চুল পাকা? নামীদামি কলপ নয়, নারকেল তেলে এই ১ চামচ দিলেই ম্যাজিক!

বৃষ্টি এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় মাথার ত্বকে ঘাম ও ময়লা লেগে থাকার কারণে চুল গোড়া থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে চুল পড়া বেড়ে যায়। যদি আপনি বিভিন্ন শ্যাম্পু বা পণ্যে ফল না পান, তবে কিছুদিন নারকেল তেল ও ফিটকিরির মিশ্রণ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চুল সুস্থ ও মজবুত রাখার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করা হলেও, যখন এতে ফিটকিরি যোগ করা হয়, তখন এর উপকারিতা দ্বিগুণ হয়।
ফিটকিরি ও নারকেল তেলের উপকারিতা
১. চুলের গোড়া মজবুত করে: নারকেল তেল চুলকে গোড়া থেকে পুষ্টি জোগায়। ফিটকিরি প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, যার ফলে চুল পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়।
২. ছত্রাক ও খুশকি দূর করে: নারকেল তেলের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য এবং লরিক অ্যাসিড মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ফিটকিরিতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা খুশকি, চুলকানি, ফোঁড়া এবং ব্রণ দূর করে।
৩. চুলের বৃদ্ধি ও সতেজতা: নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। নারকেল তেলের সঙ্গে ফিটকিরি মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পাকা রোধ হয় এবং চুলের বৃদ্ধিও বজায় থাকে।
ব্যবহারের পদ্ধতি
একটি পাত্রে এক থেকে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল নিন। এতে এক চা চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি কম আঁচে হালকা গরম করুন।
শ্যাম্পু করার আগে এই তেলটি আঙুল দিয়ে চুল এবং মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান এবং ম্যাসাজ করুন। ভালোভাবে লাগানোর পর এক থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর হালকা বা ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
দাঁত সাদা করার ঘরোয়া টোটকা কি বিপদ ডেকে আনছে: যা বলছেন চিকিৎসকরা
হাসিমুখের সৌন্দর্য ধরে রাখতে সুস্থ দাঁতের বিকল্প নেই। তবে আধুনিক জীবনযাত্রায় দাঁতের নানা জটিলতা, বিশেষ করে এনামেল ক্ষয়ের সমস্যা এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, দাঁতের উপরিভাগের এই শক্ত প্রতিরক্ষা স্তর বা এনামেল একবার নষ্ট হয়ে গেলে তা আর প্রাকৃতিকভাবে ফিরে আসে না। অবাক করার বিষয় হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাইরের কোনো আঘাত নয় বরং আমাদের দৈনন্দিন কিছু অবহেলিত অভ্যাসই নীরবে দাঁত নষ্ট করে দিচ্ছে।
দাঁতের ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে অতিরিক্ত জোরে ব্রাশ করার ভুল প্রবণতাকে চিহ্নিত করেছেন দন্তচিকিৎসকরা। অনেকের মধ্যে এমন একটি ধারণা প্রচলিত যে, জোরে ঘষলে দাঁত বেশি সাদা ও পরিষ্কার হবে। বাস্তবে শক্ত ব্রাশ ব্যবহার বা অতিরিক্ত চাপ দিয়ে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল ক্রমশ পাতলা হতে থাকে। এর ফলে দাঁত অতিসংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং ঠান্ডা বা গরম খাবারে শিরশিরানি অনুভব হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, সর্বদা নরম ব্রাশ ব্যবহার করা এবং বৃত্তাকার গতিতে আলতোভাবে ব্রাশ করা উচিত।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনও দাঁতের স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরণের প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে ফিজি ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংক এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারের আধিক্য দাঁতের এনামেলকে সরাসরি আক্রমণ করে। এসব পানীয়তে থাকা অ্যাসিড দাঁতের খনিজ উপাদানগুলোকে গলিয়ে ফেলে। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান না করার ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয়ে গেলে লালা নিঃসরণ কমে যায়। লালা মূলত দাঁতের জন্য একটি প্রাকৃতিক সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে যা ক্ষতিকারক অ্যাসিডের প্রভাব প্রশমিত করে। তাই দাঁত সুস্থ রাখতে চিনিযুক্ত খাবারের বদলে প্রচুর পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি।
সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথাকথিত ‘ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাঁত সাদা করা’র কৌশলগুলো নিয়েও সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। লেবুর রস বা বেকিং সোডা ব্যবহার করে সাময়িকভাবে দাঁত ঝকঝকে মনে হলেও, এগুলো দীর্ঘমেয়াদে এনামেলের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে। দীর্ঘস্থায়ী ও উজ্জ্বল হাসির জন্য ঘরোয়া টোটকার পরিবর্তে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক মুখগহ্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই একমাত্র পথ। সচেতনতাই পারে আপনার অমূল্য দাঁতকে অকাল ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে।
প্রতিদিনের প্লেটেই লুকিয়ে আছে সুস্থ ভবিষ্যৎ
আধুনিক ব্যস্ত জীবনে সুস্থ থাকা এখন আর কেবল ব্যায়ামের ওপর নির্ভরশীল নয়; বরং প্রতিদিন আমরা কী খাচ্ছি, কখন খাচ্ছি এবং কীভাবে খাচ্ছি এই তিনটি বিষয়ই আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মূল নিয়ামক হয়ে উঠেছে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটের আধিক্য রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে, শক্তি কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য কঠোর ডায়েট নয়, বরং সচেতন ও টেকসই খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাই সবচেয়ে কার্যকর কৌশল।
সকালের খাবারকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলা হয়। শুধুমাত্র রুটি, সিরিয়াল বা ফল দিয়ে দিন শুরু করলে দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়ে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই ক্লান্তি ও ক্ষুধা ফিরে আসে। তাই সকালের খাবারে প্রোটিন যুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। ডিম, দই, ডাল, বাদাম বা বীজের সঙ্গে শাকসবজি বা গোটা শস্য যুক্ত হলে হজম ধীর হয়, শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং মনোযোগ বাড়ে।
প্রতিটি খাবারে ভারসাম্য কেন জরুরি
একটি স্বাস্থ্যকর খাবার মানে শুধু কম খাওয়া নয়, বরং সঠিক অনুপাতে খাওয়া। কার্বোহাইড্রেট শক্তির উৎস হলেও একে একা খেলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বাড়ে। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবারের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে এই শোষণ ধীর হয়।
- কার্বোহাইড্রেট: শক্তির জন্য
- প্রোটিন: পেশি ও হরমোনের ভারসাম্যের জন্য
- স্বাস্থ্যকর চর্বি: দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে
- ফাইবার: রক্তে চিনির ওঠানামা কমাতে
ফাইবার: নীরব স্বাস্থ্যরক্ষক
ফাইবার বা আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি খাবারের পর রক্তে শর্করার তীব্র বৃদ্ধি রোধ করে এবং দীর্ঘসময় তৃপ্তি দেয়। শাকসবজি, ফলের খোসা, ডাল, লেবু ও গোটা শস্য নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
খাবার বাদ দেওয়া নয়, সময় মেনে খাওয়া জরুরি
অনেকেই ওজন কমানোর আশায় খাবার বাদ দেন। কিন্তু এতে উল্টো ফল হয়—রক্তে শর্করা কমে গিয়ে পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে অল্প অল্প করে খেলে গ্লুকোজের ভারসাম্য বজায় থাকে, হঠাৎ ক্ষুধা কমে এবং সারাদিন শক্তি নিয়ন্ত্রিত থাকে।
খাবারের মাঝে কী খাবেন
বিস্কুট, চিপস বা মিষ্টি জাতীয় খাবার রক্তে শর্করার দ্রুত ওঠানামার কারণ হয়। এর পরিবর্তে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, বীজ, সেদ্ধ ডিম, দই বা ভাজা ডাল বেছে নিলে শক্তি স্থির থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাকিং কমে।
পানি ও সচেতন খাওয়ার অভ্যাস
অনেক সময় আমরা তৃষ্ণাকে ক্ষুধা ভেবে ফেলি। পর্যাপ্ত পানি পান হজম, ত্বক ও শক্তির জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া, ভালো করে চিবানো এবং খাবারের সময় মোবাইল বা টিভি এড়িয়ে চলা তৃপ্তি বাড়ায় ও অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
ঘরোয়া খাবার ও কম প্রক্রিয়াজাত খাদ্য
বাড়িতে রান্না করা খাবারে লবণ, চিনি ও তেলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার কমালে প্রদাহ, হরমোনের অস্থিরতা ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
সুস্থ থাকার জন্য একদিনে সব বদলে ফেলার প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট পরিবর্তন সকালে প্রোটিন যোগ করা, ফাইবার বাড়ানো, সময়মতো খাওয়া ও পানি পান এই অভ্যাসগুলোই ধীরে ধীরে শরীর ও মনকে সুস্থতার পথে এগিয়ে নেয়। খাদ্য যখন জীবনধারার অংশ হয়ে ওঠে, তখন সুস্থতা আর লক্ষ্য নয় বরং স্বাভাবিক বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়।
ডায়াবেটিস ওঠানামা ঠেকাতে কী খাবেন প্রতিদিন
রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখা বর্তমানে শুধু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয়, বরং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সবার ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেক পরিবারেই দেখা যায়, ঘুমানোর আগে কিংবা খাবারের পর কেউ না কেউ গ্লুকোমিটার হাতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করছেন। ক্লান্তি, হঠাৎ ক্ষুধা, মনোভাবের অস্বাভাবিক পরিবর্তন কিংবা অকারণ মানসিক চাপ এসবই অনেক সময় রক্তে শর্করার ওঠানামার নীরব সংকেত হতে পারে, এমনকি যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের ক্ষেত্রেও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের পর শরীরে দ্রুত শক্তি কমে যাওয়া এবং অস্বাভাবিক ক্ষুধা অনুভব হওয়া মূলত রক্তে গ্লুকোজের দ্রুত বৃদ্ধি ও পতনের ফল। তবে আশার কথা হলো প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে কিছু সচেতন পরিবর্তন আনলেই রক্তে শর্করার এই অস্থিরতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
১. শুধু কার্বোহাইড্রেট নয়, প্রোটিন দিয়ে দিন শুরু করুন
সকালের নাস্তায় কেবল টোস্ট, সিরিয়াল বা ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে আবার দ্রুত নেমে যেতে পারে। প্রোটিন যুক্ত করলে হজমের গতি ধীর হয় এবং শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সকালের খাবারে ডিম ও সবজি, দইয়ের সঙ্গে বাদাম বা বীজ, কিংবা ডাল, বিনস ও গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. প্রতিটি খাবারে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখুন
কার্বোহাইড্রেট একাই খেলে রক্তে শর্করার আকস্মিক স্পাইক দেখা দেয়। প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ফাইবারের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে রক্তে প্রবেশ করে। শক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট, ইনসুলিন নিঃসরণ স্থিতিশীল রাখতে প্রোটিন, দীর্ঘ সময় তৃপ্তির জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং চিনির শোষণ কমাতে ফাইবার—এই চারটির সমন্বয়ই আদর্শ খাবারের ভিত্তি।
৩. খাবার এড়িয়ে না গিয়ে নির্দিষ্ট বিরতিতে খান
অনেকে ওজন কমানোর আশায় কিংবা ব্যস্ততার কারণে খাবার বাদ দেন, যা রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে। দীর্ঘ সময় না খেলে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ কমে যায় এবং পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। নিয়মিত বিরতিতে খাওয়ার অভ্যাস রক্তে শর্করা স্থিতিশীল রাখে এবং সারাদিন শক্তির সুষম সরবরাহ নিশ্চিত করে।
৪. নাস্তার সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন
খাবারের ফাঁকে বিস্কুট, কেক বা মিষ্টিজাতীয় খাবার রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায়। এর পরিবর্তে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, বীজ, সেদ্ধ ডিম, দই বা ভাজা ডাল গ্রহণ করলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং হঠাৎ ক্ষুধা কমে।
৫. প্রতিটি খাবারে ফাইবার বাড়ান
আঁশ বা ফাইবার রক্তে চিনির শোষণ ধীর করে এবং খাবারের পর গ্লুকোজের তীব্র ওঠানামা প্রতিরোধে সহায়তা করে। পাশাপাশি এটি দীর্ঘ সময় তৃপ্তি দেয়। শাকসবজি, খোসাসহ ফল, লেবু জাতীয় খাবার এবং গোটা শস্য ফাইবারের উৎকৃষ্ট উৎস, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত ও সুষম খাদ্যাভ্যাসই রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। ছোট ছোট অভ্যাসগত পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে বড় স্বাস্থ্যগত সুফল এনে দিতে পারে।
শীতে সুস্থ থাকতে কেন দিন শুরু করবেন গরম পানি দিয়ে
শীতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে তাপমাত্রা কমে গিয়ে হাইপোথার্মিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে, এমনকি অনেকের হাতের আঙুল নীল হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের শারীরিক জটিলতা এড়াতে নিয়মিত কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। এটি কেবল শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে না, বরং শীতকালীন ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হওয়া সর্দি, কাশি ও গলাব্যথা কমাতেও দারুণ স্বস্তি দেয়।
কুসুম গরম পানির বহুমুখী উপকারিতার মধ্যে হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করা অন্যতম। শীতকালে সাধারণত মানুষের হজমশক্তি কিছুটা কমে যায়, যা পেট ফাঁপা ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা তৈরি করে। সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করলে বিপাকক্রিয়া বা মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, যা ওজন কমাতে এবং বাড়তি ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি শরীরের ভেতরে জমে থাকা বিষাক্ত টক্সিন বের করে দিয়ে লিভার ও কিডনিকে সতেজ রাখে এবং রক্ত সঞ্চালনের গতি বাড়ায়।
দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়ও গরম পানির ভূমিকা অতুলনীয়। শীতের ঠান্ডা পানিতে অনেকের দাঁতে শিরশিরানি বা ব্যথা বাড়ে, যা কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করলে সহজেই উপশম হয়। পাশাপাশি এটি সাইনাস ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অস্বস্তি দূর করে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কুসুম গরম পানি রাখলে শরীর যেমন হাইড্রেটেড থাকে, তেমনি ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ে।
আঙুল ফোটানোর শব্দ নিয়ে কয়েক দশকের ভুল ভাঙল আধুনিক গবেষণায়
আঙুল ফোটানোর অভ্যাসে হাড় মোটা হয়ে যাওয়া বা ভবিষ্যতে আর্থ্রাইটিস হওয়ার যে ভয় আমাদের দেখানো হয়, তা আসলে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন। বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, আঙুল বা পায়ের পাতা ফোটানোর সময় যে শব্দ তৈরি হয়, তা হাড়ের ঘর্ষণ বা তরুণাস্থির কোনো ক্ষতি থেকে হয় না। ২০১৫ সালে এমআরআই ইমেজিং ব্যবহার করে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, হাড়ের সন্ধিস্থল টানা বা প্রসারিত করলে সেখানে চাপ হঠাৎ কমে যায়।
আমাদের হাড়ের জোড়ায় সিনোভিয়াল ফ্লুইড নামে এক ধরণের পিচ্ছিল তরল থাকে। হাড়ের ফাঁকা জায়গা হঠাৎ বেড়ে গেলে সেখানে গ্যাসের একটি শূন্যস্থান বা বুদবুদ তৈরি হয়, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ট্রাইবোনিউক্লিয়েশন’ বলা হয়। এই বুদবুদ তৈরি হওয়ার মুহূর্তেই সেই পরিচিত ‘ফটফট’ শব্দ শোনা যায়। গবেষকরা একে অনেকটা ভ্যাকুয়াম বা শূন্যস্থান তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হয়—এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতে বিজ্ঞানী ডোনাল্ড উঙ্গার এক অনন্য পরীক্ষা চালিয়েছেন। তিনি টানা ৫০ বছর তাঁর বাঁ হাতের আঙুল দিনে দুবার করে ফোটালেও ডান হাতের আঙুল কখনোই ফোটাননি। দীর্ঘ পাঁচ দশক পর তিনি প্রমাণ করেন যে, দুই হাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই এবং কোনো হাতেই আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এই গবেষণার জন্য তিনি ২০০৯ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আইজি নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভ্যাস অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, তবে এটি হাড়ের কোনো ক্ষতির ইঙ্গিত দেয় না।
শীতের সুপারফুড মূলার অজানা উপকারিতা
শীত মৌসুম মানেই টাটকা শাকসবজি, আর এই তালিকায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি হলো মূলা। ঝাঁঝালো স্বাদ ও পানিসমৃদ্ধ এই মূলজাতীয় সবজিটি শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, বরং মানবদেহে বহুমুখী স্বাস্থ্য উপকারও এনে দেয়। খাদ্যতালিকায় নিয়মিত মূলা যুক্ত করলে ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হৃদ্স্বাস্থ্য, হজম ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মূলা কেন এত উপকারী
মূলা (বৈজ্ঞানিক নাম Raphanus sativus) সরিষা পরিবারভুক্ত একটি সবজি। সাধারণত লালচে খোসা ও ভেতরে সাদা অংশবিশিষ্ট এই সবজিটি বাজারে বেশি দেখা যায়। এতে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন, খনিজ ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
১. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক
গবেষণায় দেখা গেছে, মূলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও উদ্ভিজ্জ সক্রিয় উপাদান রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণের হার কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তি বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে।
২. লিভার সুস্থ রাখতে কার্যকর
প্রাণীভিত্তিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, মূলায় থাকা গ্লুকোসিনোলেট ও আইসোথায়োসায়ানেট নামের যৌগ লিভারের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া মূলার লাল রঙের জন্য দায়ী অ্যান্থোসায়ানিন এবং কোএনজাইম কিউ১০ লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।
৩. ক্যানসার প্রতিরোধে সম্ভাবনাময় খাদ্য
মূলার ঝাঁঝালো স্বাদের পেছনে থাকা কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে মূলার বীজে থাকা সালফোরাফেন কোষের ক্ষতিকর বৃদ্ধি দমন করতে সক্ষম হতে পারে।
৪. ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা
ল্যাবরেটরি পর্যায়ের গবেষণায় মূলার নির্যাস Candida albicans নামক ছত্রাকের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এটি মানবদেহে সরাসরি প্রয়োগযোগ্য কিনা, তা নিশ্চিত করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন, তবু ফলাফল আশাব্যঞ্জক।
৫. হৃদ্স্বাস্থ্য ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
মূলার পাতায় থাকা কিছু নির্যাস রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ কিছু জাতের মূলায় থাকা ট্রিগোনেলিন নামের উদ্ভিজ্জ উপাদান রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৬. হজমশক্তি ও অন্ত্রের সুস্থতায় উপকারী
প্রাচীনকাল থেকেই পেটের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরসনে মূলার ব্যবহার প্রচলিত। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, মূলার পলিস্যাকারাইড উপাদান প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, যা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বাড়ায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
মূলার নির্যাস শরীরের প্রতিরক্ষা কোষ যেমন টি-সেল, বি-সেল ও ইমিউনোগ্লোবুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণসহ নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
৮. ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক সমাধান
মূলায় থাকা পলিফেনল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ও দূষণের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এসব উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক।
পুষ্টিগুণে ভরপুর মূলা
ইউএসডিএ অনুযায়ী, আধা কাপ কাঁচা কাটা মূলায় থাকে মাত্র ৯ ক্যালরি। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পানি, আঁশ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। কম ক্যালরির হওয়ায় এটি ডায়েট অনুসরণকারীদের জন্যও উপযোগী।
কীভাবে খাবেন মূলা
মূলা কাঁচা সালাদে, রান্নায়, ভাজি, স্যুপ কিংবা আচার হিসেবেও খাওয়া যায়। অনেকেই মূলার শাক ফেলে দিলেও গবেষণায় দেখা গেছে, এর পাতা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যে বিশেষ উপকারী।
সতর্কতা ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- সরিষা পরিবারভুক্ত সবজিতে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে মূলা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে
- অতিরিক্ত কাঁচা মূলা খেলে কিছু মানুষের থাইরয়েড কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে
- গর্ভবতী নারীদের কাঁচা মূলা বা কাঁচা অঙ্কুর খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে
গাজর খেলেই সুস্থতা, জানুন ৫টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
শীত এলেই বাজারে ভরপুর হয়ে ওঠে কচকচে, মিষ্টি ও রসালো গাজর। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক-সব বয়সী মানুষের কাছেই এই সবজিটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টিগুণেও গাজর এক অনন্য সবজি। চোখের যত্নে গাজরের ভূমিকার কথা বহুদিন ধরেই পরিচিত হলেও, এর স্বাস্থ্যগুণ যে এখানেই শেষ নয়, তা অনেকেই জানেন না।
মূলজাতীয় সবজি হিসেবে গাজর শরীরের জন্য বহুমাত্রিক উপকার বয়ে আনে। এটি এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে স্বাদ ও সুস্বাস্থ্যের সমন্বয় ঘটায়। কাঁচা সালাদ, রান্না কিংবা হালকা স্ন্যাকস সব ক্ষেত্রেই গাজরের ব্যবহার সহজ ও কার্যকর। এর উচ্চ পুষ্টিমান ও সহজলভ্যতা একে শীতের অন্যতম সেরা সুপারফুডে পরিণত করেছে।
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন, খাদ্যআঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে–১ এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গাজরের পুষ্টিগুণ: কী রয়েছে এই সবজিতে?
গাজর মূলত বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। শরীরে প্রবেশ করার পর বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখ ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন সি, লুটেইন, জিয়াজ্যানথিন, ভিটামিন কে, খাদ্যআঁশ এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান।
ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্য গাজর একটি আদর্শ খাবার। কম ক্যালোরিযুক্ত হলেও এতে পুষ্টির ঘাটতি নেই। জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম লাল গাজরে রয়েছে প্রায় ৩৮ কিলোক্যালোরি শক্তি, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ১ গ্রাম প্রোটিন, ০.৫ গ্রাম চর্বি, ৫ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৪৫১ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ এবং প্রায় ২৭০৬ মাইক্রোগ্রাম বিটা-ক্যারোটিন।
গাজরের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
গাজরে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ কমে যায়। পাশাপাশি এটি হজম প্রক্রিয়া সহজ করে ও বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
২. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গাজরের ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ শ্লেষ্মা ঝিল্লি সুস্থ রাখে, যা ভাইরাস ও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ দেয়।
৩. চোখের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ
ভিটামিন এ-এর ঘাটতি রাতকানা ও চোখ শুষ্ক হওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করে। গাজরে থাকা লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন চোখের রেটিনা ও লেন্সকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। American Journal of Ophthalmology-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে দুই বারের বেশি গাজর খাওয়া নারীদের গ্লুকোমার ঝুঁকি ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে গাজর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ায় না। এতে প্রাকৃতিক মিষ্টতা থাকলেও এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাদ্যাভ্যাস টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
৫. হাড় শক্ত রাখতে সাহায্য করে
যদিও গাজরে ক্যালসিয়াম বা ফসফরাসের মাত্রা খুব বেশি নয়, তবু এতে থাকা ভিটামিন কে ও অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড়ের গঠন ও মেরামতে সহায়তা করে। নিয়মিত গাজর খাওয়া হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
শীতকালে গাজর নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা সুপারফুড। শুধু পুষ্টিগুণের জন্য নয়, সহজলভ্যতা ও বহুমুখী ব্যবহারযোগ্যতার কারণেও এটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। কাঁচা, সিদ্ধ, ভাজা কিংবা স্যুপ ও সালাদ—সবভাবেই গাজর খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা যায়। কম ক্যালোরি ও প্রাকৃতিক মিষ্টতার কারণে এটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবেও দারুণ।
এই শীতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় গাজর রাখলে শরীর পাবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের শক্তিশালী সমন্বয়।
ডায়েট না কি চিকিৎসা: কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার গোপন টিপস
সুস্বাস্থ্যের জন্য রক্তে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করা অপরিহার্য। আমরা অধিকাংশ সময় এলডিএল বা ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ নিয়ে উদ্বেগে থাকি, যা ধমনিতে জমে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘হাইপোলিপিডেমিয়া’ বা রক্তে অস্বাভাবিক কম কোলেস্টেরলও শরীরের জন্য সমান ক্ষতিকর। সাধারণত রক্তে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২০০ মিলিগ্রামের নিচে থাকা ভালো, তবে তা যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কমে যায়, তবে শরীরের হরমোন উৎপাদন এবং ভিটামিন ডি তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল (HDL) শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (এ, ডি, ই এবং কে) শোষণে সহায়তা করে। পুরুষের ক্ষেত্রে এই এইচডিএল-এর মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৪০ মিলিগ্রাম এবং নারীর ক্ষেত্রে ৫০ মিলিগ্রামের নিচে নেমে গেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। এর ফলে কেবল শারীরিক দুর্বলতাই নয়, বরং দুশ্চিন্তা, গভীর অবসাদ এবং ‘হেমারেজিক স্ট্রোক’-এর মতো ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে তা গর্ভস্থ শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে সময়ের আগে সন্তান জন্মদান (Preterm birth) অথবা জন্মের সময় শিশুর ওজন অস্বাভাবিক কম হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার বা ডায়েটের ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কোলেস্টেরল খুব বেশি বেড়ে গেলে যেমন ব্যবস্থা নিতে হয়, ঠিক তেমনই তা অস্বাভাবিক কমে গেলেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও প্রয়োজনে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।
শীতে দীর্ঘমেয়াদী কাশি এড়াতে জাদুকরী ৪ টিপস
শীতের রুক্ষ আবহাওয়ায় আমরা বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরে কাটাই, আর এখানেই লুকিয়ে থাকে অ্যালার্জির মূল কারণগুলো। চিকিৎসকদের মতে, শীতকালীন অ্যালার্জি এবং সাধারণ মৌসুমি অ্যালার্জির লক্ষণগুলো অনেকটা একই রকম হলেও শীতকালে ঘরের ভেতরের 'ইনডোর অ্যালার্জেন' যেমন—বাতাসের ধুলিকণা, ডাস্ট মাইট, পোষা প্রাণীর লোম এবং তেলাপোকার মল বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। দীর্ঘ সময় জানালা বন্ধ রাখায় এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্মানো ছত্রাক বা ফাঙ্গাস এই সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।
অ্যালার্জি বনাম সর্দি
চেনার উপায় অনেকেই সর্দি ও অ্যালার্জির মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন। মনে রাখতে হবে, সর্দি হয় ভাইরাসের কারণে যা সাধারণত এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায় এবং এতে শরীর ব্যথা বা জ্বর হতে পারে। অন্যদিকে, অ্যালার্জি মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এবং এতে সাধারণত চোখ চুলকানো ও পানি পড়ার মতো লক্ষণ থাকে, যা সর্দিতে দেখা যায় না। অ্যালার্জির তীব্রতা বাড়লে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, ত্বকে র্যাশ এবং শ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ হতে পারে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকার
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে ঘরোয়া পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ নজর দিতে হবে। বিছানার চাদর ও বালিশের কভারে ডাস্ট-প্রুফ কভার ব্যবহার করা এবং নিয়মিত গরম পানিতে ধোয়া অত্যন্ত জরুরি। ঘরের আর্দ্রতা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে রাখতে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসায় সাধারণত সিটিরিজিন বা ফেক্সোফেনাডিনের মতো অ্যান্টিহিস্টামিন কার্যকর হয়। এছাড়া নাসাল স্প্রে এবং নিয়মিত পরিষ্কার পানিতে নাক ধোয়া বা 'নেটি পট' ব্যবহার করলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। তবে উপসর্গ কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে বা দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পাঠকের মতামত:
- স্ট্রোক হওয়ার কয়েক দিন আগেই পাওয়া যায় সিগন্যাল: ৫টি লক্ষণ চিনুন
- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত: নতুন সম্ভাব্য তারিখ জানাল অধিদপ্তর
- খালেদা জিয়া শুধু দলের নয় বরং পুরো দেশের নেতা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- মেঘ আর কুয়াশায় ঢাকা সূর্য: কবে দেখা দেবে সোনালী রোদ জানাল অধিদপ্তর
- থার্টি ফার্স্ট নাইটে মুসলিমদের করণীয় নিয়ে যা বলেন ইসলামি স্কলাররা
- ফুরিয়ে আসছে ২৪ ঘণ্টার দিন, ঘড়ির কাঁটায় যোগ হচ্ছে নতুন সময়
- দাঁত সাদা করার ঘরোয়া টোটকা কি বিপদ ডেকে আনছে: যা বলছেন চিকিৎসকরা
- এবার এনসিপি প্রার্থী ডা. মিতুকে হত্যার হুমকি
- ভোটের মাঠে বাবার মুখোমুখি হান্নান মাসউদ
- প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে এক বিশাল হৃদয়: খালেদা জিয়ার মানবিক দর্শনের আড়ালে যা ছিল
- দল থেকে ছিটকে গেলেন রুমিন ফারহানা
- একঝাঁক বিশ্বনেতারা কাল ঢাকায় আসছেন খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে
- ২০২৬ সালের বার্ষিক বৃত্তিসহ সব পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ
- এস জয়শঙ্কর ও ইসহাক দার ঢাকা আসছেন কাল
- বছরের শেষ দিনে ডিএসইতে মিশ্র চিত্র, লেনদেন ৩৫৪০ কোটি
- বছরের শেষ কার্যদিবসে শীর্ষ গেইনার শেয়ার
- বছরের শেষ কার্যদিবসে শীর্ষ লোকসানি শেয়ার
- প্রতিদিনের প্লেটেই লুকিয়ে আছে সুস্থ ভবিষ্যৎ
- দুই মেয়াদি সরকারি বন্ডের কুপন রেকর্ড ডেট প্রকাশ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর, পুনরায় চালু তিন সিকিউরিটিজ
- সহজ রেসিপিতে ঘরেই বানান ধনে পাতার আচার
- শীতের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসে সতর্কতা জারি
- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন হবে যেখানে
- ডায়াবেটিস ওঠানামা ঠেকাতে কী খাবেন প্রতিদিন
- খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের আবেগঘন বার্তা
- এনএফএমএল এর তৃতীয় প্রান্তিক বিশ্লেষণ
- বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসের ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ
- এনভয় টেক্সটাইলসের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা
- চার লাখের বেশি শেয়ার কিনছেন দুই করপোরেট পরিচালক
- শপিংয়ের আগে সতর্কতা: আজ যেসব মার্কেট বন্ধ
- প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে মোদির আবেগঘন বার্তা
- গণতন্ত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম: খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শেখ হাসিনার বিশেষ বার্তা
- জাতি আজ মায়ের ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো: রিজভী
- একাধিক কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং প্রকাশ
- এনএভি বিশ্লেষণে কোন ফান্ড এগিয়ে, কোনটি পিছিয়ে
- বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় রেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
- লেনদেন ৯৫০ কোটির বেশি, সূচক বাড়ল ডিএসইতে
- আট দফা বাড়ার পর অবশেষে কমল স্বর্ণের দাম: আজ থেকে কার্যকর হবে নতুন মূল্য
- জবিতে জকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা
- প্রিয় নেত্রীর প্রয়াণে বিপিএল আজ নিশ্চুপ: পেছানো হলো আজকের সব ম্যাচ
- দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির নক্ষত্রপতন: খালেদা জিয়াকে নিয়ে যা বলছে বিশ্বমিডিয়া
- বেগম জিয়ার বিদায়ে গভীর শোক প্রকাশ চীনের, এল বিশেষ বার্তা
- জাতি এই ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না: মির্জা ফখরুল
- জাতি এক মহান অভিভাবককে হারাল: প্রধান উপদেষ্টা
- ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে জেনে নিন আজকের আবহাওয়ার হালচাল
- টিভির পর্দায় আজকের সব খেলার সূচি
- লাজুক গৃহবধূ থেকে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক মহাকাব্য
- আসছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ: হাড়কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস
- খালেদা জিয়াকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন: জামায়াত আমির
- আজ ঢাবির ভর্তি যুদ্ধ: আছে এমআইএসটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খবর
- নারী-সঙ্গীর হাতে পুরুষের যৌনাঙ্গ ছিন্নকরণ: বাংলাদেশে অবহেলিত এক সহিংসতার সংকট
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের নতুন মূল্য
- পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় সুখবর
- আজ থেকে শুরু বিপিএলের দ্বাদশ আসর, জানুন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান
- ঢাকা-১৫ জামায়াত আমিরের বিপক্ষে নামলেন যে বিএনপি প্রার্থী
- ২০২৬ সালে স্কুলে ছুটি কমলো ১২ দিন, দেখে নিন তালিকা
- ই-রিটার্ন দাখিলে আর বাধা নেই: বড় সুখবর দিল রাজস্ব বোর্ড আজ
- এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পিছাল, নতুন তারিখ ঘোষণা
- জামায়াত-চরমোনাই দ্বিমুখী লড়াই: সংকটে ইসলামী জোট
- আজ ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে যেসব এলাকাই
- হাড়কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশা থেকে মুক্তি কবে? যা জানাল আবহাওয়া অফিস








