রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ০৭:১১:০০
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আলোচনার পর অবশেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার একটি কাঠামো গড়ে উঠেছে। তবে এই কাঠামোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সংস্কারের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়নের সময়সীমা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে অবস্থানগত বিরোধ প্রকট হয়ে উঠেছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত বৈঠকে এ দ্বিধাবিভক্ত অবস্থান স্পষ্টভাবে উঠে আসে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। তিনি জানান, বৃহস্পতিবারের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হবে। সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বসহ মোট ১৪টি বিষয়ে ইতোমধ্যে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে, এবং বাকিগুলোর বিষয়ে আজকের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বিএনপির অবস্থান: দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নই গ্রহণযোগ্য

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কমিশনের খসড়া সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংসদ গঠনের পর দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণই বাস্তবসম্মত পন্থা। তিনি এই সনদকে একটি ঐতিহাসিক ‘সামাজিক চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এতে থাকা অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি ও সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৮২৬টি সুপারিশের মধ্যে ৬৫৯টিতে সম্মতি, ৫১টিতে ভিন্নমত এবং ১১৬টিতে দ্বিমত জানানো হয়েছে, যা প্রক্রিয়ার প্রতি দলটির আন্তরিকতারই প্রমাণ বলে দাবি করেন তিনি।

জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান: নির্বাচনপূর্ব আইনি ভিত্তি অপরিহার্য

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন একযোগে দাবি করেন, যদি সংস্কার প্রস্তাবগুলো আইনগত ভিত্তি না পায়, তবে তা বাস্তবায়নের কোনও নিশ্চয়তা নেই। জামায়াতের মতে, প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর বাস্তবায়নযোগ্যতা নিশ্চিত না হলে জনগণের কাছে এর কোনও গুরুত্ব থাকবে না। তারা সংশয় প্রকাশ করে বলেন, সনদে দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও সরকারের মেয়াদ বা কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা স্পষ্ট নয়। এর ফলে ভবিষ্যৎ সরকার এ দায়িত্ব পালন করবে কিনা, তা অনিশ্চিত থেকে যাচ্ছে।

ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুবার এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে, যেখানে আইনি কাঠামোর অভাবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এবারও যদি আইনি স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে এই উদ্যোগও জনগণের দৃষ্টিতে প্রতীকী থেকে যাবে। জামায়াত আইনজ্ঞদের নিয়ে একটি আলাদা সভার প্রস্তাব দেয়, যেখানে সংস্কারের আইনি কাঠামো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

এনসিপির আখতার হোসেন আরও কঠোর অবস্থান জানান দিয়ে বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় ফ্যাসিবাদবিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এনসিপি দুই বছরের বাস্তবায়ন প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করছে। কারণ এতে ভবিষ্যৎ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করতে হয়, যা রাজনৈতিক বাস্তবতায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

আলোচনার পরিপ্রেক্ষিত ও ভবিষ্যৎ প্রক্রিয়া

বুধবারের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, সংসদের উচ্চকক্ষের গঠন, ইলেকটোরাল কলেজ, সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, ন্যায়পাল নিয়োগ, নাগরিক অধিকার সম্প্রসারণসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হলেও, সব বিষয়ের ওপর ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি ছাড়াও আলোচনায় আরও ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়, যাদের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি উল্লেখযোগ্য।

বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।

-রাফসান


বিমানবন্দর থেকে গুলশান: তারেককে বরণ করতে বিশাল শোডাউনের ছক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১০:৫৮:০৬
বিমানবন্দর থেকে গুলশান: তারেককে বরণ করতে বিশাল শোডাউনের ছক
ফিরেই ‘মাঠে’ নামবেন তারেক রহমান

দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় পা রাখবেন—এমন খবরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতাকে বরণ করে নিতে রাজধানীতে চলছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাজপথ দখলে রাখার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে গঠিত হচ্ছে একাধিক বিশেষ অভ্যর্থনা কমিটি।

তারেক রহমানের বসবাসের জন্য গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই বাড়ির দলিল সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে দেশে ফেরার পর শুরুতে তিনি মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ‘ফিরোজা’ বাসভবনে থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।

বাসভবনের পাশাপাশি তারেক রহমানের দাপ্তরিক কাজের জন্য গুলশান ও নয়াপল্টনের কার্যালয়ে ব্যাপক সংস্কারকাজ চলছে। গুলশানে চেয়ারপারসনের কক্ষের পাশেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য তৈরি হচ্ছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন নতুন চেম্বার।

সেখানে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, ল্যাপটপ এবং বৈঠকের জন্য লাউঞ্জের ব্যবস্থা থাকছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দোতলায়ও তার জন্য একটি সাদামাটা কিন্তু কর্মমুখী কক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেন তিনি তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারেন।

দেশে ফিরেই নির্বাচনী প্রচারণায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারেক রহমান। গত সোমবার বিজয় দিবসের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে গ্রামে-গঞ্জে ও রাজপথে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গেই মিছিলে থাকবেন।

নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে ১০/সি বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এখান থেকেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কৌশল ও প্রচারণামূলক কাজ মনিটরিং করা হবে। সেখানে গবেষণা সেল ও ব্রিফিং রুম চালু করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর বিমানবন্দর এলাকায় লাখো নেতাকর্মী সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


বিজয় দিবসে বড় ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১০:২৮:০৬
বিজয় দিবসে বড় ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে চলতি মাসের শেষ দিকে দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে।

মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। বক্তব্যে তারেক রহমান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও গৌরবের দিন। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন যে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে এখানকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সম্পর্ক গভীরভাবে গড়ে উঠেছে। তবে আসন্ন ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তারেক রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, সামনে যে সময় আসছে তা সহজ হবে না এবং নানা ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলাই হবে সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে বিএনপির রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।

-রাফসান


এয়ারপোর্টে আসবেন না: লন্ডন ছাড়ার আগে তারেক রহমানের বার্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ০৮:৪৭:৩৭
এয়ারপোর্টে আসবেন না: লন্ডন ছাড়ার আগে তারেক রহমানের বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে আয়োজিত বিজয় দিবসের এক বিশাল সমাবেশে নিজের দেশে ফেরার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করে জানিয়েছেন যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ইতি টেনে বাংলাদেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এই সভায় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে দেশে ফেরার দিন তাকে বিদায় জানাতে যেন কেউ লন্ডন বিমানবন্দরে ভিড় না করেন। তারেক রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে বিমানবন্দরে অতিরিক্ত জনসমাগম অপ্রীতিকর হট্টগোল সৃষ্টি করতে পারে এবং বিদেশিরা যখন দেখবে যে ভিড় করা সবাই বাংলাদেশি তখন এতে বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিএনপি নেতা কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং বলেন যে এই দীর্ঘ সময়ে প্রবাসে বহু মানুষের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে এবং তিনি তাদের সঙ্গে নিজের অনেক সুখ-দুঃখ ও কষ্ট ভাগ করে নিয়েছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন যে সবার সঙ্গে তার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিদায়বেলায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে যারা তার এই অনুরোধ রক্ষা করে বিমানবন্দরে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন তিনি ধরে নেবেন তারাই প্রকৃত অর্থে দল ও দেশের সম্মানের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করেছেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তারেক রহমান নিজের এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য উপস্থিত সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন এবং ২৫ ডিসেম্বর তার এই প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:৫৫:৫৪
বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফেরার চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবসের দিনে লন্ডনে নিজের শেষ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিদায় ও দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় লন্ডনের সিটি প্যাভিলিয়নে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। লন্ডনের স্থানীয় বিএনপি নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে সময়ের স্বল্পতার কারণে কমিউনিটি ও সুধীজনদের সঙ্গে আলাদা কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি তাই আজকের এই সমাবেশটিই কার্যত তারেক রহমানের আনুষ্ঠানিক বিদায়ী অনুষ্ঠান হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু জানিয়েছেন যে প্রিয় নেতার দেশে ফেরার আগে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্ভাব্য শেষ জনসভায় অংশ নেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং অনুষ্ঠানটি সফল করতে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আজকের এই হাইভোল্টেজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক এবং সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। দলীয় সূত্রমতে জানা গেছে আগামী ২৪ ডিসেম্বর তারেক রহমান যখন লন্ডনের কিংস্টনের বাসভবন থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন তখন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজারো নেতাকর্মী তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন। উল্লেখ্য ২০০৭ সালের এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর কারাবরণ এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর থেকে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন এবং আজকের এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘ লন্ডন অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।


তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:২৭:২২
তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। তারেক রহমানের ঢাকায় বসবাসের জন্য গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে যা মূলত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবং সম্প্রতি গণপূর্ত উপদেষ্টা ও রাজউক চেয়ারম্যান এই বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তারেক রহমানের নতুন এই বাসভবনটি খালেদা জিয়ার বর্তমান বাসভবন ‘ফিরোজা’র ঠিক পাশেই অবস্থিত এবং সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে নিরাপত্তার জন্য বাসার সামনে ছাউনি বসানো হয়েছে এবং সড়কজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

তারেক রহমানের দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলাদা চেম্বার প্রস্তুত করার পাশাপাশি গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি বাড়িটি নতুন অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে যেখান থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। চারতলা বিশিষ্ট এই নতুন ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দোতলায় ব্রিফিং রুম এবং অন্যান্য তলায় গবেষণা সেলসহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য বসার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন এবং জানান যে এই কার্যালয়টি মূলত নির্বাচনী কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাবেন। এই প্রস্তুতি সফল করতে গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে অভ্যর্থনার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে তারা বহু বছর ধরে এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই দেশে হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং একটি আধুনিক ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।


৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১১:৩০:৩৩
৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসের দিনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এক বিস্ফোরক অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ একটি ভয়ংকর মিশন হাতে নিয়েছে যার অংশ হিসেবে তারা প্রায় ৫০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে। মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দাবি করেন যে এই হত্যা মিশনের শুরুটা হয়েছে বিপ্লবী যোদ্ধা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর ওসমান হাদির ওপর হামলার মধ্য দিয়ে যাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই মাথায় গুলি চালানো হয়েছিল। হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ঘোষণার সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন যে আসামিদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি প্রমাণ করে গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশ র‍্যাব ও যৌথ বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন যে এর আগে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণা করা হলেও এখন সময় এসেছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ২’ শুরু করার যার লক্ষ্য হওয়া উচিত খোদ সরকারে উপদেষ্টা পরিষদে ও বিভিন্ন দপ্তরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের খুঁজে বের করা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন যে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের অযোগ্যতা অদক্ষতা এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা দৃশ্যমান হয়েছে এবং তারা আমেরিকা বা ইউরোপের মতো উন্নত রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখালেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারার আক্ষেপ জানিয়ে তিনি বলেন যে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্নের কথা বলেছিলেন তা আজও অধরা রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে ছাত্রনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া রাশেদ খান মন্তব্য করেন যে যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি দাবি করে তারাই মূলত ২০১৪ ২০১৮ ও ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তিনি আরও যোগ করেন যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাকস্বাধীনতার যে বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল তা আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে সম্ভব হয়নি বরং তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকেই ভূলুণ্ঠিত করেছে।


নতুন রাজনীতি হবে চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিপক্ষে: জামায়াত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১১:১১:৪১
নতুন রাজনীতি হবে চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিপক্ষে: জামায়াত
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল যুব র‍্যালিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশের প্রচলিত ঘুনে ধরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেছেন যে অতীতের সব বস্তাপচা রাজনীতিকে তিনি পায়ের তলে পিষে ফেলতে চান। মঙ্গলবার সকালে ‘রাজপথে বিজয়ে’ শীর্ষক ম্যারাথন ও যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন যে যারা পুরনো ও অকার্যকর রাজনীতির পাহারাদারি করার চেষ্টা করবে তারা নিজেরাই একসময় অচল মালে পরিণত হবে। তিনি স্পষ্ট করেন যে এখন সময় হয়েছে বাংলাদেশে এক নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করার যা হবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে এবং বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর হাতিয়ার। জামায়াত আমিরের মতে আগামীর রাজনীতি হবে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলদার, মামলাবাজ ও ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে এক কঠোর প্রতিরোধ এবং সেখানে কোনো অন্যায়ের ঠাঁই হবে না।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন যে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিবার, গোষ্ঠী ও দলের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে এবং সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা মূলত দেশকে একটি শ্মশানে পরিণত করেছিল। ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যের কারণে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল তখন দেশের মানুষ একাট্টা হলেও স্বাধীনতার পর একটি দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি এবং বাকি জনগণকে দাসে পরিণত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ডা. শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন যে রক্ষী বাহিনীর নামে দেশে এক জল্লাদ বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল এবং বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ চুরির ফলে ১৯৭৪ সালে যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় তাতে লাখো মানুষ প্রাণ হারায় যাদের শেষমেশ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করতে হয়েছিল।

বিগত সরকারের তিন মেয়াদের শাসনকালকে রক্তপাত ও লাশের রাজনীতি হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন যে লগি-বৈঠার তাণ্ডব, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা, শাপলা চত্বরের নৃশংসতা এবং সুবর্ণচরে ভোটের অপরাধে নারীর ওপর বর্বরতা ছিল তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। সাম্প্রতিক সময়ে ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি সতর্ক করে দেন যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও তাদের ষড়যন্ত্র থামেনি এবং তারা এখনো দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। আসন্ন ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই নির্বাচন কোনো নির্দিষ্ট দলের বিজয় নয় বরং ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের দ্বার উন্মোচন করবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে কালো টাকার বিনিময়ে মানুষ কেনার দিন শেষ হয়ে গেছে এবং কোনো বিশেষ দলকে অন্যায্য সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে জনগণ তা কঠোর হাতে প্রতিহত করবে। যুবসমাজের ওপর আস্থা রেখে তিনি বলেন যে আজকের এই বিজয় দিবস কেবল স্মরণের দিন নয় বরং পুরোনো রাজনীতির কবর রচনা করে এক নতুন ও শান্তির বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেওয়ার দিন।


জিয়া বিদ্রোহ না করলে দেশ স্বাধীন হতো না: হাফিজ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:১৮:৫৪
জিয়া বিদ্রোহ না করলে দেশ স্বাধীন হতো না: হাফিজ
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের রণাঙ্গনের অন্যতম সাহসী যোদ্ধা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মন্তব্য করেছেন যে মহান মুক্তিযুদ্ধ কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের একক এজেন্ডা ছিল না বরং এটি ছিল সমগ্র জাতির অস্তিত্ব রক্ষার এক মহাকাব্যিক লড়াই। সোমবার রাজধানীর বনানীর বাসভবনে যুগান্তরকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করেন যে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণেই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং বিশেষ করে মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকরা যদি সেদিন বিদ্রোহ না করতেন তবে হয়তো মুক্তিযুদ্ধও হতো না এবং বাংলাদেশও স্বাধীন হতো না। মুক্তিবাহিনীর মধ্যে তার নেতৃত্বাধীন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টই সবচেয়ে বেশি সাহসিকতা পুরস্কার অর্জন করেছে এবং একইসঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক শহীদ হওয়ার গৌরবও এই ব্যাটালিয়নের বলে তিনি গর্বভরে উল্লেখ করেন।

রণাঙ্গনের এই অকুতোভয় বীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানান যে ১৪ ডিসেম্বর ছিল তার জীবনের এক অলৌকিক দিন কারণ সেদিন তিনি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন যখন তার চারপাশে মেশিনগানের গুলিতে সহযোদ্ধারা লুটিয়ে পড়ছিল। এই যুদ্ধের ভয়াবহতা ও তার বীরত্ব এতটাই অসামান্য ছিল যে কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করার জন্য লিখিত সুপারিশ পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন। ৩০ মার্চ যশোর ক্যান্টনমেন্টে বিদ্রোহের মাধ্যমে তিনি যে যুদ্ধের সূচনা করেছিলেন তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটে ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে যশোর ক্যান্টনমেন্টে আট ঘণ্টার সম্মুখ যুদ্ধের পর তিনি যখন অস্ত্রাগার ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন তখন হাজার হাজার সাধারণ গ্রামবাসী দা ও কুড়াল নিয়ে তাদের স্বাগত জানায় এবং তখনই তিনি বাঙালির স্বাধীনতার প্রকৃত স্পিরিট বা আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতে পারেন।

যুদ্ধের কৌশলগত দিক বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে জুলাই মাসে কামালপুরের ভয়াবহ যুদ্ধে শক্তিশালী বেলুচ রেজিমেন্টের বিপক্ষে লজিস্টিক সাপোর্ট ছাড়াই তিনি এবং ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিন মাত্র দুইশ সৈন্য নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছিলেন যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ভয়াবহ কনভেনশনাল অ্যাটাক। পরবর্তীতে জেড ফোর্সের অংশ হিসেবে সিলেট দখলের পরিকল্পনা করেন এবং অপ্রচলিত পথ হিসেবে চা বাগানের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হয়ে ১৪ ডিসেম্বর সিলেট এমসি কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবন এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালান। ভারতীয় বিমান বাহিনীর সহায়তায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের বার্তা পাঠায় যা ছিল তাদের জন্য এক চূড়ান্ত আনন্দের মুহূর্ত। তবে এই বিজয়ের আনন্দ ছিল বিষাদমাখা কারণ তার ব্যাটালিয়নের ২০০ জন সাহসী সৈনিক এবং ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন ও লেফটেন্যান্ট আনোয়ারের মতো মেধাবী অফিসাররা সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক ও সাবেক মন্ত্রী আহ্বান জানান যে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা অর্থাৎ সামাজিক সুবিচার সাম্য ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং কেউ যেন এই মহান অর্জনকে ছোট করার হীন চেষ্টা না করে।


প্রতিশোধ নয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ২১:৩৬:৫৯
প্রতিশোধ নয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই: তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন যে যতদিন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি বিশ্বের মানচিত্রে টিকে থাকবে ততদিন এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিন্দুমাত্র মলিন হবে না। তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলাদেশ হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয় বরং লাখো শহীদের আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে যা জাতির জন্য এক অহংকারের বিষয়। স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে গিয়ে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধটিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রামাণ্য দলিল হিসেবে অভিহিত করেন।

তারেক রহমান তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন যে পতিত ও পলাতক একটি বিশেষ রাজনৈতিক চক্র দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করেছে এবং এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পরাজিত শক্তি এখন বিজয়ের এক নতুন বিভ্রান্তিকর ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা চালাচ্ছে যা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। তিনি দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করেন যে পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রতিশোধ নেওয়া বিএনপির লক্ষ্য নয় বরং বিজয়ের প্রকৃত সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি স্বনির্ভর ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আজকের দিনের মূল অঙ্গীকার হওয়া উচিত। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র কখনোই টেকসই হতে পারে না এবং ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করলেও তিনি সতর্ক করে বলেন যে ষড়যন্ত্র এখনো পুরোপুরি থামেনি এবং গণতন্ত্রের সাহসী সন্তান ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলা সেই গভীর চক্রান্তেরই একটি অংশ মাত্র। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে বা দেশে নির্বাচন না হলে কারা লাভবান হবে সেই মোক্ষম প্রশ্ন তুলে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় সম্পর্কে ইঙ্গিত দেন এবং বলেন যে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে গেলে অপশক্তি পিছু হটতে বাধ্য হবে। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তারেক রহমান আগামী দশককে রূপান্তরের দশক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বিভাজন ও হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহ্বান জানান।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত