চট্টগ্রামে ধর্ষণ মামলায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন ভুক্তভোগী, আদালতে এসে বললেন—চিনি না কাউকে

চট্টগ্রাম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৩ ২০:০৪:১০
চট্টগ্রামে ধর্ষণ মামলায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন ভুক্তভোগী, আদালতে এসে বললেন—চিনি না কাউকে
চট্টগ্রাম আদালত ভবন ছবি: সংগৃহীত

সাড়ে চার বছর আগে চট্টগ্রামে এক নারী আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় এবং জোর করে যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়। সেই ঘটনায় তদন্ত শেষে পুলিশ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। কিন্তু বুধবার (২৩ জুলাই) আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে ওই নারী দাবি করেন, তিনি আসামিদের কাউকে চিনেন না এবং ঘটনা সম্পর্কেও কিছু জানেন না।

চট্টগ্রামের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এই বক্তব্যকে মিথ্যা সাক্ষ্য হিসেবে আমলে নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন এলাকায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তিন নারীকে একটি বাসায় আটকে রাখেন চারজন ব্যক্তি। সেখানে তাঁদের ধর্ষণ করা হয় এবং টাকার বিনিময়ে যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়। পরে এক নারী কৌশলে পালিয়ে গিয়ে বাদী হয়ে মামলা করেন।

ভুক্তভোগীদের একজন ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন। তিনি বলেছিলেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়, পরে সেখানে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় এবং পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।

পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের অভিযোগে একটি ও মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে যৌনকর্মে বাধ্য করার অভিযোগে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেয়। প্রথমটি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে এবং দ্বিতীয়টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।

মানব পাচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আজ আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে ওই নারী বলেন, তিনি আসামিদের চেনেন না এবং কিছু জানেন না। তখন রাষ্ট্রপক্ষ তাঁকে ‘বৈরী সাক্ষী’ ঘোষণা করে।

এরপর আদালতে তার আগের জবানবন্দি, শারীরিক পরীক্ষার কাগজপত্র এবং অন্যান্য দলিল তুলে ধরা হলে, তবুও তিনি নিজের বক্তব্যে অটল থাকেন। আদালত বিষয়টিকে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হিসেবে গণ্য করে মানব পাচার আইনে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঘটনার আরেক ভুক্তভোগী নারী বলেন, “আমার সঙ্গে ওই নারীরও একই ঘটনা ঘটেছে। তাই মামলায় তাঁর কথাও বলেছি। তিনি নিজেই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিলেন।”

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ