ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা: বিপাকে পোশাক রপ্তানিকারকরা  

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৮ ১১:৩৩:১৩
ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা: বিপাকে পোশাক রপ্তানিকারকরা
 

সত্য নিউজ: দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে ভারতের হঠাৎ করে আরোপিত স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা। সম্প্রতি দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (DGFT) এক ঘোষণায় জানায়, বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় স্থলবন্দরগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে তৈরি পোশাক, ফলমূল, কার্বনেটেড বেভারেজ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পিভিসি ও প্লাস্টিক সামগ্রী এবং কাঠের আসবাবপত্র।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য নয়, বরং ভারতীয় আমদানিকারকদের জন্যও এক প্রকার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। তদুপরি, এই নীতিগত পদক্ষেপ দুই দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “ভারতে পোশাক রপ্তানিতে এখন সময় ও খরচ দুই-ই বাড়বে। আগের সহজ প্রবেশাধিকার হারালে রপ্তানির পরিমাণ কমে যাবে। এমন এক সময়ে, যখন বৈশ্বিক বাজার সংকটে ভুগছে, এই সিদ্ধান্ত পারস্পরিক ক্ষতি ডেকে আনবে।”

বাংলাদেশ প্রতিবছর গড়ে ৫০ কোটি ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে, যার বড় অংশজুড়ে রয়েছে তৈরি পোশাক। ভারতের ক্রমবর্ধমান বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা বাড়ছিল, কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা সে প্রবৃদ্ধিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং শুধুমাত্র কলকাতা ও মুম্বাইয়ের সমুদ্রবন্দর দিয়ে পোশাক আমদানি সম্ভব হবে। অন্যদিকে, নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানির ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।

এক কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এই সিদ্ধান্তের পেছনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ভারতীয় তুলা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ ও স্থলবন্দর ব্যবহার সীমিত করার প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। তবে এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

রপ্তানিকারকদের মতে, পোশাক ছাড়াও যেসব পণ্য নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের উপর নির্ভরশীল, ফলে এ সিদ্ধান্ত তাদের টিকে থাকার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে ভারত ও বাংলাদেশ—উভয় পক্ষেরই উচিত হবে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা, যাতে বাণিজ্যিক স্বার্থ অক্ষুণ্ন থেকে যায় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাও রক্ষা পায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ