জাতি তাকিয়ে জামায়াতের দিকে: গোলাম পরওয়ার 

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৭:৫৬:১৪
 জাতি তাকিয়ে জামায়াতের দিকে: গোলাম পরওয়ার 

বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে জামায়াতে ইসলামীকে ঘিরে সাধারণ মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের জনগণ এখন এমন নেতৃত্ব চায় যারা সৎ, আদর্শিক, দক্ষ এবং মানবিক। শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের মাল্টিপারপাস হলে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পেশাজীবী প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি বলেন, জাতি এখন চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে জামায়াতে ইসলামীর দিকেই।

পরওয়ার অভিযোগ করেন, জামায়াতের প্রতি মানুষের এই আস্থা কিছু মহল মেনে নিতে পারছে না। তাই তারা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন, জনগণ সব অপচেষ্টা রুখে দেবে। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং খুনের যে দৌরাত্ম্য চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীই রাজপথে ছিল সবচেয়ে সোচ্চার। অথচ এই প্রতিবাদেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। পরওয়ারের ভাষায়, যারা সত্যিকার দেশপ্রেমিক, তাদেরই বাধা দেওয়া হচ্ছে, পক্ষ নেওয়া হচ্ছে অপরাধীদের।

তিনি আরো দাবি করেন, পুলিশ যখন কোনো চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করে, তখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা থানায় হামলা চালিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নেয়। তিনি বলেন, প্রশাসনকে সহযোগিতা না করে বরং বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটি দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দেশ গঠনের স্বার্থে তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

সম্মেলনে জামায়াত নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শুধু নির্বাচন করলেই হবে না, আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দাবি করেন, তরুণ প্রজন্ম এখন সচেতন। তারা আর কোনো দুর্নীতিবাজ, খুনি কিংবা ধর্ষণকারীর দলকে ভোট দেবে না। বুলবুল বলেন, তরুণরা এখন ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবে, তারা জানে কীভাবে তাদের অধিকার আদায় করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় যে নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা কোনো ব্যবসায়িক বিরোধ নয়, বরং চাঁদাবাজির কারণেই ঘটেছে। কিন্তু পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সম্মেলনের সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশের বর্তমান সংকট মোকাবিলার জন্য মানবিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে চায়। তিনি বলেন, জামায়াতের অতীত নেতৃত্বই প্রমাণ করেছে দলটি দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি থেকে মুক্ত। তিনি জামায়াতের সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের মন্ত্রিত্বের সময় উল্লেখ করে বলেন, তারা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যা আজকের রাজনীতিতে বিরল।

এসময় তিনি জানান, ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের সাত দফা দাবির পক্ষে দেশবাসীর অংশগ্রহণ জরুরি। সাত দফার মধ্যে রয়েছে— বিগত ১৭ বছরে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, মৌলিক সংস্কার, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা, যাঁরা দেশ ও সমাজ গঠনে জামায়াতের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ