থানীয় জনবহুল এলাকা যেমন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর বাজার বা নোটিশ বোর্ডে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও ঠিকানাসহ তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হবে যাতে সাধারণ মানুষ তাদের চিনতে পারে এবং কেউ অমুক্তিযোদ্ধা হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবং অনলাইনে অভিযোগ নেওয়ার ব্যবস্থাও চালু করেছে যাতে ৫৪ বছরের জমে থাকা এই আবর্জনা পরিষ্কার করে প্রকৃত বীরদের সম্মান পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।


সাভারে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৮:৪৮:১৯
সাভারে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনের সূচনা করলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দিনের শুরুতেই সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান এবং সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদনের পরপরই সকাল ৬টা ৫৬ মিনিটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করেন এবং বিউগলের করুণ সুরের মূর্ছনায় তখন পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায় এক আবেগঘন ও গম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এবারের বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে এক ভিন্নমাত্রা ও রোমাঞ্চ যোগ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং 'টিম বাংলাদেশ' যারা সর্বোচ্চ সংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং করে একটি নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে ৫৪ জন দক্ষ প্যারাট্রুপার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরের আকাশে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবেন যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ঐতিহাসিক এই দিনটিকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকেই তেজগাঁও বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর চৌকস দলগুলো পৃথকভাবে মনোমুগ্ধকর ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন করবে এবং আকাশপথে এই শক্তি প্রদর্শনীর পাশাপাশি সেখানে একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শোয়েরও আয়োজন রাখা হয়েছে যা উপস্থিত দর্শকদের দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত করবে।


সবার ওপরে মুক্তিযুদ্ধ, বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৮:৪১:৩৪
সবার ওপরে মুক্তিযুদ্ধ, বিতর্কের কোনো সুযোগ নেই
ছবি : সংগৃহীত

স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের ভিত্তি মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু মহল থেকে বিতর্ক সৃষ্টি এবং ইতিহাস বিকৃতির যে অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা নিয়ে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ ও বিশিষ্টজনরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশ্লেষকরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের অস্তিত্বের মূলে রয়েছে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং এর অর্জনকে রক্ষা করতে হলে বিতর্ক নয় বরং সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস চর্চা এখন সময়ের দাবি। তারা মনে করেন স্বাধীনতার চেয়ে বড় কোনো অর্জন জাতির জীবনে নেই তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা—উভয়ের অবদানকেই নিঃসংকোচে স্বীকার করে নিতে হবে এবং একইসঙ্গে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও চব্বিশের ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার বিপ্লবকেও যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হুমায়ুন কবির বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করে বলেন যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় অস্তিত্বের প্রতিফলন তাই দেশ বা রাষ্ট্র কীভাবে সাজানো হবে তা নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে কিন্তু দেশের ভিত্তিমূল নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। তিনি সতর্ক করে দেন যে মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থ হলো বাংলাদেশের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা যা এদেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না কারণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছিল। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান একাত্তর ও চব্বিশের যোগসূত্র টেনে বলেন যে একাত্তরের বিজয় ছিল পরাধীনতার বিরুদ্ধে আর চব্বিশের বিজয় হলো কর্তৃত্ববাদী চোরতন্ত্রের বিরুদ্ধে কিন্তু উভয় আন্দোলনেরই মূল লক্ষ্য ছিল সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আমিন বেপারী বর্তমান প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বলেন যে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর যে প্রশ্নগুলো সামনে এসেছে তা মূলত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে বিগত শাসনামলে যে একনায়কতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। তিনি উল্লেখ করেন যে শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বাস্তবে গণতন্ত্রকে ধুঁকতে ধুঁকতে নিঃশেষ করে ফেলেছিলেন এবং সেই লুণ্ঠিত ভোটাধিকার ও সাম্য ফিরিয়ে আনতেই চব্বিশের বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে বিএনপিও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক দল এবং তাদের বা মুক্তিযুদ্ধের স্পিরিটকে অবজ্ঞা করে কেউ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না বরং এতে নতুন করে সংঘাতের সৃষ্টি হবে। গণতন্ত্রহীনতাই জাতিকে আজকের এই বিভাজিত অবস্থানে নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন যে ব্যক্তিবিশেষকে অস্বীকার করতে গিয়ে মূল স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিকৃত করার কোনো সুযোগ নেই এবং এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন করা।


সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে হাদি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ২০:৩৭:৩৯
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে হাদি
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর ঢাকা ৮ আসনের আলোচিত সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেষ পর্যন্ত সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৬ মিনিটে গণমাধ্যমকে এই ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই তরুণ রাজনীতিবিদকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি জমায়। সিঙ্গাপুর থেকে আসা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি বেলা ১১টা ২২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করার পরপরই অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে যাত্রার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল।

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদারকিতে গত রোববারই গুলিবিদ্ধ হাদিকে দেশের বাইরে পাঠানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং এ লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয় যে গত দুদিন ধরে সরকার সিঙ্গাপুর থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ডের পরামর্শ এবং হাদির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর অবশেষে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান জানান যে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে হাদির জন্য সর্বাধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ডা. সায়েদুর রহমান হাদির শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন যে গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ক ছাড়া তার শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি হার্ট এবং রেসপিরেশন সিস্টেম বা শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া এখনো চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বিভিন্ন উচ্চমাত্রার ওষুধ এবং কৃত্রিম অক্সিজেনের সহায়তায় এই অঙ্গগুলোকে মোটামুটিভাবে সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে যা কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলার আগে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে মহান আল্লাহ যদি সহায় হন তবে হয়তো হাদি একটি নির্দিষ্ট মাত্রার সুস্থতা নিয়ে আবারও আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারবেন।


সিঙ্গাপুরের পথে হাদি, চিকিৎসকদের আশার বাণী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৭:১৬:১১
সিঙ্গাপুরের পথে হাদি, চিকিৎসকদের আশার বাণী
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটপূর্ণ হলেও তার শরীরের প্রধান অঙ্গগুলো এখনো চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। সোমবার দুপুরে হাদিকে বহনকারী বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুরের পথে পাড়ি জমানোর পরপরই এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি জানান যে হাদির মস্তিষ্কে গুলির আঘাতটিই বর্তমানে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ তবে তার কিডনি হার্ট এবং শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া বা রেসপিরেশন সিস্টেম এখনো ওষুধের মাধ্যমে এবং কৃত্রিম অক্সিজেনের সহায়তায় মোটামুটিভাবে সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে এবং এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে রোগীর সার্বিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ডা. সায়েদুর রহমান দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে মহান আল্লাহ যদি রহমত করেন তবে হয়তো হাদি একটি নির্দিষ্ট মাত্রার সুস্থতা নিয়ে আবারও আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারবেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের যৌথ পরামর্শেই তাকে বিদেশে স্থানান্তরের এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গত দুই দিন ধরে হাদির উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকার অত্যন্ত তৎপর ছিল এবং সিঙ্গাপুর ছাড়াও থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বেশ কয়েকটি উন্নত হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল। অবশেষে এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড এবং হাদির পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় কারণ তার শারীরিক অবস্থার কোনো দৃশ্যমান উন্নতি বা অবনতি পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। প্রসঙ্গত গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন এই তরুণ রাজনীতিক যাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।


পোস্টাল ভোটে বিপ্লব: ফেব্রুয়ারির ভোটে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৭:০৯:৫৫
পোস্টাল ভোটে বিপ্লব: ফেব্রুয়ারির ভোটে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া 
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দিতে চালু হওয়া পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজার অতিক্রম করেছে যা নির্বাচন কমিশনের জন্য এক বিশাল সাফল্য। সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায় যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ৪ লাখ ১১ হাজার ২৭২ জন প্রবাসী বাংলাদেশি তাদের নাম নিবন্ধন করেছেন এবং এই সংখ্যা প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে। নিবন্ধিত ভোটারদের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৫ হাজার ১০৮ জন এবং নারী ভোটারের সংখ্যা ২৬ হাজার ১৬৩ জন যা প্রবাসে পুরুষদের অধিক অংশগ্রহণের চিত্র তুলে ধরে।

নিবন্ধিত আবেদনকারীদের মধ্যে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৮৯ জনের আবেদন ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে এবং আরও ৬ হাজার ৭৫৯ জন প্রবাসীর নিবন্ধন বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এবারই প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং ভোটদান প্রক্রিয়া সহজ করতে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থা চালু করেছে যেখানে অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন হলে ভোটারদের ঠিকানায় ডাকযোগে ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং ভোট দেওয়ার পর তারা ফিরতি খামে তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠাবেন। গত ১৯ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে এবং কেবল প্রবাসীরাই নন বরং আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি ও ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও এই আধুনিক পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশ থেকে প্রবাসীরা ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে সাড়া দিচ্ছেন এবং প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ প্রবাসীর ভোট সংগ্রহের এক উচ্চবিলাসী লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে ইসি। অতীতের জটিল ও অকার্যকর পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থার পরিবর্তে এই প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিটি প্রবাসীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা এবং আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এই উদ্যোগটি একটি বড় মাইলফলক।


হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ফয়সালসহ যাদের নাম এল মামলায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৭:০৪:২৮
হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ফয়সালসহ যাদের নাম এল মামলায়
ছবি : সংগৃহীত

জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেষ পর্যন্ত দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে তাকে বহনকারী একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুরের পথে পাড়ি জমায়। এর আগে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যেতে বেলা ১১টা ২২ মিনিটে বিদেশি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় অবতরণ করে এবং যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তাকে বিমানে তোলা হয়।

একদিকে যখন হাদিকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিক অন্যদিকে এই ন্যাক্কারজনক হামলার বিচার নিশ্চিতে আইনি প্রক্রিয়াও জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীর পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ জাবের বাদী হয়ে রোববার রাতে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন যেখানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থের জোগানদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তভার ইতিমধ্যেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে যাতে দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

পুলিশের তদন্তে এখন পর্যন্ত হামলায় সরাসরি জড়িত তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে যার মধ্যে মূল শুটার হিসেবে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুলের নাম উঠে এসেছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে যে ঘটনার সময় মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন আলমগীর শেখ এবং হামলার আগে হাদির গতিবিধি নজরদারি বা রেকি করার দায়িত্বে ছিলেন আদাবর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী রুবেল। পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক পরদিন বিজয়নগর এলাকায় সংঘটিত এই হামলাটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না বরং এর পেছনে একটি সুসংগঠিত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।


উপদেষ্টার সামনেই পদত্যাগের হুমকি দিলেন সাদিক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৬:৪৭:১১
উপদেষ্টার সামনেই পদত্যাগের হুমকি দিলেন সাদিক
ছবি : সংগৃহীত

সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আজ এক নজিরবিহীন উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম খোদ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতেই সরকারের তিন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি তুলে কঠোর আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ক্ষুব্ধ ছাত্রনেতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তিন দফা দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। সোমবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে সাদিক কায়েম অনতিবিলম্বে স্বরাষ্ট্র, আইন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন যদি না তারা পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি দেখাতে ব্যর্থ হন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সাদিক কায়েমের ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং ছাত্রনেতার মুখে নিজের ও সহকর্মীদের পদত্যাগের হুমকি শুনে তাকে দৃশ্যত বেশ বিব্রত ও অস্বস্তিতে দেখা যাচ্ছিল। সাদিক কায়েম তার বক্তব্যের শুরুতে ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সকল সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার ওপর জোর দেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে জুলাই বিপ্লবীদের হত্যাযোগ্য করে তোলা এবং হামলাকারীদের সমর্থনকারী কালচারাল ফ্যাসিস্টদের সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কট করতে হবে এবং যাদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে তাদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

দ্বিতীয় দাবিতে ছাত্রনেতা সাদিক আগামী দুই দিনের মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান পরিচালনার ডাক দিয়েছেন। তিনি সরকারের প্রতি হুঙ্কার দিয়ে বলেন যে নিষিদ্ধ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রশাসনের কোনো প্রকার অবহেলা বা গড়িমসি আর সহ্য করা হবে না। এছাড়া তার তৃতীয় ও চূড়ান্ত দাবিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দ্রুত বিচার এবং প্রদত্ত রায় কার্যকর করার বিষয়টি উঠে আসে যা তিনি সরকারের কাছে অত্যন্ত জোরালোভাবে পেশ করেছেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত