'আমরা কি আবু সাঈদ-মুগ্ধদের ভুলে যাব?'- ঐক্যের আহ্বান রিজভীর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ১৫:৩৪:৪২
'আমরা কি আবু সাঈদ-মুগ্ধদের ভুলে যাব?'- ঐক্যের আহ্বান রিজভীর

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী দেশ ও জাতির ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমরা কি সেই মহান তরুণ সৈনিকদের ভুলে যাব, যারা তাদের রক্ত দিয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন?’ তিনি এসব কথা বলেন রংপুরে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) রংপুরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণে। এই অনুষ্ঠান ছিল বিএনপির জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও বিজয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ।

রিজভী বিশেষভাবে উল্লেখ করেন আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজদের মতো তরুণদের, যাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সূচনা হয়। তিনি বলেন, ‘রংপুরের মানুষের গর্ব এই আবু সাঈদ, যিনি ঘাতকের সামনে বুক দিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে, কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকা অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য ছাড়া দেশে আবারো ফ্যাসিবাদের অন্ধকার ফিরতে পারে এবং সেই পতিতশাসক ফিরে আসার সুযোগ পাবে।’

তিনি সাম্প্রতিক গুম কমিশনের রিপোর্টকে ভয়াবহ ও আতঙ্কজক হিসেবে বর্ণনা করেন। ‘লোম দাঁড়িয়ে যায় কিভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, কীভাবে লাঠিপেটা ও হাত-পায়ের নখ তুলে নির্যাতন চালানো হয়েছে, এবং নারীদের মায়ের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এসব দেখে আমাদের দেশ এবং প্রজন্মের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।’ রিজভী প্রশ্ন তুলেন, ‘কি এই রক্ত পিপাসুরা আবারও রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারে?’

একই সঙ্গে তিনি পিআর (প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির নির্বাচনকে কঠোর সমালোচনা করেন। রিজভী বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দল এমপি নির্বাচন করবে, যা আরও বেশি স্বৈরশাসক তৈরি করবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদল সহসভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন, রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শরীফুল ইসলাম মন্ডলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

রিজভী বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যে রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে প্রায় ১৪০০ প্রাণ বিসর্জিত হয়েছে, সেই বীরগণকে আমরা কখনো ভুলতে পারব না। বিগত ১৬ বছর ধরে আমরা যে শাসনের সংকট ও দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি, তাতে কেউ নিরাপদ ছিল না। ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ সময়ে কোনো তরুণ শান্তিতে ঘুমোতে পারেনি, কারো পরিবার স্বস্তিতে ছিল না। কার সন্তানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে, কার লাশ নদীর পাড়ে ফেলা হবে এসব অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে বাঁচতে হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনের নৃশংস থাবা থেকে কেউ রেহাই পায়নি।’

এই বিবৃতিতে রুহুল কবির রিজভী দেশের গণতন্ত্র রক্ষা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ