আবার ভাইরাল শহীদ আবু সাঈদের ফেসবুক পোস্ট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৮:৩৩:৪৫
আবার ভাইরাল শহীদ আবু সাঈদের ফেসবুক পোস্ট

২০২৪ সালের জুলাইয়ের রক্তাক্ত ইতিহাসের পটভূমিতে একটি পুরোনো ফেসবুক পোস্ট আবারও নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শহীদ আবু সাঈদের লেখা সেই পোস্টটি এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরাও শেয়ার করছেন।

পোস্টটি লেখা হয়েছিল ২০২৪ সালের ১৩ জুলাই আন্দোলনের সবচেয়ে টালমাটাল মুহূর্তে। সেই দিন নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি আন্দোলনের ছবি শেয়ার করে আবু সাঈদ লিখেছিলেন,"সবথেকে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো আপনি ন্যায়ের পক্ষে না অন্যায়ের পক্ষে। অন্যায়ের পক্ষে থেকে ১০০ বছর বাঁচার থেকে ন্যায়ের পক্ষে থেকে মারা যাওয়া অধিক উত্তম, সম্মানের, শ্রেয়।"

এই লাইনগুলো তখন আন্দোলনরত ছাত্রদের মধ্যে সাহস, ত্যাগ এবং আদর্শের প্রতীক হয়ে ওঠে।মাত্র তিন দিন পর, ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনিই ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ। তার মৃত্যু শুধু এক ছাত্রনেতার পতন ছিল না, বরং সেটি হয়ে ওঠে বৃহৎ একটি গণজাগরণের সূচনা মুহূর্ত।

সেই মৃত্যুর পর ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন।শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও রাস্তায় নামেন। কেবল কোটা সংস্কার নয়, বুকে জমে থাকা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও সামাজিক বঞ্চনার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে পুরো জাতি।চূড়ান্ত পরিণতিতে ৫ আগস্ট ১৫ বছরের শাসন শেষ হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।

সেই প্রেক্ষাপটেই শহীদ আবু সাঈদের ১৩ জুলাইয়ের পোস্টটিকে এখন অনেকেই ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে দেখছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিজে সেই পোস্ট শেয়ার করেন তার সোশ্যাল মিডিয়ায়।

শুধু তিনি নন সাবেক ছাত্রনেতা, বর্তমান প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, এমনকি সরকারি আমলারাও নিজেদের টাইমলাইনে তা শেয়ার করছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, "এই লাইনগুলো শুধু আবু সাঈদের নয়, এটি এক গোটা প্রজন্মের নৈতিক অবস্থান।" অন্যজন লিখেছেন, "ইতিহাসে কিছু বাক্য থাকে, যেগুলো সময়কে ছাপিয়ে প্রতীকে পরিণত হয় সাঈদের এই বাক্য তেমনই এক চিহ্ন হয়ে থাকবে।"

বেশ কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তার অবস্থান জনমতের সঙ্গে সাংগত করতে চাচ্ছে, যার অংশ হিসেবে এ ধরনের ‘ন্যায়ের বার্তা’ সামনে আনা হচ্ছে। তবে সাধারণ ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি শুধুই রাজনৈতিক বার্তা নয় বরং আদর্শিক অনুরণনের পুনর্জন্ম।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ