বিশেষ প্রতিবেদন

চীনের অর্থনৈতিক নীরব বিপ্লব: পশ্চিমা একপক্ষীয় বিশ্বনীতির অবসানের সংকেত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ০১:০২:২০
চীনের অর্থনৈতিক নীরব বিপ্লব: পশ্চিমা একপক্ষীয় বিশ্বনীতির অবসানের সংকেত

যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে শুল্ক আরোপ করে নতুন বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেন, তখন অনেকেই মনে করেছিলেন চীনের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি এত বড় ধাক্কা সামলাতে পারবে না। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে চীন, যা তাদের মোট রপ্তানির প্রায় ১৫ শতাংশ। ফলে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারালে চীনের অর্থনীতি ধসে পড়বে। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটল তা সবাইকে বিস্মিত করল। চীন পশ্চাদপসরণ না করে পাল্টা আঘাত হানে—শুল্কে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বন্ধ করে এবং আমেরিকান কোম্পানিগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করে। বেইজিং স্পষ্ট জানিয়ে দেয়—এটা আগের চীন নয়, এবং এখন আর তারা কারও শর্তে খেলবে না।

এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছে এক দশকব্যাপী এক নীরব বিপ্লব। চীনের নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছিল যে পশ্চিমা বাজার ও পুঁজির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকিপূর্ণ। ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ ছিল সেই পরিবর্তনের কারণ নয়, বরং একটি অনুঘটক যা একটি চলমান কৌশলগত পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করেছে। এই রূপান্তরের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি স্বপ্ন—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা ছাড়াই নিজস্ব অর্থনৈতিক বলয়ের নেতৃত্ব নেওয়া। এটি শুধু আত্মরক্ষার কৌশল নয়; এটি বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুতির নামান্তর।

এই অর্থনৈতিক উত্তরণের পেছনের ইতিহাস বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই পুরোনো চীনের দিকে—যেখানে উৎপাদন ছিল কেন্দ্রীয় ভিত্তি। ১৯৭০-এর দশকে দেং শিয়াওপিংয়ের অর্থনৈতিক উদারীকরণের মাধ্যমে চীন ধীরে ধীরে বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত হয়। বিশাল সস্তা শ্রমশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে। আমাজন থেকে অ্যাপল—সবার পণ্য তৈরি হতো চীনের কারখানায়। এই মডেলেই চীন টানা তিন দশক ধরে ১০ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখে।

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সম্পর্কের অসাম্য প্রকট হয়ে ওঠে। চীনা কোম্পানিগুলো যখন পশ্চিমা বাজারে আগ্রাসীভাবে প্রবেশ করছিল, তখন পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর জন্য চীনের বাজার ছিল সংকীর্ণ ও নিয়ন্ত্রিত। ২০১৮ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। অনেকেই তখন চীনকে ‘অবাধ বাজারের সুযোগ নিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করা এক কর্তৃত্ববাদী শক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করে। ট্রাম্প এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় আসেন এবং ক্ষমতায় এসেই শত শত বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেন। শুধু তাই নয়, হুয়াওয়ের মতো কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করে এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো প্রযুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

তবে চীন এ যুদ্ধে হেরে যায়নি। বরং তারা নতুন এক পথ বেছে নেয়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং “ডুয়াল সার্কুলেশন” বা দ্বৈত প্রবাহনীতির কথা ঘোষণা করেন। এই কৌশলের মূল লক্ষ্য হলো দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও উদ্ভাবনশীলতা বৃদ্ধি করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা এবং সমান্তরালভাবে বিশ্বের অন্যান্য অংশে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা। দুই স্তরের এই কৌশলে একদিকে রয়েছে ‘আভ্যন্তরীণ প্রবাহ’—যা স্থানীয় চাহিদা, স্থানীয় প্রযুক্তি ও চীনা ভোক্তাকে কেন্দ্র করে; অন্যদিকে রয়েছে ‘বাহ্যিক প্রবাহ’—যা মার্কিন বাজারের বাইরে নতুন নতুন অংশীদার গড়ে তুলতে চায়, বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে।

এই কৌশল বাস্তবায়নে চীন অভ্যন্তরীণভাবে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। অনেকেই চীনের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির কথা বলেন, কিন্তু ২০২৪ সালে দেশটির মোট জিডিপির প্রায় ৪৫ শতাংশ এসেছে দেশীয় ভোগব্যয় থেকে, যা রপ্তানির দ্বিগুণ। BYD, Huawei এবং TikTok-এর মতো কোম্পানিগুলো এখন চীনের গর্ব। দেশীয় বাজারে তৈরি গাড়ি, ফোন, বিলাসপণ্য—সবই চীনারা নিজেরাই ব্যবহার করছে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো দুর্বল হওয়ায় চীনের জনগণের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা প্রবল, যা ভোগব্যয় বৃদ্ধির পথে একটি বড় বাধা।

একই সঙ্গে চীনের আবাসন খাতও সংকটে। ২০১৯ সালের পর থেকে বাড়ির মূল্য ক্রমাগত কমছে। জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমছে এবং প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে—যা ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে চাপ বাড়াবে।

তবে চীন এসব সংকটের মোকাবিলা করছে আরেকটি কৌশলগত পথে—বৃহৎ বিনিয়োগের মাধ্যমে। ২০১৮ সাল থেকে চীন গবেষণা ও উন্নয়নে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তাদের লক্ষ্য হলো: আধুনিক প্রযুক্তি যেমন সেমিকন্ডাক্টর, এআই, ইলেকট্রিক যানবাহন এবং সবুজ জ্বালানি উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়া। যুক্তরাষ্ট্র যখন সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখন অনেকেই মনে করেছিলেন চীনের প্রযুক্তি খাত ভেঙে পড়বে। কিন্তু ২০২৩ সালে হুয়াওয়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ৭-ন্যানোমিটার চিপ উন্মোচন করে সবাইকে চমকে দেয়।

এই প্রযুক্তি বিপ্লবের পাশাপাশি চীনের অবকাঠামো উন্নয়নও বিশ্বে নজিরবিহীন। বিশ্বে যত কিলোমিটার হাই-স্পিড রেললাইন আছে, তার চেয়েও বেশি রয়েছে এককভাবে চীনে—৪০,০০০ কিলোমিটার! এর সঙ্গে রয়েছে বন্দর, মহাসড়ক, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ডিজিটাল নেটওয়ার্ক—সব মিলিয়ে এক বিশাল অর্থনৈতিক মেশিন। অনেকে বলেন চীন অনেক বেশি উৎপাদন করছে—প্রয়োজনের চেয়ে বেশি স্টিল, বেশি ইভি, বেশি সৌর প্যানেল। তবে চীন একে কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। কম দামে বেশি উৎপাদন করে বিশ্ববাজারে প্রবেশ করে তারা শুধু পণ্য বিক্রি করছে না, বিশ্ব অর্থনীতির নাভিমূলে নিজেদের স্থানও পাকাপোক্ত করছে।

বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও চীনের কৌশল একই রকম দূরদর্শী। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিকল্প হিসেবে চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) প্রকল্প শুরু করে ২০১৩ সালে। এর মাধ্যমে তারা এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে রেললাইন, বন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে—প্রায় ৭৫ শতাংশ বৈশ্বিক জনগোষ্ঠীকে ছুঁয়ে যাচ্ছে এই প্রকল্প। বিনিময়ে চীন পাচ্ছে নতুন বাজার, কাঁচামাল সরবরাহ, এবং কূটনৈতিক বন্ধুত্ব। এখন চীন শুধু ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গেই বড় বাণিজ্য করছে না, বরং অনেক দেশেই তারাই এখন প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার।

তবে এই অগ্রগতির পেছনে অর্থনৈতিক ব্যয়ও রয়েছে। স্থানীয় সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে চীনের ঋণ-জিডিপি অনুপাত ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের ফলাফল অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে—ভুতুড়ে শহর, ফাঁকা রেললাইন বা অলস কারখানার মতো উদাহরণ এখন আর বিরল নয়।

তা সত্ত্বেও, বিশ্বে যে শক্তির ভারসাম্য ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই। চীন এখন আর শুধু বিশ্বব্যাপী উৎপাদন কেন্দ্র নয়, বরং এক নতুন অর্থনৈতিক বলয়ের নেতা হওয়ার পথে। এটি প্রযুক্তি, অবকাঠামো, কূটনীতি, এবং বিপুল জনশক্তিকে কেন্দ্র করে নতুন এক যুগের সূচনা করেছে—যেখানে মার্কিন নেতৃত্ব আর একচ্ছত্র নয়।

অতীতের চীন যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা পূরণের জন্য উৎপাদন করত। আজকের চীন নিজের প্রয়োজন মেটাতে উৎপাদন করে, নিজের বাজার তৈরি করে এবং নিজের প্রভাব বিস্তার করে। এটি শুধু একটি বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, বরং এটি একটি নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আদর্শের জন্ম। প্রশ্ন এখন আর এটি নয় যে, “চীন টিকে থাকবে কিনা।” বরং প্রশ্ন হলো, “পশ্চিমা বিশ্ব কীভাবে মানিয়ে নেবে এমন একটি ভবিষ্যৎ যেখানে চীন আর কারও নিয়ম মেনে খেলতে রাজি নয়?”


গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:৩৪:৪১
গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘গণহত্যা ঠেকাতে’ দখলদার ইসরায়েলের ওপর পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্পেন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকার এ নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়ে ডিক্রি জারি করেছে।

নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত

স্প্যানিশ অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ার্পো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইসরায়েলে স্পেন কোনো সামরিক সরঞ্জাম, দ্বৈত-ব্যবহারের সামরিক পণ্য এবং প্রযুক্তি পাঠাবে না। এছাড়া স্পেনও এ ধরনের কোনো পণ্য বা প্রযুক্তি আমদানি করবে না।”

নিষেধাজ্ঞার আওতায় সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন বিমানের জ্বালানির অনুরোধও আটকে দিয়েছে স্পেন। সঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্য আমদানি এবং সেগুলোর বিজ্ঞাপনও স্পেনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

স্প্যানিশ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র তৈরির ক্ষেত্রে স্পেনের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বড় পদক্ষেপ।”

আইনি ভিত্তি ও হতাহতের সংখ্যা

২০২৩ সালে গাজায় দখলদার ইসরায়েল বর্বরতা শুরুর পর স্পেন সরকার ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকায় স্পেন থেকে ইসরায়েলে সামরিক কাজে ব্যবহৃত পণ্য গেছে। এতদিন যে নিষেধাজ্ঞাটি ছিল আজকের ডিক্রির মাধ্যমে সেটি ‘আইনি ভিত্তি’ পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকে থাকায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ধারণার চেয়ে বেশি বলে আশঙ্কা করা হয়।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েল তাদের অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যহত রাখায় যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ ১০টির বেশি দেশ দুইদিনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

সূত্র: এএফপি


গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:২৩:০৫
গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিচ্ছেন। ছবি : রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হামাসের জন্য অনেক বড় পুরস্কার হবে।’ তিনি গাজায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে আটক জীবিত বা মৃত জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি’র আহ্বান

ট্রাম্প গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘যারা শান্তির পক্ষে ছিলেন তাদের জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘যেন অব্যাহত সংঘাতকে উৎসাহিত করার জন্য, এই সংস্থার কিছু সদস্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে। হামাস সন্ত্রাসীদের জন্য তাদের নৃশংসতার জন্য এই পুরস্কার অনেক বড় হবে।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি নিয়ে বিতর্ক

জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এখন নিউইয়র্কে। এর আগে জাতিসংঘে ভাষণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

সম্প্রতি অনেক দেশই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করতে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং আরো কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আছে।


গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৯:২২:১৬
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনা: মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী গাজার পরিকল্পনা নিয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা হবে তার।

ট্রাম্পের বৈঠকের এজেন্ডা

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা হবে। দেশগুলো হলো- সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তান।

সংবাদমাধ্যম এক্সিওস এবং চ্যানেল-১২-কে আরব ও ইসরায়েলি কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে- ভবিষ্যতে গাজা থেকে কীভাবে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করা হবে, গাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মুসলিম নেতাদের সেনা পাঠানো নিয়ে তার চাওয়া এবং কিভাবে গাজা পুনর্গঠন এবং এর অর্থ আসবে সেগুলো নিয়ে ট্রাম্প আলোচনা করতে পারেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তো গতকাল সোমবার ফ্রান্স ও সৌদির আয়োজিত সম্মেলনে বলেছিলেন, গাজায় তার দেশ শান্তিরক্ষী পাঠাতে প্রস্তুত আছে।

ফিলিস্তিন অথরিটির ভূমিকা ও হামাসের বর্জন

ট্রাম্প যে পরিকল্পনা নিয়ে মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এতে ফিলিস্তিন অথরিটি (পিএ)-কে কিছু দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু গাজার বর্তমান শাসক হামাসকে যুদ্ধ পরবর্তী গাজায় সরকার পরিচালনার কোনো অংশেই রাখা হয়নি।

সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, এ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে অবহিত করা হয়েছে। যদিও ইসরায়েল আগে জানিয়েছিল ফিলিস্তিন অথরিটিকেও গাজার কোনো দায়িত্বে তারা চায় না।

সূত্র: এক্সিওস, চ্যানেল-১২


কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিদেশে ১৩ বছরের কিশোর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৬:৫০:৪৬
কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিদেশে ১৩ বছরের কিশোর
ছবি: সংগৃহীত

কৌতূহলবশত বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে ঢুকে বিপদে পড়েছে ১৩ বছর বয়সী এক আফগান কিশোর। বিমানটি চলা শুরু করলেও সে আর বেরোতে পারেনি। এভাবে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে ভারতের দিল্লিতে পৌঁছায় সে। দিল্লির কর্মকর্তারা, ল্যান্ডিং গিয়ারে কিশোরকে পেয়ে হতবাক হয়ে পড়েন। তার এমন যাত্রা এবং বেঁচে থাকা নিয়ে তাজ্জব বনে যান তারা।

কাবুল থেকে দিল্লিতে বিপজ্জনক যাত্রা

সোমবার ভারতের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ১৩ বছর বয়সী এক আফগান কিশোরের কৌতূহল তাকে আফগানিস্তান থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসে। সে কোনোভাবে কাবুল থেকে উড্ডয়নকারী একটি বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার বগিতে ঢুকতে সক্ষম হয় এবং আর বেরোতে পারেনি। খবর এনডিটিভির।

রোববার বেলা ১১টার দিকে কেএএম এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট নম্বর আরকিউ-৪৪০১) বিমানটি ২ ঘণ্টা যাত্রার পর ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক (আইজিআই) বিমানবন্দরে পৌঁছালে এই ঘটনা ধরা পড়ে। সূত্র জানিয়েছে, রোববারই একই ফ্লাইটে কিশোরটিকে আফগানিস্তানে ফিরিয়ে আনা হয়।

আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ

বিমান কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে খবর দেয়, বিমানটি অবতরণের পর ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে সেখানে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা ওই কিশোরকে বিমান সংস্থার কর্মীরা আটক করে কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীদের হাতে তুলে দেয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালে নিয়ে আসে কর্মীরা।

সে কর্মকর্তাদের জানায়, কাবুল বিমানবন্দরে লুকিয়ে কোনোভাবে বিমানের পেছনের কেন্দ্রীয় ল্যান্ডিং গিয়ার বগিতে ঢুকতে সক্ষম হয় সে। কৌতূহলবশত এই কাজ করেছে বলে সে দাবি করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর, আফগান ছেলেটিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছেড়ে যাওয়া একই ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়।

কেএএম এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ল্যান্ডিং গিয়ার কম্পার্টমেন্টের নিরাপত্তা পরীক্ষা করেন এবং একটি ছোট লাল রঙের স্পিকার পান। সম্ভবত এটি ওই কিশোরের ছিল। বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিদর্শন এবং নাশকতাবিরোধী পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিমানটিকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে।


সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ আর নেই

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৬:৩৭:০১
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ আর নেই
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান বলে সৌদি রাজকীয় আদালতের বরাতে আল আরাবিয়া জানিয়েছে।

বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্সের সমবেদনা

সৌদি বাদশাহ সালমান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গ্র্যান্ড মুফতির পরিবার, সৌদি জনগণ এবং মুসলিম বিশ্বের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে তারা বলেন, “গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খের ইন্তেকালে সৌদি আরব এবং মুসলিম বিশ্ব একজন বিশিষ্ট পণ্ডিতকে হারালো যিনি ইসলাম এবং মুসলমানদের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।”

জানাজার নামাজ

জানা যায়, রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ মসজিদে আজ ʿআসর নামাজের পর তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিসহ দেশের সব মসজিদে তার গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এ মর্মে বাদশাহ নির্দেশও জারি করেছেন।

শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আলে শায়খ ১৯৮১ সাল থেকে টানা ৩৫ বছর হজের খুতবা দিয়েছেন। ২০১৬ সালে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নেন।


জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বনেতারা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৪:০৬:১৯
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বনেতারা
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে সমর্থন জানাতে সোমবার নিউইয়র্কে কয়েক ডজন বিশ্বনেতা একত্রিত হন। গাজা যুদ্ধের প্রায় দুই বছর পর এটি একটি উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যা ইসরায়েল এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ফ্রান্সের স্বীকৃতি ও ম্যাক্রোঁর বার্তা

বিশ্বনেতাদের সমাবেশের মধ্যে ফ্রান্স ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে এই ঘোষণা দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই শান্তির পথ প্রশস্ত করতে হবে” এবং “ক্ষমতার মধ্যে সবকিছু করতে হবে যাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে।”

ম্যাক্রোঁ একটি নবায়নকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাঠামোর রূপরেখা তুলে ধরেন। এর অধীনে ফ্রান্স সংস্কার, যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার জন্য একটি দূতাবাস খুলবে।

অন্যান্য দেশের সমর্থন ও ইসরায়েলের বিরোধিতা

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়া, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও জানান, সাম্প্রতিক স্বীকৃতির পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার বামপন্থি সরকার ২০২৪ সালে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আগে লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, বেলজিয়াম ও মোনাকোসহ অন্যান্য দেশও ১৯৩ জাতিসংঘ সদস্যের তিন-চতুর্থাংশের বেশি দেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে, যারা ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

অপরদিকে, ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থি সরকার ঘোষণা দিয়েছে যে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকবে না। তেল আবিব বলেছে, এই ধরনের পদক্ষেপ সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাকে দুর্বল করবে।

গাজা যুদ্ধ, ইসরায়েলের নিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের বয়কট

গাজায় সামরিক অভিযানের কারণে ইসরায়েল বিশ্বব্যাপী নিন্দার মুখে পড়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬৫,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েল গাজা সিটিতে দীর্ঘ স্থল আক্রমণ শুরু করেছে, যেখানে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা খুবই কম।

সোমবারের বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বয়কট করেছে। জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশে ফিরে আসার পর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার এই পদক্ষেপ আরও জটিলতা সৃষ্টি করবে।


হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১১:০৯:০৭
হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধরত স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও তার মিত্রদের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক সম্মেলনে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান।

‘এক আইনে চলবে রাষ্ট্র’

আব্বাস বলেন, “হামাস এবং তার মিত্রদের অবশ্যই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। আমরা চাই একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র— যেখানে সাধারণ নাগরিকদের কাছে কোনো অস্ত্র থাকবে না, রাষ্ট্র চলবে এক আইনের অধীনে এবং থাকবে একটি বৈধ নিরাপত্তা বাহিনী।”

তিনি আরও জানান, “গাজায় যুদ্ধ শেষ হলে তিন মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। সেই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হবে প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচন আয়োজন করা। শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না। হামাসকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।”

যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা

সম্মেলনে আব্বাস যুদ্ধবিরতির তাগিদ দেন এবং বলেন, “আমাদের গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে হবে, জিম্মিদের মুক্ত করতে হবে।”

তিনি মিশর, কাতার, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যস্থতা ও ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনার বিরোধিতার প্রশংসা করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন আব্বাসের ভিসা বাতিল করায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিউইয়র্কে সরাসরি যোগ দিতে পারেননি তিনি। তাই অধিবেশনে ভাষণ দেন ভিডিও বার্তায়।


‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২১:৪৭:১১
‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মুসাভি। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের শীর্ষ জেনারেল শত্রুদের যে কোনো হুমকির ‘সময়োপযোগী এবং সিদ্ধান্তমূলক’ জবাব দেওয়ার জন্য ইরানের পূর্ণ প্রস্তুতি নিশ্চিত করেছেন। আইআরএনএ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে এক বার্তায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মুসাভি জোর দিয়ে বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী তাদের ক্ষমতা এবং কৌশলগত উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে, সময়োপযোগী ও সিদ্ধান্তমূলক প্রতিক্রিয়া প্রদানের জন্য প্রস্তুত, যা শত্রুদের তাদের কর্মের জন্য অনুতপ্ত করবে।”

ইরান-ইরাক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও আত্মনির্ভরশীলতা

তিনি দীর্ঘ আট বছরের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়টিকে ‘বিশ্বব্যাপী অহংকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং স্থিতিস্থাপকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়’ হিসাবে বর্ণনা করেন। মুসাভি উল্লেখ করেন, এই অভিজ্ঞতা ইরানের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা ও জাতীয় ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এটি ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে প্রতিরক্ষামূলক স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং উন্নত প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে নিয়েছে।

ইসরায়েলের সংঘাত ও হাইব্রিড যুদ্ধ মোকাবেলার প্রস্তুতি

তিনি সাম্প্রতিক সংঘাত, বিশেষ করে ইসরায়েলি সরকারের আরোপিত ১২ দিনের যুদ্ধকে ‘জাতীয় শক্তি প্রদর্শনের জন্য হুমকিকে সুযোগে রূপান্তরিত করার ইরানের ক্ষমতার আরও প্রমাণ’ বলে বর্ণনা করেন। শীর্ষ কমান্ডার ব্যাপক প্রতিরক্ষা, উন্নত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং হাইব্রিড যুদ্ধ, বিশেষ করে ‘জ্ঞানীয় যুদ্ধ’ মোকাবেলার প্রস্তুতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

কমান্ডারের মতে, ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার নেতৃত্বে ইরানের সামরিক বাহিনী প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে অঞ্চল ও বাইরেও বর্ধিত নিরাপত্তার সুযোগে রূপান্তর করতে প্রস্তুত।


অমানবিক! পাকিস্তানে নিজেদের গ্রামেই বিমানবাহিনীর হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২১:২৬:৪৮
অমানবিক! পাকিস্তানে নিজেদের গ্রামেই বিমানবাহিনীর হামলা
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে খাইবার জেলার তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে হামলা চালায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি গ্রামে বিমানবাহিনীর অভিযানে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।

টিটিপি আস্তানায় হামলা, নিহত বেসামরিক

জানা গেছে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) আস্তানা লক্ষ্য করে খাইবার জেলার তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে আটটি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছে, তবে তাদের অবস্থা সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, শিশুদের মরদেহসহ আরও অনেক মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকার আশঙ্কায় উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি চালাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।

অতীতেও বেসামরিক নিহতের ঘটনা ও মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ

খাইবার পাখতুনখাওয়ায় অতীতেও বহু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে ও সেখানে বহু বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরের জুনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বারবার ড্রোন হামলা পাকিস্তানে বেসামরিক জীবনকে ভয়াবহভাবে অবজ্ঞা করার ইঙ্গিত দেয়।

খাইবার পাখতুনখাওয়া পুলিশের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সেখানে ৬০৫টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে। এতে অন্তত ১৩৮ জন বেসামরিক ও ৭৯ জন পাকিস্তানি পুলিশ নিহত হয়েছেন। শুধু আগস্ট মাসেই এমন ১২৯টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ছয়জন পাকিস্তানি সেনা ও আধা সামরিক ফেডারেল কনস্টাবুলারি সদস্যের হত্যাকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত।

এ ঘটনার পর পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) আজ সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, খাইবার পাখতুনখাওয়ার তিরাহ এলাকায় ‘আকাশপথে বোমা হামলায়’ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবরে তারা গভীরভাবে মর্মাহত। এইচআরসিপি এ বিষয়ে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেনি।

পাঠকের মতামত: