২৫০ সেনা নিহত! পেহেলগাম সংঘাতে ক্ষয় কেন গোপন রাখছে ভারত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৫:৩৫:৫২
২৫০ সেনা নিহত! পেহেলগাম সংঘাতে ক্ষয় কেন গোপন রাখছে ভারত

কাশ্মীরের পেহেলগাম ইস্যুকে কেন্দ্র করে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি)-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চালানো সামরিক অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনী অভূতপূর্ব ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সামা টিভি। তাদের অনুসন্ধানভিত্তিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সংঘর্ষে ২৫০ জনেরও বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। ভারত সরকার এসব তথ্য গোপন রেখেছে এবং জনসমক্ষে সংঘর্ষের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেনি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

সামা টিভি দাবি করে, ভারত সরকার সংঘর্ষে হতাহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশের পরিবর্তে গোপনে ১০০ জনেরও বেশি নিহত সেনাকে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই সম্মান দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে গোপনীয়তার ভেতর, যাতে ঘটনাটি প্রকাশ না পায় এবং জনমনে সেনা প্রাণহানির ভয়াবহতা দৃষ্টিগোচর না হয়। প্রতিবেদনে সম্মানপ্রাপ্তদের নাম গোপন রাখা হলেও, কিছু নির্দিষ্ট ইউনিট ও তাদের অবস্থান প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনজন রাফাল পাইলটসহ মোট চারজন বিমানচালক, ভারতীয় বিমানবাহিনীর সাতজন সদস্য, ১০ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের ‘জি-টপ’ পোস্টের পাঁচজন সেনা, ৯৩ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারের নয়জন কর্মকর্তা এবং আদমপুর বিমানঘাঁটিতে অবস্থানরত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ইউনিটের পাঁচজন অপারেটর।

সামরিক ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সংঘর্ষে রাফাল ফাইটার জেট, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ইউনিট, ও বেশ কয়েকটি কৌশলগত সামরিক ঘাঁটি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই তথ্য প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে একাধিক উচ্চপদস্থ জেনারেল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার কাছ থেকে সত্যতা বেরিয়ে আসে। তবুও ভারত সরকার এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সংঘর্ষের কোনো বিবরণ দেয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিহত সেনাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর সরকারি চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিহতদের ছবি বা ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ না করেন। একাধিক পরিবারকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে লিখিত বাধ্যবাধকতাও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মোদি সরকার পুরো ঘটনার ওপর 'ইনফরমেশন ব্ল্যাকআউট' কৌশল প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকটে সরকার একদিকে সামরিক ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে, অন্যদিকে জনগণের কাছে যুদ্ধজয়ের বার্তা বজায় রাখতে তথ্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রপাগান্ডার পথ বেছে নিয়েছে। এটিকে একটি দ্বিমুখী সংকট হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে একদিকে সীমান্তে সেনা প্রাণহানি, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনার ঝুঁকি।

প্রতিবেদনে উল্লেখিত হয় যে, পাঠানকোট ও উদমপুর বিমানঘাঁটিতে পাকিস্তানের হামলায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করে চলেছে। সামা টিভি দাবি করে, এসব হামলা 'অপারেশন বুনিয়ানুম-মারসুস' নামের পাকিস্তানি সেনা অভিযানের অংশ ছিল, যা পরিকল্পিতভাবে ভারতের কৌশলগত ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়।

এই ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধের মাঠ এখন আর শুধু শারীরিক সংঘাতের জায়গা নয়, বরং তথ্য-যুদ্ধ, মনস্তাত্ত্বিক প্রচার এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার সংঘাতস্থল। এ প্রেক্ষাপটে ভারতের গোপনীয়তার কৌশল কেবল অভ্যন্তরীণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ