ইরান- ইসরায়েল সংঘাত
ইরান হামলার শঙ্কায় ঘাঁটি ছাড়ছে মার্কিন বাহিনী

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থান থেকে যুদ্ধবিমান ও জাহাজ সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত ক্রমশ তীব্র হচ্ছে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো স্পষ্টভাবে জানাননি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে থেকে যৌথ হামলায় অংশ নেবে কি না।
রয়টার্সকে দেওয়া তথ্যে দুই মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাহরাইন ও কাতারের ঘাঁটিগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা, সামরিক সরঞ্জাম ও বিমান নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটি থেকে কিছু বিমান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘাঁটি থেকে সরানো হয়েছে এমন বিমানগুলো ছিল অপেক্ষাকৃত কম সুরক্ষিত, অর্থাৎ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় না থাকা অংশে অবস্থানরত।
বাহরাইনের একটি বন্দর থেকেও কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ওই বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মোতায়েন থাকে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস একটি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করেছে। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাতারের মরুভূমিতে অবস্থিত আল-উদেইদ ঘাঁটিতে প্রবেশ সাময়িকভাবে সীমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মধ্যপ্রাচ্য ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ ঘাঁটিতে ১০ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা কর্মরত রয়েছেন।
দূতাবাস থেকে পাঠানো বার্তায় কাতারে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদেরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, “বর্তমান আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থির এবং যে কোনো সময় পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা বাড়তে শুরু করে। বিশেষ করে, ইসরায়েলের তেলআবিব ও বেয়ের শেভা শহরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর, আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এই সংঘাত একটি পূর্ণাঙ্গ অঞ্চলে বিস্তৃত যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত ইরানে সরাসরি হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি হামলা করতে পারি, আবার নাও করতে পারি।” এ ধরনের মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে হোয়াইট হাউসে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ইউনিট ও রসদ সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপকে প্রতিরক্ষামূলক ও সম্ভাব্য আগাম নিরাপত্তাব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। অঞ্চলজুড়ে মার্কিন স্বার্থ ও সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান