“সিন্ডিকেট ভাঙার যুদ্ধে নামছে সরকার”: ফয়েজ তৈয়্যব

টেলিকম ও আইসিটি খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক ও জনকল্যাণমুখী অবকাঠামো গড়ার লক্ষ্যে সরকার বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আনছে। এসব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা কিছু বিতর্কিত সিন্ডিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেই তারা সরকারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারে লিপ্ত এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, দেশীয় ব্যবসা বন্ধ করা হচ্ছে এমন বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, অপপ্রচার ও অপব্যাখ্যার ফসল। বাস্তবে দেশীয় ব্যবসা সংরক্ষণ ও বিকাশেই সরকার কাজ করছে। কিন্তু অতীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত কিছু মাফিয়া-ধরনের ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, যারা দুর্নীতি, দেনা ও ঋণখেলাপির সঙ্গে যুক্ত, তারা তাদের অপরাধ আড়াল করতে এখন সরকারবিরোধী প্রচারে অর্থ ব্যয় করছে।
তিনি জানান, টেলিকম খাতে বিশেষ করে বিটিসিএলের (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড) ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্প নিয়ে যত বিতর্ক হচ্ছে, তার সবই পূর্ববর্তী সরকারের আমলে তৈরি হওয়া সমস্যার ফল। ওই সময় প্রকল্পটির টেন্ডার আহ্বান, এলসি সম্পাদন এবং প্রাথমিক অর্থ ছাড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২৯০ কোটি টাকা অফেরতযোগ্যভাবে পরিশোধ হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল।
ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছি এবং লিখিতভাবে আমাদের যুক্তিগুলো তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, যেহেতু অর্থ চলে গেছে এবং যেহেতু বিটিসিএলের বর্তমান নেটওয়ার্ক ক্যাপাসিটি খুবই দুর্বল জেলা পর্যায়ে মাত্র ১ জিবিপিএস, যা উন্নতমানের ইন্টারনেট সেবার জন্য সম্পূর্ণ অপ্রতুল সেহেতু প্রযুক্তিগতভাবে এই কাজ দ্রুত শেষ করা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, বিটিসিএলের প্রতিদ্বন্দ্বী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যেই তাদের নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামো উন্নত করেছে। কিন্তু বিটিসিএল তার নেটওয়ার্ক হালনাগাদ করতে না পারলে খুব দ্রুত বাজার থেকে ছিটকে পড়বে। প্রকল্পের আরেকটি অংশ হলো DWDM (Dense Wavelength Division Multiplexing) ফাইবার নেটওয়ার্ক, যা ছাড়া আইপি নেটওয়ার্ক চালু রাখা সম্ভব নয়। আইপি নেটওয়ার্কের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও ফাইবার নেটওয়ার্ক চালু না হওয়ায় সেই ইনফ্রাস্ট্রাকচার অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা কোনো কাজে আসছে না।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার একটি নিরপেক্ষ কারিগরি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে, যারা টেন্ডারে উল্লেখিত যন্ত্রাংশগুলো যাচাই করে দেখবে সেগুলোর গুণগতমান ও কার্যকারিতা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আছে কিনা। বিশেষ সহকারী বলেন, “আমরা এমন কোনো টেন্ডারে সম্মতি দিইনি যেখানে প্রথম স্থান অর্জনকারী কোম্পানিকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে। বরং আমরা সর্বত্র স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার নীতি অনুসরণ করেছি।”
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, “যে সব কোম্পানি অতীতে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে, যারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে শত শত কোটি টাকা পাওনা রেখেও নিয়মিত ব্যবসা চালিয়ে গেছে, তারা এখন সরকারের পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ। কারণ আমরা তাদের অবৈধ সুবিধা বন্ধ করে দিচ্ছি, এবং তারা নতুন বিনিয়োগ ছাড়া আগের লাইসেন্স ধরে রাখতে পারবে না।”
দেশীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে উদ্ভূত প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, সরকার কোনো দেশীয় ব্যবসায়ীকে বাজার থেকে সরিয়ে দিচ্ছে না। বরং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে (সাধারণত ১০-১৫ বছর) তাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে বর্তমান যেসব লাইসেন্স আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আধুনিক কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, সেগুলো ভবিষ্যতে বাতিল করা হবে। তখন আগ্রহীরা নতুন করে আবেদন করে ব্যবসায় ফিরতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, আইসিটি ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় দুটি পৃথক শ্বেতপত্র প্রণয়ন করছে। এর মাধ্যমে এই খাতের অতীত দুর্নীতি, সীমাবদ্ধতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে। দুটি প্রকল্পেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক ও অধ্যাপকরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন—মোনাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নেয়াজ আসাদুল্লাহ এবং বুয়েটের অধ্যাপক কামরুল হাসান।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো দুর্নীতি বিষয়ক তথ্য সংগ্রহে পোস্ট বক্স, ই-মেইল এবং গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে তথ্য আহ্বান করেছে। যে কেউ প্রকল্পসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ দিতে পারবেন।
ব্রিফিংয়ের শেষাংশে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “আমরা আড়াই হাজার কোটি টাকার অযৌক্তিক প্রকল্প বাদ দিয়েছি। বাজেটেও নতুন কোনো প্রকল্প তুলিনি। কারণ আমরা এখন পর্যন্ত যে অব্যবস্থাপনার মুখোমুখি হচ্ছি তা আগে নিরসন করতে চাই। এর ফলে হয়তো কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থে আঘাত লাগছে, কিন্তু দেশের জন্য যেটা ভালো আমরা সেটাই করব।”
তিনি আরও বলেন, সরকারের এই উদ্যোগকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা দুঃখজনক। মিডিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই, মিডিয়া তথ্যনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ প্রতিবেদন তৈরি করুক। জনগণ জানুক সরকার কী করছে, কার স্বার্থে করছে এবং কাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।”
-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক
বড় ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশে বড় আকারের ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা করার সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অব. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রবিবার ২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এই শঙ্কার কথা জানান।
ভূমিকম্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন অন্য কোনো দেশে ভূমিকম্প নিয়ে কোনো আগাম সতর্কতা আছে কি না তা তাঁর জানা নেই তবে বাংলাদেশে নেই। অনেক দেশে নাকি একটা অ্যাপ আছে যার মাধ্যমে দশ সেকেন্ড আগে সতর্কতা দেওয়া যায়। এমন একটা অ্যাপ খোলা যায় কি না সরকারও সেই চিন্তা করছে। তিনি আফটার শক বা ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন নিয়ে বলেন অনেকে বলে একটা ভূমিকম্প হওয়ার পরে এক দেড় ঘণ্টা পর আরেকটা হওয়ার শঙ্কা থাকে আবার এক দেড় ঘণ্টা পর সেই শঙ্কা কমে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে তো একটা হওয়ার পর ছোট আকারে আরেকটা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই তাই পরবর্তীতে আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া তিনি জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণের সমালোচনা করে বলেন এতে ঝুঁকি বেশি থাকে। ভূমিকম্প হলে লোকজন গিয়ে কোথাও দাঁড়াবে তেমন কোনো মাঠও নেই বলে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কোনো শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন এমন কোনো শঙ্কা নেই। তিনি দাবি করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে তবে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে সেই সময়ে বিভিন্ন দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সভা সমিতির সংখ্যাও বেড়ে যাবে। তিনি বলেন আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যেই ছিল যা পরে গেল দেড় বছরের চেষ্টায় উন্নতির দিকে গেছে।
দেশে অপরাধের মাত্রা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে এক নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মন্তব্যের জবাবে উপদেষ্টা বলেন এটা একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মন্তব্য আর সে কীভাবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক হলো সেটাও আমি জানি না। তিনি মন্তব্য করেন যে দেশে এখন সবাই বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষক কিন্তু কে কোন যোগ্যতায় হয়েছে তা তাঁর জানা নেই।
সবশেষে মধ্যরাতে এক সাংবাদিককে ডিবি তুলে নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সাংবাদিকদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান ওই ব্যক্তি যে কাজটি করেছেন সেটা সাংবাদিক হিসেবে না বরং সেটা ছিল অন্য ধরনের কাজ।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৫৬টি দেশের পক্ষ থেকে যে বড় বার্তা পেল নির্বাচন কমিশন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতির মধ্যেই এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কমনওয়েলথ। রবিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বচওয়ে।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬টি দেশ ইসিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন আমরা তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছি এবং তাঁরা আসবেন। আমরা আশা করি আমাদের এবারের যে ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল ও পার্টিসিপেটরি বা অংশগ্রহণমূলক ইলেকশন হচ্ছে সেটার সম্পর্কে আমরা একটা ভালো রেজাল্ট পাব।
ইসি সচিব আরও উল্লেখ করেন যে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের সেক্রেটারি জেনারেল স্পেসিফিক বা নির্দিষ্ট করে আমাদের বলেছেন ওনার সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৫৬টি দেশ এবং আমরা যদি কোনো সহযোগিতা চাই সেটা ওনারা করার জন্য প্রস্তুত আছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য আমাদের সহযোগিতা করছে শুনে তিনি খুশি হয়েছেন বলে জানান সচিব।
নির্বাচনের সময় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইসি সচিব বলেন আমাদের ল অ্যান্ড অর্ডার বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কেও তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে আমরা বলেছি আমরা সারা দেশকে তিনটি ভাগে রেড ইয়েলো এবং গ্রিন এই জোনে ভাগ করছি এবং সেই ভাগে ভাগ করে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিগুলোকে সামাল দেব। তিনি আরও জানান কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়েছে এবং কমিশনের ওপর আস্থা ও আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের আলোচনা শেষ করেছেন তিনি।
গ্যাসের দাম বাড়ছে আজ!
দেশের সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ রবিবারই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে কৃষিখাত, সার উৎপাদন ব্যয় এবং সরকারের ভর্তুকি কাঠামোতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
এর আগে পেট্রোবাংলা এবং দেশের বিভিন্ন গ্যাস বিতরণ সংস্থা সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটার ৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। গত ৬ অক্টোবর বিইআরসির আয়োজিত গণশুনানিতে এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শুনানি শেষে বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয়ে “সবদিক বিবেচনা করে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।” তার বক্তব্যে বিশেষভাবে উঠে আসে কৃষিকে অগ্রাধিকার ও এলএনজি আমদানির বাস্তব খরচ বিবেচনার বিষয়টি।
? এলএনজি আমদানি বাড়ানোর প্রস্তাব
পেট্রোবাংলার প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী-
- দাম বাড়ানো হলে ৭টি অতিরিক্ত কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে
- অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সার কারখানায় ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে পূর্ণ মাত্রায় সরবরাহ
- এপ্রিল–মে: ১৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট
- জুন: ১৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট
- জুলাই–সেপ্টেম্বর: ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট
এই মাসভিত্তিক সরবরাহ কাঠামো বাস্তবায়নের জন্যই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার উৎপাদনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৮ টাকা। কিন্তু বাজারে তা কৃষকদের কাছে বিক্রি হয় ২৭ টাকা, এবং বিসিআইসি ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে ২৫ টাকায়। এতে প্রতি কেজিতে ১৩ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে।
সার উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের জন্য সার মূল্য কম রেখেছে সরকার। কিন্তু এলএনজি আমদানির বাড়তি খরচ, বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি দামের অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ব্যয়ের কারণে ভর্তুকির পরিমাণও দ্রুত বাড়ছে।
গণশুনানিতে বিইআরসি চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে কৃষি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সার উৎপাদনে গ্যাসের দাম সরাসরি প্রভাব ফেলে, ফলে কোনো পরিবর্তনই কৃষক, উৎপাদক এবং সরকারের ওপর বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এলএনজি আমদানির খরচ বাড়লেও সার শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যদিকে, অতিরিক্ত দাম কৃষি উৎপাদন ব্যয় ও খাদ্য নিরাপত্তায় চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে আজকের গ্যাস মূল্য ঘোষণা একটি নীতি–নির্ধারণী গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
গতকালের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ শনিবার আরও দুবার মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এদিন সকালে ৩ দশমিক ৩ মাত্রা এবং সন্ধ্যায় ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। আজকের এই কম্পনগুলোকে আফটার শক হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বা বিএমডির পরিচালক চলতি দায়িত্ব মো. মমিনুল ইসলাম।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান মাটির দুর্বল গঠনের কারণেই গতকালের ভূমিকম্পে কম্পন বা ঝাঁকুনি বেশি সময় ধরে অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের পর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মো. মমিনুল ইসলাম বলেন গতকাল যে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার বড় ধরনের ভূমিকম্প হলো সেটার পরে আজকের দুটি ঘটনা মূলত আফটার শক। সাধারণত আফটার শকে আগের মাত্রার চেয়ে অন্তত ১ পয়েন্ট কম মাত্রা হয় তাই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এমন আফটার শক ঘটতে পারে। এ সময় আতঙ্কিত না হয়ে শকের সময় নিরাপদে থাকাটা জরুরি বলে তিনি মত দেন।
রিখটার স্কেলে গতকালের ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ এর নিচে থাকলেও এর স্থায়িত্ব ও তীব্রতা বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন গতকাল মাত্রা ৬ এর নিচে হলেও ওয়েভ বা কম্পন বেশি সময় স্থায়ী এবং ঝাঁকি বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হলো আমাদের এই অঞ্চলের মাটির গঠন কিছুটা দুর্বল। অপেক্ষাকৃত মাটির গঠন দুর্বল হলে শক বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়।
তিন দফায় এই কম্পনগুলো বাংলাদেশকে পুনরায় ভূমিকম্পের ঝুঁকির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। ভবিষ্যৎ বিপর্যয় এড়াতে তিনি পরামর্শ দেন যে আমাদের এই অঞ্চল ভূমিকম্পের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ তাই ভবন নির্মাণে অধিক সচেতন হতে হবে ও বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি তিনি খোলা মাঠ ও পার্ক সংরক্ষণ করার এবং ভবন সংলগ্ন রাস্তাগুলোকে সুপ্রশস্থ করার ওপর জোর দেন।
কম্পন থামলেও কাটছে না আতঙ্ক বরং প্রাণ বাঁচাতে গিয়েই নতুন বিপদে শিক্ষার্থীরা
দেশে গত ৩৬ ঘণ্টায় তৃতীয় দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত নিচে নামতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শনিবার ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে শামসুন্নাহার হলের তিনজন কুয়েত মৈত্রী হলের একজন বেগম রোকেয়া হলের একজন এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনই ছাত্রী।
শামসুন্নাহার হলের ছাত্র সংসদের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইসরাত জাহান সুমনা সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তাঁর পা ভেঙে যেতে পারে। শামসুন্নাহার হলে আহত অন্য দুইজনকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কুয়েত মৈত্রী হলের একজন শিক্ষার্থীও সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়েছেন। বেগম রোকেয়া হলের একজন শিক্ষার্থী আতঙ্কে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন এবং তাঁকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে হাতে ব্যথা পেয়েছেন। এদিন সন্ধ্যায় মাত্র ৭ ঘণ্টার ব্যবধানে আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয় তবে তা ছিল হালকা মাত্রার। এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী থেকে মাত্র ৩ মাইল দূরে এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। এর আগে শনিবার সকালেও ৩ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে যার উৎপত্তি ছিল নরসিংদীতে।
উল্লেখযোগ্য যে এর আগে শুক্রবারের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়। গতকালও ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে মোট তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীও লাফ দিয়ে পা ভেঙেছেন। ওই ঘটনায় তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হন কমপক্ষে ছয় শতাধিক মানুষ। এছাড়া ঢাকার কিছু ভবনে ফাটল এবং হেলে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা ও উপকূল অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় নিয়ে নতুন তথ্য
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা নিয়ে ব্রেকিং নিউজ দিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। শনিবার ২২ নভেম্বর নিজের ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত পোস্ট দিয়ে তিনি দেশবাসীকে এই আগাম সতর্কবার্তা জানান।
ওই পোস্টে মোস্তফা কামাল পলাশ লিখেছেন ২২ নভেম্বর পাওয়া সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে আগামী ২৫ বা ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে বিশেষ করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের দক্ষিণ পাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপ ও সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। সর্বশেষ আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে তিনি জানান সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোনো স্থানের ওপর দিয়ে উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই আঘাত হানার সম্ভাব্য সময় আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষকদের জন্য বিশেষ পরামর্শ দিয়ে তিনি লিখেছেন ডিসেম্বরের ১ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ফলে জমিতে থাকা পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই করা শেষ করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন শাকসবজি চাষিরা সম্ভাব্য এই বৃষ্টিপাতের কথা মাথায় রেখে বীজ বোনা ও জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্যও তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। তবে নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত পুরো দেশে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমুদ্রগামী জেলেদের সতর্ক করে এই আবহাওয়াবিদ লিখেছেন নভেম্বরের ২৮ তারিখের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়া শুরু করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। তাই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে উপকূলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে ২৯ নভেম্বরের পরে নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার জন্যও তিনি জেলেদের সতর্ক করেছেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ প্রসঙ্গে তিনি পর্যটকদের সতর্ক করে লিখেছেন ২৮ নভেম্বরের পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হতে শুরু করবে। বিশেষ করে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এড়াতে এই সময়ে পর্যটন সম্পর্কিত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ঢাকায় আবারও ভূমিকম্প
ঢাকায় আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শনিবার বিকেল ৬টার কিছু পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কম্পন টের পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে এবং এতে ঢাকায় চারজনসহ সারা দেশে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার ২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয় যা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই কম্পন সৃষ্টি করে। ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর থেকে চারদিকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং অনেকের ধারণা এরপর হতে পারে আরও বড় ভূমিকম্প। এই ঝুঁকি বিবেচনায় সমগ্র বাংলাদেশকে মোট ৩টি জোনে ভাগ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকির আওতাভুক্ত অঞ্চলকে জোন ১ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা জোন ২ এবং জোন ৩ এর এলাকা নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা যায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা জোন ১ এর আওতায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। ফল্ট লাইন বা প্লেট বাউন্ডারির কাছাকাছি অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি জেলা ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল গাজীপুর নরসিংদীর কিছু অংশ পুরো কিশোরগঞ্জ কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির নানা এলাকা উচ্চঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে জোন ৩ এলাকাভুক্ত খুলনা যশোর বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম।
রাজধানীজুড়ে প্রায় ২১ লাখ ৪৬ হাজার ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নগর সংস্থাগুলো। এসব ভবনের বেশিরভাগই নির্মাণ হয়েছে নিয়মকানুন না মেনে পুরোনো নকশায় বা দুর্বল ভিত্তির ওপর। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুক্রবারের ভূমিকম্প ঢাকা থেকে খুব কাছে ও কয়েক দশকের মধ্যে মাত্রা বেশি হওয়ায় অধিকাংশ মানুষ কম্পন অনুভব করেছেন এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি ও জাইকার এক যৌথ জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকায় সাত বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে। এছাড়া ১ লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তৈরি হবে সাত কোটি টন কনক্রিটের স্তূপ।
বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের অবস্থান ইন্ডিয়ান প্লেটে এবং এই প্লেট উত্তরপূর্ব দিকে এগোচ্ছে। সিলেটের উত্তরে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট যেটি দক্ষিণমুখী। এই দুই প্লেট একটি অন্যটিকে চাপ দিচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশের পূর্ব দিকে মিয়ানমার সাবপ্লেটেও সাবডাক্ট হয়েছে এবং উত্তরে ডাউকি ফল্ট আছে। পূর্বে মিয়ানমারের সাগাইং ফল্ট ও মধুপুর ফল্ট থাকায় ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম বলেন এবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার একেবারে কাছেই ছিল ফলে অনুভূত হয়েছে অনেক বেশি। চট্টগ্রামের রাঙামাটি বা খাগড়াছড়িতে যদি ৭ মাত্রার ওপরেও ভূমিকম্প হয় তাহলে ঢাকায় এতটা ঝাঁকুনি অনুভূত হয় না। তিনি সতর্ক করে বলেন এই ভূমিকম্পের স্থায়িত্বকাল আর ৫ থেকে ৭ সেকেন্ড বেশি হলেই ঢাকার অনেক ভবনই ধসে পড়ত। এ ধরনের ভূমিকম্পের সম্মুখীন ঢাকা ও আশপাশের এলাকা আগে কখনো হয়নি। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে সাধারণভাবে মনে হতে পারে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প মাত্র এক পয়েন্ট বেশি কিন্তু বিষয়টি মোটেও এমন নয়। ৫ মাত্রার চেয়ে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের কম্পনের প্রবণতা ১০ গুণ বেশি। এখানে প্রতিটি ভগ্নাংশ মানে এর তীব্রতা তত গুণ বেশি। ফলে এই ভূমিকম্পের প্রবণতা বা তীব্রতা অন্তত ১০০ কিলোমিটার রেডিয়াসে থাকে।
তিনটি বিশেষ সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য ঢাকায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার ২২ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান এবং সেই সঙ্গে তাঁকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
বৃহস্পতিবার ২০ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মো. আসাদ আলম সিয়াম জানান বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার গ্রহণ করার পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
তিনি আরও জানান একই দিনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এরপর দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ যোগাযোগ শিক্ষা কৃষি স্বাস্থ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ টেলিযোগাযোগ পর্যটন সংস্কৃতি যুব ও ক্রীড়া শিল্পসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ কর্তৃক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করার সুযোগ রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য শিক্ষা বাণিজ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন কৃষি পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ক কয়েকটি সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে এবং ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়গুলো এখনো আলোচনাধীন। রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।
সফরের সূচি অনুযায়ী পরদিন ২৩ নভেম্বরে তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।
পাঠকের মতামত:
- টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ২৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শিক্ষক হয়ে গালিগালাজ করায় হাদির কড়া সমালোচনা করলেন নীলা
- নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল
- শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ
- বড় ভূমিকম্প হলে তা মোকাবিলা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ৩০০ আসনের জন্য ১৪৮৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে এনসিপি শুরু করল বিশেষ কার্যক্রম
- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ৫৬টি দেশের পক্ষ থেকে যে বড় বার্তা পেল নির্বাচন কমিশন
- দাদা-দাদী-নানা-নানীর অতিরিক্ত আদরে বাড়ছে 'সিক্স পকেট সিনড্রোম', জানুন বিস্তারিত
- ফোবিয়া: সহজে চেনা, সময়মতো চিকিৎসা জরুরি
- বিশ্বের ১০ দামী খাবার, চোখ কপালে তোলার মতো মূল্য
- কোরআনের আলোকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ১০ উপায়
- আজ থেকেই যেসব গ্রাহকসেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকের
- শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
- সিএসই তে মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে ধাক্কা
- ইস্টার্ন পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের ব্যতিক্রমী ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফু-ওয়াং সিরামিকের Q1 ফলাফলে চাপের প্রতিফলন
- ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের EPS তিনগুণ বৃদ্ধি
- ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির Q1 ফলাফলে চমক
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ১৩ মিউচুয়াল ফান্ডের NAV হালনাগাদ
- যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড
- "প্রশাসন আমাদের কথায় গ্রেফতার করবে, মামলা করবে।"
- গ্যাসের দাম বাড়ছে আজ!
- বহুমুখী যেসব কর্মসূচিতে রাজধানী সরগরম
- রবিবারের নামাজের ওয়াক্তনামা এক নজরে
- বায়ুদূষণে আবারও বিপজ্জনক ঢাকার বাতাস
- টিভিতে ক্রিকেট–ফুটবলসহ একঝাঁক বড় ম্যাচ
- বহিষ্কৃত ১০ নেতা ফের বিএনপির দলে
- ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ
- শ্যাম্পু ছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে খুশকি কমানোর সহজ ও ঘরোয়া উপায়
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান
- স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন কি না সেই প্রশ্নের জবাবে যা জানালেন রুমিন ফারহানা
- কম্পন থামলেও কাটছে না আতঙ্ক বরং প্রাণ বাঁচাতে গিয়েই নতুন বিপদে শিক্ষার্থীরা
- কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গাজার বাস্তব চিত্র দেখে শিউরে উঠছে বিশ্ব
- বাংলাদেশিদের নিয়ে যে আবেগঘন গল্প শোনালেন সাদিও মানে
- আইএল টি-টোয়েন্টিতে একই মৌসুমে দ্বিতীয়বার দলভুক্ত হলেন বাংলাদেশি পেসার
- ভূমিকম্পের সময় মহানবী সা. যে বিশেষ আমল ও দোয়া পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন
- সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা ও উপকূল অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় নিয়ে নতুন তথ্য
- ছেলের লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল বাবার
- ভূমিকম্প মুহূর্তে যে দোয়া পড়তেন রাসূল (সা.)
- ঢাকায় আবারও ভূমিকম্প
- "৫ আগস্টেই শেষ আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি"
- "সরকার গাফিলতি করছে"
- অস্ট্রিচ কেন পাথর খায় কারণ জানলে চমকে যাবেন
- আগ্নিবলয় বনাম খনিজভাণ্ডার: দুই রিং অফ ফায়ারের রহস্য
- শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার আইনি উপায় জানালেন শিশির মনির
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- আজকের ভূমিকম্প আমাদের কী শিক্ষা দিচ্ছে: একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ভয়ংকর ঝুঁকিতে দেশের তিন বড় শহর: মাটির নিচ থেকে আসছে বড় বিপদের বার্তা
- ইতিহাস ভারতের, বর্তমান বাংলাদেশের: পরিসংখ্যান ও শক্তির বিচারে কে এগিয়ে?
- ফায়ার সার্ভিসে ফোনের বন্যা, হেলে পড়েছে কয়েকটি ভবন
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- রাকিবের দুর্দান্ত দৌড়, মোরসালিনের ফিনিশিং: শুরুতেই ব্যাকফুটে ভারত
- প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়
- ঢাকার বংশালে ভূমিকম্পে ৩ জনের মৃত্যু হলো যেভাবে
- সোমবার রাজধানীর বাজার বন্ধের পূর্ণ তালিকা
- ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- ২৫০ বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ কি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে?








