পদ্মার ভাঙনে বিলীন ঘরবাড়ি ও দোকানপাট, ঝুঁকিতে ৬০০ পরিবার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৮ ১৪:৫৯:১০
পদ্মার ভাঙনে বিলীন ঘরবাড়ি ও দোকানপাট, ঝুঁকিতে ৬০০ পরিবার

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা মাঝিরঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর থেকে শুরু হওয়া এই ভাঙনে মুহূর্তেই বসতবাড়ি ও দোকানপাটসহ অন্তত ১৯টি স্থাপনা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বাঁধের মাটি ধসে পড়তে শুরু করে। বিকেল ৪টার পর পরিস্থিতি দ্রুত অবনত হয় এবং একে একে ছয়টি পরিবারের ঘরবাড়ি ও ১৩টি দোকানপাট নদীগর্ভে চলে যায়। পুরো মাঝিকান্দি-নাওডোবা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, মানুষজন ঘরবাড়ি ও মালপত্র ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটতে থাকেন।

পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার আলম খার কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামে অন্তত ৬০০ পরিবার এখন সরাসরি নদীভাঙনের হুমকিতে রয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এই ধরণের ভাঙন একদিকে তাদের বসতভিটা, অন্যদিকে তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও স্মৃতিকে পদ্মার স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল সেতুর পূর্ব পাশে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি অস্থায়ী রক্ষা বাঁধ। তবে গত বছরের নভেম্বর, চলতি বছরের ৮ জুন এবং সর্বশেষ সোমবারের ভয়াবহ ভাঙনে সেই বাঁধ কার্যকারিতা হারিয়েছে।

নাওডোবা কান্দি এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জলিল সরদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল, আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। তাদের অবহেলার ফলেই আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতি।”

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “দুপুর থেকে দেখি মাটি সরে যাচ্ছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই দোকান আর ঘর পদ্মায় চলে গেল। আমরা আতঙ্কে আছি, স্থায়ী বাঁধ না হলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, “ভাঙনের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ও তাদের সহায়তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, “আজকের ভাঙনের পরিধি প্রায় ২০০ মিটার। ডাম্পিংয়ের পরই ভাঙন দেখা দেয়। বিবিএ কর্তৃক নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর আমরা জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছি।”

স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হলে পদ্মার থাবায় পুরো জাজিরা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

জামালপুরে প্রতিদিন মিলবে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

জামালপুরে প্রতিদিন মিলবে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস অনুসন্ধান কূপ 'জামালপুর-১'-এ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনযোগ্য গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড... বিস্তারিত