বিয়ে করলেই নাগরিকত্ব! ৬টি দেশের চমকপ্রদ সুযোগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৫:৪০:৩১
বিয়ে করলেই নাগরিকত্ব! ৬টি দেশের চমকপ্রদ সুযোগ

জন্মসূত্রে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু বিশ্বায়নের এ যুগে অনেকেই নিজ দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছেন চাকরি, উচ্চশিক্ষা কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্কের সূত্রে। কেউ কেউ ভালোবেসে বিয়ে করছেন ভিনদেশিদের, যা কেবল সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগই তৈরি করছে না, কখনো কখনো বৈধ উপায়ে নতুন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার পথও করে দিচ্ছে সুগম।

বিশ্বের নানা দেশের রয়েছে নিজস্ব অভিবাসন আইন। তবে কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে বৈধভাবে নাগরিককে বিয়ে করলেই নাগরিকত্বের আবেদন করা যায় তুলনামূলক কম সময় ও কম জটিলতায়। নিচে এমনই কিছু দেশের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো, যেখানে ভালোবাসা নাগরিকত্বের সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।

১. কেপ ভার্ড: বিয়েই যথেষ্ট, বসবাস নয়

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র কেপ ভার্ড এমন একটি দেশ, যেখানে সেই দেশের নাগরিককে বিয়ে করলেই আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আশ্চর্য হলেও সত্য, এই প্রক্রিয়ায় দেশটিতে দীর্ঘ সময় বসবাসের পূর্বশর্ত নেই। বিয়ের বৈধতা নিশ্চিত করা হলেই নাগরিকত্বের আবেদনের পথ খুলে যায়।

২. স্পেন: মাত্র এক বছরেই নাগরিকত্বের আবেদন

দক্ষিণ ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ দেশ স্পেনে, নাগরিকত্বের আবেদন করতে সময় লাগে মাত্র এক বছর, যদি আপনি একজন স্প্যানিশ নাগরিককে বৈধভাবে বিয়ে করেন এবং তার সঙ্গে এক বছরের যৌথ বসবাসের প্রমাণ দিতে পারেন।শুধু তা-ই নয়, স্পেনের নাগরিকত্ব পেলে আপনি লাতিন আমেরিকা, ফিলিপাইন ও পর্তুগালসহ আরও কিছু দেশের দ্বৈত নাগরিকত্বও রাখতে পারবেন। নাগরিকত্বের জন্য বিয়ের সনদ, যৌথ বসবাসের প্রমাণ, স্প্যানিশ ভাষার প্রাথমিক দক্ষতা এবং সাংস্কৃতিক জ্ঞানের প্রমাণপত্র প্রয়োজন হতে পারে।

৩. আর্জেন্টিনা: প্রেমের আকাশে ফুটবল আর পাসপোর্ট

আর্জেন্টিনা, ফুটবলপ্রেমীদের আবেগের দেশ। এখানকার নাগরিককে বিয়ের মাধ্যমে দুই বছরের মধ্যে নাগরিকত্বের আবেদন করা সম্ভব। এর জন্য প্রাথমিকভাবে স্প্যানিশ ভাষার মৌলিক জ্ঞান এবং দেশে কোনো ধরনের অপরাধের রেকর্ড না থাকার প্রমাণ প্রয়োজন।

৪. মেক্সিকো: ২ বছরেই নাগরিকত্ব, আগের পাসপোর্টও থাকবে

মেক্সিকোতে যদি আপনি নাগরিককে বিয়ে করে দুই বছর একসঙ্গে বসবাস করেন, তবে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। মজার ব্যাপার হলো, মেক্সিকোর নাগরিকত্ব পেয়ে গেলেও আপনার আগের দেশের নাগরিকত্ব রাখতে পারবেন, অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্ব। এর জন্য প্রয়োজন বিয়ের বৈধ সনদ, যৌথ বসবাসের প্রমাণ ও স্প্যানিশ ভাষার মৌলিক দক্ষতা।

৫. তুরস্ক: ভাষার প্রয়োজন নেই, তিন বছরেই সুযোগ

তুরস্ক, একদিকে ঐতিহাসিক ঐশ্বর্য, অন্যদিকে আধুনিকতা। এখানকার নাগরিককে বিয়ের পর মাত্র তিন বছর একসঙ্গে বৈধভাবে বসবাস করলেই নাগরিকত্বের আবেদন করা সম্ভব। ভাষা শেখার বাধ্যবাধকতা নেই। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তুরস্কের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ১১০টিরও বেশি দেশে ভিসা ফ্রি বা অন অ্যারাইভাল সুবিধা পাওয়া যায়।

৬. সুইজারল্যান্ড: কড়াকড়ির দেশেও আছে সহজ পথ

সুইজারল্যান্ড সাধারণত অভিবাসন নীতিতে কঠোর। কিন্তু বৈধ বিয়ের ক্ষেত্রে এ দেশটি উদার। সুইস নাগরিককে বিয়ে করে যদি আপনি তিন বছর একসঙ্গে বসবাস করেন এবং মোট পাঁচ বছর দেশের অভ্যন্তরে বৈধভাবে থাকেন, তবে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।যদি দেশের বাইরে থাকেন, তাহলে ৬ বছর দাম্পত্য সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ থাকলেও নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব।প্রক্রিয়ায় সাধারণত কম সময় লাগে, তবে প্রমাণ করতে হবে আপনি সুইস সমাজে নিজেকে মিশিয়ে নিয়েছেন ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্পৃক্ততা এই জায়গাগুলোতে।

ভালোবাসা নয় শুধু, বুঝতে হবে আইনও

একটি দেশের নাগরিকত্ব পেলে অনেকগুলো সুবিধা পাওয়া গেলেও মনে রাখতে হবে সবটাই নির্ভর করে আইনি বৈধতা, যথাযথ প্রমাণপত্র ও সম্পর্কের প্রকৃতির ওপর। বিয়েকে ব্যবহার করে নাগরিকত্ব নেওয়ার চেষ্টা করলে অনেক দেশে আইনগত শাস্তির বিধানও রয়েছে।

তবে যদি সম্পর্ক হয় আন্তরিক ও বৈধ, এবং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করা যায় তবে জীবনসঙ্গী হওয়া থেকেই একটি নতুন দেশের নাগরিক হওয়ার দরজা খুলে যেতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ