যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১০:০৬:০৯
যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিত্বকারী এএইচজেড এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ২৫,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থীকে তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছে।

এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এএইচজেড আজ একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। ১৫টি দেশে তাদের ৬৫টিরও বেশি শাখা রয়েছে। বাংলাদেশেও ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় ১০টিরও বেশি স্থানীয় শাখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এভাবে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় ও পরিচিত পরিবেশে সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে।

বাংলাদেশে এএইচজেড-এর কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াহিদ জামান বলেন, “প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্নই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিত করা পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিটি ধাপে পাশে থাকি। আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য এই যাত্রাকে যতটা সম্ভব সহজ, মসৃণ ও চাপমুক্ত করে তোলা।”

বর্তমানে এএইচজেড-এর বৈশ্বিক টিমে রয়েছে ৭৫০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ কাউন্সিল-সার্টিফায়েড কাউন্সিলর, যারা সম্মিলিতভাবে ৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা প্রদান করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত কোর্স নির্বাচন, আবেদনপত্র তৈরি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ এবং স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) প্রস্তুতকরণে তারা নির্ভুল দিকনির্দেশনা দেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ, এএইচজেড ৫০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।

এএইচজেড শুধু ভর্তি প্রক্রিয়া নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নতুন জীবনের প্রস্তুতিতেও সহায়তা করে। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইইএলটিএস সহায়তা, প্রি-ডিপার্চার ব্রিফিং, ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও জীবনযাপন বিষয়ে ধারণা, আবাসন খোঁজার পরামর্শ, পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ এবং সাংস্কৃতিক মানিয়ে নেওয়ার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।

২০১২ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত এএইচজেড আজ নৈতিকতা ও বিনামূল্যে পূর্ণাঙ্গ সেবা প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশ্বস্ত শিক্ষা পরামর্শদাতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিতকরণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণই তাদের প্রধান অঙ্গীকার।

Holiday Village

তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল, ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৯ ২১:৩২:৪৭
তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল, ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি
ছবি : কালের কণ্ঠ

জাতীয় নির্বাচনের আগেই ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার দাবিতে এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও মশাল মিছিল করেছে। রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মশাল মিছিল শুরু হয়ে জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।

দাবি ও হুঁশিয়ারি

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা যত দিন বাস্তবায়ন না হবে, তত দিন উত্তরবঙ্গের মানুষের দুঃখ শেষ হবে না’—স্লোগান তোলেন। তাদের স্লোগানে ভারতীয় আগ্রাসন, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এবং ‘সবার প্রাপ্য সবাই পায়, আমার বেলায় বাজেট নাই’-এর মতো স্লোগান ছিল।

এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক রাসেল আহমেদ ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন:

“আপনারা যদি আমাদের পানির হিস্যা না দেন, আমরা আপনাদের এই সেভেন সিস্টার খেয়ে দেব। আমরা যে সেভেন সিস্টার স্বাধীনতা চাই, তাদের আমরা সহযোগিতা করব।”

তিনি আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলের দারিদ্র্যের কারণে একটি মহল রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে।

চাকসু’র দাবি: চাকসু’র কেন্দ্রীয় সংসদের জিএস সাঈদ বিন হাবিব অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান, নভেম্বরের মধ্যেই যেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সমাবেশে অংশগ্রহণ

সমাবেশে বিজয় চব্বিশ হলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সাদিয়া মাহসীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চাকসু’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব, এনসিপি’র কেন্দ্রীয় সংগঠক রাসেল আহমেদসহ রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা।

মশাল মিছিল ও সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জেলা কল্যাণ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ সব ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।


আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টার বার্তা

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৯ ১৭:০২:১১
আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টার বার্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্লাসরুমে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. চৌধুরী রফিকুল (সিআর) আবরার। তিনি বলেন, নানাবিধ সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকার বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিক্ষকদের তা মেনে নেওয়া উচিত।

রোববার (১৯ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।

বাড়ি ভাড়া ও আন্দোলনের পরিস্থিতি

উপদেষ্টার বক্তব্য: সিআর আবরার বলেন, “আমরা মনে করি, শিক্ষক সমাজের অনেক বেশি পাওয়া দরকার। কিন্তু বর্তমান সীমাবদ্ধতার কারণে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ করেছে। এর জন্য আমাদের দিক থেকে যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। এ অবস্থায় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়া উচিত।”

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত: অর্থ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক আদেশে জানিয়েছে, বিদ্যমান বাজেটের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা) করা হলো। এই আদেশ নভেম্বর মাস থেকে কার্যকর হবে।

শিক্ষকদের প্রত্যাখ্যান: তবে শিক্ষকরা ৫ শতাংশ হারে দেওয়া এই বাড়ি ভাড়ার আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সঙ্গে তারা অনশনসহ সব ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।


এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়াল সরকার

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৯ ১০:৫৩:৫৫
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়াল সরকার
ছবিঃ সংগৃহীত

বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রবিবার অর্থ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, এখন থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাঁদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা পাবেন। তবে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা ভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

নতুন এই নিয়ম ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে কোনো বকেয়া অর্থ দেওয়া হবে না।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন জাতীয় বেতন স্কেল চালু হলে এই বাড়িভাড়া ভাতাও তাতে সমন্বয় করতে হবে। এছাড়া এমপিও সংক্রান্ত বর্তমান নীতিমালা—যেমন ২০২১ সালের স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতি, ২০১৮ সালের (সংশোধিত ২০২০) মাদ্রাসা নীতি এবং কারিগরি, কৃষি ও মৎস্য ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা—সবগুলো নিয়ম মেনে চলতে হবে।

ভাতা বিতরণে কোনো অনিয়ম হলে বিল অনুমোদনকারী কর্মকর্তাদের দায়ী করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

শিক্ষকরা কয়েকদিন ধরে বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। শনিবার তাঁরা কালো পতাকা মিছিল ও অনশন কর্মসূচি পালন করেন। রবিবার তাঁরা শিক্ষা ভবনের দিকে “ক্ষুধা মিছিল” করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঠিক তার আগেই সরকার এই ঘোষণা দেয়।

শিক্ষক নেতারা বলেছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাঁদের আন্দোলনের ফল। তবে তাঁরা আশা করছেন, বাকি ভাতাগুলোর ক্ষেত্রেও সরকার দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে।

-নাজমুল হাসান


শিক্ষার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন: এইচএসসি পরীক্ষায় এত বড় ব্যর্থতার কারণ কী?

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১১:১৭:৩১
শিক্ষার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন: এইচএসসি পরীক্ষায় এত বড় ব্যর্থতার কারণ কী?
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের সম্মিলিত গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এই পরীক্ষায় মোট ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় একযোগে অনলাইনে এবং স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়।

পরীক্ষার্থী ও পাশের চিত্র

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছিলেন ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ছিলেন ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন। সারা দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান বোর্ডগুলোর তথ্য অনুযায়ী: ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ২ লাখ ৯১ হাজার ২৪১ জন, রাজশাহীতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৪২ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০ জন এবং চট্টগ্রামে ১ লাখ ৩৫ জন। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন ৮৬ হাজার ১০২ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।

ফল জানার উপায়

শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ফলাফল জানতে পারছেন। এছাড়া ফল জানার জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট ঠিকানা www.educationboardresults.gov.bd ব্যবহার করা যাবে। এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে হলে মোবাইলে HSC বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল নম্বর <স্পেস> 2025 লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে।


এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, জেনে নিন ফলাফল জানার সহজ উপায়

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১০:০৬:০২
এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, জেনে নিন ফলাফল জানার সহজ উপায়
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের সম্মিলিত গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় একযোগে অনলাইনে এবং স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ করা হয়।

পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্র সংখ্যা

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ছাত্র ছয় লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ছয় লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন। সারা দেশের দুই হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান বোর্ডগুলো: ঢাকা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিলেন ২ লাখ ৯১ হাজার ২৪১ জন, রাজশাহীতে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২৪২ জন, কুমিল্লায় ১ লাখ ১ হাজার ৭৫০ জন এবং চট্টগ্রামে ১ লাখ ৩৫ জন।

অন্যান্য বোর্ড: মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন ৮৬ হাজার ১০২ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম/বিএমটি) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।

শিক্ষার্থীরা কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের ফলাফল জানতে পারবে:

১. ওয়েবসাইট: সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের Result কর্নারে ক্লিক করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের EIIN-এর মাধ্যমে ফল ডাউনলোড করতে পারবে। পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ড এবং সমন্বিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ফলাফল সংগ্রহ করতে পারবে।

২. এসএমএস: নির্ধারিত শর্ট কোড 16222 নম্বরে SMS করেও ফল জানা যাবে। এর জন্য মোবাইলে লিখতে হবে: HSC <স্পেস> বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল নম্বর <স্পেস> 2025।


আগামীকাল প্রকাশিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১৫:৩০:৫০
আগামীকাল প্রকাশিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় প্রকাশিত হচ্ছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। সোমবার প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. খন্দকার এহসানুল কবির।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ—এই নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল একযোগে প্রকাশ করা হবে।

ফলাফল সকাল ১০টার পর থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, সব পরীক্ষা কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে জানা যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের EIIN নম্বর ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের ফলাফল বিভাগ থেকে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবে: www.educationboardresults.gov.bd

পরীক্ষার্থীরাও একই ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ফলাফল জানতে পারবেন। এছাড়া, নির্ধারিত সংক্ষিপ্ত নম্বর ১৬২২২-এ এসএমএস পাঠিয়েও ফলাফল পাওয়া যাবে।

ফল পুনঃনিরীক্ষার (Re-scrutiny) আবেদন গ্রহণ করা হবে ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এই আবেদন অনলাইনে করা যাবে https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd ঠিকানায়।

চলতি বছর মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন পুরুষ ও ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন নারী পরীক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নেয় ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ জন শিক্ষার্থী।

এছাড়া, আলিম (মাদ্রাসা) বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ৮৬ হাজার ১০২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অংশ নেয় ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন।

দেশের ২,৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, আর দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্রে ২৯৩ জন বিদেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফল প্রকাশের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করা হবে। এরপরই শিক্ষার্থীরা অনলাইনে এবং মোবাইল বার্তার মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারবে।

-নাজমুল হাসান


শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ: ঢাকা কলেজের ঘটনায় আজ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৪ ১০:০৬:৫২
শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ: ঢাকা কলেজের ঘটনায় আজ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ধস্তাধস্তি ও হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের সব সরকারি কলেজে আজ (মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর) কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। এর ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব সরকারি ও বেসরকারি কলেজের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রার সময় এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ সময় এক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের উদ্দেশে ‘দালাল’ মন্তব্য করলে শিক্ষকরা তাকে কমনরুমে আটক করে রাখেন। পরে তার সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়।

সংগঠনটির নেতারা বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এমন ঘটনা শিক্ষাঙ্গনে ভয় ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ।

শিক্ষকদের দাবি ও কর্মসূচি

বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল এবং সদস্য সচিব ড. মো. মাসুদ রানা খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলা এবং টিচার্স লাউঞ্জে ভাঙচুরের ঘটনায় সংগঠনটি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। তাদের দাবি:

কর্মবিরতি: ঢাকাসহ দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকরা আজ সর্বাত্মকভাবে কর্মবিরতি পালন করবেন।

বিচার ও শাস্তি: ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।


এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর, জানুন ফলাফল জানার উপায়

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৩ ১৭:১১:৪২
এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর, জানুন ফলাফল জানার উপায়
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল আগামী ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) প্রকাশ করা হবে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক সাবকমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার।

একযোগে ফল প্রকাশ

অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, ফল প্রকাশের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ১৬ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ—এই ৯টি শিক্ষা বোর্ডসহ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল সেদিন সকাল ১০টায় একযোগে প্রকাশ করা হবে।

যেভাবে জানা যাবে ফলাফল

পরীক্ষার্থীরা বেশ কয়েকটি উপায়ে তাদের ফলাফল জানতে পারবে:

ওয়েবসাইট: পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে, শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট ঠিকানা www.educationboardresults.gov.bd এবং সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করতে পারবে।

প্রতিষ্ঠানের জন্য: সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের Result কর্নারে ক্লিক করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের EIIN-এর মাধ্যমে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবে।

এসএমএস: এছাড়া নির্ধারিত শর্ট কোড 16222-এ SMS করে ফল পাওয়া যাবে।


শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১০ ২৩:৪৩:৪৮
শিক্ষা ও সাহিত্যের আলোকবর্তিকা নিভে গেল—চলে গেলেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বাংলাদেশের সাহিত্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির আকাশে এক বিশাল নক্ষত্র নিভে গেল। দেশের প্রজ্ঞা ও মানবিকতার প্রতীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। রেখে গেছেন স্ত্রী, এক পুত্র, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য ছাত্রছাত্রী এবং অগণিত ভক্ত-গুণগ্রাহী।

তাঁর প্রয়াণের সঙ্গে যেন শেষ হলো এক প্রজ্ঞাপূর্ণ যুগ—যেখানে জ্ঞানের সঙ্গে মানবিকতার, সাহিত্যের সঙ্গে যুক্তির, শিল্পের সঙ্গে সমাজবোধের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জীবন ও কর্মে।

৩ অক্টোবর সকালটা ছিল তাঁর জীবনের শেষ কর্মমুখর সকাল। ধানমন্ডি থেকে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) যাচ্ছিলেন নিয়মিত ক্লাস নিতে। হঠাৎ গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চালক তাঁকে দ্রুত পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামসহ তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা সেখানে ছুটে যান এবং তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। চিকিৎসকেরা জানান—তিনি ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’-এর শিকার হয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে তাঁর হৃদযন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হয়।

তবে শনিবার থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অক্সিজেন লেভেল নেমে যায়, ফুসফুসে পানি জমে, অবশেষে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, পরিবার ও শিক্ষার্থীদের অগণিত প্রার্থনা সত্ত্বেও তিনি আর ফিরে আসেননি। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

তাঁর মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে নেমে আসে গভীর শোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী, প্রকাশক, পাঠক—সবাই যেন একসঙ্গে নির্বাক হয়ে যান।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন,

“তিনি ছিলেন আধুনিক মননসম্পন্ন এক শিক্ষক, যিনি সাহিত্যের পাশাপাশি মানুষকে চিনতে শিখিয়েছেন। তাঁর কথায় ও লেখায় এক অদ্ভুত স্বচ্ছতা ও সত্যের সাহস ছিল।”

ল্যাবএইড হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফখরুল আলম, কায়সার হক, কবি দিলারা হাফিজ, ফরিদ কবির, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, কথাসাহিত্যিক ও চিকিৎসক মোহিত কামাল, এবং আরও অনেকে। তাঁরা বললেন, “মনজুরুল ভাই ছিলেন আমাদের সাহিত্য-শিক্ষা মহলের প্রাণ। তাঁর চলে যাওয়া মানে এক শূন্যতার সূচনা।”

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু বলেন,

“অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর বেঙ্গলের বহু কাজে মনজুরুল ইসলাম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর চলে যাওয়া আমাদের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অপরিমেয় ক্ষতি।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে বারডেমের হিমঘরে নেওয়া হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে তাঁর সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। বেলা ১১টায় মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ জানাবে শ্রদ্ধা। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে—যেখানে ঘুমিয়ে আছেন তাঁরই মতো এই দেশের চিন্তার স্থপতিরা।

জীবনের পথ ও সাহিত্যকীর্তি

১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনের সিংহভাগ কাটিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। অবসরের পরও তিনি একাডেমিয়া ছাড়েননি—ইউল্যাব-এ যোগ দেন নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যের আলোয় গড়ে তুলতে।

তিনি বাংলা সাহিত্যে ‘জাদুবাস্তবতা’র এক নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করেন—যেখানে বাস্তবতার গণ্ডি পেরিয়ে মানবমনের গভীর স্তরগুলো উন্মোচিত হয় কল্পনা ও প্রতীকী বয়ানে। তাঁর ‘প্রেম ও প্রার্থনার গল্প’ বইটি ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল বইয়ের পুরস্কার পায়। ১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। সাহিত্য, অনুবাদ, নন্দনতত্ত্ব ও প্রবন্ধচর্চায় তাঁর কাজ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক নতুন পরিচিতি।

এক শিক্ষক, এক মানবিক আলোকস্তম্ভ

শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ছিলেন শুধু শিক্ষক নন—এক প্রেরণা, এক মেন্টর, যিনি শেখাতেন চিন্তা করতে, প্রশ্ন করতে, সত্যকে ভালোবাসতে। ক্লাসরুমে তাঁর কণ্ঠে সাহিত্য মানে ছিল মানবতার পাঠ, আর জীবনের প্রতিটি ব্যাখ্যা একেকটি গল্প হয়ে ফুটে উঠত তাঁর ব্যাখ্যায়।

তিনি ছিলেন এক মানবিক বুদ্ধিজীবী—যিনি ক্ষমতার সামনে সত্য উচ্চারণে দ্বিধা করতেন না, কিন্তু কারও প্রতি ঘৃণাও পোষণ করতেন না। তাঁর জীবন ছিল এক আলোকিত যাত্রা—যেখানে সাহিত্য, শিক্ষা, সততা ও সৌন্দর্য মিশে ছিল একাকার।

বিদায় এক আলোকিত আত্মাকে

দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি মহল আজ শূন্য হয়ে গেল। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে গেছেন, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া আলোকরেখা এখনো অনুপ্রেরণা হয়ে জ্বলে থাকবে প্রতিটি পাঠকের, প্রতিটি ছাত্রের, প্রতিটি মুক্তমনের হৃদয়ে।

তিনি ছিলেন শিক্ষক, চিন্তক, লেখক—সবচেয়ে বড় কথা, তিনি ছিলেন এক আলোকিত মানুষ।

পাঠকের মতামত: