বিশেষ প্রতিবেদন
ভারতের পণ্যে উচ্চ শুল্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য সুবর্ণ সুযোগ নাকি সীমিত সম্ভাবনা?

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পাল্টা শুল্ক নীতির কারণে ভারতীয় পণ্যে উচ্চ কর আরোপ হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি প্রতিযোগিতার মানচিত্র বদলে যেতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, যেটি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিন পোশাক রপ্তানিকারকের মধ্যে রয়েছে, এই পরিবর্তনের ফলে উল্লেখযোগ্য সুযোগ পেতে পারে। তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করছেন, এই সুযোগ স্থায়ী নাও হতে পারে যদি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা দ্রুত গড়ে তোলা না হয়।
দুই সপ্তাহ আগেও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নীতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বাজার-অংশ দখলের পরিকল্পনা করছিল ভারতের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ধারণা ছিল, এই দেশগুলোর পণ্যে বেশি শুল্ক আরোপ হবে, অথচ ভারতীয় পণ্যে তুলনামূলক কম শুল্ক বসবে। কিন্তু ৩১ জুলাইয়ের ঘোষণায় চিত্র পাল্টে যায়। ওইদিন যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ১৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশের পণ্যে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করলেও ভারতীয় পণ্যে শুল্ক ধরা হয় ২৫ শতাংশ। এর মাত্র এক সপ্তাহ পর, রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির ‘শাস্তি’ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ৫০ শতাংশে।
যদিও এই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে ২১ দিন পর, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য পাল্টা শুল্ক ইতোমধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে। ভারতীয় রপ্তানিকারকের জন্য এটি বড় ধাক্কা, আর বাংলাদেশের জন্য এটি সম্ভাবনার জানালা খুলে দিয়েছে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য লাভের খাতসমূহ
শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা কিছু খাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবেন। রপ্তানি সম্ভাবনা বেশি এমন খাতগুলো হলো:
তৈরি পোশাক (RMG) – যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের গড় শুল্ক ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, যেখানে বাংলাদেশের গড় শুল্ক হবে ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে নিট ও ওভেন পোশাকে অর্ডার সরতে পারে।
হোম টেক্সটাইল – ভারত গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ২৯৩ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি করেছে, বাংলাদেশ মাত্র ১৫ কোটি ডলার। উচ্চমূল্যের পণ্যে অর্ডার সরার সম্ভাবনা বেশি।
কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য – উচ্চ শুল্কের কারণে ভারতীয় কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে দাম বাড়বে, যা বাংলাদেশের জন্য সুযোগ তৈরি করবে।
চামড়াজাত পণ্য – ভারতীয় পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি এই খাতে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকারের সুযোগ বাড়াবে।
হিমায়িত মাছ ও চিংড়ি – মূল্য প্রতিযোগিতায় ভারত পিছিয়ে পড়বে, ফলে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়তে পারে।
আসবাব – ভারত যুক্তরাষ্ট্রে ১১৫ কোটি ডলারের আসবাব রপ্তানি করেছে, বাংলাদেশ মাত্র ১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। হাতিলসহ কয়েকটি ব্র্যান্ড সক্ষমতা বাড়ালে বাজার দখলের সুযোগ রয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের সতর্কতা
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির পরিপন্থী। রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইরান থেকে জ্বালানি তেল কিনলে অতিরিক্ত শুল্কের হুমকি বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগজনক, কারণ বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করে। এছাড়া অন্য দেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে রপ্তানি করলে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতি বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে অস্থিতিশীল করেছে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল শুল্কনীতির কারণে বিদেশি ক্রেতারা তড়িঘড়ি ব্যবসা স্থানান্তর করবে এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তাই বাজার পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
সম্ভাব্য কৌশল
সম্ভাব্য বাজার কৌশলগুলোকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। সর্বপ্রথম, দ্রুত সক্ষমতা বৃদ্ধি অপরিহার্য। বিশেষ করে পোশাক, হোম টেক্সটাইল এবং আসবাবপত্র খাতে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের গুণমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। এর মধ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, দক্ষ জনবল প্রশিক্ষণ এবং গুণগত মান যাচাইয়ের আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এছাড়া, সরকারি নীতি সহায়তা রপ্তানি প্রবৃদ্ধির অন্যতম ভিত্তি। কাঁচামাল আমদানিতে বন্ড সুবিধা নিশ্চিত করা, রপ্তানি প্রণোদনার হার বৃদ্ধি, এবং বন্দর ও লজিস্টিক অবকাঠামো উন্নয়ন এই খাতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে কাস্টমস প্রক্রিয়া দ্রুততর করা ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাজার গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন ও বজায় রাখা অপরিহার্য। পাশাপাশি বাজার প্রবণতা ও চাহিদার পরিবর্তন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং শুল্ক নীতির যেকোনো পরিবর্তন দ্রুত শনাক্ত করে তার ভিত্তিতে রপ্তানি কৌশল হালনাগাদ করতে হবে।
বৈচিত্র্যকরণও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। শুধুমাত্র তৈরি পোশাক খাতের ওপর নির্ভর না করে চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হিমায়িত মাছ ও চিংড়ি, এবং হোম ডেকর পণ্যের মতো অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে। এর ফলে একদিকে বাজারের ঝুঁকি কমবে, অন্যদিকে আয় বৃদ্ধির নতুন সুযোগ তৈরি হবে।
সবশেষে, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের সাথে স্থায়ী সরবরাহ সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে শুধু অর্ডারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে না, বরং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। স্থায়ী ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরির জন্য নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি, মানসম্মত পণ্য এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নীতি বজায় রাখা হবে মূল চাবিকাঠি।
ডিএসইতে সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধি, শেষ মুহূর্তে চাঙ্গা ছিল বাজার
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শেষ দিকে ক্রেতাদের ব্যাপক অংশগ্রহণে সূচক এবং লেনদেন উভয়ই বেড়েছে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও, শেষ এক ঘণ্টায় পরিস্থিতি পাল্টে যায় এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বাড়ার মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমার কারণে সূচক এবং লেনদেন উভয়ই কমেছে।
ডিএসই’র চিত্র
লেনদেন শেষে ডিএসইতে মোট ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে ৬০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৮টির।
ভালো কোম্পানি (১০% বা বেশি লভ্যাংশ): ১৬১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, ২৭টির কমেছে।
মাঝারি মানের কোম্পানি (১০% এর কম লভ্যাংশ): ৭১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, ৪টির কমেছে।
জেড গ্রুপ: ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, ২৯টির কমেছে।
মিউচুয়াল ফান্ড: ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে ১৩টির দাম বেড়েছে, ১টির কমেছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুটি সূচক, ডিএসই-৩০ এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচকও যথাক্রমে ১৮ ও ১৩ পয়েন্ট বেড়েছে।
লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। ডিএসইতে মোট ৫৭৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১০৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা বেশি।
লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো
ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ওরিয়ন ইনফিউশন, যার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকার। এরপর রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ (১৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা) এবং সামিট এলায়েন্স পোর্ট (১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা)।
শীর্ষ ১০-এ থাকা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, সোনালী পেপার, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালস, ই-জেনারেশন এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
সিএসই’র চিত্র
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ পয়েন্ট কমেছে। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৪টির দাম বেড়েছে, ৮৩টির কমেছে এবং ১১টির অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় কম
বিআরটিএ ও এনবিআরের নতুন পরিকল্পনা: নিবন্ধনহীন গাড়ি চিহ্নিত করে কর আদায়
দেশের সড়কে বর্তমানে অন্তত আড়াই লাখ নিবন্ধনহীন গাড়ি চলাচল করছে। এতে সরকার প্রতিবছর প্রায় ৬,২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। কিউআর কোড সংবলিত ই-ট্যাক্স টোকেন সংক্রান্ত সম্প্রতি হওয়া একটি সভার কার্যবিবরণী থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত মোট যানবাহন সংখ্যা ৬৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৭৩টি। এতে বাস, মিনিবাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে।
বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, "এখনো আমাদের দেশে দুই থেকে আড়াই লাখ গাড়ির নিবন্ধন নেই। এই গাড়িগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা প্রয়োজন।" তিনি আরও বলেন, ই-ট্যাক্স টোকেন ও আরএফআইডি ট্যাগ ব্যবহার করা গেলে গাড়ির যাবতীয় তথ্য সহজে সংগ্রহ করা যাবে।
কর ফাঁকি ও নতুন উদ্যোগ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল সম্প্রতি ৫ হাজার ৪৮৯টি বিলাসবহুল গাড়ির কর নথি যাচাই করে। এতে দেখা গেছে, ১ হাজার ৩৩৯ জন মালিক তাদের গাড়ির তথ্য লুকিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছেন। এনবিআরের ধারণা, এসব গাড়ি থেকে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, সম্পদের তথ্য কর নথিতে উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এটি না করলে জরিমানা ও ফৌজদারি বিধান প্রযোজ্য। বর্তমান কর কাঠামো অনুযায়ী, ব্যক্তিগত গাড়ির ইঞ্জিন ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক অগ্রিম কর নির্ধারিত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, নিবন্ধনহীন গাড়িগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা এবং ই-ট্যাক্স টোকেন চালু করার প্রক্রিয়া দ্রুত করা হবে। এনবিআরের প্রতিনিধি জানান, এতে কর আদায় বাড়বে এবং নিবন্ধনহীন গাড়ি শনাক্ত করা সহজ হবে। তবে মফস্বলে ট্যাক্স টোকেন জমা দেওয়ার পদ্ধতি সহজ করতে ব্যাংকিং ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকারিতা বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও সভায় আলোচনা হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ: স্বর্ণের দামে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতা
এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৮৮৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকা হয়েছে। দেশের বাজারে এর আগে কখনো এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা হয়নি। এত দিন দেশের বাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬২২ টাকা।
মঙ্গলবার থেকে কার্যকর নতুন দাম
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এই দাম বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিভিন্ন ক্যারেটের নতুন দাম
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণে ১ হাজার ৮৮৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণে ১ হাজার ৭৯৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণে ১ হাজার ৫৪০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণে ১ হাজার ৩১৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৭ টাকা।
রুপার দাম অপরিবর্তিত
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৫৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আজ সোমবার পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়।
স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৬ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৩ হাজার ৩১৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ২ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপা ২ হাজার ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সঞ্চয়পত্রকে ‘লেনদেনযোগ্য’ করার পথে সরকার? আসছে নতুন বাজার
সঞ্চয়পত্র কেনাবেচার আলাদা বাজার তৈরির পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, সঞ্চয়পত্র এখন বাজারের সঙ্গে আংশিক যুক্ত, কিন্তু এটিকে পুরোপুরি লেনদেনযোগ্য করতে হবে। এতে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন এবং সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি হওয়ার পাশাপাশি তারল্যও বাড়বে।
বন্ড ও সুকুক বাজার উন্নয়ন
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ সরকারি বন্ড কিনতে পারছে, এ বিষয়টিও ইতিবাচক। এখন বেসরকারি বন্ডও লেনদেনযোগ্য করতে হবে ও সঠিক কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। এতে রাতারাতি বন্ড মার্কেট দ্বিগুণ হয়ে যাবে এবং বাজার অনেক প্রাণবন্ত হবে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বন্ড ও সুকুক বাজার উন্মোচন: রাজস্ব স্থিতি, অবকাঠামো বাস্তবায়ন ও ইসলামি মানি মার্কেট উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অর্লিন্সের অধ্যাপক এম কবীর হাসান। সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
পেনশন ফান্ড ও বিমা খাতের গুরুত্ব
আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্ড কেনার ক্ষেত্রে সরকারের পেনশন-ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের উৎস হতে পারে। এ ছাড়া করপোরেট পেনশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনেভোলেন্ট ফান্ড—এসবকেও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব। সরকার চাইলে এসব বিষয়ে খুব দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। সে জন্য পেনশন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দরকার। সব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে তহবিল গড়ে তুলছে, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামোর বৈশ্বিক তুলনা
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামো বৈশ্বিক অর্থনীতির তুলনায় আলাদা। এক অর্থে এটি উল্টো। বাংলাদেশে আর্থিক কাঠামো ব্যাংকনির্ভর; কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা মূলত বন্ডনির্ভর। বৈশ্বিকভাবে প্রায় ১৩০ ট্রিলিয়ন বা ১৩০ লাখ কোটি ডলারের বন্ড ইস্যু করা হয়েছে; এটি বৈশ্বিক জিডিপির ১৩০ শতাংশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হলো স্টক মার্কেট; এই বাজারে বিনিয়োগ আছে প্রায় ৯০ ট্রিলিয়ন বা ৯০ লাখ কোটি ডলার। তৃতীয়ত, মানি মার্কেট (ব্যাংক ঋণসহ সবকিছু) মোট ৬০ ট্রিলিয়ন বা ৬০ লাখ কোটি ডলারের, অর্থাৎ এটি বন্ড বাজারের অর্ধেকেরও কম। ফলে আমাদের কাঠামোটি একেবারেই উল্টো। পেনশন বা বিমা খাতের কথা বলছি-ই না, সেগুলো এতই ছোট যে বাংলাদেশে জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ গণনায় ধরার মতোও নয়। এই হলো বাস্তব চিত্র।
সুকুক বাজার ও ভবিষ্যৎ সুপারিশ
সুকুকের বাজার খুবই ছোট উল্লেখ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ হাজার কোটি টাকার ছয়টি সুকুক ইস্যু হয়েছে। অথচ আমাদের অনেক প্রকল্প থেকে আয় হচ্ছে। সেসব সম্পদ সিকিউরিটাইজ করলে দ্রুত সুকুক বাজার বড় করা সম্ভব। যেমন যমুনা বা পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায়ের প্রবাহ ব্যবহার করে নতুন সেতু নির্মাণে বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। একইভাবে মেট্রোরেল, টোল রোড, ফ্লাইওভার—এসব প্রকল্প থেকেও যে আয় হয়, তা সিকিউরিটাইজ করে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব। সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ কার্যকরী বিভাগ দরকার; এর কাজ হবে শুধু এই বিষয়গুলো দেখা। বর্তমানে বাংলাদেশে বিমার বাজার জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ভারতে এটি ৪ শতাংশ—উন্নত দেশে ১২ শতাংশ। ফলে বিমা খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য।
গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। শিগগিরই সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ তা উপস্থাপন করা হবে। সুপারিশগুলোতে বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন খাত—কনভেনশনাল ও সুকুক (ইসলামি বন্ড) দুটোই অন্তর্ভুক্ত আছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত: ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে, তবে কত?
ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের পর সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে কত টাকা বাড়ানো হবে, সেই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
‘আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বেশি’
বৈঠক শেষে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি। বিষয়টি আমরা পর্যালোচনা করছি। তারপর তাদের সঙ্গে আবার বসে ভোজ্যতেলের দাম কত টাকা বাড়ানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব ও পূর্বের দাম
এর আগে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১ হাজার ২০০ ডলার পর্যন্ত হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের ভূমিকা
এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ভোজ্য তেলের দাম যৌক্তিক হারে বৃদ্ধির বিষয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক স্থগিতের ঘোষণা: কী প্রভাব পড়বে রপ্তানিকারকদের ওপর?
চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক ও সেবা খাতে সম্প্রতি ঘোষিত শুল্ক বৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের জোরালো দাবির মুখে এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকার। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ‘কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট ম্যানেজমেন্ট: প্রবলেমস, প্রসপেক্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ ঘোষণা দেন নৌপরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
চট্টগ্রাম বন্দর অডিটোরিয়ামে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত এই কর্মশালায় উপদেষ্টা জানান, এক মাসের স্থগিতাদেশের পর নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। তিনি বলেন, “পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বে-টার্মিনালসহ চলমান প্রকল্পগুলো বন্দরের চার্জ বাড়াতে বাধ্য করেছে। তবে এই সাময়িক স্থগিতাদেশ রপ্তানিকারকদের ওপর চাপ কিছুটা কমাবে।”
ব্যবসায়ীদের দাবি
কর্মশালায় ব্যবসায়ী নেতারা বর্ধিত শুল্ক অন্তত ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখা এবং কিছু চার্জ কমানোর দাবি জানান। তারা বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সরকারের সহায়তা জরুরি। তারা সেবার সংকট নিরসনে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দ্রুত করার জন্য আইন সংস্কারের প্রস্তাব দেন।
নতুন শুল্ক কাঠামোতে বন্দর এবং বেসরকারি কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) সেবার চার্জ গড়ে ৪০-৪৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। রপ্তানিকারকরা অভিযোগ করেন, আইসিডিগুলো সেবার মান বা সক্ষমতা না বাড়িয়েই চার্জ বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাননিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতারও সমালোচনা করেন তারা।
বন্দরের সক্ষমতা ও সংস্কার
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্দরটি নকশা অনুযায়ী ধারণক্ষমতার বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। এটি এখনও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল এবং সীমিত গভীরতার কারণে বৈশ্বিক মানের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কনটেইনার দ্রুত খালাস, কাস্টমস স্বয়ংক্রিয়করণ এবং আগামী পাঁচ বছরের সম্ভাব্য বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি সামলাতে আইন সংস্কারের প্রয়োজন।
এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানান, বন্দরে আটকে থাকা সব নিলামযোগ্য কনটেইনার এই মাসেই দ্রুত নিলাম করা হবে। তিনি আরও জানান, সাবেক এমপিদের ফেলে রাখা ৩০টি গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কর্মশালায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, লজিস্টিকস পারফরম্যান্স, বাণিজ্য ব্যয় এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দক্ষতার দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এখনও বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।
বাড়ছে বাণিজ্য, বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার আজকের হার
বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ছে, তাই মুদ্রা বিনিময়ের পরিমাণও বাড়ছে। আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি টাকার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে প্রাপ্ত বিনিময় হার:
ইউএস ডলার: ১২১ টাকা ৭৪ পয়সা
ইউরোপীয় ইউরো: ১৪৩ টাকা ৮২ পয়সা
ব্রিটিশ পাউন্ড: ১৬৫ টাকা ৯২ পয়সা
অস্ট্রেলিয়ান ডলার: ৮১ টাকা ৩ পয়সা
জাপানি ইয়েন: ৮২ পয়সা
কানাডিয়ান ডলার: ৮৮ টাকা ৩৯ পয়সা
সুইডিশ ক্রোনা: ১৩ টাকা ১০ পয়সা
সিঙ্গাপুর ডলার: ৯৫ টাকা ২৮ পয়সা
চীনা ইউয়ান: ১৭ টাকা ১৪ পয়সা
ভারতীয় রুপি: ১ টাকা ৩৮ পয়সা
শ্রীলঙ্কান রুপি: ২ টাকা ৪৮ পয়সা
গুগল সূত্রে প্রাপ্ত বিনিময় হার:
সিঙ্গাপুর ডলার: ৯৫ টাকা ১৭ পয়সা
মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত: ২৯ টাকা ৪ পয়সা
সৌদি রিয়াল: ৩২ টাকা ৪৯ পয়সা
কুয়েতি দিনার: ৩৯৯ টাকা ২৮ পয়সা
*উল্লেখ্য, যেকোনো সময় মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন হতে পারে।
এক মাস পর আবারও তেলের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারে আবারও সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা প্রতি লিটারে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। আগামী রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে ১ হাজার ২০০ ডলারে পৌঁছেছে। তাদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৮ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, তাই দেশের বাজারে দাম সমন্বয় করা জরুরি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে, ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত এই দাম অনেক বেশি। মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় তাদের প্রস্তাব অস্বাভাবিক। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। এরপর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” সাধারণত ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এই ধরনের প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে থাকে।
উল্লেখ্য, গত ১২ আগস্ট সরকার পাম তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। তবে তখন সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকাই ছিল। এর আগে, এপ্রিল মাসে সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা এবং পাম তেলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, পাম এবং ভুট্টার তেল আমদানিতে এক শতাংশ হারে উৎসে কর বসিয়েছে। ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, এই নতুন করও ভোজ্যতেলের বাজারে প্রভাব ফেলছে।
দেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর: রেমিট্যান্স প্রবাহে আবারও রেকর্ড
চলতি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসীরা ১৭৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৩ কোটি ডলার। সেই তুলনায় এবার উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শুধু গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক দিনেই প্রবাসীরা দেশে ৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
চলতি অর্থবছরের শুরু অর্থাৎ জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ৬৬৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি।
এর আগে গত আগস্টে প্রবাসীরা ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং জুলাই মাসে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট ৩০.৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আয়ের রেকর্ড।
পাঠকের মতামত:
- ‘ভারতের আধিপত্যে আর রাজনীতি চলবে না’: সারজিস আলম
- আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অডিও ক্লিপ শোনানো হলো, ‘মারণাস্ত্র ব্যবহার করো’
- হ্যাকারের কবলে এনবিআর চেয়ারম্যানের হোয়াটসঅ্যাপ, টাকা চেয়ে বার্তা
- ব্যাংককে বিশাল সিঙ্কহোলে তলিয়ে গেল ৩ গাড়ি
- কুড়িগ্রামে বউ-শাশুড়ি মেলা: পারিবারিক সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ
- বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে ককটেল উদ্ধার
- ডিএসইতে সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধি, শেষ মুহূর্তে চাঙ্গা ছিল বাজার
- অনলাইনে ভিডিও দেখে রকেট বানালেন চীনা তরুণ
- আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সম্পত্তি দখল: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে উত্তেজনা
- মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ভোট নিয়ে নতুন আলোচনা, বিএনপিতে বিভাজন
- ‘টাইগার কউন?’: বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আফ্রিদির কটাক্ষ
- লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর নতুন অ্যাকশন-থ্রিলার, মুক্তি পাচ্ছে একই দিনে বাংলাদেশেও
- টঙ্গীর কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন: মারা গেলেন আরেক ফায়ার ফাইটার
- বিসিবি নির্বাচন: আদালতের সিদ্ধান্তে বিলম্ব, নানা বিতর্কে উত্তপ্ত বোর্ড
- ফার্মগেটে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী
- সরকার গঠনে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা কোন দলের? জরিপের ফল কী বলছে?
- ডিএসইতে বুধবারের শেয়ারবাজার লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে বুধবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ‘স্পাইডার-ম্যান’-এর সেটে দুর্ঘটনা, হাসপাতালে টম হল্যান্ড
- নিউইয়র্কে ‘মির্জা ফখরুলকে লাঞ্ছিত করা হয়নি’: রুহুল কবির রিজভী
- ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে’: ড. ইউনূস
- মোস্তাফিজের রেকর্ডের সামনে: ভারতের কোচ কেন এত প্রশংসা করলেন?
- ৮০ শতাংশ ব্যবহারকারী বঞ্চিত, জেনে নিন ফেসবুক মনিটাইজেশন পাওয়ার উপায়
- বিআরটিএ ও এনবিআরের নতুন পরিকল্পনা: নিবন্ধনহীন গাড়ি চিহ্নিত করে কর আদায়
- সাইফের এক ইনিংসই কি ভারতের হিসাব পাল্টে দেবে?
- রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উদ্বেগ: আইএইএ’র প্রতিবেদন কী বলছে?
- গাজামুখী ফ্লোটিলায় ড্রোন হামলার অভিযোগ, আতঙ্কে মানবাধিকারকর্মীরা
- ট্রাম্পের কারণে রাস্তায় আটকে গেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ
- সাও পাওলো গভর্নর থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী? আলোচনায় তার্সিসিও
- ইসলামের সেবায় আজীবন নিবেদিত গ্র্যান্ড মুফতি, গভীর শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
- “উদ্ভাবন হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক”— বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে প্রধান উপদেষ্টা
- দেয়ারওয়ার্ল্ডের স্বীকৃতি: বৈশ্বিক উন্নয়নে ইউনূসের অবদানের প্রশংসা
- সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ান লণ্ডভণ্ড
- জামায়াতের প্রার্থী বাছাই শেষ, ভোটের ময়দানে নতুন চমক?
- ফাইনালের পথে এগোতে আজ ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ
- আখতার হোসেনকে ডিম নিক্ষেপ: গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা মিজানুর জামিন পেলেন
- সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনীতিতে নতুন অক্ষ
- কোথায় হচ্ছে আগামী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন? সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত!
- তারেক রহমানের নির্দেশে: পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে বিএনপি নেতাকর্মীরা
- ডাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ আনলেন তিন ভিপি প্রার্থী
- ঐক্য ধরে রাখতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: বিএনপি নেতার ‘খিচুড়ি কূটনীতি’
- গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
- নিউইয়র্কের জাতিসংঘের মঞ্চে ড. ইউনূস: বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
- গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
- নিউইয়র্কের লাঞ্ছনা: সফরসঙ্গীদের ঘটনায় সরকারের ‘বিশেষ বার্তা’
- বিসিবি নির্বাচনে চমক: খসড়া ভোটার তালিকা ঘিরে চলছে নানা জল্পনা!
- ‘এই সময়’-এর সংবাদে ভুল? মির্জা ফখরুলের নতুন বক্তব্যে দানা বাঁধছে কৌতূহল
- ‘দ্য রেড জুলাই’র প্রতিবাদ: যুক্তরাষ্ট্রে লাঞ্ছনার জবাবে টিএসসিতে এক বিশেষ কর্মসূচি
- ‘দাওয়াত পেলেও যেতাম না’: প্রধান উপদেষ্টার সফর নিয়ে রনির কড়া মন্তব্য
- রেনেসাঁর দর্শন ও দিশা: গ্রিক-রোমান জ্ঞান, মুসলিম দার্শনিকদের ভূমিকা ও আধুনিকতার উন্মেষ
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- আফগানিস্তানে নারী লেখকদের বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বলিউডের গ্ল্যামার থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প: জিনাত আমানের জীবন ও ভালোবাসা
- “অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
- ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- ট্রাম্পের তালিকায় ভারত–পাকিস্তান ‘মাদক পাচারকারী’ রাষ্ট্র
- চরিত্র বদলের খেলায় শুভশ্রী গাঙ্গুলি
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে ওলামা-মাশায়েখদের বিক্ষোভ
- ১৮ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে ১০টি শেয়ারে বড় দরপতন
- মোদি সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ