ইরান- ইসরায়েল সংঘাত

পারমাণবিক লিক ঠেকাতে ইরানে জরুরি সতর্কতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২১ ১৯:৫৭:৩৩
পারমাণবিক লিক ঠেকাতে ইরানে জরুরি সতর্কতা

ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো, বিশেষ করে পরমাণু স্থাপনায় ধারাবাহিক হামলার প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইরানের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. আলী জাফারিয়ান। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ইসরায়েল ‘অপ্রচলিত অস্ত্র’ ব্যবহার করেছে এমন কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে পরমাণু চুল্লিতে হামলা হলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

ড. জাফারিয়ান বলেন, “আমরা আশা করি সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে না, তবে যদি পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু হয় এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে, তবে তার মোকাবিলায় আমাদের একটি প্রস্তুত কাঠামো রয়েছে।” তিনি জানান, পারমাণবিক দুর্ঘটনার সম্ভাব্য চিকিৎসা চাহিদা মেটাতে স্বাস্থ্য বিভাগ বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম এবং প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখছে।

তিনি আরও জানান, চলমান সংঘাতে ইতোমধ্যে তিনটি হাসপাতাল ইসরায়েলি হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে কেরমানশাহ প্রদেশের একটি হাসপাতাল পুরোপুরি খালি করে দেওয়া হয়েছে রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে। জাফারিয়ান বলেন, “এগুলো সবই বেসামরিক লক্ষবস্তু। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত—বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও আন্তর্জাতিক রেডক্রসের—ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে তারা বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করে।”

তবে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা জানি, গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হত্যাযজ্ঞ বন্ধে এ সংস্থাগুলো সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাই এখানেও তাদের কাছ থেকে বড় কিছু প্রত্যাশা করি না।”

আটদিনের ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৩,৫০০–এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানান উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুতরভাবে দগ্ধ ও বিকলাঙ্গ অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা শুধুই সামরিক নয়, বরং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত নিরাপত্তার জন্যও তা এক ভয়াবহ সংকেত। বিশেষ করে যদি ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে থাকে বা চালায়, তবে তা পুরো অঞ্চলের জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই মুহূর্তে ইরানজুড়ে বিভিন্ন প্রদেশে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জরুরি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যাতে তারা বিপুলসংখ্যক আহত ব্যক্তি ও সম্ভাব্য তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত রোগী মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে তেহরানের বার্তা পরিষ্কার: বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

সূত্র: আল জাজিরা


ইমরান খানের দলের সাথে শর্তসাপেক্ষ সংলাপে রাজি শাহবাজ শরিফ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ০৯:৪৪:৪৭
ইমরান খানের দলের সাথে শর্তসাপেক্ষ সংলাপে রাজি শাহবাজ শরিফ
ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই-এর সাথে আলোচনার আহ্বান গ্রহণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানী ইসলামাবাদে ফেডারেল মন্ত্রিসভার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই ঘোষণা দেন। তবে এই সংলাপের জন্য তিনি পিটিআই-এর সামনে বিশেষ শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে বিরোধী দল যদি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় সত্যিকার অর্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় এবং সংলাপে আন্তরিক থাকে তবেই সরকার আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে শাহবাজ শরিফ স্পষ্ট করে বলেন যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বা সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধীদের সাথে আলোচনা এগিয়ে নিতে চান। এর আগেও তিনি একাধিকবার ইমরান খানের দলের প্রতি আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে এবার তিনি কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে সংলাপের নামে কোনো ধরণের অবৈধ দাবি কিংবা সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণ করা হবে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে এই সংলাপ সফল হলে পাকিস্তানে গত কয়েক বছর ধরে চলা চরম উত্তেজনা প্রশমিত হতে পারে এবং আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।

বৈঠকে কেবল রাজনীতি নয় বরং দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্গঠনেও দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য নেওয়া প্রতিটি ইতিবাচক উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানাবেন তবে তা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থে হতে হবে। সংস্কারের অংশ হিসেবে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স বা পিআইএ-এর বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া শুরুকে তিনি এক ঐতিহাসিক ধাপ হিসেবে অভিহিত করেন। এই প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শাহবাজ শরিফ জানান যে সর্বোচ্চ দরদাতাকেই সফল ঘোষণা করা হবে যাতে জনগণের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

বর্তমানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে পিটিআই এবং সরকারের মধ্যে যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে তা নিরসনে এই সংলাপের প্রস্তাবকে একটি ইতিবাচক মোড় হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। শাহবাজ শরিফ পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন যে দেশের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতার স্বার্থে সরকার আলোচনার পথ সবসময় খোলা রেখেছে। এখন বল মূলত পিটিআই-এর কোর্টে যে তারা শাহবাজের শর্ত মেনে সংলাপে ফিরবে কি না। যদি দুই পক্ষ একটি সাধারণ ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে তবে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


তুরস্কে বিমান বিধ্বস্তে লিবিয়ার সেনাপ্রধান নিহত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ০৮:৫৫:২৪
তুরস্কে বিমান বিধ্বস্তে লিবিয়ার সেনাপ্রধান নিহত
ছবি : সংগৃহীত

লিবিয়ার সেনাপ্রধান মুহাম্মদ আলী আহমেদ আল-হাদ্দাদ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছে এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে আঙ্কারার এসেনবোগা বিমানবন্দর থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির উদ্দেশে উড্ডয়নের অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে বহনকারী প্রাইভেট জেটটি বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সেনাপ্রধান আল-হাদ্দাদসহ আরও চারজন উচ্চপদস্থ লিবীয় সামরিক কর্মকর্তা এবং তিনজন ক্রু সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। লিবিয়ার জাতিসংঘ-স্বীকৃত সরকারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দবেইবা এই মৃত্যুকে ‘দেশ ও সেনাবাহিনীর জন্য এক মহাবিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তুরস্কের সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে যে দ্যাসো ফ্যালকন-৫০ মডেলের ওই বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বৈদ্যুতিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। পাইলট জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানালেও আঙ্কারার হায়মানা জেলার কেসিককাভাক গ্রামের কাছে পৌঁছানোর পর রাডার থেকে বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যায়। লিবিয়ার সেনাপ্রধান আঙ্কারায় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে দেশে ফিরছিলেন। উদ্ধারকারীরা রাজধানী আঙ্কারা থেকে প্রায় ৭৪ কিলোমিটার দূরে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান। তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে উড্ডয়নের প্রায় ৪২ মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সাথে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।

নিহত সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন লিবীয় স্থলবাহিনীর প্রধান আল-ফিতুরি ঘারিবিল এবং সেনাপ্রধানের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আল-আসাওই দিয়াব। আল-হাদ্দাদ ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলনে অন্যতম প্রধান সেনাপতির ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং ২০২০ সাল থেকে দেশটির সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিভক্ত লিবিয়ায় জাতীয় ঐক্য ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় তার ছিল ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। তার এই আকস্মিক মৃত্যু লিবিয়ার বর্তমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি করেছে।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে দুর্ঘটনায় নাশকতার কোনো প্রমাণ মেলেনি এবং কারিগরি ত্রুটির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে বলে তারা ধারণা করছেন। আঙ্কারার প্রধান প্রসিকিউটর কার্যালয় ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে এবং লিবিয়া থেকেও একটি প্রতিনিধি দল এই তদন্তে যোগ দিতে আঙ্কারায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। লিবিয়া সরকার এই বীর সেনানায়কের স্মরণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে এবং সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তুরস্কের সাথে লিবিয়ার সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন আরও গভীর হচ্ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে এই দুর্ঘটনাটি দুই দেশের সামরিক সহযোগিতায় একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।


ব্রিটেনে গ্রেপ্তার হলেন গ্রেটা থুনবার্গ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ১৯:১৬:১১
ব্রিটেনে গ্রেপ্তার হলেন গ্রেটা থুনবার্গ
গ্রেটা থুনবার্গ। সংগৃহীত ছবি

বিশ্বখ্যাত জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে লন্ডনে ফিলিস্তিনপন্থী এক বিক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) লন্ডনের রাস্তায় ফিলিস্তিনের সমর্থনে একটি প্ল্যাকার্ড ধরে রাখার সময় তাকে আটক করা হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে ব্রিটেনের বিতর্কিত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর যুক্তরাজ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং বিক্ষোভের অধিকার নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। থুনবার্গের গ্রেপ্তারের খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্রিটিশ সরকারের কঠোর সমালোচনা শুরু করেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রচারণাকারী গোষ্ঠী ‘ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস’ জানিয়েছে যে থুনবার্গ এমন একটি প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন যা ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নামক সংগঠনের বন্দি সদস্যদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে। উল্লেখ্য যে ব্রিটিশ সরকার এই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গ্রেটা থুনবার্গের হাতে থাকা সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল যে তিনি প্যালেস্টাইন অ্যাকশন বন্দিদের সমর্থন করেন এবং যেকোনো ধরণের গণহত্যার বিরোধিতা করেন। সিটি অব লন্ডন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে প্রতীকী সামগ্রী প্রদর্শনের অভিযোগে তাকে সন্ত্রাসবাদ আইন ২০০০-এর ধারা ১৩ অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে জানা যায় যে বিক্ষোভকারীরা একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় লক্ষ্য করে এই কর্মসূচি পালন করছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবি অনুযায়ী ওই বীমা প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা ‘এলবিট সিস্টেমস’-এর ব্রিটিশ শাখাকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে। বিক্ষোভের একপর্যায়ে দুজন ব্যক্তি ওই ভবনের দেওয়ালে লাল রঙ নিক্ষেপ করেন যাদের পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে আটক করে। এর কিছুক্ষণ পরেই ২২ বছর বয়সী গ্রেটা থুনবার্গ সেখানে উপস্থিত হয়ে তার সংহতি প্রকাশ করেন এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের সমর্থনে বার্তা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন শুরু করলে তাকেও পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।

গ্রেটা থুনবার্গের এই গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। পরিবেশ আন্দোলনের পরিচিত এই মুখ গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যুতে সরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। তবে এবার সরাসরি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাকে অভিযুক্ত করায় ব্রিটিশ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচকরা মনে করছেন যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে সরকার কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে। অন্যদিকে ব্রিটিশ পুলিশের দাবি তারা কেবল দেশের প্রচলিত আইন এবং অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে গ্রেটা থুনবার্গকে লন্ডনের একটি থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।


দিল্লি ও কলকাতায় উত্তাল বাংলাদেশ মিশন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ১৮:৫৬:৩৮
দিল্লি ও কলকাতায় উত্তাল বাংলাদেশ মিশন
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে উগ্র বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে উত্তেজিত স্লোগান দিতে শুরু করে। তারা পুলিশের তৈরি করা অন্তত দুটি নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রায় একই সময়ে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনেও অনুরূপ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেখানেও বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড উপড়ে ফেলে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায় যা সামলাতে কলকাতা পুলিশকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দল এই বিক্ষোভের ডাক দেয়। ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাস নামক এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীরা গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়। নয়াদিল্লিতে হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হলেও উত্তেজিত জনতা তা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।

মিশনগুলোতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার চেষ্টার প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালেই ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে হাজির হন। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত এই বৈঠকে দিল্লি ও কলকাতাসহ ভারতের অন্যান্য স্থানে থাকা বাংলাদেশি মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দিল্লির প্রতি কড়া আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য যে গত মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে এটি ভারতীয় হাইকমিশনারকে দ্বিতীয়বারের মতো তলবের ঘটনা যা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বর্তমান টানাপোড়েনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।

এর আগে গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কলকাতায় বাংলাদেশবিরোধী একটি বড় ধরণের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশি মিশনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। গত ১৪ ডিসেম্বরও প্রণয় ভার্মাকে তলব করে ভারত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিল ঢাকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে দিল্লির বাংলাদেশ মিশনে হামলার এই চেষ্টা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর নতুন করে ছায়া ফেলেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ভিয়েনা কনভেনশন মেনে কূটনীতিক ও মিশনগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ভারতের দায়িত্ব।


ট্রাম্পের নজর এখন গ্রিনল্যান্ডে: উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ১৪:২৪:২২
ট্রাম্পের নজর এখন গ্রিনল্যান্ডে: উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে তার দৃঢ় অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ডেনমার্কের এই স্বায়ত্তশাসিত আর্কটিক দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সম্প্রতি দ্বীপটিতে বিশেষ দূত নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে কোপেনহেগেনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের নতুন করে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ফ্লোরিডার পাম বিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার প্রশাসনের কৌশলী অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন যে গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদের চেয়েও এর ভৌগোলিক ও কৌশলগত গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।

বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আগামী জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প বারবার গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে কথা বলছেন। তিনি এমনকি এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাকেও পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। গত রবিবার লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রিকে গ্রিনল্যান্ড বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর ডেনমার্ক সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এই পদক্ষেপকে ডেনমার্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করে কোপেনহেগেন ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

ট্রাম্পের মতে গ্রিনল্যান্ডের আশপাশের জলসীমায় সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া ও চীনের জাহাজের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন যে আর্কটিক অঞ্চলে বেইজিং ও মস্কোর প্রভাব রুখতে গ্রিনল্যান্ডের ওপর ওয়াশিংটনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। তবে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের স্থানীয় নেতারা ট্রাম্পের এই মনোভাবকে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তারা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির কোনো পণ্য নয় এবং এর ভবিষ্যৎ কেবল দ্বীপটির জনগণই নির্ধারণ করবে। একটি সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে যে গ্রিনল্যান্ডের মানুষ ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে মোটেও আগ্রহী নয়।

বর্তমানে গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং দ্বীপটি বিরল খনিজ সম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ডেনমার্ক সরকারও বসে নেই বরং তারা আর্কটিক অঞ্চলে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরদার করতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ট্রাম্পের এই আগ্রাসী নীতি দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর ছায়া ফেলছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। গ্রিনল্যান্ডকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন ও কোপেনহেগেনের এই রশি টানাটানি ভবিষ্যতে আর্কটিক অঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন কোনো মোড় নেয় কিনা এখন সেটাই দেখার বিষয়।


কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাস থাকতে দেব না: শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২২ ২১:৩৯:৫৭
কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাস থাকতে দেব না: শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা ও বিজেপি ব্যক্তিত্ব শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে এক বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে বিক্ষোভ চলাকালীন শুভেন্দু অধিকারী অত্যন্ত কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনকে আর অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা এবং সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি সরাসরি মিশনটি তালাবদ্ধ করার ডাক দেন।

কলকাতার রাজপথে প্রায় ২ হাজার বিজেপি কর্মীকে নিয়ে আয়োজিত এই সভায় শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশের ময়মনসিংহে দীপু দাস নামক এক শ্রমিককে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অভিযোগ করেন যে বাংলাদেশে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে এবং এর প্রতিবাদে আগামী ২৪ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে হিন্দু সংগঠনগুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রাস্তা অবরোধ করবে। এছাড়া আগামী ২৬ ডিসেম্বর আরও ১০ হাজার মানুষ নিয়ে পুনরায় বাংলাদেশ উপদূতাবাস ঘেরাও করার আল্টিমেটাম দিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।

বিক্ষোভ চলাকালীন আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। শুভেন্দু অধিকারী তার বক্তব্যে পরিষ্কার করে বলেন যে বাংলাদেশে যদি এই ধরণের হামলা ও নির্যাতন বন্ধ না হয় তবে তারা কলকাতায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক কার্যক্রম চলতে দেবেন না। তিনি আরও ঘোষণা করেন যে ২৪ ডিসেম্বর সীমান্ত এলাকায় এক ঘণ্টার প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে যাতে ওপার থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়।

কলকাতার এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বিজেপি কর্মীদের হার্ডলাইন অবস্থান দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এর আগে দিল্লির হাইকমিশন নিরাপত্তা জনিত কারণে তাদের সেবা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছিল যার রেশ এখন কলকাতায় আরও তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে শুভেন্দু অধিকারীর এই ধরণের উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং দূতাবাস বন্ধ করার হুমকি ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। ২৬ ডিসেম্বরের বড় কর্মসূচির ঘোষণা নিয়ে এখন কলকাতায় বাড়তি উদ্বেগ ও সতর্কতা বিরাজ করছে।


হামলা ও বিক্ষোভের জেরে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বড় পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২২ ২১:২২:৩৪
হামলা ও বিক্ষোভের জেরে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বড় পদক্ষেপ
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা ও ভিসা প্রদানের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) হাইকমিশনের মূল ফটকে একটি জরুরি নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই সেবাগুলো বন্ধ থাকবে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। মূলত গত কয়েক দিনে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর সামনে নজিরবিহীন বিক্ষোভ এবং ভিসা সেন্টারে হামলার ঘটনার পর কর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে যে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ও উপদূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন বড় ধরণের সংকটের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা সেন্টারে ভাঙচুর এবং কলকাতায় উপদূতাবাসের সামনে উগ্র বিক্ষোভের ঘটনায় কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন যে কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক রীতিনীতি বা ভিয়েনা কনভেনশন এক্ষেত্রে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। উদ্বেগের বিষয় হলো এই ধরণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী যে ধরণের কঠোর নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল তা দৃশ্যমান হচ্ছে না বলে কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই অস্থিরতার মূলে রয়েছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ভালুকায় ঘটে যাওয়া একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সেখানে দিপু চন্দ্র দাস নামে একজন পোশাক শ্রমিককে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে আসাম এবং কলকাতায় বেশ কিছু সংগঠন নিয়মিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। সোমবারও কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে দিল্লিতেও। নিরাপত্তা ইস্যু প্রকট হওয়ায় দূতাবাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা এখন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দিল্লিতে কনস্যুলার সেবা বন্ধ হওয়ার ফলে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং যারা বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসার অপেক্ষায় ছিলেন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েন নিরসনে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা জরুরি। অন্যথায় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে তা দিল্লির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগে পুনরায় সেবা চালু করার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে ধারণা করা হচ্ছে।


বাংলা দখল করতে এলে দিল্লি কেড়ে নেব: মমতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২২ ২০:৫২:৫৬
বাংলা দখল করতে এলে দিল্লি কেড়ে নেব: মমতা
ছবি : সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের নাম বাদ পড়া এবং সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে ভারতের নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধংদেহি অবস্থান নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক রাজনৈতিক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি অভিযোগ করেন যে ভোটার তালিকার বিশেষ সংক্ষিপ্ত সংশোধন বা এসআইআর-এর আড়ালে আসলে ‘বাংলা দখল’ করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। তবে বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন যে বাংলা দখল করতে এলে তিনি উল্টো ‘দিল্লি দখল’ করার লড়াই শুরু করবেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত সর্বশেষ খসড়া তালিকা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই তালিকায় বর্তমানে রাজ্যের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত কোটি আট লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩১ জন। তবে এর বাইরে আরও প্রায় দেড় কোটি ভোটারকে নিয়ে কমিশন সন্দেহ প্রকাশ করেছে যাদের নাম তালিকায় থাকলেও চূড়ান্ত অনুমোদন মেলেনি। এই বিশাল সংখ্যক ভোটারকে তালিকার বাইরে রাখার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মতে এটি মূলত বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার একটি নীল নকশা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য করে প্রশ্ন তোলেন যে ভোটার বাদ দিয়ে কি তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে সরানো সম্ভব? তিনি জোর দিয়ে বলেন যে সাধারণ মানুষই শেষ পর্যন্ত বিজেপি ও কমিশনকে প্রত্যাখ্যাত করবে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল বাতলে দিয়ে তিনি তার কর্মীদের নির্দেশ দেন যাতে মাঠ পর্যায়ে লড়াই করে প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত করে দেওয়া হয়। মমতার ভাষায় বিজেপি নেতারা কেবল টিভির পর্দায় বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকে কিন্তু তৃণমূলের শিকড় প্রোথিত রয়েছে সাধারণ মানুষের ‘খেয়ালে’ বা অন্তরে।

বক্তব্যের শেষ দিকে তৃণমূল নেত্রী তার কর্মীদের উদ্দেশে এক আবেগঘন ও রণংদেহি আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে এই লড়াই কেবল রাজনৈতিক লড়াই নয় বরং এটি টিকে থাকার লড়াই। বিজেপিকে রুখতে প্রয়োজনে প্রাণ দেওয়ার প্রস্তুতি রাখার জন্য তিনি নেতা ও কর্মীদের উৎসাহিত করেন। মমতা বিশ্বাস করেন যে বড় বড় নেতাদের চেয়ে তৃণমূলের মাঠ পর্যায়ের সাধারণ কর্মীরাই এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে মমতার এই অগ্নিঝরা বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে মেরুকরণ ও উত্তাপ সৃষ্টি করেছে।


সমুদ্রতলে সোনার পাহাড়: এশিয়ায় বিশাল স্বর্ণ খনির খোঁজ মিলল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২২ ১৮:৪৬:০৩
সমুদ্রতলে সোনার পাহাড়: এশিয়ায় বিশাল স্বর্ণ খনির খোঁজ মিলল
ছবি : সংগৃহীত

প্রাকৃতিক সম্পদের সন্ধানে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে চীন। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শ্যানডং প্রদেশের ইয়ানতাই জেলার লাইজহৌ উপকূলে সমুদ্রের গভীর তলদেশে এশিয়ার বৃহত্তম স্বর্ণের খনির সন্ধান মিলেছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই আবিষ্কার চীনের স্বর্ণের মজুদে এক বিশাল বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। নতুন আবিষ্কৃত এই খনির ফলে লাইজহৌ অঞ্চলের যাচাইকৃত সোনার মোট পরিমাণ এখন ৩ হাজার ৯০০ টনেরও বেশি বা ১৩৭ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন আউন্স ছাড়িয়েছে। এটি চীনের বর্তমান মোট স্বর্ণ মজুদের প্রায় ২৬ শতাংশের সমান।

চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় এই আবিষ্কারকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। তারা জানিয়েছে যে ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটিই দেশটির ইতিহাসে একক কোনো স্থানে পাওয়া সবচেয়ে বড় সোনার ভাণ্ডার। কেবল সমুদ্রতলেই নয় বরং চীনের স্থলভাগেও একের পর এক সোনার খনির সন্ধান মিলছে। গত নভেম্বর মাসে জিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পশ্চিম সীমান্তের কাছে কুনলুন পর্বতমালায় প্রায় ১ হাজার টনের বেশি সোনার খনির সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন দেশটির কর্মকর্তারা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণ আহরণ ও খনি শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য দেখাচ্ছে বেইজিং। ২০২৩ সালের শেষ ভাগে শানডং প্রদেশের জিয়াওডং উপদ্বীপে ৩ হাজার ৫০০ টনেরও বেশি সোনার মজুদ শনাক্ত করা হয়েছিল যা বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্বর্ণ সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এছাড়া লিয়াওনিং প্রদেশেও ১ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৪৯ টনের একটি অতি-বৃহৎ কিন্তু নিম্ন-গ্রেডের সোনার খনি আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে চায়না গোল্ড অ্যাসোসিয়েশন। চীন বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সোনার আকরিক উৎপাদক দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং গত বছর তাদের মোট উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৭৭ টন।

উৎপাদনে চীন বৈশ্বিক নেতৃত্বে থাকলেও প্রমাণিত মোট সোনার মজুদের দিক থেকে দেশটি এখনও দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং রাশিয়ার মতো দেশগুলোর তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। তবে সমুদ্রতলে এশিয়ার বৃহত্তম এই খনি আবিষ্কারের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের সরবরাহ এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চীনের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। সাগরের তলদেশ থেকে এই স্বর্ণ উত্তোলনের জন্য চীন এখন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে যা খনি শিল্পে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

এক নজরে আজকের মুদ্রার বিনিময় হার

এক নজরে আজকের মুদ্রার বিনিময় হার

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান কারিগর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসারে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের... বিস্তারিত