গাজায় ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৮ ১০:১২:১৯
গাজায় ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত

গাজা যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সহিংসতায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে সোমবার (৭ জুলাই) রাতে, যখন উত্তর গাজার বেইত হানুন এলাকায় একটি রোডসাইড বোমা বিস্ফোরণে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। এ ঘটনায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান স্থল অভিযান ও সামরিক প্রস্তুতির নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে জানা যায়, সোমবার রাত ১০টার কিছু পরে ইসরায়েলি পদাতিক বাহিনীর একটি দল গাজার বেইত হানুন এলাকায় অভিযান পরিচালনার সময় রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (IED)-এর বিস্ফোরণে সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।এই হামলায় পাঁচজন সেনা নিহত হন এবং আহত হন আরও ১৪ জন, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

আইডিএফ প্রকাশিত বিবরণ অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে দুই সেনার নাম ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হলেন:

স্টাফ সার্জেন্ট মেয়ার শিমোন আমার (২০)

সার্জেন্ট মোশে নিসিম ফ্রেচ (২০)

দুজনই জেরুজালেমের বাসিন্দা এবং কফির ব্রিগেডের অধীনস্থ নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। তাদের ইউনিটটি বর্তমানে গাজার উত্তর ব্রিগেডের অধীনে ৬৪৬তম রিজার্ভ প্যারাট্রুপার্স ব্রিগেডের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। বাকি নিহত সেনাদের নাম পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আইডিএফের তথ্য অনুসারে, স্থল অভিযান শুরুর আগে এলাকাটিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। তবুও রোডসাইড বোমা হামলায় সেনারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সামরিক কৌশল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ চলাকালে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রোডসাইড বোমা হামলার কৌশল গাজার প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের পুরনো ও কার্যকর রণকৌশলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই কৌশলে খরচ কম, কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। এতে প্রতিপক্ষের ওপর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবও পড়ে।

নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মূলত শহুরে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অভিযানে প্রশিক্ষিত হলেও গাজার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও বিস্ফোরক-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এত বড় প্রাণহানির ঘটনা ইসরায়েলি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

বিশেষত, অপারেশন-পূর্ব বিমান হামলা ও গোয়েন্দা নজরদারি সত্ত্বেও সেনারা কীভাবে এমন ফাঁদে পড়ল তা নিয়ে ইসরায়েলি রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

ইসরায়েলের স্থল অভিযান এখন গাজার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘর্ষের অংশ হিসেবে আইডিএফ এর লক্ষ্য হলো, হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনের অবশিষ্ট যোদ্ধাদের দমন এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা।

তবে সোমবারের এই হামলা প্রমাণ করে, গাজায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা এখনো সংগঠিত ও কার্যকরভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম। যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ততই ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য ঝুঁকি বাড়ছে—বিশেষ করে মানবসম্পদ ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষেত্রে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

জামালপুরে প্রতিদিন মিলবে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

জামালপুরে প্রতিদিন মিলবে ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস অনুসন্ধান কূপ 'জামালপুর-১'-এ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনযোগ্য গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড... বিস্তারিত