টেলিকম সংস্কারে বাধা মাফিয়া গোষ্ঠী: প্রধান উপদেষ্টার অভিযোগ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১৮:২৭:২৯
টেলিকম সংস্কারে বাধা মাফিয়া গোষ্ঠী: প্রধান উপদেষ্টার অভিযোগ

টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মান অনুসারে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করায় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়ব।

সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, নতুন টেলিকম লাইসেন্স নীতিমালা নিয়ে কাজ শুরুর পর থেকেই কতিপয় মিডিয়া ও যোগাযোগ খাতের মাফিয়াদের রোষানলে পড়েছেন তিনি।

ফয়েজ আহমদ বলেন, “বিটিআরসি ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ মিলে আন্তর্জাতিক নির্দেশনা অনুসরণ করে একটি আধুনিক ও সহজতর টেলিকম লাইসেন্স কাঠামো তৈরি করছে। তবে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অতীতের দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু গোষ্ঠী।”

তিনি জানান, পূর্ববর্তী সরকার ২০১০ সালে আইএলডিটিএস নীতি চালুর মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরদের কার্যক্রমে বিধিনিষেধ আরোপ করে, যা বিশেষ কিছু রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানির সুবিধার্থে করা হয়েছিল।

টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি-২০২৫ এর খসড়া নিয়ে উদ্ভূত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে উপদেষ্টা জানান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) এবং ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর (আইএসপি) স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি ‘লাইট টাচ লাইসেন্সিং’ কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে। আইএসপিরা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্তির চেয়ে ব্যাংক ঋণের সুবিধার কথা বিবেচনায় এ ধরনের লাইসেন্স চেয়েছে।

তিনি বলেন, “কিছু প্রতিষ্ঠান সামান্য অবকাঠামোতে সামান্য বিনিয়োগ করে, বিশাল অঙ্কের মুনাফা করছিল। আমরা সেসব লাইসেন্স বাতিলের চিন্তা করছি।”

বর্তমানে চালু থাকা আইসিএক্স ও নিক্স লাইসেন্সগুলো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা। তার দাবি, “এই ধরনের লাইসেন্স বিশ্বের আর কোথাও নেই। ২০০৭-০৮ সালে বিটিআরসির দুর্বল নজরদারির সুযোগ নিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান কোটি টাকার সরঞ্জাম বসিয়ে শত কোটি টাকা লুট করেছে।”

এ ধরনের অদক্ষ লাইসেন্স কাঠামোর ফলে গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে কল খরচ ৫ পয়সা করে বাড়ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ জানান, ২০১৩ সালে সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে সাতটি আইজিডব্লিউ অপারেটর মিলে ‘আইওএফ’ নামে একটি গোষ্ঠী তৈরি করে, যা দীর্ঘ ১২ বছর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়ে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতির কারণ হয়েছে।

তিনি বলেন, “এই অপারেটররা প্রকৃত টার্মিনেশন রেট ০.০০১ ডলারেও আন্তর্জাতিক কল এনে প্রতি মিনিটে মাত্র ০.০০০৪ ডলার হিসেবে রাজস্ব ঘোষণা করত। এতে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে সরকারের।”

সম্প্রতি একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডিও লেটারের মাধ্যমে দুদকের তদন্ত থামিয়ে দেওয়ার যে দাবি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসলে ওই চিঠির মাধ্যমে দুদকের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।”

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ