জলবায়ু পরিবর্তন

ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে রেকর্ড তাপপ্রবাহ, দাবানলের আশঙ্কা

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৮ ১০:২৮:২৩
ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে রেকর্ড তাপপ্রবাহ, দাবানলের আশঙ্কা

দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহের হানাদারি। চলতি সপ্তাহান্তে স্পেন, পর্তুগাল, ইতালি, ফ্রান্স, গ্রিসসহ পুরো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেশি পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তরগুলো। ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং দাবানলের আশঙ্কায় বহু অঞ্চলে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ তাপপ্রবাহ এখন ইউরোপে বার্ষিক নিয়মেই দেখা দিচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের কর্মকাণ্ডজনিত জলবায়ু সংকট এই চরম আবহাওয়ার মূল কারণ। তীব্র গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি শক্তি চাহিদাও ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।

তাপদাহে জ্বলছে স্পেন-পর্তুগাল

স্পেনে জরুরি চিকিৎসা সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়েছে হিটস্ট্রোকসহ তাপজনিত নানা রোগে আক্রান্তদের সামাল দিতে। শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্তদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

পর্তুগালের আবহাওয়া সংস্থা IPMA জানিয়েছে, শনিবার থেকেই দক্ষিণ, তাগুস উপত্যকা ও ডোউরো উপত্যকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি ছাড়িয়ে যাবে। রবিবার পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। রাজধানী লিসবনে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। ইতোমধ্যে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে।

ইতালিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা, গরমের মাঝে জাঁকজমক বিয়ে

ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশের ২১টি শহরের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে, যার মধ্যে রোম, মিলান এবং ভেনিস রয়েছে। বিশেষ করে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে না যেতে নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিলাসবহুল ভেনিসে যখন জেফ বেজোস ও লরেন সানচেজের বিবাহোৎসব উপলক্ষে নাচের অনুষ্ঠান চলছে, তখন তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে এবং আর্দ্রতার কারণে তা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। ফ্লোরেন্সে তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছুঁয়েছে, রোম, মিলান ও ন্যাপলসেও রোববার ৩৬ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ফ্রান্সে ৫০তম জাতীয় তাপপ্রবাহ

ফ্রান্সে ১৯৪৭ সালের পর থেকে এটি ৫০তম জাতীয় তাপপ্রবাহ। ইতিমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের চারটি অঞ্চলে কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে এবং শনিবার আরও কিছু অঞ্চলকে এই তালিকায় যোগ করা হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া সংস্থা ‘মেতেও ফ্রান্স’। ভূমধ্যসাগরের উত্তপ্ত পানির কারণে রাতেও স্বস্তি মিলছে না, রাতগুলো আরও দমবন্ধ করা হয়ে উঠছে।

দাবানলে বিপর্যস্ত আলবেনিয়া ও গ্রিস

আলবেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত আটটি এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে গত সপ্তাহান্তে কয়েক ডজন বাড়িঘর পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন অগ্নিনির্বাপক বাহিনী।

অন্যদিকে, গ্রিসের রাজধানী এথেন্স ও উত্তর এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জে আগুন লাগার ঝুঁকি এখনও প্রবল। কয়েকদিন আগে এথেন্সের উপকণ্ঠে এক দাবানলে ফসলের মাঠ, জলপাই বাগান এবং বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়েছে। চিওস দ্বীপে চারদিন ধরে জ্বলতে থাকা আগুন প্রায় ১০,০০০ একর জমি ধ্বংস করে দিয়েছে।

ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও সার্বিয়াতেও স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হয়েছে। গ্রীষ্মে শুষ্কতা, প্রবল বাতাস ও উচ্চ তাপমাত্রা মিলেই দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে দাবানল ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির পরিবেশ তৈরি করেছে।

-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


১২০ বার পেছালো সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার শুনানি

২০২৫ আগস্ট ১১ ২১:৪২:৩৫
১২০ বার পেছালো সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার শুনানি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি। পুরোনো ছবি

ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে ২০১২ সালে নির্মমভাবে নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় আদালত এ মামলার তারিখ ১২০ বার পিছিয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইর অতিরিক্ত এসপি মো. আজিজুল হক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এর ফলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান ১৪ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতের দিকে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় গলাকেটে হত্যা হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মেহেরুন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিরা হলেন বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ (হুমায়ুন কবির), রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু (বারগিরা মিন্টু/মাসুম মিন্টু), কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ।

প্রাথমিকভাবে মামলার তদন্তভার ছিল শেরেবাংলা নগর থানার একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) কাছে। চার দিন পর এই হত্যা মামলার তদন্তভার ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করেও রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলার তদন্তভার র‌্যাবের কাছে দেওয়া হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট নির্দেশ দেন, মামলার তদন্তে বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এর পর ১৮ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করে এবং তদন্ত শেষ করার জন্য ছয় মাসের সময় দেয়। তবে এখন পর্যন্ত ওই টাস্কফোর্স তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।

/আশিক


ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সংকটে নাসার জলবায়ু পর্যবেক্ষণ মিশন

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১১:৫৮:৩৪
ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সংকটে নাসার জলবায়ু পর্যবেক্ষণ মিশন
ছবিঃ সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাক্কা লাগতে চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ নাসা মিশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধের প্রস্তাব করেছে। এই দুই মিশন—অরবিটিং কার্বন অবজারভেটরি (OCO-2) স্যাটেলাইট এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে স্থাপিত একটি উন্নত যন্ত্র—পৃথিবীর কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ ও শোষণের নিখুঁত মানচিত্র তৈরি এবং উদ্ভিদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কৃষি ও পরিবেশ গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

নাসা এক বিবৃতিতে জানায়, এই মিশন দুটি তাদের “প্রাথমিক সময়সীমা পার করেছে” এবং সেগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত “রাষ্ট্রপতির বাজেট ও নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ”। তবে এই মিশনগুলো এখনো বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল এবং নিখুঁত পর্যবেক্ষণক্ষমতা সম্পন্ন প্রযুক্তি বহন করছে, যা বিকল্পহীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে বিবেচিত—এমনটাই জানিয়েছেন এই মিশনের প্রধান রূপকার, নাসার প্রাক্তন বিজ্ঞানী ডেভিড ক্রিস্প।

এই মিশনগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা যেমন আবিষ্কার করেছেন যে অ্যামাজন বন এখন নিঃসরণকারী বনভূমিতে পরিণত হয়েছে, তেমনি তারা দেখতে পেয়েছেন যে কানাডা ও রাশিয়ার বরফময় অঞ্চলগুলো এবং পারমাফ্রোস্ট গলে যাওয়া এলাকা বেশি কার্বন শোষণ করছে। শুধু তাই নয়, এই প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ভিদের আলোকসংশ্লেষণের “জীবন্ত আলো” শনাক্ত করা যায়, যা খরা, খাদ্য সংকট এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ বা সামাজিক অস্থিরতা আগাম অনুমান করতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ‘দূরদর্শিতাবিহীন’। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের জলবায়ু বিজ্ঞানী জোনাথন ওভারপেক বলেন, "এই স্যাটেলাইটগুলোর পর্যবেক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু অঞ্চলের জন্য।"

কংগ্রেসের দিকে তাকিয়ে আশার আলো

বর্তমানে এই মিশনগুলো সেপ্টেম্বর ৩০ পর্যন্ত তহবিল পাবে। প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব অনুযায়ী হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর বাজেট বিল এই মিশন বাতিলের পক্ষে হলেও, সিনেট ভার্সন এখনো মিশনগুলো টিকিয়ে রাখার পক্ষে। কংগ্রেস বর্তমানে বিরতিতে থাকায় নতুন বাজেটের অনুমোদন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদি বাজেট অনুমোদিত না হয়, তবে কংগ্রেস একটি অস্থায়ী ফান্ড রেজোলিউশনের মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থায়ন অব্যাহত রাখতে পারে। তবে কিছু আইনপ্রণেতা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো সেই তহবিলও আটকে রাখতে পারে।

ডেমোক্র্যাট নেতারা সম্প্রতি এনাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফিকে সতর্ক করে বলেছেন, কংগ্রেস অনুমোদিত অর্থ আটকে রাখা বা মিশন বন্ধ করা বেআইনি হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত জলবায়ু বিজ্ঞানকে দমিয়ে দেওয়ার একটি বড় পদক্ষেপ। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইকেল মান বলেন, “এই নীতির মূল কথা যেন এমন—যদি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের পরিমাপ বন্ধ করি, তবে সেটা আমেরিকানদের চিন্তা থেকে মুছে যাবে।”

বিকল্প পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক সহায়তার খোঁজে

ডেভিড ক্রিস্প ও তাঁর সহকর্মীরা এখন আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই যন্ত্র ও স্যাটেলাইট চালু রাখার সম্ভাবনা খুঁজছেন। নাসা ২৯ আগস্ট পর্যন্ত বাইরের সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ করছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের যন্ত্রটি বিদেশি অংশীদারদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, OCO-2 উপগ্রহটিকে হয়ত ভূপতিত করে ধ্বংস করা হবে। ক্রিস্প বলেন, “আমরা ধনকুবেরদের, ফাউন্ডেশনগুলোর কাছে যাচ্ছি। কিন্তু এটি এমন এক প্রযুক্তি যা বেসরকারি ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া বাস্তবসম্মত বা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।”

এই সিদ্ধান্ত জলবায়ু গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক অন্ধকার অধ্যায় রচনা করতে পারে—এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

-আকরাম হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


উষ্ণতা থামেনি, রূপ বদলেছে: নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে বিশ্ব

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১০:৩৫:০০
উষ্ণতা থামেনি, রূপ বদলেছে: নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে বিশ্ব
ছবিঃ সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গত জুলাই মাসটি ছিল ইতিহাসের তৃতীয় উষ্ণতম জুলাই। যদিও টানা রেকর্ড ভাঙা গরমের ধারা এবার কিছুটা থেমেছে, কিন্তু ইউরোপীয় জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘কোপার্নিকাস’ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার ধ্বংসযজ্ঞ এখনো অব্যাহত। বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি, বিধ্বংসী বন্যা, দাবানল ও ভয়াবহ তাপপ্রবাহের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ববাসী।

গত মাসে পাকিস্তান ও উত্তর চীন জুড়ে অতিভারী বৃষ্টিপাতে বন্যা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে কানাডা, স্কটল্যান্ড ও গ্রিসে দাবানলের বিস্তার রুখতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। দীর্ঘ খরার কারণে দাবানল আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এশিয়া ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অনেক দেশেই জুলাই মাসে নতুন সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

কোপার্নিকাস পরিচালক কার্লো বুয়োনতেম্পো বলেন, "২০২৩ ও ২০২৪ সালে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার পর এবারের জুলাই একটু কম উষ্ণ ছিল। তবে এটি ভ্রান্ত ধারনা দিচ্ছে যে জলবায়ু পরিবর্তন থেমে গেছে। বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা এখনো একটি উত্তপ্ত বিশ্বের পরিণতি দেখে চলেছি।"

এই জুলাইয়ে গড় তাপমাত্রা শিল্পপূর্ব যুগের (১৮৫০-১৯০০) চেয়ে ১.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। যদিও এটি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা কম, তথাপি প্যারিস চুক্তির ১.৫ ডিগ্রি লক্ষ্যসীমার কাছাকাছি। বিজ্ঞানীদের মতে, এই সামান্য পার্থক্যই যথেষ্ট হয়ে উঠছে ঝড়, তাপপ্রবাহ ও বন্যার মতো চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব দ্বিগুণ করে তুলতে।

মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চল, ইরাক এবং প্রথমবারের মতো তুরস্কেও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। স্পেনে শুধু জুলাই মাসেই তাপপ্রবাহ-সম্পর্কিত কারণে মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষের।

জলবায়ু পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন জীবাশ্ম জ্বালানি—তেল, কয়লা ও গ্যাস পোড়ানোকে। বুয়োনতেম্পো সতর্ক করেছেন, "যতক্ষণ না আমরা বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা স্থিতিশীল করতে পারছি, ততক্ষণ নতুন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাত্রা বাড়তেই থাকবে।"

বিশ্বব্যাপী উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ১১টি দেশ গত জুলাইয়ে তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। চীন, জাপান, উত্তর কোরিয়া, তাজিকিস্তান, ভুটান, ব্রুনেই ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর তালিকায় এই রেকর্ড যুক্ত হয়েছে। ফিনল্যান্ডে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা একটানা ২০ দিন ছিল, যা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।

তবে অন্যদিকে, আমেরিকার উত্তর ও দক্ষিণ অংশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার কিছু অংশ এবং অ্যান্টার্কটিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা ঠান্ডা আবহাওয়া ছিল।

সাগরের উষ্ণতা বৃদ্ধিও ছিল আশঙ্কাজনক। গত জুলাই ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠে উষ্ণতার দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ মাস। বিশেষ করে নরওয়েজিয়ান সাগর, উত্তর সাগরের কিছু অংশ ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।

আর্কটিক অঞ্চলের বরফের বিস্তার ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় ১০ শতাংশ কম, যা গত ৪৭ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। বরফ গলে যাওয়ার ফলে সূর্যের তাপ প্রতিফলিত না হয়ে সমুদ্রে শোষিত হয়, ফলে উষ্ণতা আরও বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর অতিরিক্ত তাপের প্রায় ৯০ শতাংশই শোষিত হয় সাগরের দ্বারা, যা ভবিষ্যতের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।

-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


জলবায়ু হুমকিতে রাষ্ট্র, অর্থের খোঁজে নাগরিকত্ব বেচাকেনা

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১০:২১:০৬
জলবায়ু হুমকিতে রাষ্ট্র, অর্থের খোঁজে নাগরিকত্ব বেচাকেনা
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রশান্ত মহাসাগরের এক নিঃসঙ্গ, ঊষর ও ক্ষয়িষ্ণু দ্বীপ রাষ্ট্র—নাউরু। একসময় বিশ্বের মাথাপিছু আয়ে অন্যতম শীর্ষে থাকা এই রাষ্ট্রটি এখন জলবায়ু বিপর্যয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পথে হেঁটেছে। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পে অর্থ জোগাড় করতে শুরু করেছে পাসপোর্ট বিক্রি। ‘ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স সিটিজেনশিপ প্রোগ্রাম’ নামক এই প্রকল্পে ১ লাখ ৫ হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে এক একটি ‘সোনালী পাসপোর্ট’।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির প্রথম বছরেই ৬৬টি পাসপোর্ট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নাউরু সরকার। তবে প্রথম ছয় মাসে বিক্রি হয়েছে মাত্র ছয়টি—দুইটি পরিবার ও চারজন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে নতুন নাগরিকত্ব। এর মাধ্যমে সরকারের প্রত্যাশিত আয় ছিল প্রথম বছরেই ৫ মিলিয়ন ডলার। তবুও হতাশ নন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড অ্যাডেয়াং। তিনি বলেন, “আমাদের নতুন নাগরিকদের স্বাগত জানাই, যাদের বিনিয়োগ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই ও সমৃদ্ধ একটি পথ তৈরি করবে।”

তবে এই পরিকল্পনাকে ঘিরে রয়েছে উদ্বেগ ও সন্দেহ। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, ২০০৩ সালে নাউরু যখন এ ধরনের নাগরিকত্ব বিক্রির চেষ্টা করেছিল, তখন আল-কায়েদার সদস্যরাও সে সুযোগ নিয়েছিল—যা শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা হুমকির দিকে গড়ায়। এবারও একটি আবেদন বাতিল করতে হয়েছে নিরাপত্তা যাচাইয়ে ‘নেগেটিভ ফাইন্ডিংস’ পাওয়ার পর। এর নেতৃত্বে থাকা এডওয়ার্ড ক্লার্ক জানিয়েছেন, আবেদনটি প্রত্যাহার করা না হলে তা নিশ্চিতভাবেই বাতিল করা হতো।

প্রথম পর্যায়ে যে ছয়টি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একটি ডুবাইয়ে বসবাসরত জার্মান এক পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। ক্লার্ক জানান, তারা ‘প্ল্যান বি’ হিসেবে দ্বিতীয় নাগরিকত্ব চেয়েছিল বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে। উল্লেখযোগ্য যে, নাউরুর এই পাসপোর্টধারীরা যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকংসহ ৮৯টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ সুবিধা পান।

বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশ বর্তমানে বিনিয়োগের বিনিময়ে অভিবাসনের সুযোগ দিচ্ছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার লোই ইনস্টিটিউট। প্যাসিফিক অঞ্চলের সামোয়া, টোঙ্গা ও ভানুয়াতুও পাসপোর্ট বিক্রির পথে হেঁটেছে ইতিপূর্বে।

নাউরু একটি ২১ বর্গকিলোমিটার ছোট্ট দ্বীপ—প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ক্ষুদ্র এক ফসফেটের পাহাড়। একসময় এর অত্যন্ত বিশুদ্ধ ফসফেট সম্পদ দেশটিকে বিশ্বসেরা ধনী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। তবে সেই সম্পদ এখন ফুরিয়ে এসেছে এবং গবেষকরা বলছেন, আজ প্রায় ৮০ শতাংশ ভূমি খননের কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাকি যেটুকু আছে, সেটিও সাগরের অগ্রাসনে হুমকির মুখে।

বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে ১.৫ গুণ দ্রুত হারে নাউরুতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির ৯০ শতাংশ মানুষকে স্থানান্তর করতে হতে পারে। প্রথম পর্যায়ের এই পূনর্বাসন প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য ব্যয় ৬০ মিলিয়ন ডলার।

বস্তুত, অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই নগণ্য ও বিপন্ন দ্বীপ রাষ্ট্র এখন নাগরিকত্বের বিনিময়ে হাত বাড়িয়েছে বৈশ্বিক ধনী ও নিরাপত্তা সন্ধানীদের দিকে। কিন্তু এই ‘প্ল্যান বি’ আর ‘সোনালী পাসপোর্ট’ সত্যিই নাউরুকে বাঁচাতে পারবে কিনা—সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


খাবার থেকে বৃষ্টির পানি—সবখানে ছড়িয়েছে ক্ষতিকর রাসায়নিক

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ০৯:০২:৪৫
খাবার থেকে বৃষ্টির পানি—সবখানে ছড়িয়েছে ক্ষতিকর রাসায়নিক
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক দূষণের হুমকি এখন এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, এটি জলবায়ু পরিবর্তনের মতোই মানবজাতি ও প্রকৃতির জন্য একটি বড় সংকটে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ বিষয়ে গুরুতর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে দুঃখজনকভাবে, এ নিয়ে এখনো পর্যাপ্ত জনসচেতনতা তৈরি হয়নি, এবং গৃহীত পদক্ষেপও রয়েছে খুবই সীমিত।

গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ইতিমধ্যে ১০ কোটির বেশি নতুন রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভাবিত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার থেকে সাড়ে তিন লাখ পর্যন্ত রাসায়নিক বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ রাসায়নিকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জানাশোনা খুবই কম।

ডিপ সায়েন্স ভেঞ্চার্স (ডিএসভি) নামের গবেষণা সংস্থাটি জানায়, আমাদের প্রতিদিনকার ব্যবহৃত পানি, বাতাস, খাবার, সাবান, শ্যাম্পু এবং অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রীতে এমন অনেক রাসায়নিক রয়েছে, যেগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে কোনো পরীক্ষাই করা হয়নি। এসব রাসায়নিক পদার্থ মানবদেহে দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয় ডেকে আনছে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, খাদ্য প্যাকেজিং ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত প্রায় ৩ হাজার ৬০০ ধরনের রাসায়নিক মানুষের শরীরে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্তত ৮০টি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। বিশেষভাবে উদ্বেগের বিষয় হলো—পিএফএএস (PFAS) নামের ‘ফরএভার কেমিক্যালস’ নামে পরিচিত এক শ্রেণির রাসায়নিক, যা একবার শরীরে প্রবেশ করলে সহজে বের হয় না। বিশ্বজুড়ে মানুষের শরীর এবং এমনকি বৃষ্টির পানিতেও এর উপস্থিতি ধরা পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর ৯০ শতাংশ মানুষ এমন বায়ু গ্রহণ করছে, যার দূষণের মাত্রা সহনীয় সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এই রাসায়নিকগুলোর কারণে মানুষের প্রজনন সক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, স্নায়ুতন্ত্র, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, যকৃত ও কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গবেষণাটি আরও জানায়, কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত এবং গর্ভধারণে জটিলতার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। এমনকি হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলা কিছু রাসায়নিক অতি সামান্য মাত্রাতেও ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রচলিত পরীক্ষায় ধরা পড়ে না।

এই গবেষণা প্লাস্টিক দূষণকেও একইভাবে উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে। ডিএসভি মনে করে, এখনই রাসায়নিক নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। তারা প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবন ও সমাধানের মাধ্যমে এই সংকট উত্তরণে কাজ করে যাচ্ছে।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান


যে সাত জেলায় ঝোড়ো হাওয়া, নদীবন্দরে সতর্কতা

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১০:১৬:৫১
যে সাত জেলায় ঝোড়ো হাওয়া, নদীবন্দরে সতর্কতা

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আবহাওয়া পরিস্থিতি আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তর যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে সাতটি জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। এ অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এই সতর্কতা দেশের সাগর নয়, অভ্যন্তরীণ নদীপথের জন্য জারি করা হয়েছে, যা নৌ-চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে এসব এলাকার নৌযান চলাচল ও পণ্য পরিবহনে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় প্রশাসন ও নৌচালকদেরকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (১৮ জুলাই) এবং শনিবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী তিন দিনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।

টানা বৃষ্টিপাতের এই পূর্বাভাস দেশের কৃষি, যোগাযোগ ও নগরজীবনে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে নিচু এলাকা, পাহাড়ি অঞ্চল ও সড়কপথে জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে পাহাড়ধসের ঝুঁকি এবং ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে যানজট ও জনদুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সবাইকে সর্বশেষ আবহাওয়ার হালনাগাদ তথ্য অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে নৌপথে চলাচলরত যাত্রী ও জেলেদের জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে, যেন কোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা ক্ষয়ক্ষতি না ঘটে।

ট্যাগ: আবহাওয়া

অবশেষে বিদ্যুৎ পাচ্ছে নাভাহো জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, মরুভূমির উত্তাপে কিছুটা স্বস্তি

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১০:৪৬:০০
অবশেষে বিদ্যুৎ পাচ্ছে নাভাহো জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, মরুভূমির উত্তাপে কিছুটা স্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা মরুভূমির জ্বলন্ত তাপের মধ্যে অবশেষে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন নাভাহো জাতিগোষ্ঠীর বাসিন্দারা। সম্প্রতি বিদ্যুৎকর্মীরা লালচে ধূলিধূসরিত মাটিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি বসিয়ে সংযোগ দিচ্ছেন ক্রিস্টিন শর্টির বাড়িতে—যা তাঁর কাছে অনেকটা স্বপ্নপূরণের মতো।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আদিবাসী এলাকা নাভাহো নেশন জুড়ে এখনো ১০ হাজারের বেশি পরিবার বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে এই অঞ্চলে অনেকেই তীব্র গরমে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনের মতো ন্যূনতম সহায়তাও পান না।

৭০ বছর বয়সী শর্টি বলেন, “আগে এত গরম হতো না। এখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। বিদ্যুৎ পেলে অন্তত ফ্যান চালিয়ে কিছুটা স্বস্তি পাব।”

টোনালিয়া নামের যে ছোট্ট গ্রামে তিনি থাকেন, তা এক সময় ছিল ঠাণ্ডা ও বৃষ্টিভেজা। এখন সেখানে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, বর্ষাকালের বৃষ্টিপাত কমে গেছে, ছোট ছোট মৌসুমি হ্রদ শুকিয়ে যাচ্ছে, আর গবাদিপশু পিপাসায় মরছে।

বর্তমানে শর্টির কাছে একটি ছোট জেনারেটর ও সৌরপ্যানেল আছে, যা দিয়ে তিনি টিভি চালানো, রান্না করা বা ফ্রিজ চালানোর মতো কাজ করেন। তবে একসঙ্গে সব চালানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া আমার জীবনে বিশাল পরিবর্তন আনবে। এটা অনেক সহজ করে দেবে জীবন।”

‘লাইট আপ নাভাহো’ প্রকল্প: বিদ্যুৎ পৌঁছানোর সংগ্রাম

সারা যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আওতায় আসে ১৯৩০-এর দশকে। কিন্তু নাভাহো নেশনে প্রথম বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শুরু হয় ১৯৬০-এর দিকে। এখনো অনেক এলাকা রয়ে গেছে অন্ধকারে।

নাভাহো ট্রাইবাল ইউটিলিটি অথরিটির (NTUA) মুখপাত্র ডিনিস বেসেন্তি বলেন, “এই অঞ্চলটা এতদিন অবহেলিত ছিল। অনেকেই জানতে চায়—যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ভেতরে কীভাবে এখনো কেউ বিদ্যুৎ ছাড়াই থাকে?”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে ‘লাইট আপ নাভাহো’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মীরা প্রতি বছর কয়েক সপ্তাহ নাভাহো অঞ্চলে গিয়ে কাজ করেন।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১,০০০ পরিবারের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। ২০১৯ সালের পর থেকে মোট ৫,০০০ পরিবার পেয়েছে নতুন সংযোগ। তবে বাকি ১০,০০০ পরিবারকে সংযুক্ত করতে আরও অন্তত ২০ বছর সময় লাগবে—যদি অতিরিক্ত অর্থ না আসে।

তাপপ্রবাহে মৃত্যু, দীর্ঘ অপেক্ষার ক্ষোভ

৫৪ বছর বয়সী এলবার্ট ইয়াজ্জি টিউবা সিটিতে থাকেন। তাঁর মোবাইল হোমটি গ্রীষ্মে চুল্লির মতো গরম হয়ে ওঠে। অতীতে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য গরমে হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন।

“আগে গরম ভালো লাগত। এখন বয়স বাড়ায় শরীর আর সহ্য করতে পারে না,” তিনি বলেন।

সপ্তাহখানেক হলো তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে। তিনি পুরোনো তিনটি বাতিল কুলার জোড়াতালি দিয়ে একটা কার্যকর "সোয়াম্প কুলার" বানিয়েছেন। এখন তিনি ঘরে বসেই আরামে টিভি দেখতে পারেন, ঠাণ্ডা পানীয় পান করতে পারেন।

তবে অনেকেই এখনো সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

৪২ বছর বয়সী গিলবার্টা কোর্তেস বলেন, “আমার মা-বাবাকে তরুণ বয়সে বিদ্যুতের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনোদিন তা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন আমার বাড়ির সামনে খুঁটি বসেছে, কিন্তু আমি এখনো সন্দিহান। অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি, বাস্তব খুব কম দেখেছি। আমি এখনো রাগান্বিত।”

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


দুধ কমাচ্ছে গরম: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে খামারে

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৫:৪৭:৪৭
দুধ কমাচ্ছে গরম: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে খামারে

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান তাপদাহ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দুগ্ধ উৎপাদন খাতে বড় ধরনের হুমকি তৈরি হয়েছে—সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে। ইসরায়েলের জেরুজালেম ও তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই গবেষণাটি জানিয়েছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার প্রভাবে দুধ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস ঘটে।

দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি গরুর তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, মাত্র এক ঘণ্টার জন্য যদি 'ওয়েট বাল্ব' তাপমাত্রা—যা তাপমাত্রা ও আদ্রতার সমন্বিত সূচক—২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকে, তাহলে প্রতিটি গরুর দৈনিক দুধ উৎপাদন ০.৫% হ্রাস পায়। শুধু তা-ই নয়, অতিরিক্ত গরমের প্রভাব একদিনেই শেষ হয় না; গরমের দিনের ১০ দিন পরেও দুধ উৎপাদনে প্রভাব পড়ে।

প্রতিবেদনটি বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় দুধ উৎপাদন প্রতিদিন গড়ে ৪% হ্রাস পেতে পারে। এই ক্ষতি সবচেয়ে বেশি অনুভব করবে সেই ১৫ কোটি পরিবার, যাদের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে দুধ উৎপাদনের ওপর।

বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি এক গভীর সতর্কবার্তা। কারণ আগামী এক দশকে বিশ্বের দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির অর্ধেকের বেশি এই অঞ্চল থেকেই আসবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে, এই অঞ্চলটি দ্রুতবর্ধমান তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতেও রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যাপক ব্যবহারে বিশ্ব উষ্ণায়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে গবাদি পশু এবং দুধ উৎপাদনে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, গবাদিপশু মানবসৃষ্ট মিথেন গ্যাস নিঃসরণের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী, যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতোই জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে।

ইতোমধ্যে অনেক কৃষক বিশেষ করে ইসরায়েলে বিভিন্ন অভিযোজন পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। প্রায় সব খামারে গরুদের জন্য ছায়া নিশ্চিত করা, পানি ছিটানোর ব্যবস্থা, এবং শীতলকরণ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে গবেষণা বলছে, তাপমাত্রা যখন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, তখন এসব ব্যবস্থা মাত্র ৪০% পর্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

গবেষণার প্রধান লেখক ক্লেয়ার পালান্দ্রি বলেন, “শুধু গরু ঠান্ডা রাখলেই হবে না, তাদের ওপর যে মানসিক চাপ থাকে—যেমন দীর্ঘদিন আবদ্ধ থাকা বা বাচ্চাদের কাছ থেকে আলাদা করা—সেগুলোও কমাতে হবে। কারণ মানসিক চাপে গরুর তাপ সহনশীলতা কমে যায় এবং দুধ উৎপাদন আরও হ্রাস পায়।”

বিশ্বব্যাপী টেকসই কৃষিনীতির অংশ হিসেবে, জলবায়ু সহনশীল ও প্রাণীকল্যাণকেন্দ্রিক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


লাতাকিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আগুন, উদ্ধার কাজে বাধা মাইন

পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১০:৫২:৩৪
লাতাকিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আগুন, উদ্ধার কাজে বাধা মাইন

সিরিয়ার উপকূলীয় প্রদেশ লাতাকিয়ায় ভয়াবহ দাবানলের কারণে স্থানীয় গ্রামগুলো থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে উদ্ধারকারী দল। শুক্রবার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন লাতাকিয়া প্রদেশের দুর্যোগ ও জরুরি বিভাগের পরিচালক আব্দুলকাফি কায়্যাল।

গত কয়েকদিন ধরেই উপকূলীয় অঞ্চলসহ সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়েছে। শক্তিশালী বাতাস এবং দীর্ঘস্থায়ী খরার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। বিশেষ করে কাস্তাল মাআফ অঞ্চলের কাছে কয়েকটি গ্রামে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান কায়্যাল।

সিরিয়ার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, দাবানলের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া এখন উপকূলীয় পাহাড়ের উত্তর অংশ, হামা শহর ও তার আশপাশের এলাকা এবং দক্ষিণ ইদলিব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। তারা আরও জানায়, লাতাকিয়া অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফল বাগান এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, কেউ যদি সন্দেহভাজনভাবে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে, তাহলে যেন সঙ্গে সঙ্গে তা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

সিরিয়ার জরুরি অবস্থাবিষয়ক মন্ত্রী রায়েদ আল-সালেহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানান, “আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।”

বিশ্বজুড়ে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দাবানল ও খরার যে প্রবণতা বেড়েছে, তার অন্যতম শিকার হয়ে উঠেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াও। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ ও অস্বাভাবিকভাবে কম বৃষ্টিপাতের সঙ্গে লড়ছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) গত জুনে জানিয়েছে, “গত ৬০ বছরে সিরিয়ায় এমন ভয়াবহ জলবায়ু পরিস্থিতি দেখা যায়নি।” সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এই নজিরবিহীন খরা ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষকে খাদ্যসংকটের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

দীর্ঘ এক দশকের গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিধ্বস্ত দেশটির জন্য এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরও দুর্দশা ডেকে আনছে। উদ্ধারকারীদের কাজকে আরও কঠিন করে তুলছে যুদ্ধকালে পড়ে থাকা অবিস্ফোরিত মাইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য, যা আগুনের বিস্তারের পথেও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

এমতাবস্থায় লাতাকিয়ার দাবানল কেবল পরিবেশ নয়, মানুষের জীবন ও খাদ্যনিরাপত্তার ওপরও বড়সড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন দেখার বিষয়—এই সংকট কত দ্রুত ও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে সিরীয় কর্তৃপক্ষ।

-এম জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন... বিস্তারিত