“সিন্ডিকেট ভাঙার যুদ্ধে নামছে সরকার”: ফয়েজ তৈয়্যব

টেলিকম ও আইসিটি খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক ও জনকল্যাণমুখী অবকাঠামো গড়ার লক্ষ্যে সরকার বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আনছে। এসব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা কিছু বিতর্কিত সিন্ডিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেই তারা সরকারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারে লিপ্ত এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, দেশীয় ব্যবসা বন্ধ করা হচ্ছে এমন বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, অপপ্রচার ও অপব্যাখ্যার ফসল। বাস্তবে দেশীয় ব্যবসা সংরক্ষণ ও বিকাশেই সরকার কাজ করছে। কিন্তু অতীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কিছু মাফিয়া-ধরনের ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, যারা দুর্নীতি, দেনা ও ঋণখেলাপির সঙ্গে যুক্ত, তারা তাদের অপরাধ আড়াল করতে এখন সরকারবিরোধী প্রচারে অর্থ ব্যয় করছে।
তিনি জানান, টেলিকম খাতে বিশেষ করে বিটিসিএলের (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্প নিয়ে যত বিতর্ক হচ্ছে, তার সবই পূর্ববর্তী সরকারের আমলে তৈরি হওয়া সমস্যার ফল। ওই সময় প্রকল্পটির টেন্ডার আহ্বান, এলসি সম্পাদন এবং প্রাথমিক অর্থ ছাড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২৯০ কোটি টাকা অফেরতযোগ্যভাবে পরিশোধ হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছি এবং লিখিতভাবে আমাদের যুক্তিগুলো তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, যেহেতু অর্থ চলে গেছে এবং যেহেতু বিটিসিএলের বর্তমান নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি খুবই দুর্বল জেলা পর্যায়ে মাত্র ১ জিবিপিএস, যা উন্নতমানের ইন্টারনেট সেবার জন্য সম্পূর্ণ অপ্রতুল সেহেতু প্রযুক্তিগতভাবে এই কাজ দ্রুত শেষ করা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, বিটিসিএলের প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যেই তাদের নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামো উন্নত করেছে। কিন্তু বিটিসিএল তার নেটওয়ার্ক হালনাগাদ করতে না পারলে খুব দ্রুত বাজার থেকে ছিটকে পড়বে। প্রকল্পের আরেকটি অংশ হলো DWDM (Dense Wavelength Division Multiplexing) ফাইবার নেটওয়ার্ক, যা ছাড়া আইপি নেটওয়ার্ক চালু রাখা সম্ভব নয়। আইপি নেটওয়ার্কের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও ফাইবার নেটওয়ার্ক চালু না হওয়ায় সেই ইনফ্রাস্ট্রাকচার অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা কোনো কাজে আসছে না।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার একটি নিরপেক্ষ কারিগরি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে, যারা টেন্ডারে উল্লেখিত যন্ত্রাংশগুলো যাচাই করে দেখবে সেগুলোর গুণগতমান ও কার্যকারিতা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আছে কিনা। বিশেষ সহকারী বলেন, “আমরা এমন কোনো টেন্ডারে সম্মতি দিইনি যেখানে প্রথম স্থান অর্জনকারী কোম্পানিকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে। বরং আমরা সর্বত্র স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার নীতি অনুসরণ করেছি।”
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, “যে সব কোম্পানি অতীতে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে, যারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে শত শত কোটি টাকা পাওনা রেখেও নিয়মিত ব্যবসা চালিয়ে গেছে, তারা এখন সরকারের পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ। কারণ আমরা তাদের অবৈধ সুবিধা বন্ধ করে দিচ্ছি, এবং তারা নতুন বিনিয়োগ ছাড়া আগের লাইসেন্স ধরে রাখতে পারবে না।”
দেশীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে উদ্ভূত প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, সরকার কোনো দেশীয় ব্যবসায়ীকে বাজার থেকে সরিয়ে দিচ্ছে না। বরং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে (সাধারণত ১০-১৫ বছর) তাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে বর্তমান যেসব লাইসেন্স আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আধুনিক কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, সেগুলো ভবিষ্যতে বাতিল করা হবে। তখন আগ্রহীরা নতুন করে আবেদন করে ব্যবসায় ফিরতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, আইসিটি ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় দুটি পৃথক শ্বেতপত্র প্রণয়ন করছে। এর মাধ্যমে এই খাতের অতীত দুর্নীতি, সীমাবদ্ধতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে। দুটি প্রকল্পেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক ও অধ্যাপকরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন—মোনাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নেয়াজ আসাদুল্লাহ এবং বুয়েটের অধ্যাপক কামরুল হাসান।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো দুর্নীতি বিষয়ক তথ্য সংগ্রহে পোস্ট বক্স, ই-মেইল এবং গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে তথ্য আহ্বান করেছে। যে কেউ প্রকল্পসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ দিতে পারবেন।
ব্রিফিংয়ের শেষাংশে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “আমরা আড়াই হাজার কোটি টাকার অযৌক্তিক প্রকল্প বাদ দিয়েছি। বাজেটেও নতুন কোনো প্রকল্প তুলিনি। কারণ আমরা এখন পর্যন্ত যে অব্যবস্থাপনার মুখোমুখি হচ্ছি তা আগে নিরসন করতে চাই। এর ফলে হয়তো কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত লাগছে, কিন্তু দেশের জন্য যেটা ভালো আমরা সেটাই করব।”
তিনি আরও বলেন, সরকারের এই উদ্যোগকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা দুঃখজনক। মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই, মিডিয়া তথ্যনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ প্রতিবেদন তৈরি করুক। জনগণ জানুক সরকার কী করছে, কার স্বার্থে করছে এবং কাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।”
-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দুটি এলাকা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরকে ঢাকার অন্যতম অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) হিমাগার পরিদর্শন শেষে তিনি মিরপুর বিভাগের দারুস সালাম থানা ঘুরে দেখেন এবং সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় অপরাধপ্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি। এই এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে।
এ সময় তিনি ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কথাও উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, ডিএমপির মোট ৫০টি থানার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি, অর্থাৎ প্রায় ২৫টি থানা বর্তমানে ভাড়া করা ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। তবে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আটটি থানা নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করা হবে, যা পুলিশের কার্যক্রম আরও গতিশীল করবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি তিনি কৃষি খাত, বিশেষত আলুর বাজার পরিস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেন। উপদেষ্টা বলেন, আলু বেচাকেনায় সবচেয়ে বেশি লাভ করে মধ্যস্বত্বভোগীরা, অথচ পরিশ্রমী কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। এ অবস্থায় সরকার কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে আলুর দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের উদ্যোগে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু কেনা হলে তারা তাদের পণ্যের সঠিক দাম পাবেন।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ এখনও বিদেশ থেকে আলুর বীজ আমদানি করছে, যা দেশের জন্য বড় ব্যয়ের কারণ। ভবিষ্যতে আলু, আনারস, খেজুরসহ বিভিন্ন ফসলের উন্নত মানের বীজ দেশেই উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে কৃষকরা অল্প খরচে মানসম্পন্ন বীজ কিনতে পারবেন, আর কৃষি উৎপাদন বাড়বে।
এ বছরের আলুর বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, কৃষকরা সঠিক দাম না পাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে তবে ভবিষ্যতে কৃষকরা আলু চাষে অনাগ্রহী হয়ে পড়তে পারেন। তাই কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় আলুর দাম নির্ধারণে সরকার সরাসরি উদ্যোগ নিচ্ছে।
পাটের বীজ উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ সীমিত হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষেই বেশি মনোযোগী। পাটের বীজ উৎপাদনে সময় ও জমির প্রয়োজনীয়তা বেশি থাকায় কৃষকরা এতে আগ্রহ দেখান না। ফলে আপাতত আমদানিই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত বিকল্প।
-রফিক
নির্বাচনের প্রস্তুতি: ২৫ আগস্টের মধ্যে ব্যালট বাক্সের হিসাব চাইল ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যালট বাক্সের হালনাগাদ হিসাব চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে, নির্বাচনের মালামাল সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণের জন্য গোডাউন খালি রাখতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের চাহিদাও পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইতোমধ্যে সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যবহার উপযোগী ব্যালট বাক্সের হালনাগাদ হিসাব ২৫ আগস্টের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনা-১ অধিশাখায় পাঠাতে হবে। এছাড়া, আগামী নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা শেষ করার পরিকল্পনা আছে।
ইসি সচিব আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরুত্ব পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে গল্প, সংলাপ, নাটিকা, প্রবন্ধ, কবিতা ও ছড়ার মতো লেখা একই সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পাঠাতে হবে।
/আশিক
কোনো কেন্দ্র দখল করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল:সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এ এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজশাহীতে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাসির উদ্দিন বলেন, "কোনো কেন্দ্র দখল করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।" তিনি আরও বলেন, যারা বাক্স দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে এবং ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস ভুলে যেতে হবে।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে এবং নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের মধ্যে তারা যেতে চান না। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপার যারা এর আগে এ ধরনের কাজে যুক্ত ছিলেন, তাদের পদায়নের কোনো চিন্তা নেই।
আনুপাতিক পদ্ধতি (পিআর পদ্ধতি) নিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে এ ধরনের নির্বাচন ব্যবস্থা নেই এবং তারা এর বাইরে যেতে পারেন না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না এবং দেখা যাক বিচারে কী হয়।
/আশিক
সামিট গ্রুপ: কালো টাকা সাদা করার আন্তর্জাতিক কৌশল
সামিট গ্রুপের ব্যবসা এবং কার্যক্রম নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এটি। এতে বলা হয়েছে, সামিটের ব্যবসার মূল কেন্দ্র হলো বাংলাদেশ এবং এখান থেকেই তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামিট ইন্টারন্যাশনালের ব্যবসার ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে তাদের কোনো মৌলিক ব্যবসা নেই। তারা মূলত যৌথ অংশীদারিত্ব এবং শেয়ার কেনার মাধ্যমে ব্যবসা করে। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সামিট যেসব সেক্টরে বিনিয়োগ করেছে, সেগুলো হলো বিদ্যুৎ, টেলিকম, আবাসনসহ অন্যান্য খাত, যেখানে সহজে টাকা উপার্জন করা যায় এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আছে। এসব ব্যবসা করতে গিয়ে তারা সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং বিপুল পরিমাণে কর রেয়াত পেয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং কুইক রেন্টালের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র অলস বসে থাকলেও সামিট টাকা পাবে। অর্থাৎ বিনিয়োগে কোনো ঝুঁকি নেই। একইভাবে, টেলিকম ব্যবসা শুরু করার সময়ও তারা শেয়ার বিক্রির জন্য কর রেয়াত পায়।
প্রতিবেদনটিতে অভিযোগ করা হয়েছে, সামিট সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য কাজ শুরু করার সময়ও সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। আর এই পুরো লভ্যাংশের টাকা সিঙ্গাপুরে চলে গেছে, যা সেখান থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এভাবে কালো টাকা সাদা টাকায় রূপান্তরিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত সামিট গ্রুপ বিদ্যুৎ এবং তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়াও বন্দর ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যবসা থেকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এবং নানানভাবে অর্থ লেনদেন করে তারা ভারতের কলকাতা ও পাটনায় বিনিয়োগ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বাইরে ভারতের ত্রিপুরায় একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শেয়ার কিনেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সামিট গ্রুপ বাংলাদেশের টাকা লুট করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত সামিট ইন্টারন্যাশনালের ব্যবসা শুধুমাত্র বাংলাদেশে হলেও তারা বিশ্বজুড়ে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করছে। আজিজ খান পরিবারের ১১ সদস্যের প্রত্যেকেরই বিদেশে কোথাও না কোথাও সম্পদ আছে, যা বাংলাদেশের টাকা থেকে পাচার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, আজিজ খান সিঙ্গাপুরের নাগরিক এবং তার ভাই মুহাম্মদ ফয়সাল করিম খান সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিপুল সাম্রাজ্যের মালিক। আঞ্জুম আজিজ খান, আয়েশা আজিজ খান এবং আদিবা আজিজ খান বিভিন্ন দেশে সম্পদ গড়েছেন। এ সব সম্পদ বাংলাদেশের লুন্ঠিত অর্থ থেকে করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করল অন্তর্বর্তী সরকার
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে গণমাধ্যমকে কড়া সতর্কতা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ সতর্কবার্তা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার একটি ভাষণ প্রচার করেছে। ওই ভাষণে তিনি মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন, যা গণমাধ্যমে প্রচার করা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং আরও জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তিনি বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি আসামি। আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ অনুসারে, যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য, কার্যক্রম বা প্রচারণা প্রচার বা পুনঃপ্রচার করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামি শেখ হাসিনার অডিও বা ভিডিও প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বৈরশাসক কর্তৃক ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়ানোর বক্তব্য প্রচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যে, তারা যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করে। শেখ হাসিনার যেকোনো বক্তব্য বা মন্তব্য প্রচার করা কেবল দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে হুমকি সৃষ্টি করবে না, বরং সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সহিংসতা ও অরাজকতাকে উসকে দিতে পারে।
বিবৃতিতে আরও সতর্ক করা হয়, ‘তার (শেখ হাসিনা) মন্তব্য, বক্তৃতা কিংবা উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার বা পুনঃপ্রচার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি তৈরি করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জনসাধারণকে ভুল পথে পরিচালিত করে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। সুতরাং এ বিষয়ে আইনি নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী যেকোনো গণমাধ্যম বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কঠোর জবাবদিহির আওতায় আসবে।’
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য সুখবর!
বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে সরকার ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি, ২০২৫’ গঠন করেছে। এ কমিটি সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধার পুনর্বিন্যাসে কাজ করবে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নবগঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন— মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জহির উদ্দিন, এয়ার ভাইস মার্শাল রুসাদ দীন আছাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং চ ছা মং, এয়ার কমডোর জামিল উদ্দিন আহম্মদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিলিয়া শারমিন এবং ক্যাপ্টেন মো. তৌহিদ সাগর। কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিশাদুল ইসলাম খান।
কমিটিকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রস্তাবিত সুপারিশ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা, পারিবারিক পেনশনসহ সামগ্রিক আর্থিক প্রণোদনা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, উৎসব ভাতা প্রভৃতি ভাতা যৌক্তিকীকরণ এবং বেতনক্রমের যে কোনো অসংগতি দূরীকরণে বিস্তারিত সুপারিশ প্রণয়নেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিটি জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫-এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে। প্রয়োজনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য আলাদা সাব-কমিটি গঠন করা যাবে এবং প্রাসঙ্গিক কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির সহায়তাও নেওয়া যাবে।
এছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ দায়িত্ব ও ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে সুপারিশ চূড়ান্ত করার জন্য কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
-শরিফুল
রাজধানীর বাজারে সবজির আগুন, খালি হাতে ফিরছেন অনেকে
‘কবে শেষবার এত দামে সবজি কিনেছি মনে নেই। এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতারা যেন একই বুলি আওড়ে যাচ্ছেন যা-ই চাই দাম শুরু হচ্ছে কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি।’ রাজধানীর রামপুরা বাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা আলামিনের এই মন্তব্যেই ফুটে উঠছে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির চিত্র।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম নিয়ে ভুক্তভোগী প্রত্যেক ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে না পেরে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য এটি এখন নিত্যদিনের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
মুনি আক্তার নামের এক গৃহিণী জানান, ‘আয় সীমিত। সংসারে খরচ সামলানোই কঠিন হয়ে পড়ে। সবজির দাম বাড়ায় আগের মতো আর কেনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে রান্না চালাতে বাধ্য হয়ে অল্প অল্প করে কিনছি।’
অন্যদিকে বিক্রেতারা দাবি করছেন, আবহাওয়ার প্রভাব এবং টানা বৃষ্টিতে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সবজির সরবরাহ কমেছে। রামপুরার ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বলেন, ‘এখন কম উৎপাদনের মৌসুম। এর ওপর অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে জমি প্লাবিত হয়েছে। ফলে সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি।’
বর্তমানে বাজারে আলু, বই কচু ও কাঁচা পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। গ্রীষ্মকালীন ঢ্যাঁড়স-পটোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। বরবটি, বেগুন, উস্তা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল ও কাঁকরোল বাজারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একই সঙ্গে কাঁচামরিচের দামেও নজিরবিহীন উল্লম্ফন ঘটেছে। কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২০০ থেকে ৩২০ টাকার মধ্যে উঠেছে। চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, লাউ ১০০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার ফালি প্রতি কেজি ৪০ টাকায়।
শুধু সবজি নয়, ডিমের বাজারেও লাফিয়ে দাম বেড়েছে। আগে প্রতি ডজন ডিম ১৪০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন দাম দাঁড়িয়েছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। মহল্লার দোকানে হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা দরে। অথচ এক মাস আগেও প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা।
ডিম বিক্রেতা বুলু মিয়া জানান, ‘সবজির দাম বেড়ে গেলে মানুষ ডিমের দিকে ঝুঁকেন। চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ কমেছে। তাই দামও বেড়েছে।’
মুরগির বাজারেও একই চিত্র। ব্রয়লার মুরগি এখন প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি। অন্যদিকে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়।
সব মিলিয়ে মৌসুমি প্রভাব ও টানা বৃষ্টিজনিত উৎপাদন হ্রাসের কারণে রাজধানীর বাজারে সবজি, ডিম ও মুরগির দামে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারা মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়েছেন এবং প্রতিদিনের বাজার করা হয়ে উঠছে কঠিন এক চ্যালেঞ্জ।
-শরিফুল
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলনের উদ্যোগে ইউনূস
মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ। সাক্ষাৎকালে তিনি ড. ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সংকটকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগ ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যান্ড্রুজ মনে করিয়ে দেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদফতরে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ যেমন মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের আশা টিকিয়ে রাখতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্ববাসী কৃতজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে আশা প্রকাশ করেন যে জাতিসংঘের আসন্ন সম্মেলন দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের একটি সুস্পষ্ট সমাধানের পথ তৈরি করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশে আশ্রিত শরণার্থীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য মৌলিক সেবায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এ সময় তিনি অ্যান্ড্রুজকে অনুরোধ জানান, প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করতে যেন তিনি তার প্রচেষ্টা জোরদার করেন।
অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রশংসা করলেও রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য যে পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ জাতিসংঘ মহাসচিব নিয়েছিলেন, তা বিভিন্ন মহলের দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণার কারণে প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে দ্রুত একটি স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান সম্ভব হবে। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বকে এই প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা ধরে রাখার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য স্টেকহোল্ডার সংলাপে অংশ নেবেন। এই সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
-রফিক
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এরপর কোনো পদে থাকব না: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যেখানে তিনি গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব গ্রহণ এবং বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রকাশিত এই নিবন্ধে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এবং এর পর তিনি আর কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকবেন না।
ড. ইউনূস লিখেছেন, “আমি স্পষ্ট করেছি: জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।”
তিনি তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নিবন্ধে ড. ইউনূস বলেন, গত বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং সমাজের অগণিত মানুষের সমর্থনে বাংলাদেশে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটে। আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট একজন স্বৈরাচার দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এই ঘটনার পর সৃষ্ট ক্ষমতার শূন্যতায় ছাত্রনেতারা তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানান। তরুণদের জীবন উৎসর্গের কথা ভেবে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।
এই গণআন্দোলনকে তিনি বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লব হিসেবে উল্লেখ করেন, যা দেখিয়েছে কীভাবে তরুণরা মানবজাতির বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ড. ইউনূস তার সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার কথা বলেন। একই সঙ্গে বিগত সরকারের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে এবং এই অর্থ পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি অব্যবস্থাপনার মাত্রা দেখে হতবাক হয়েছিলেন। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল এবং অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ধীরে ধীরে তারা পুনর্গঠন শুরু করেছেন এবং যারা স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, সেসব রাজনৈতিক দলসহ নতুন দলগুলো নতুন ধারণা ও শক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তিনি সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন, যারা ৫ আগস্ট গণহত্যা চালাতে দেয়নি এবং আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।
পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সর্বশেষে তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনার পরিকল্পনা রয়েছে, যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়। তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে যারা তাদের সঙ্গে আছেন, তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে এবং তারাই বাংলাদেশের জন্য সর্বোত্তম আশা।
সূত্র: ডেসারেট
পাঠকের মতামত:
- ঢাকার অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত দুটি এলাকা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- নির্বাচনের প্রস্তুতি: ২৫ আগস্টের মধ্যে ব্যালট বাক্সের হিসাব চাইল ইসি
- ১৩ বছর পর ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- শিশুদের সুরক্ষায় নতুন নোকিয়া ফোন: 'নগ্ন ছবি' ব্লক করবে এআই
- হোয়াটসঅ্যাপে নতুন ফিচার: গ্রুপ কল শিডিউল করার সুযোগ!
- মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ৩৩ দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানল দগ্ধ শিক্ষার্থী তাসনিয়া
- খুলনায় ডুমুরিয়ায়া বাড়িতে ঢুকে যুবদল নেতাকে হত্যা
- ডিজিএফআই ও বসুন্ধরা গ্রুপের প্রভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- কোনো কেন্দ্র দখল করলে পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল:সিইসি
- আমদানি ব্যয় ৮০ টাকা, খুচরায় ৩০০: কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে চলছে কারসাজি
- ‘মোদির বিরুদ্ধে মিছিল করা বাহার এখন মেয়েকে নিয়ে কলকাতায়’
- বেশি ভিউয়ের লোভে তরুণী সেজে ভিডিও বানাতেন টিকটকার, গ্রেপ্তার
- ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেপ্তার
- হৃদপিণ্ডের দুর্বলতার লক্ষণ: জেনে নিন ৩টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ
- জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর: এক ভরি স্বর্ণ কিনতে কত টাকা লাগবে?
- ‘ক্রাশের’ স্বামীকে হত্যা করতে গুগলের সাহায্য নিয়ে বোমা বানালেন প্রেমিক!
- ‘সীমিত আয়ের মানুষ খাবেটা কী?’: ইলিশের পর পটোলের দামও আকাশছোঁয়া
- সামিট গ্রুপ: কালো টাকা সাদা করার আন্তর্জাতিক কৌশল
- গভীর সংকটে দেশের ব্যাংক খাত: মূলধন সংরক্ষণে দক্ষিণ এশিয়ায় তলানিতে বাংলাদেশ
- গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সৌদি আরব
- টিভিতে আজকের খেলা: এক নজরে ক্রিকেট ও ফুটবলের সূচি
- দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস, অতি ভারি বর্ষণেরও সম্ভাবনা
- দেশের জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন জরুরি: চরমোনাই পীর
- গাজায় ইসরাইলের হামলা বৃদ্ধি, গত একদিনে আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত
- মেঘনার বুকে ভেসে উঠল নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের লাশ, স্তব্ধ পরিবার-সহকর্মীরা
- শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে গণমাধ্যমকে সতর্ক করল অন্তর্বর্তী সরকার
- আওয়ামী লীগ থেকে একসঙ্গে ৮ নেতার পদত্যাগ
- সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর জন্য সুখবর!
- ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে জয়ী মাহফুজ আলমের বাবা
- বিএসএফের হাতে বিজিবি সদস্য আটক
- বাউফলে এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- রাজধানীর বাজারে সবজির আগুন, খালি হাতে ফিরছেন অনেকে
- জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সম্মেলনের উদ্যোগে ইউনূস
- গাজা শহর দখলের চূড়ান্ত নির্দেশ নেতানিয়াহুর
- আগে গণপরিষদ নির্বাচন ও সংবিধান সংশোধন, তারপর জাতীয় নির্বাচন: আখতার হোসেন
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক ধারা: বাড়ল ৫০ মিলিয়ন ডলার
- আমার ছেলেকে ভালোবাসবেন: আরিয়ানের প্রথম কাজ নিয়ে শাহরুখ
- দলের টানা হারে অস্ট্রেলিয়া সফরে টাইগার যুবাদের স্বপ্নভঙ্গ
- ‘বাংলায় কথা বলার’ কারণে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে মারধর, শিকার ভারতীয় নাগরিক!
- জামায়াতের দাবি না মানলে নির্বাচন হবে না’: হামিদুর রহমান আযাদ
- পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয়: তারেক রহমান
- পাথর লুটে আমাদের কোনো কর্মীও জড়িত নয়, দুদককে ক্ষমা চাইতে হবে’: জামায়াত
- দুর্নীতির ফাঁদে ইমরান: সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেলেন, তবুও মুক্তি মিলছে না
- একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
- আবারও খোলা হলো কাপ্তাই বাঁধের ১৬ গেট, পানিবন্দি ২০ হাজার
- ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এরপর কোনো পদে থাকব না: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
- পাথর লুটে জড়িত ৫২ জনের নাম প্রকাশ:তালিকায় রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের নাম
- ক্ষুধার্ত দেশে উপদেষ্টাদের হাঁসের মাংস বিলাস কষ্ট দেয়: বিএনপি নেতা আলাল
- ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে উমামার প্রতিদ্বন্দ্বিতা
- ইউক্রেনে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় হামলা
- ফেসবুক পোস্টে রনির বিরুদ্ধে জুলকারনাইন সায়েরের ক্ষোভ
- একাদশে ভর্তি: প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ হলো,যেভাবে দেখবেন
- ১৭ আগস্ট ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশ শেয়ার
- গ্রেটার চট্টগ্রাম এসোসিয়েশন ইউকে (জিসিএ) এর বার্ষিক পিকনিক প্রাণের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
- আল্লাহ আমাকে পাকিস্তানের অভিভাবক বানিয়েছেন,প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নেই: মুনির
- গুজবের পর্দা ফাঁস: তারকাদের টাকার বিনিময়ে মুজিবকে নিয়ে পোস্ট? জানা গেল আসল সত্য
- আলবার্ট আইনস্টাইনের শেষ মুহূর্ত: এক ছবিতে ধরা পড়ল এক যুগের অবসান
- আখেরি চাহার শোম্বা: সফর মাসের শেষ বুধবারের ইতিহাস ও তাৎপর্য
- শেয়ারবাজারে বেক্সিমকো ও ইসলামী ব্যাংকের সর্বশেষ দর-বদলের চিত্র
- দেশের স্বর্ণের বাজার স্থিতিশীল, জানুন ভরি প্রতি দাম
- জিআইবি জানালো আইপিও অর্থ ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতার কারণ
- রহিমা ফুডসের শেয়ার মালিকানা বদল
- খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
- নীরব ঘাতক কিডনি ক্যানসার: এই ৫ লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হন
- সপ্তাহ শুরুতেই ডিএসইতে উত্থান, সূচক ও লেনদেনে চাঙ্গাভাব