রেকর্ড ছুঁয়ে ইতিহাস গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর!

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৬:০১:২৪
রেকর্ড ছুঁয়ে ইতিহাস গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর!

নতুন অর্থবছরের সূচনালগ্নেই দেশের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক সূচক চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এলো সুসংবাদ। সকল প্রতিকূলতা রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অচলাবস্থাকে জয় করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বন্দরে হ্যান্ডলিং হওয়া কনটেইনারের পরিমাণ পৌঁছেছে রেকর্ড সংখ্যায়: ৩২ লাখ ৯৬ হাজার টিইইউএস (Twenty-foot Equivalent Units)। এটি গত ৪৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

তবে বন্দরের সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, যদি বিগত তিন মাস স্থবিরতা না থাকত, তাহলে এই সংখ্যা ৩৫ লাখ টিইইউএস অতিক্রম করত অনায়াসেই। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টিইইউএস। এবার প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার বেশি কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে, যা শতকরা হিসেবে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।

২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্ট মাস ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপূর্ণ এক সময়। ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান এবং ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর অনেক নীতিগত ও প্রশাসনিক পরিবর্তন ঘটেছিল, যা সাময়িকভাবে বন্দরের কার্যক্রমকে শ্লথ করে দেয়। এর সঙ্গে যোগ হয় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর বিশেষ করে কাস্টমস ও পোর্ট হ্যান্ডলিং ইউনিটের আন্দোলন, যার ফলে বন্দরের কিছু কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, “অর্থবছরের শুরু ও শেষ উভয়টাই সংকটময় ছিল। কিন্তু এরপরও আমরা গত বছরের তুলনায় দেড় লাখ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডল করেছি। এটা আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ।”

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যবসাবান্ধব ও আমদানি-রপ্তানিমুখী নীতিমালার বাস্তবায়ন শুরু করে। ফলে ডলার সংকট অনেকটা প্রশমিত হয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে আমদানির প্রবাহে। একই সঙ্গে বহির্বিশ্বে নতুন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সুসংহত হওয়ায় রপ্তানিতেও আসে লক্ষণীয় অগ্রগতি।

সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করে বেসরকারি আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের মধ্যে যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তা চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি প্রধান টার্মিনালের পাশাপাশি কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও পানগাঁও নৌ টার্মিনাল থেকেও বড় আকারে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। তিনটি স্থানে মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ভাগেই ৩৩ লাখের মতো কনটেইনার হ্যান্ডল হয়। প্রতি বছর গড়ে ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হলেও এবারের অর্জন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্বের বন্দর র‌্যাংকিং প্রতিষ্ঠান লয়েড’স লিস্ট অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টিইইউএস হ্যান্ডলিং করে চট্টগ্রাম বন্দর অর্জন করেছিল ৬৭তম অবস্থান। এবার সেই সংখ্যার সঙ্গে অতিরিক্ত দেড় লাখ টিইইউএস যুক্ত হওয়ায় র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দরে আসা মোট পণ্যের ২৩ শতাংশ কনটেইনারের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। এদের মধ্যে আমদানির বাল্ক বা খোলাপণ্য বহির্নোঙ্গরে খালাস করে লাইটার জাহাজে দেশের অভ্যন্তরে পৌঁছায়। কিন্তু রপ্তানি পণ্যের প্রায় শতভাগই হয় কনটেইনারে, যার মানে রপ্তানি সক্ষমতা পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচকই হলো বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং রেকর্ড।

চট্টগ্রাম বন্দর শুধু একটি অবকাঠামো নয়, বরং দেশের বাণিজ্যিক স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। এই বন্দর যত বেশি কনটেইনার হ্যান্ডল করবে, ততই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান তৈরি হবে।

সাম্প্রতিক অস্থির সময়েও এই বন্দর তার কার্যক্রমে যে সক্ষমতা দেখিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ এবং এক গভীর বার্তা বাংলাদেশ এখন সংকটে নয়, সম্ভাবনার পথে।


আজ থেকেই যেসব গ্রাহকসেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকের

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১২:১৮:৪৩
আজ থেকেই যেসব গ্রাহকসেবা বন্ধ বাংলাদেশ ব্যাংকের
ছবি: সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক তার সব অফিসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, প্রাইজবন্ড বিক্রি ও পরিশোধ, ছেঁড়া–ফাটা নোট বিনিময়, অটোমেটেড চালান গ্রহণসহ সকল ধরণের সরাসরি গ্রাহকসেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। রোববার (২৩ নভেম্বর) থেকে মতিঝিলসহ দেশের নয়টি অফিসেই সেবাবন্ধের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন নির্বিঘ্নে গ্রাহক লেনদেন ও সংশ্লিষ্ট সেবা দিতে পারে, সে জন্য মনিটরিং আরও জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, কেপিআইভুক্ত (Key Point Installation) প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিরাপত্তার গুরুত্ব বিবেচনাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সরাসরি সাধারণ জনগণকে কাউন্টার সেবা দেয় না এই আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত এসেছে। ব্যাংক সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা, প্রবেশাধিকার এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দূরে রাখতে এই পরিবর্তন দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় ছিল।

প্রথমে সিদ্ধান্ত ছিল ৩০ নভেম্বরকে লক্ষ্য রেখে মতিঝিল অফিসে সেবা বন্ধ করা হবে এবং পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে অন্যান্য অফিসে। তবে সর্বশেষ মূল্যায়নের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সময় এগিয়ে এনে সব অফিসে একই দিন থেকে সরাসরি গ্রাহকসেবা বন্ধের ঘোষণা দেয়।

এর ফলে এতদিন যেসব অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড কার্যক্রম, ক্ষতিগ্রস্ত নোট বিনিময় এবং বৈদেশিক লেনদেন-সংক্রান্ত চালান কার্যক্রম পরিচালিত হতো যেমন মতিঝিল, সদরঘাট, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী ও সিলেট সেসব শাখায় সাধারণ গ্রাহকদের প্রবেশাধিকার কার্যত বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এখন থেকে এসব কার্যক্রম শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমেই পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চিত করেছে যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে যেন কোনো ধরনের ভোগান্তি বা জট সৃষ্টি না হয়, সেজন্য কার্যক্রম তদারকিতে বিশেষ স্কোয়াড ও মনিটরিং টিম কাজ করবে। নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক কাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন মূলত মুদ্রানীতি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং ব্যাংকিং সেক্টরের নজরদারিতে অধিক মনোযোগ দেবে এমনটাই জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র বা প্রাইজবন্ড সংশ্লিষ্ট সকল লেনদেন এখন কেবল অনুমোদিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে এবং ছেঁড়া-ফাটা নোট বিনিময়সহ নগদ মুদ্রা সংক্রান্ত সেবা সম্পূর্ণভাবে তাদের ওপর ন্যস্ত হচ্ছে।


রমজান সামনে রেখে বাজার নিয়ে যে সুখবর মিলছে আমদানির পরিসংখ্যানে

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ০৯:৩৯:৫৬
রমজান সামনে রেখে বাজার নিয়ে যে সুখবর মিলছে আমদানির পরিসংখ্যানে
ছবিঃ সংগৃহীত

সয়াবিন তেল চিনি মসুর ডাল ছোলা মটর ডাল ও খেজুরের চাহিদা রমজানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। এই বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে বেশি পরিমাণে পণ্য আমদানি করতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঋণপত্র বা এলসি খোলা অনেকটাই বেড়েছে। আমদানির তথ্য বলছে এ সময় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেল আমদানি ৩৬ শতাংশ চিনি ১১ শতাংশ মসুর ডাল ৮৭ শতাংশ ছোলা ২৭ শতাংশ মটর ডাল ২৯৪ শতাংশ ও খেজুরের আমদানি ২৩১ শতাংশ বেড়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে।

রমজানে তেল ও চিনির চাহিদা সবসময় বেশি থাকে তাই শীর্ষ গ্রুপগুলো সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসেই তেল ও চিনির এলসি খোলা বাড়িয়েছে। এছাড়া আগে থেকেই রমজানের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য প্রচুর পরিমাণে ক্রয় করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন আমদানির এই ধারা নভেম্বর ও ডিসেম্বরেও থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেশির ভাগ পণ্য আগে আনা হলেও অবশিষ্ট যা বাকি রয়েছে তা রোজা শুরু হওয়ার এক মাস আগপর্যন্ত আসতে থাকবে। তবে সেপ্টেম্বরেই রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলা হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী সেপ্টেম্বরে মোট ৬ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার ও অক্টোবরে ৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪ টন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭২ টনের চিনি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৬ টন।

অন্যান্য নিত্যপণ্যের আমদানিও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। চলতি বছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ডাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ৫০ হাজার ৩৫৫ টনের যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৬ হাজার ৯১২ টন। ছোলার এলসি ৪২ হাজার ৮৯১ টন থেকে বেড়ে ৫৪ হাজার ৫১৬ টনে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর এ দুই মাসে ১০ হাজার ১৬৫ টন খেজুরের এলসি খোলা হয়েছে যা আগের একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ৬৩ টন। এছাড়া চলতি বছর ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১০ টন মটর আমদানির এলসি খোলা হয়েছে যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪১ হাজার ৮১৫ টন।

আমদানিকারকরা বলছেন ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট না থাকায় এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশে এক ধরনের ডলার সংকট দেখা দেয় যার ফলে আমদানি সীমিত হয়ে গিয়েছিল। তবে সেই সমস্যা এখন সমাধান হয়েছে। এছাড়া এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন রাখারও বাধ্যবাধকতা নেই। রমজানে ভোগ্যপণ্য আমদানি নির্বিঘ্ন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি মার্জিনে ছাড় দিয়ে থাকে যা ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হয়েছে।


বড় ধাক্কা স্বর্ণবাজারে: ভরিতে কমল ৫,৫১৯ টাকা

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১০:০৮:৫১
বড় ধাক্কা স্বর্ণবাজারে: ভরিতে কমল ৫,৫১৯ টাকা
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে ওঠানামা ও স্থানীয়ভাবে তেজাবী স্বর্ণের মূল্য কমে যাওয়ার প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও দৃশ্যমান হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শনিবার রাতে বাজুস কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, স্থানীয় বাজারে পিওর গোল্ডের মূল্য হ্রাস পাওয়া ও চাহিদা-সরবরাহের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আগামী দিনের বাজারে স্বর্ণ ক্রেতাদের জন্য স্বস্তি তৈরি করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরিতে ৫ হাজার ৫১৯ টাকা কমানো হয়েছে। পূর্বের দাম ছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা, যা কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকায়। একইভাবে ২১ ক্যারেট, ১৮ ক্যারেট এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দামেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ কমতি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বৃহত্তম মূল্যহ্রাস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

২১ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮০১ টাকা, যা ১৫ নভেম্বর ছিল ২ লাখ ৪ হাজার ৩ টাকা। ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন ভরি দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৯ টাকা, যা আগের দাম থেকে এক লাফে প্রায় চার হাজারের বেশি কম। সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দামও কমে এখন প্রতি ভরিতে নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭১৮ টাকা। বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, দামের এই পতন উৎসব ও বিয়ের মৌসুমে সাধারণ মানুষকে নতুন কেনার উৎসাহ দিতে পারে।

-রফিক


ডলারের রিজার্ভে সুখবর, নভেম্বরের শুরুতেই বিপুল সাড়া

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ২০:১৫:৩১
ডলারের রিজার্ভে সুখবর, নভেম্বরের শুরুতেই বিপুল সাড়া
ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম অর্ধেক সময়েই প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। মাসের প্রথম ১৫ দিনে মোট ১৫২ কোটি ২০ লাখ (বা ১.৫২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার (১৬ নভেম্বর) রেমিট্যান্স প্রবাহের এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে প্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি ফেরাতে সাহায্য করছে।

কর্মকর্তারা মনে করছেন, হুন্ডি বন্ধে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ, প্রবাসীদের জন্য দেওয়া প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং সেবার উন্নতির ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহে এই ভালো দিক দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, মাসের বাকি দিনগুলোতেও যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে নভেম্বর মাস শেষে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশ ভালো ছিল। ওই মাসে মোট ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের বেশি প্রবাস আয় আসে। এই অঙ্কটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার বেশি। গত বছর অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান দেখায় যে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রবাস আয়ের প্রবাহ শক্তিশালী রয়েছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল প্রায় ২৪৮ কোটি ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ডলার এবং সেপ্টেম্বরে তা আরও বেড়ে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলারে পৌঁছেছিল।

সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১০১৫ কোটি ডলার বা ১০.১৫ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক লাখ ২৪ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এই চার মাসে মোট রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগের অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ৮৯৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।


২০২৬ সালের ব্যাংক ছুটির তালিকা প্রকাশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৬:৫৬:৪১
২০২৬ সালের ব্যাংক ছুটির তালিকা প্রকাশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী ২০২৬ সালের জন্য তফসিলি ব্যাংকগুলোর ছুটির তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এই নতুন তালিকা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো আগামী বছর মোট ২৮ দিন বন্ধ থাকবে। রবিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব সুপারভিশন এই তালিকাটি অনুমোদন করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।

প্রকাশিত তালিকা অনুসারে, ২০২৬ সালের প্রথম সরকারি ছুটি হবে শবে বরাত উপলক্ষে। এজন্য ৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। একই মাসে, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখেও ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর ১৭ মার্চ শবে কদর উপলক্ষ্যে ছুটি নির্ধারিত হয়েছে।

মার্চ মাসেই জুমাতুল বিদা এবং পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হবে। এই উপলক্ষ্যে ব্যাংকগুলো ১৯ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত একটানা বন্ধ থাকবে। এই পাঁচ দিনের ছুটির মধ্যে দুটি সাপ্তাহিক ছুটিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এরপর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ছুটি থাকবে।

এপ্রিল মাসে, পার্বত্য চট্টগ্রামের (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) জন্য ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি এবং ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। মে মাসের ১ তারিখে মে দিবস ও বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যেও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ব্যাংকগুলোতে ২৬ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ছুটি থাকবে। এই ছুটির মধ্যেও দুটি দিন সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে, ২৬ জুন আশুরা, ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে এবং ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষ্যে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এছাড়া ২৬ আগস্ট ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), ৪ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী এবং ২০ ও ২১ অক্টোবর দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ছুটি থাকবে।

বছরের শেষে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষ্যে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। সবশেষে, ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংক হলিডে পালনের মাধ্যমে বছরের ছুটির তালিকা শেষ হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ৯ নভেম্বরের জারি করা প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতেই ২০২৬ সালের এই ছুটির তালিকা কার্যকর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ব্যাংকে মোট ছুটি ছিল ২৪ দিন এবং ২০২৫ সালে ছিল ২৭ দিন। সেই তুলনায় আগামী বছর এই ছুটির সংখ্যা বেড়ে ২৮ দিন হলো।


নতুন দামে ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্যও কমল

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ০৯:৩৮:১৩
নতুন দামে ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্যও কমল
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাজারে আবারও কমেছে স্বর্ণের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা ও স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের মূল্য হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নতুন সমন্বয় করেছে স্বর্ণের দামে। শনিবার ১৫ নভেম্বর রাতে বাজুস এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের এই নতুন মূল্য ঘোষণা করে। সংশোধিত দাম কার্যকর হবে রবিবার ১৬ নভেম্বর থেকে।

বাজুস জানায়, তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সব ক্যারেটের স্বর্ণে ভরিপ্রতি মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। সর্বশেষ ঘোষণায় দেখা যায়, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম কমেছে ৫ হাজার ৫১৯ টাকা। নতুন দামে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরিপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ২৭২ টাকা।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেট স্বর্ণ এখন বিক্রি হবে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮০১ টাকায়, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৯ টাকা, এবং সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭১৮ টাকা। বাজুসের গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ন্যূনতম ৬ শতাংশ মেকিং চার্জ যোগ হবে। গহনার ডিজাইন, সূক্ষ্মতা ও প্রস্তুত প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে মেকিং চার্জ ভিন্ন হতে পারে।

স্বর্ণের দামে এই পরিবর্তন এমন সময়ে এলো যখন আন্তর্জাতিক বাজারেও স্বর্ণের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। স্থানীয় বুলিয়ন মার্কেটে তেজাবি স্বর্ণের চাহিদা কমে যাওয়ায় ও সরবরাহ পরিস্থিতির পরিবর্তনে স্থানীয় বাজারে এ সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে ওঠে বলে জানিয়েছে বাজুস।

অন্যদিকে, রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী—২২ ক্যারেট রুপার ভরিপ্রতি দাম ৪,২৪৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ৪,০৪৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৩,৪৭৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার ভরিপ্রতি দাম ২,৬০১ টাকা বহাল রাখা হয়েছে।


রেকর্ড ভাঙল সরকারের ঋণ, অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে নতুন তথ্য

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২০:৩৬:৫৭
রেকর্ড ভাঙল সরকারের ঋণ, অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে নতুন তথ্য
ছবি: সংগৃহীত

রাজস্ব আদায়ে দীর্ঘদিনের দুর্বলতা এবং বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যয়ের কারণে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ২১ ট্রিলিয়ন বা ২১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার অর্থ বিভাগের প্রকাশিত সর্বশেষ ঋণ বুলেটিনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন মাস শেষে সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। ঠিক এক বছর আগে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৮৯ ট্রিলিয়ন টাকা। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে সরকারের মোট ঋণ প্রায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সরকারি ঋণের এই হিসাবের মধ্যে বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ ট্রিলিয়ন টাকা, যা মোট ঋণের ৪৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছর ধরেই বিদেশি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ২০ ট্রিলিয়ন টাকা, যা তৎকালীন মোট ঋণের প্রায় ৩৭ শতাংশ ছিল।

একইভাবে, সরকারের অভ্যন্তরীণ বা দেশের ভেতরের উৎস থেকেও ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন টাকা, যা প্রায় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সর্বশেষ ১১ দশমিক ৯৫ ট্রিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালে এই অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ২২ ট্রিলিয়ন টাকা।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অভ্যন্তরীণ ঋণের তুলনায় বৈদেশিক ঋণ বাড়ার হার দ্বিগুণেরও বেশি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই বিপুল পরিমাণ ঋণ বৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন। তারা বলছেন, করোনা মহামারির পর বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল এবং মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যাপক ব্যয় করা হচ্ছে, যা সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ দ্রুত বাড়িয়ে দিয়েছে।


ব্যবসায়ীদের সতর্কবার্তা: রাজনৈতিক স্বচ্ছতা না এলে বিনিয়োগ ফিরবে না

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:৩৫:৩১
ব্যবসায়ীদের সতর্কবার্তা: রাজনৈতিক স্বচ্ছতা না এলে বিনিয়োগ ফিরবে না
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে এক অস্বস্তিকর ‘অপেক্ষার ঘূর্ণিতে’ আটকে আছে—যেখানে স্থবির বিনিয়োগ, লাগাতার উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল ব্যবসায়িক আস্থা মিলিয়ে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকৌশল কার্যত থমকে গেছে। ব্যবসায়ী, নীতিনির্ধারক এবং অর্থনীতিবিদদের অভিন্ন মত, একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচনই এই অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার একমাত্র বাস্তব পথ।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রত্যাশিত সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে গভীর প্রভাব ফেলছে। অনেকেই বলছেন, “অর্থনীতি শ্বাস নিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু হাঁটতে পারছে না”—কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে জড়তা, ঝুঁকি এড়ানোর প্রবণতা এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্টতার অভাব পুরো ব্যবসায়িক পরিবেশকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে ফেলেছে।

দেশের প্রধান শিল্প, বিনিয়োগ ও নীতি-পর্যায়ের প্রতিনিধিরা একমত: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া নতুন বিনিয়োগ বা উদ্যোগ নেওয়া প্রায় অসম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি সকলেই বর্তমান পরিস্থিতির গভীরতা তুলে ধরেছেন।

অর্থনীতিবিদের ভাষায়, অর্থনৈতিক স্থিতি মূলত রাজনৈতিক আস্থার ওপর দাঁড়ানো—এবং সেই আস্থা পুনর্গঠনের দায়িত্ব সরকারেরই। স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ ছাড়া পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে না।

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় থমকে থাকা বিনিয়োগ

অর্থনীতিকে আবার গতিময় করতে প্রয়োজন ব্যক্তিখাতের ঋণপ্রবাহ, নতুন স্থাপনা নির্মাণ, শিল্পপ্রস্তুতি ও উদ্যোক্তা কার্যক্রমের বিস্তার। কিন্তু বর্তমান সূচকগুলো উদ্বেগজনক।

ব্যক্তিখাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬.৫ শতাংশে নেমে এসেছে—যা স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক।

পুঁজিযন্ত্র আমদানি কমেছে ২৫ শতাংশ; যা ভবিষ্যতের উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক সংকেত দিচ্ছে।

বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কমেছে ২২ শতাংশ; অনেকে বিদ্যমান কার্যক্রমও সঙ্কুচিত করছেন।

এদিকে ভোক্তাদের আর্থিক সক্ষমতাও নড়বড়ে। মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৮.৩৬ শতাংশে, ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তীব্রভাবে কমেছে। জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে ছয় হাজার কোটি টাকারও বেশি—যা স্পষ্ট করে যে, অনেকে জীবনযাপনের ব্যয় মেটাতে সঞ্চয় ভাঙতে বাধ্য হচ্ছেন।

এক অর্থনীতিবিদ মন্তব্য করেছেন, এখন বিনিয়োগ শুধু অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি সামাজিক আস্থা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন। রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতাকে প্রায় স্তব্ধ করে দিয়েছে।

সামাজিক মূল্য ও বেকারত্বের চাপ

অর্থনৈতিক স্থবিরতার সবচেয়ে ভয়াবহ অভিঘাত পড়ছে নিম্নআয়ের মানুষের ওপর। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি দারিদ্র্য বাড়িয়ে তুলছে এবং আরও প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের নিচে ঠেলে দিতে পারে।

বেকারত্ব আরও বড় উদ্বেগ—দেশে প্রায় ১৩ লাখ যুবক বেকার, যার মধ্যে প্রতি তিনজন স্নাতকের একজন চাকরিহীন। এ অবস্থা দীর্ঘ হলে সামাজিক অস্থিরতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শিল্প ও ব্যবসায় নেতাদের স্পষ্ট দাবি

দেশের বিভিন্ন শিল্পখাতের নেতারা বলছেন, উৎপাদন, রিয়েল এস্টেট, ব্যাংকিং বা সেবা খাতে নতুন বিনিয়োগ কার্যত থেমে গেছে। বিদেশি ক্রেতা ও উন্নয়ন সহযোগীরাও অপেক্ষায়—তারা একটি স্থায়ী নির্বাচিত সরকার দেখতে চান।

বিজিএমইএ নেতারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদাররা অন্তর্বর্তীকালীন রাজনৈতিক কাঠামোতে আস্থাশীল নন। একইভাবে উন্নয়ন অংশীদাররাও প্রত্যাশা করছেন দ্রুত নির্বাচন এবং একটি স্থায়ী প্রশাসন।

পুনরুদ্ধারের পথ: একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্ব হলো দ্রুত, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা—যা সুশাসন, আস্থা ও নীতি-স্থিতিশীলতার ভিত্তি গড়ে দেবে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত।

বিসিআই সভাপতি পারভেজের মতে, নির্বাচনের সময়সূচি এবং শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি ব্যবসায়িক আস্থাকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে পারে। ড. মুজেরি সতর্ক করে বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর না হলে এবং সুদের হার উচ্চ থাকলে মূলধন প্রবাহ দুর্বলই থাকবে।

অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, দেশ এখন এক “ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে”—যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বর্তমান স্থবিরতাকে মেনে নেওয়া হবে, নাকি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তিতে নতুন অর্থনৈতিক গতিশীলতার পথে এগিয়ে যাওয়া হবে।

-এম জামান


স্বর্ণের দাম আবার চড়ল, ২২ ক্যারেটে ভরিতে নতুন রেকর্ড!

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:৫৩:৪২
স্বর্ণের দাম আবার চড়ল, ২২ ক্যারেটে ভরিতে নতুন রেকর্ড!
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ফের বড় মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) নতুন মূল্যতালিকা ঘোষণা করে জানায়, আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) থেকে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ৫ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়ছে। নতুন দামে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৯১ টাকা।

বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বর্ণের খুচরা দামে এই সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন মূল্য সমন্বয়ের ফলে সব ক্যারেটের স্বর্ণের দামই বেড়েছে।

স্বর্ণের নতুন দাম (প্রতি ভরি ১১.৬৬৪ গ্রাম):

২২ ক্যারেট: ২,১৩,৭৯১ টাকা

২১ ক্যারেট: ২,০৪,০০৩ টাকা

১৮ ক্যারেট: ১,৭৪,৮৫৫ টাকা

সনাতন পদ্ধতি: ১,৪৫,৫২০ টাকা

বাজুস আরও জানায়, সোনার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে ৫ শতাংশ সরকার নির্ধারিত ভ্যাট এবং ৬ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি যোগ করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন, ওজন ও মানভেদে মজুরি ভিন্ন হতে পারে।

এদিকে রুপার বাজারে কোনো পরিবর্তন আসেনি। মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে:

২২ ক্যারেট রুপা: ৪,২৪৬ টাকা

২১ ক্যারেট রুপা: ৪,০৪৭ টাকা

১৮ ক্যারেট রুপা: ৩,৪৭৬ টাকা

সনাতন পদ্ধতি: ২,৬০১ টাকা

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত