আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৭ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৫:১৪:৫৯
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ৭ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা
ছবি: সংগৃহীত

দেশের সাতটি জেলার নিম্নাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব অঞ্চলে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে, ফলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নদনদীর বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে এক পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়।

কোন কোন জেলায় বন্যা এবং ঝড়ের পূর্বাভাস

চট্টগ্রাম বিভাগ

গত ২৪ ঘণ্টায় গোমতী, মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি সমতল বেড়েছে এবং আগামী দুদিনে এসব নদীর পানি আরও বাড়তে পারে।

বিপদসীমার শঙ্কা: মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি ফেনী জেলায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।

প্লাবনের সম্ভাবনা: চট্টগ্রাম জেলায় ফেনী নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে, ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রংপুর বিভাগ

আগামী তিন দিনে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আবারও বাড়তে পারে। এর ফলে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ

আগামী তিন দিনে সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার অংশে পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

নদীবন্দরে সতর্কতা জারি

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য ১ নম্বর (পুনঃ) সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. তরিকুল নেওয়াজ কবির স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।


সোমবার সকাল ১১টায় হাসিনার রায়: দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ২১:৩৯:৪৫
সোমবার সকাল ১১টায় হাসিনার রায়: দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় প্রদান করবেন। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্টার অফিস থেকে জানানো হয়েছে, রায় ঘোষণার জন্য কাল সকাল ১১টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হবে।

এদিকে, এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ সেনা সদরে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

মামলার গুরুত্ব বিবেচনায়, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে দেওয়া এই রায় আগামীকাল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করবে বলে জানা গেছে।

গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছেন।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় দেবেন।

মামলার বিচার চলাকালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধেই মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষ বা প্রসিকিউশন এই মামলায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছে।

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাদের বেকসুর খালাস চান। এছাড়া, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবীও তার মক্কেলের খালাস চেয়ে আবেদন করেছেন।


পুলিশ প্রশাসনে ‘বড় নাড়া’: ডিআইজি-এসপিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের রদবদল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৯:১৪:০২
পুলিশ প্রশাসনে ‘বড় নাড়া’: ডিআইজি-এসপিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের রদবদল
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে একটি বড় ধরনের রদবদল করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে মোট ১৫ জন কর্মকর্তাকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত দুটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জারি করা আদেশ অনুযায়ী, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের নতুন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. ইসরাইল হাওলাদার। তিনি এর আগে শিল্পাঞ্চল পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এছাড়াও পুলিশ সুপার (এসপি) পর্যায়েও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন এসেছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলমকে গাইবান্ধা জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দিনাজপুরের বর্তমান পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইনকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে। তার শূন্য পদে, অর্থাৎ দিনাজপুরের নতুন এসপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ, এন, এম, সাজেদুর রহমানকে পাবনায় বদলি করা হয়েছে। আর হবিগঞ্জের নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার গৌতম কুমার বিশ্বাস। ডিএমপির আরেক উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনকে নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ডিআইজি পদের আরও কয়েকটি বদলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ অধিদপ্তরের ডিআইজি কাজী মো. ফজলুল করিমকে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর করা হয়েছে। পুলিশ টেলিকমের ডিআইজি মো. রফিকুল হাসান গনিকে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি পদে এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ডিআইজি মো. নজরুল ইসলামকে এপিবিএন সদর দপ্তরের ডিআইজি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

এই রদবদলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে ঢাকার পুলিশ সদর দপ্তরে সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলকে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার পদে, পাবনার পুলিশ সুপার মো. মোরতোজা আলী খানকে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার পদে এবং নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার আবুল ফজল মোহাম্মদ তারিক হাসান খানকে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে।


দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়, খারাপও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৭:৫৫:৩৮
দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়, খারাপও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলমান মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে রায়ই প্রদান করুক না কেন, সেই রায় কার্যকর করা হবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই রায়কে কেন্দ্র করে দেশে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু (ফ্রি ফেয়ার) এবং উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসনকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন নির্বাচনমুখী এবং একটি সফল নির্বাচন আয়োজনে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, পরিস্থিতি 'খুবই ভালো নয়, আবার খারাপও নয়'। তিনি এটিকে 'মোটামুটি সন্তোষজনক' পরিস্থিতি বলে দাবি করেন।


অতীতে কেউ হাত দেয়নি, প্রবাসীদের ভোট নিয়ে যা বললেন সিইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৫:৪৩:৫১
অতীতে কেউ হাত দেয়নি, প্রবাসীদের ভোট নিয়ে যা বললেন সিইসি
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা অতীতে 'অত্যন্ত জটিল বিষয়' বলে কেউ এই উদ্যোগে হাত দেয়নি। তিনি জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণের দিন যে প্রায় দশ লাখ লোক বিভিন্ন দায়িত্বে থাকেন, যারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না, তাদের জন্যও এবার ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের সেমিনার কক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সংলাপে সিইসি এসব কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, "এ বছর আমরা অনেকগুলো নতুন উদ্যোগ নিয়েছি, বিশেষ করে প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থার বিষয়টি তার মধ্যে অন্যতম।" তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের অনেক দেশই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে এই কাজটি সফলভাবে করতে পারেনি। "তবে আমরা বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো শুরু করতে যাচ্ছি," বলেন তিনি।

সিইসি আরও জানান, নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে প্রিজাইডিং অফিসার পর্যন্ত প্রায় দশ লাখ লোক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন, যারা প্রায়শই নিজেদের ভোটটি দিতে পারেন না। এই বছর তাদের জন্য ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী এবং যারা কারাগারে আছেন, তাদের জন্যও ভোটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, "পোস্টাল ভোটিংয়ের মতো নানা জটিল ও নতুন বিষয় আগামী নির্বাচনে দেখা যাবে। এজন্যই এবারের নির্বাচনটি হবে বিশেষ।"

নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এর বাইরেও আমাদের অনেকগুলো বড় কাজে হাত দিতে হয়েছে। বিশেষ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিশাল কাজ করতে হয়েছে। এসব কাজে ৭৭ হাজার কর্মী মাঠে ছিল। তাদের সবাইকে প্রশিক্ষণও দিতে হয়েছে।"

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষাপট নিয়ে সিইসি বলেন, "এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিল যে নির্বাচন সংস্কার কমিশন আমাদের পক্ষে অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।" তিনি ব্যাখ্যা করেন, সংস্কার কমিশন ইসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই বিভিন্ন পক্ষ, অংশীদার ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যদের সঙ্গে ৮০টিরও বেশি সংলাপ করেছে। সেই সঙ্গে নিজেদের কমিশনেও ঐকমত্যের জন্য অনেকগুলো বৈঠক করেছে। সিইসি মনে করেন, "এতে আমাদের কাজ অনেকখানি এগিয়ে গেছে।"

একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এই কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।"

তিনি আরও বলেন, ভোটারদের ওপর রাজনৈতিক ও জাতীয় নেতাদের সরাসরি প্রভাব রয়েছে, তাই তাদের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য কী করণীয়, সে বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পরামর্শ চান সিইসি। বক্তব্যের শেষে তিনি সবাইকে যথাযথভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।

সংলাপে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অব.), তাহমিদা আহমেদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। রবিবারের সকালের বৈঠকে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি অংশ নেয়।

সূত্র : বিএসএস।


৩১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:২০:৩৯
৩১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার
ছবি: সংগৃহীত

বহু প্রতীক্ষা, নীতিগত প্রস্তুতি ও কয়েক দফা সময় পরিবর্তনের পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো দেশের সবচেয়ে বড় স্কুল–ভিত্তিক পুষ্টিকর্মসূচি ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’। শনিবার নাটোরের গুরুদাসপুরের খুবজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা এই কর্মসূচিটি দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা ও পুষ্টির সমন্বয়ে এটি হবে সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী।

কর্মসূচির আওতায় ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ১৩ হাজার শিক্ষার্থী সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য পাবে। এ খাদ্যের তালিকায় রয়েছে ফর্টিফায়েড বিস্কুট, মৌসুমি ফল বা কলা, বনরুটি, সেদ্ধ ডিম ও ইউএইচটি দুধ। প্রতিটি খাদ্য উপাদান শিশুর দৈনিক পুষ্টিচাহিদার নির্দিষ্ট অংশ পূরণে সহায়তা করবে। বিশেষ করে ফর্টিফায়েড বিস্কুট ও দুধ শিশুদের শক্তি, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নত করতে হলে পুষ্টিহীনতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। ক্লাস চলাকালে ক্ষুধা শিশুদের মনোযোগ নষ্ট করে এবং শেখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এই ফিডিং কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের শারীরিক–মানসিক বিকাশে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বাড়াবে। তিনি বলেন, শিশুদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার নিশ্চয়তা দিলে বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের আগ্রহ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।

সরকার ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যালয়ে নিয়মিত উপস্থিতির হার ৮০ শতাংশের বেশি থাকবে। পাশাপাশি ঝরে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, বিদ্যালয়ে প্রকৃত ভর্তির হার প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং শিশুদের স্কুলে ধরে রাখার হার ৯৯ শতাংশে উন্নীত হবে। একই সঙ্গে, শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের হার ৯০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

উদ্বোধনের পর উপদেষ্টা নাটোর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সরকারি নীতিমালার প্রয়োগ, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ এবং শিক্ষার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এই মতবিনিময় সভাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

ফিডিং কর্মসূচির ব্যয় বিবেচনায় প্রকল্পটিকে অত্যন্ত বৃহৎ আকারের বলা হচ্ছে। মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি, যার ৯৭ শতাংশ ব্যয় হবে খাদ্য সংগ্রহ ও সরবরাহে। ২০২৫–২৬ অর্থবছরেই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি। দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে সহায়তা করা এবং অপুষ্টি রোধে এটি দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় বিনিয়োগ।

তবে কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে শুরুতেই কিছু জটিলতা দেখা দেয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কর্মসূচি উদ্বোধনের পরিকল্পনা থাকলেও প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক জটিলতার কারণে তা কয়েক দফা পিছিয়ে যায়। এরপর সেপ্টেম্বরেও কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল, কিন্তু টেন্ডারজনিত সমস্যার কারণে আবারও তা স্থগিত হয়। সব জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত শনিবার এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আরিফ হোসেন এবং জাতিসংঘের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম–ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোমেনিকো স্কালপেলি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য স্কুল–ফিডিং কর্মসূচি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুস্থ–সবল করতে অত্যন্ত কার্যকর। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।

-শরিফুল


নির্বাচনের আগে সংলাপ ম্যারাথন- সকালে ৬ দল, বিকেলে আরও ৬ দল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:১৪:৩১
নির্বাচনের আগে সংলাপ ম্যারাথন- সকালে ৬ দল, বিকেলে আরও ৬ দল
ফাইল ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশন ধাপে ধাপে যে ধারাবাহিক সংলাপ আয়োজন করছে, তার দ্বিতীয় দিনের বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণ, নির্বাচনব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, নির্বাচনী পরিবেশ স্থিতিশীল রাখা এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনই এই সংলাপের উদ্দেশ্য। নির্বাচন কমিশন মনে করছে, বিস্তৃত পরিসরের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসলে নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে এবং সম্ভাব্য সংকটগুলো আগেভাগেই শনাক্ত ও সমাধানের পথ সুস্পষ্ট হবে।

রোববার সকালেই নির্বাচন ভবনে প্রথম পর্বের সংলাপ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়টি রাজনৈতিক দল ইসির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। এ সময় গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামীক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এসব দল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ, তাত্ত্বিক অবস্থান ও সংগঠনগত কাঠামো নিয়ে কাজ করলেও নির্বাচন প্রসঙ্গে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও দৃষ্টিভঙ্গি ইসির বিবেচনায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিকেলের দ্বিতীয় অংশে, বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আরও ছয়টি দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এদের মধ্যে কেউ কেউ জাতীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে, আবার কেউ অপেক্ষাকৃত নতুন হলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের জনপ্রিয়তা বিবেচ্য।

রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, প্রত্যাশা, দাবি, নির্বাচনী পরিবেশ, পর্যবেক্ষকের উপস্থিতি, প্রবাসী ভোট, প্রশাসনের ভূমিকা, ইভিএম ব্যবহারের অনিশ্চয়তা, ভোটের নিরাপত্তা ও আস্থা পুনরুদ্ধার—এসবই এই সংলাপের আলোচনার মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিছু দল আগেই জানিয়েছে যে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিরোধী প্রার্থীদের সমান সুযোগ তৈরি করা, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও নিরাপত্তা বলয়ের জবাবদিহিতা বাড়ানো জরুরি।

আগামীকাল সোমবারও নির্বাচন কমিশন আরও ১২টি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। এসব দল যদিও আকারে ছোট, তবুও তারা জাতীয় নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।

এদিন বিকেলে দ্বিতীয় দফায় সংলাপে উপস্থিত হবে আরও ছয়টি দল। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আলোচনা হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে। বিশেষ করে জামায়াত ও এবি পার্টির মতো বিতর্কিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

নির্বাচন কমিশন বলছে, এই সংলাপের মাধ্যমেই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে এবং সব রাজনৈতিক দলের মতামত পর্যালোচনা করে একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন করবে। কমিশনের মতে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিভিন্ন দলের দাবি যদি গঠনমূলক হয়, তাহলে সেগুলো নির্বাচনী রোডম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

-শরিফুল


পুলিশের মনোবল ও দক্ষতা বেড়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১৮:৪৯:০৯
পুলিশের মনোবল ও দক্ষতা বেড়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি : সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পুলিশের দক্ষতা এবং তাদের মানসিক শক্তি ও মনোভাব আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে কুয়াকাটার ট্যুরিজম পার্ক পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তিনি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর জোর দেন। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, একটি সফল ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে রাজনীতিবিদ, সাধারণ জনগণ, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাংবাদিকসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দেশের কৃষি খাত নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, এ বছর দেশে আমনের উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষকদের 'জাতির মেরুদণ্ড' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জীবন-জীবিকা তাদের উৎপাদিত ফসলের ওপরই নির্ভরশীল। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই কৃষকদের সুখ-দুঃখের কথা অধিকাংশ সময়েই কেউ তুলে ধরে না।

সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা বিষয়েও উপদেষ্টা কথা বলেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনী সমুদ্র নিরাপত্তায় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তবে, অনেক সময় বাংলাদেশি জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে নিজেদের অজান্তেই মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়েন এবং সেসময় তারা আটক হন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই সময় তার সাথে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ, আনসার ও ভিডিপির বিভাগীয় উপ-মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমীর সরকার, পটুয়াখালী ব্যাটালিয়নের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার (সিও) সদন চাকমা, জেলা কমান্ডার শফিকুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদেক এবং কুয়াকাটা রিজিয়নের এডিশনাল ডিআইজি অর্নিমান চাকমাসহ স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১২:২১:৩৯
প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় বড় এক পরিবর্তন আসছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে। প্রথমবারের মতো বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা লাখো প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চালু করছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন হলেই ডাক বিভাগের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পাঠানো হবে ব্যালট পেপার।

ইসির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, প্রবাসী ভোটাররা যেখানেই থাকুন, তাদের ঠিকানায় ব্যালট পৌঁছানোর পর ভোট দিয়ে রিটার্ন খামের মাধ্যমে সেটি পাঠাতে পারবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। তবে ভোট দেওয়া থেকে ব্যালট ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগতে পারে ১৫ থেকে ৩০ দিন। এ জন্যই বিদেশে পাঠানো ব্যালটে থাকবে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ ১১৯টি প্রতীক, পাশাপাশি থাকবে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ। কোনো আসনে যদি মাত্র একজন প্রার্থী লড়াই করেন, সেই আসনের প্রবাসী ভোটাররাই শুধুমাত্র ‘না ভোট’ দিতে পারবেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ জানিয়েছেন, অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করলেই ভোটারের তথ্য যাবে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর অ্যাপের মাধ্যমেই ভোটার নিজের আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং পছন্দের প্রতীকে টিক দিয়ে ব্যালট পাঠাতে পারবেন। ডাক বিভাগ প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো থেকে শুরু করে রিটার্নিং অফিসে পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো দায়িত্ব পালন করবে। ভোটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা।

নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৮ নভেম্বর থেকে। অ্যাপে প্রবেশ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রয়োজন হবে একটি আন্তর্জাতিক মোবাইল সিমকার্ড, কারণ অ্যাপে জিও–লোকেশন সক্রিয় থাকবে। ফলে বাংলাদেশের ভেতর থেকে কোনভাবেই অ্যাপটি চালানো সম্ভব হবে না। অ্যাপে মোবাইল নম্বর প্রবেশ করালে আসবে একটি ওটিপি, এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ও ফেসিয়াল রিকগনিশন মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। এনআইডির ছবির সঙ্গে ৭০ শতাংশ মিল থাকলেই নিবন্ধন সফল হবে। পাসপোর্ট থাকলে সেটির ছবিও আপলোড করতে বলা হবে, তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।

বিদেশে থাকা ঠিকানা নিশ্চিত করে নিবন্ধন সম্পন্ন হলে ভোটারের তথ্য সরাসরি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যায় এবং পৃথক প্রবাসী ভোটার তালিকা প্রস্তুত হয়। ইসির ধারণা, নিবন্ধন চলমান থাকতেই ঘোষণা হবে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল, এরপর শুরু হবে ব্যালট পাঠানোর কাজ। খামে পৌঁছানো ব্যালট পেপার পেয়ে ভোটার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবেশ করবেন এবং কিউআর কোড স্ক্যান করে নিজের আসনের প্রার্থী তালিকা দেখবেন। তখনই ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ভোট দেওয়ার পর ব্যালট রিটার্ন খামে ভরে নিকটস্থ পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে। ডাকমাশুল আগে থেকেই পরিশোধিত থাকবে। তবে ব্যালট পেপারের সঙ্গে থাকা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে ভুললে সেই ভোট বাতিল হবে। নির্ধারিত ভোটগ্রহণের দিন বিকেল ৪টার আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাতে পারলে সেটি বৈধ ধরা হবে। এর পর পৌঁছানো ব্যালট গণনায় আসবে না।

ইসি জানায়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময়মতো ব্যালট পৌঁছানো, প্রার্থিতা বাতিল বা পুনর্বহাল হলে ব্যালট গণনা বিষয়ক জটিলতা, এবং বিদেশে ব্যালট ডেলিভারির সময় নির্ধারণ। কেউ যদি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর তার প্রার্থিতা বাতিল হয়, কিংবা আদালতের রায়ে পুনর্বহাল হয় সেই আসনের প্রবাসী ভোট গণনা করা হবে না।

প্রবাসীদের পাশাপাশি এবার প্রথমবারের মতো দেশের সরকারি কর্মচারী, ৭১টি কারাগারের বন্দি এবং কয়েদিরাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এদের জন্যও আলাদা নিবন্ধন প্রক্রিয়া থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

-রফিক


সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৫৬:০১
সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় শনিবার ভোরে এক দম্পতির ঘরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক এক ঘটনার রেশ এখনো স্থানীয়দের মনে প্রচণ্ড শোক ও উদ্বেগ তৈরি করে চলছে। ভাড়া বাসার একটি কক্ষে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩৫ বছর বয়সী রেহিমা খাতুনের নিথর দেহ। তাঁর পাশেই পড়ে ছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায় স্বামী ইমরান হোসেন—জীবন-মৃত্যুর সীমানায় লড়াইরত। পারিবারিক ঝগড়া ও মানসিক টানাপোড়েনের জট খুলতে এখন তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

নিহত রেহিমা কোনাবাড়ির একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামী ইমরান হোসেন পেশায় কসাই; তিনি ময়মনসিংহের সুরুজ আলীর ছেলে। স্থানীয়দের ভাষ্য ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা—সম্পর্কের ভেতরে থাকা নানা অভিমান, আর্থিক চাপ ও পারিবারিক অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরেই দম্পতিকে ভারাক্রান্ত করে রেখেছিল। সেই অস্থিরতারই বিস্ফোরণ কি এমন ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনল?

কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, দম্পতি তাঁদের ছোট মেয়েকে নিয়ে ‘একতা ভিলা’ নামে একটি পাঁচতলা ভবনের ওপরতলার ভাড়া বাসায় থাকতেন। পুলিশ ধারণা করছে—পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং তখনই ইমরান ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে আঘাত করেন। পরে একই অস্ত্র দিয়ে নিজের গলায় আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

শনিবার সকালে ভবনের ভেতর থেকে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রেহিমার দেহ উদ্ধার করে এবং গুরুতর আহত ইমরানকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। রেহিমার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে প্রতিবেশী, স্বজন এবং ভাড়া বাসার মালিকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তবে ইমরান সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঘটনার পূর্ণ বিবরণ পাওয়া সম্ভব হবে না।

এই নির্মম ঘটনা শুধু একটি পরিবারের দুর্ভাগ্যজনক ভাগ্যকেই সামনে আনে না; বরং সাম্প্রতিক সময়ে দেশজুড়ে বাড়তে থাকা দাম্পত্য উত্তেজনা, মানসিক অবসাদ, আর্থিক অস্থিরতা এবং যোগাযোগহীনতার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে নতুন করে সতর্ক করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্পর্কের ভেতর লুকিয়ে থাকা মানসিক চাপ দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত হলে তা কখনো কখনো ভয়ংকর রূপ নেয়।

গাজীপুরের কোনাবাড়ির এই ট্র্যাজেডি সেই কঠিন বাস্তবতার আরেক নির্মম উদাহরণ।

-আলমগীর হোসেন

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত