আইনগত ভিত্তি না থাকলে সংস্কার প্রস্তাবে সই নয়: জামায়াত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩০ ১৮:০৩:০০
আইনগত ভিত্তি না থাকলে সংস্কার প্রস্তাবে সই নয়: জামায়াত
ছবি: সংগৃহীত

আইনি ভিত্তি ছাড়া সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়: জামায়াত নেতা তাহের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের খসড়া সনদে আইনগত ভিত্তি না থাকলে সেটি কেবল প্রতীকী দলিল হিসেবে থেকে যাবে এবং তার বাস্তব কোনো মূল্য থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “আইনগত ভিত্তি ছাড়া কোনো সনদে সই করে লাভ নেই। জনগণ যে প্রস্তাবকে গুরুত্ব দেবে না, তাতে অংশগ্রহণ করেও লাভ নেই।”

বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের ২২তম দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনায় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গ ছাড়াও সম্প্রতি প্রস্তাবিত 'জুলাই সনদ' নিয়েও বক্তব্য দেন তাহের।

তাহের জানান, “দীর্ঘ আলোচনা ও মতবিনিময়ের পর যে সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত হয়েছে, সেগুলো যদি আইনগত ভিত্তি পায় এবং বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হয়, তাহলেই তা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে পারে। কিন্তু গতকাল যে খসড়া সনদ পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন হবে—কিন্তু সেখানে কার মেয়াদে এটি হবে, সরকারের কি এখতিয়ার আছে, এসব বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বর্তমান সরকার কি তাহলে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? নাকি এই সংস্কার বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে ভবিষ্যৎ কোনো সরকারের হাতে? আমরা কি এত দিন শুধু পরামর্শ দেওয়ার জন্যই আলোচনা করে যাচ্ছি?”

তিনি বলেন, “আমাদের আশা ছিল, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি আইনগত কাঠামো গড়ে উঠবে, যাতে এসব সংস্কার প্রস্তাব বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর করা যায়। কিন্তু খসড়ায় সে রকম কোনো দিক নির্দেশনা না থাকায় হতাশা তৈরি হয়েছে।”

তাহের মনে করেন, এভাবে জনগণের সঙ্গে শুধু আলোচনা চালিয়ে গেলে তা প্রতারণায় পরিণত হতে পারে। “চেয়ারপারসন ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আগেই একটি লিখিত চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতায় তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে সেটি প্রতারণা—এবং জনগণের সঙ্গে উপহাস।”

আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার ইতিহাস উল্লেখ করে তাহের বলেন, “বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এমন অনেক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, যখন আইনি সুরাহার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে নেওয়া হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, এরশাদসহ অনেক শাসক ক্ষমতায় গিয়ে সংসদ গঠন করেছেন ও আইন পাস করিয়েছেন।”

তাহের এ প্রেক্ষাপটে একটি প্রস্তাবও দেন: “আমরা চাই, আইনজ্ঞদের নিয়ে একটি সভা হোক—যেখানে আলোচনা হবে, কিভাবে এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো আইনগত ভিত্তি পেতে পারে। যদি এখনই সেই সুযোগ না দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে যেন অন্তত সে রকম একটি আলোচনার সুযোগ থাকে।”

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ