ইরান- ইসরায়েল সংঘাত
ইরানকে নিয়ে পুতিনের নতুন ঘোষণা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার (২৩ জুন) মস্কোয় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বলেছেন, ইরানের জনগণের প্রতি রাশিয়ার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে মস্কো সবধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে যেসব সামরিক আগ্রাসন চালানো হয়েছে, তা একেবারেই ‘ভিত্তিহীন’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।
মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। বৈঠকের শুরুতেই আরাঘচি পুতিনকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান করেন এবং সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রীয় হামলার বিরুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “রাশিয়া আজ ইতিহাসের সঠিক পক্ষে দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আপনারা যেমন স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন, তা কেবল ইরানের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য একটি বার্তা বহন করে।”
পুতিন তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা জানি ইরান কী ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা এটাও দেখছি, কীভাবে কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি একতরফাভাবে ইরানের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া শুধু নীতিগত সমর্থন নয়, প্রয়োজনে সরাসরি সহায়তা দিতেও প্রস্তুত।” পুতিন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক নীতিনৈতিকতার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানের বিরুদ্ধে যে আচরণ করছে, তা বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক।
এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, সপ্তাহব্যাপী ইরানে চালানো মার্কিন হামলার ব্যাপারে রাশিয়া গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এটি স্পষ্টতই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, “আমরা কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে চেষ্টা করছি। তবে আমরা এই বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত আছি তা নির্ভর করবে ইরানের প্রয়োজনীয়তার ওপর।” পেসকভ আরও বলেন, রাশিয়া চাইছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা হ্রাস পাক, এবং এ জন্য তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার এই অবস্থান কেবল সাময়িক কূটনৈতিক বার্তা নয়, বরং এটি বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক কৌশলের অংশ। রাশিয়া ও ইরান উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও চাপের মুখে রয়েছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দিন দিন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে। রাশিয়ার এই বার্তা এমন এক সময় এলো, যখন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়েছে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমন্বিত সামরিক পদক্ষেপের গুঞ্জন তীব্র হয়েছে।
রাশিয়ার এই সক্রিয় অবস্থান কেবল ইরানের পক্ষে কূটনৈতিক শক্তি বাড়ায় না, বরং মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও তা একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সহানুভূতিশীল ও প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান রাশিয়ার জন্য পশ্চিমবিরোধী জোটকে আরও সংহত করতে সহায়ক হবে, যা ভবিষ্যতের কৌশলগত ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
সার্বিকভাবে, পুতিন-আরাঘচি বৈঠক ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, রাশিয়া শুধু কথা বলেই নয়, প্রয়োজনে কার্যকর সহায়তার প্রস্তুতি নিয়েই ইরানের পাশে দাঁড়াতে চায়। এখন প্রশ্ন উঠেছে রাশিয়ার এই অবস্থানের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র রাষ্ট্রগুলো কী ধরনের কূটনৈতিক বা সামরিক কৌশল গ্রহণ করবে। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকট যে বহুপাক্ষিক সংঘাত ও পুনর্গঠনের দিকে এগোচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই।
-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক
পুতিনের প্রেমের কবুলনামা: কার প্রেমে মজেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট?
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে তিনি বর্তমানে কারো সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই চরম গোপনীয়তা বজায় রাখা এই শক্তিশালী নেতা মস্কোয় আয়োজিত তার ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেন। তবে প্রেমের কথা স্বীকার করলেও তার সেই প্রেমিকার পরিচয় বা সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে সাফ অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। পুতিনের এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু স্পষ্ট স্বীকারোক্তি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এক সাংবাদিক পুতিনের কাছে জানতে চান যে তিনি ‘প্রথম দেখায় প্রেমে’ বিশ্বাস করেন কিনা। এর উত্তরে ইতিবাচক জবাব দেওয়ার পর সরাসরি তার নিজের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুতিন কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলেন যে তিনি প্রেম করছেন। ২০১৪ সালে দীর্ঘদিনের স্ত্রী লিউডমিলা পুতিনার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে পুতিনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা গুজব ডালপালা মেললেও এবারই প্রথম তিনি নিজে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে গুঞ্জন রয়েছে যে অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী জিমন্যাস্ট আলিনা কাবায়েভার সঙ্গে তার দীর্ঘ ১৮ বছরের গোপন সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সন্তানও রয়েছে। তবে ক্রেমলিন বা পুতিন নিজে কখনোই এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেননি।
সংবাদ সম্মেলনের এই গম্ভীর রাজনৈতিক আবহে এক অভূতপূর্ব মানবিক মুহূর্তের সৃষ্টি হয় যখন কিরিল বাঝানোভ নামে এক তরুণ সাংবাদিক ‘আমি বিয়ে করতে চাই’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। পুতিন বিষয়টি লক্ষ্য করে ঠাট্টার ছলে মন্তব্য করেন যে ওই সাংবাদিক যেন রেজিস্ট্রি অফিসে যাওয়ার জন্যই পোশাক পরে এসেছেন। এই সুযোগে কিরিল সরাসরি লাইভ সম্প্রচারে তার প্রেমিকা ‘ওলেচকা’কে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং সম্মেলনে উপস্থিত থাকা পুতিনকেও তার বিয়েতে আমন্ত্রণ জানান। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে খবর আসে যে ওই তরুণী বিয়ের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন যা পুরো হলের গাম্ভীর্য কাটিয়ে কিছুটা আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করে।
বিশ্লেষকদের মতে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তপ্ত সম্পর্কের মাঝে পুতিনের এমন ব্যক্তিগত ও নমনীয় আলাপ মূলত তার ভাবমূর্তিকে কিছুটা মানবিক করার একটি কৌশল হতে পারে। ৭৩ বছর বয়সী এই রুশ নেতা এর আগেও একাধিকবার জানিয়েছেন যে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনে কারো হস্তক্ষেপ পছন্দ করেন না এবং একে সম্মান করা উচিত। তবে বছরের শেষ প্রান্তের এই সংবাদ সম্মেলনে তার প্রেমের অকপট স্বীকারোক্তি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে হয়তো তিনি তার দীর্ঘদিনের গোপনীয়তার দেয়াল ধীরে ধীরে কিছুটা শিথিল করতে চাইছেন।
কোলের শিশু কেন ফর্সা? ভিক্ষুক নারীকে ঘিরে তুলকালাম
ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় একটি কোলের শিশুকে নিয়ে ভিক্ষা করতে বেরিয়ে এক নারী চরম হেনস্তা ও জনরোষের শিকার হয়েছেন। ওই নারী ও তার কোলের শিশুর গায়ের রঙের মধ্যে ব্যাপক অসামঞ্জস্য থাকার কারণে পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। আগ্রার ব্যস্ততম সারাফা মার্কেটে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। উত্তেজিত জনতার অনেকেরই দাবি ছিল যে শিশুটি হয়তো চুরি করা বা পাচারকৃত কোনো পরিবারের সন্তান।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন পরনে সোয়েটার এবং কাপড়ে মুখ ঢাকা এক মলিন চেহারার নারীকে রাজপুত্রের মতো সুন্দর একটি শিশু কোলে নিয়ে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। ওই নারীর গায়ের রং কিছুটা চাপা হলেও শিশুটি ছিল ফটিকের মতো ফর্সা ও অত্যন্ত সুন্দর। এই বৈপরীত্য দেখে মার্কেটে আসা ব্যক্তিরা ওই নারীকে ঘিরে ধরেন এবং শিশুটির পরিচয় নিয়ে জেরা শুরু করেন। পরিস্থিতি এক পর্যায়ে এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অনেকেরই বিশ্বাস ছিল যে মলিন পোশাকের ওই নারীর পক্ষে এত সুন্দর সন্তানের মা হওয়া অসম্ভব।
খবর পেয়ে আগ্রা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে যে ওই নারী একটি মেডিকেল কলেজের কাছে অস্থায়ী ঝুপড়িতে বসবাস করেন। তার স্বামী একজন দিনমজুর এবং তাদের সংসারে মোট চারটি সন্তান রয়েছে। জনরোষের মুখে পুলিশ ওই নারীর পরিচয় এবং শিশুটির মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও জন্মসংক্রান্ত প্রমাণাদি তলব করে।
যাবতীয় তথ্য এবং জন্মসনদ পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই শেষে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে ওই শিশুটি ওই নারীরই গর্ভজাত সন্তান। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে কেবল গায়ের রঙের অমিলের কারণে কোনো নাগরিককে এভাবে হেনস্তা করা আইনত দণ্ডনীয়। তদন্ত শেষে সত্য সামনে আসায় উত্তেজিত জনতা শান্ত হয় এবং শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী তার গন্তব্যে ফিরে যান। এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্ণবৈষম্য এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এক তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বড় সাজা পেলেন ইমরান-বুশরা: পাকিস্তান রাজনীতিতে নতুন মোড়
পাকিস্তানের রাজনীতিতে আবারও বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। তোশাখানা-২ মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) আদিয়ালা কারাগারে আয়োজিত এক বিশেষ শুনানিতে স্পেশাল জজ সেন্ট্রাল শাহরুখ আরজুমন্দ এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি এই দম্পতিকে ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে যা পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইমরান খানের জন্য বড় একটি আইনি বিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে যে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ৩৪ ও ৪০৯ ধারায় উভয়কে ১০ বছর করে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ ধারায় অতিরিক্ত ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় বিচারক উল্লেখ করেন যে ইমরান খানের বয়স এবং বুশরা বিবি একজন নারী হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত তুলনামূলক নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে। এছাড়া উভয় দণ্ডপ্রাপ্তকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৮২-বি ধারার সুবিধাও প্রদান করা হয়েছে। এই মামলার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল সৌদি যুবরাজের কাছ থেকে পাওয়া বুলগারি ব্র্যান্ডের একটি অত্যন্ত মূল্যবান গয়নার সেট যা তোশাখানায় জমা না দিয়ে কম মূল্যে নিজেদের কাছে রাখার অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এফআইএ-র নথি অনুযায়ী ওই গয়না সেটটির প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৭ কোটি ১০ লাখ রুপি। তবে অভিযুক্তরা প্রভাব খাটিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেটটির মূল্য মাত্র ৫৯ লাখ রুপি দেখিয়েছিলেন। গয়নার সেটটিতে একটি নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুল অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই মামলায় প্রায় ৮০টিরও বেশি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে ২৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে ইমরান খানের সাবেক প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ইনাম শাহের প্রভাব খাটিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের মাধ্যমে গয়নার সেটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কম দেখানো হয়েছিল।
ইমরান খান ও বুশরা বিবি গত মাসেই উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন তবে আজকের এই রায়ের ফলে তাদের পুনরায় দীর্ঘ সময় কারান্তরীণ থাকতে হবে। পিটিআই সমর্থকরা এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করলেও প্রসিকিউশন বলছে যে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের আসন্ন রাজনৈতিক সমীকরণ এবং ইমরান খানের মুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
হাদি হত্যার স্বচ্ছ তদন্ত চাইল জাতিসংঘ: জেনেভা থেকে কড়া বার্তা
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক এবং জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রসেনানী শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান যে ওসমান হাদির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জাতিসংঘের সর্বোচ্চ মহলের নজরে এসেছে এবং মহাসচিব এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। গুতেরেস বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুসরণ করে এই ঘটনার একটি দ্রুত নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনার জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক জানান যে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ। এই প্রেক্ষাপটে মহাসচিব সকল রাজনৈতিক পক্ষকে যে কোনো ধরনের সহিংসতা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে উত্তেজনা কমাতে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে যাতে দেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বজায় থাকে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে এই ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর বিচার হওয়া আবশ্যক।
এর আগে শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জেনেভা থেকে একটি বিশেষ বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক। বিবৃতিতে তিনি বলেন যে গত বছর বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের খবরে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। গত ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদির প্রয়াণকে তিনি একটি বড় ক্ষতি হিসেবে অভিহিত করেন। ফলকার তুর্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে প্রতিশোধ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা কেবল সমাজের বিভেদকে আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং সবার মৌলিক মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ অনুসন্ধানে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সৌদি আরবে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর
সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মোট ৫০০টি বৃত্তি প্রদান করা হবে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দূতাবাস জানায়, সৌদি আরবে বর্তমানে ৩০টি সরকারি এবং ১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলো আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা প্রদান করে আসছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি ও ডিপ্লোমা পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের মতো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এসব কোর্সে পূর্ণ বৃত্তি সুবিধাসহ অধ্যয়নের সুযোগ পাবেন।
বৃত্তির আওতায় যেসব বিষয়ে পড়াশোনা করা যাবে তার মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, শিক্ষা, আইন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ, ধর্ম ও ভাষা শিক্ষা, কৃষি, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল। মোট ১০টি বিষয়ের ওপর এই বৃত্তি কার্যক্রম প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষাগত স্তর অনুযায়ী আবেদনকারীদের বয়সসীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে। স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ বছর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য বয়সসীমা ৩৫ বছর।
বৃত্তির আওতায় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পড়ার সুযোগ পাবেন, তার মধ্যে রয়েছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব মদিনা, কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সৌদ ইউনিভার্সিটি, তায়েফ ইউনিভার্সিটি, নর্দার্ন বর্ডার ইউনিভার্সিটি, হাইল বিশ্ববিদ্যালয়, নাজরান বিশ্ববিদ্যালয়, জাযান বিশ্ববিদ্যালয়, উম্মুল ক্বোরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আগে সৌদি আরবের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হতো। তবে নতুন ব্যবস্থায় এই প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। এখন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে পছন্দের যেকোনো তিনটি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যাচাই শেষে মেধা ও নির্ধারিত কোটার ভিত্তিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হবে।
এই উদ্দেশ্যে সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে “Study in Saudi” নামে একটি একক অনলাইন আবেদন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সৌদি বৃত্তি সংক্রান্ত সব তথ্য ও আবেদন প্রক্রিয়া জানতে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবেন।
-রফিক
গাজায় ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি: ইসরাইলি গোলার আঘাতে ঝরল প্রাণ
ফিলিস্তিনের গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় একটি স্কুলভিত্তিক আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরাইলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থার পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন যে গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলীয় তুফাহ এলাকার গাজা মার্টায়ার্স স্কুলে অবস্থিত আশ্রয়কেন্দ্রটি লক্ষ্য করে ইসরাইলি সেনারা গোলাবর্ষণ করে। সেখান থেকে ইতিমধ্যে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এই হামলার বিষয়ে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তারা দাবি করেছে যে উত্তর গাজা উপত্যকার তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’-এর পশ্চিমে কমান্ড কাঠামোর কাছে কয়েকজন ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তি’ শনাক্ত করা হয়েছিল। সেনাদের ভাষ্য অনুযায়ী হুমকির আশঙ্কা দূর করতে তারা ওই ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে বেসামরিক হতাহতের খবরের বিষয়ে তারা অবগত এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী তাদের বিবৃতিতে অসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানোর দাবি করেছে।
গাজার এই রক্তক্ষয়ী ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল যখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলি বাহিনী বর্তমানে ‘ইয়েলো লাইন’-এর পূর্ব দিকে অবস্থান নিয়েছে। তবে গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতি বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইল ও হামাস উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা আশঙ্কা করছেন যে দুই পক্ষই শান্তি প্রক্রিয়াটিকে দীর্ঘায়িত বা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে যা গাজার সাধারণ মানুষের জন্য নতুন করে মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
মরুভূমির দেশে সাদা চাদর, তুষারে ঢাকল সৌদি পাহাড়
সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত তাবুক ও হাইল অঞ্চলসহ কয়েকটি এলাকায় বিরল তুষারপাতের ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল ও আনন্দের সৃষ্টি করেছে। সাধারণত মরুপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে এমন আবহাওয়াজনিত দৃশ্য খুবই অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজ জানায়, তাবুক ও হাইলের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে তুষারপাত হয়েছে। বিশেষ করে জর্ডান সীমান্তবর্তী জাবাল আল লজের উঁচু পাহাড়ি এলাকা সম্পূর্ণভাবে বরফে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। হঠাৎ এই তুষারপাত দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ সেখানে ছুটে যান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে তুষারাবৃত পাহাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলছেন, আবার অনেকে ঐতিহ্যবাহী আরবি সংগীতের তালে নাচে মেতে উঠেছেন। এমনকি কয়েকজন পর্যটককে সেখানে অ্যাডভেঞ্চারমূলক কার্যক্রম, যেমন স্কাই ডাইভিংয়েও অংশ নিতে দেখা গেছে।
জাবাল আল লজ সৌদি আরবের অন্যতম উচ্চভূমি হিসেবে পরিচিত। এবারের তুষারপাতের ফলে পাহাড়টির বিস্তীর্ণ অংশ সাদা চাদরে ঢাকা পড়ে, যা এলাকাটিকে এক অনন্য শীতকালীন সৌন্দর্যে রূপ দিয়েছে।
সৌদি আরবের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের আরও কয়েকটি স্থানে তুষারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানী রিয়াদের নিকটবর্তী আল ঘাট এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাদের জীবনে এমন দৃশ্য দেখা অত্যন্ত বিরল। অনেকের মতে, কয়েক দশকের মধ্যে এটিই প্রথমবার ওই এলাকায় তুষারপাতের ঘটনা।
-রাফসান
হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জুলাই বিপ্লবের অগ্রসেনানী এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের দৃঢ় কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার মৃত্যু ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণবিক্ষোভ এবং সহিংস ঘটনার খবর গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে হাদির মৃত্যুকে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের শিরোনামে বলা হয়, “বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভের এক নেতার সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মৃত্যু।” প্রতিবেদনে জানানো হয়, চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আল জাজিরা আরও উল্লেখ করে যে, হাদির মৃত্যুর খবরে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার খবর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে ভারতের একাধিক শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করে, “ছাত্রনেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশ উত্তাল, গণমাধ্যম কার্যালয়ে আগুন।” প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি দ্রুত অস্থির হয়ে ওঠে এবং সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলার ঘটনাও ঘটে।
ভারতের আরেক প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন স্থানে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে।
দ্য হিন্দু পত্রিকা তাদের শিরোনামে উল্লেখ করে, “তরুণ নেতা হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা, সংবাদমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ।” প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
কলকাতাভিত্তিক দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ পরিস্থিতিকে ‘রাতভর উত্তাল’ হিসেবে বর্ণনা করে। শিরোনামে তারা উল্লেখ করে, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও হামলার খবর তুলে ধরা হয়।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম জিও টিভি জানায়, তরুণ রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
-রাফসান
৭১-এর পর ভারতের বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। কংগ্রেস এমপি শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, যদিও পরিস্থিতি এখনই সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার দিকে ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কা নেই, তবুও এই পরিস্থিতিতে ভারতকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশ-ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান টানাপড়েনের জন্য বাংলাদেশে তথাকথিত ইসলামী মৌলবাদীদের উত্থান, চীনা ও পাকিস্তানি প্রভাব বৃদ্ধি এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আধিপত্যের পতনকে দায়ী করা হয়েছে।
কমিটির প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে বলা হয়েছে, একাত্তরের চ্যালেঞ্জটি ছিল অস্তিত্বগত, মানবিক এবং একটি নতুন জাতির জন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু বর্তমান চ্যালেঞ্জটি আরও গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদি। এটিকে তারা প্রজন্মগত বিচ্ছিন্নতা, রাজনৈতিক শৃঙ্খলার পরিবর্তন এবং ভারত থেকে দূরে সরে গিয়ে একটি সম্ভাব্য কৌশলগত পুনর্বিন্যাস হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভারত যদি এই মুহূর্তে ঢাকার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নতুন করে সাজাতে বা পুনর্বিন্যাস করতে ব্যর্থ হয়, তবে নয়াদিল্লি বাংলাদেশে তার কৌশলগত গুরুত্ব হারাতে পারে। অর্থাৎ, বাংলাদেশে ভারত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়ার মতো ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
ভারতীয় সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের অবকাঠামো, বন্দর উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে চীনের উপস্থিতি তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে কমিটি মোংলা বন্দর, লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি এবং পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির সম্প্রসারণের মতো প্রকল্পগুলোর কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন বর্তমানে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে, যার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে। এমনকি এই ইসলামী দলটির প্রতিনিধিরা চীন সফর করেছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এমতাবস্থায় কমিটি ভারত সরকারের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ পেশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশে যাতে কোনো বিদেশি শক্তি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে না পারে, সে বিষয়ে ভারতকে কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সংযোগ, বন্দর ব্যবহারের সুযোগ এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি সুবিধা প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে প্যানেলটি জানিয়েছে, এর ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, যা ভারতের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলেছে।
পাঠকের মতামত:
- শীতের বুকে জমা কফ দূর করবে তুলসী চা: জানুন জাদুকরী গুণ
- ছয় বীর শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন: শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত সেনানিবাস
- হাদি কেন খুনের শিকার হলেন? রহস্য জানালেন জামায়াতে ইসলামী আমির
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- পুতিনের প্রেমের কবুলনামা: কার প্রেমে মজেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট?
- জন্মদিনে এমবাপের মাইলফলক: রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসালেন ফরাসি তারকা
- তরঙ্গের প্রকারভেদ ও বৈজ্ঞানিক আচরণে সহজ ব্যাখ্যা
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- জল্পনার অবসান, বাগেরহাটে কাকে কাকে মনোনয়ন দিল বিএনপি
- ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া তারেক রহমান: ঢাকায় গোপন বৈঠক
- রবিবার রাজধানীর কোন কোন মার্কেট বন্ধ থাকছে
- গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ: মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা
- হাদি হত্যা ও অরাজকতায় বৈশ্বিক উদ্বেগ: কড়া বার্তা জাতিসংঘের
- বিপিএলের টিকিট কিনবেন যেভাবে, দাম কত
- আজ ইসিতে তিন বাহিনী প্রধানের বৈঠক
- ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় সময়সূচি পরিবর্তন, যেদিন হবে
- হঠাৎ কেন বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট? জানুন সমাধান
- আজকের নামাজ, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তর সময়সূচি প্রকাশ
- ঢাকায় আজ কেমন থাকবে আবহাওয়া? জানাল অধিদপ্তর
- আজ কোন খেলা কখন? জেনে নিন সময়সূচি
- নির্বাচন নিয়ে বড় বৈঠক: তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বসছে ইসি
- কোলের শিশু কেন ফর্সা? ভিক্ষুক নারীকে ঘিরে তুলকালাম
- অনিদ্রা ও ক্লান্তি দূর হবে: রাতে ঘুমানোর আগে সেরা ৫টি খাবারের তালিকা
- ভাষার দেয়াল ভাঙল গুগল: হেডফোনে সরাসরি শোনা যাবে ৭০ ভাষা
- আধুনিক জীবনযাত্রায় বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব: বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
- বড় সাজা পেলেন ইমরান-বুশরা: পাকিস্তান রাজনীতিতে নতুন মোড়
- আপনি জিতে গেছেন হাদি: তারকাদের আবেগঘন বার্তা
- সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে, গুড়ের চা পানের অবিশ্বাস্য ৪ উপকারিতা
- দিল্লী না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা: হাদি হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ
- জাতীয় নির্বাচনের সংশোধিত তফসিল ঘোষণা
- এমিরেটস ফ্লাইটে দেশে ফিরলেন সুদান সীমান্তে শহীদ ৬ বীর সেনা
- মার্কা যাই হোক আমি নির্বাচন করবই: রুমিন ফারহানা
- ইনকিলাব মঞ্চের ২৪ ঘণ্টার চূড়ান্ত আলটিমেটাম
- বীর উত্তম এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোকবার্তা
- নজরুল মাজার প্রাঙ্গণে চিরনিদ্রায় ওসমান হাদি
- বিএনপি গণতন্ত্রের রক্ষক, ভক্ষক নয়: মির্জা আব্বাস
- প্রবাসীদের জন্য আজকের রিংগিত রেট ও পরামর্শ
- ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে সেরা ৫ ইনডোর প্ল্যান্ট
- জানাজার নামাজে কী পড়বেন, কী করবেন না
- হাদি হত্যার স্বচ্ছ তদন্ত চাইল জাতিসংঘ: জেনেভা থেকে কড়া বার্তা
- যেখানে হাদির কবর খনন করা হয়েছে
- সংসদ ভবনে মানুষের ঢল: শহীদ হাদির জানাজায় লাখো মানুষের ভিড়
- সৌদি আরবে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর
- হাদির জানাজা পড়াবেন বড় ভাই: সংসদ ভবনে শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি
- অ্যাভাটারের নতুন ট্রেলারে ক্রিস ইভান্স: উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া
- মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় জানাজার দোয়া ও এর তাৎপর্য
- ২০৩৫ সালে চাঁদে ফুটবল ম্যাচ? বিজ্ঞানীদের অবিশ্বাস্য দাবি
- গাজায় ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি: ইসরাইলি গোলার আঘাতে ঝরল প্রাণ
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর আলম শান্ত
- ডলারসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার আজকের বিনিময় হার
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- আইপিএল নিলামে তোলপাড়: রেকর্ড দামে বিক্রি ফিজ
- মাত্র ৫টি অভ্যাসে জব্দ হবে ডায়াবেটিস








