অর্থনীতি

তারল্য সংকটে চড়া সুদে অর্থ তুলছে সরকার

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৮ ১৫:৫৩:২৫
তারল্য সংকটে চড়া সুদে অর্থ তুলছে সরকার

৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার বাংলাদেশে ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নিলামে এ মেয়াদের সুদহার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১০ শতাংশ, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে, ২ জুন এই বিলের সুদহার ছিল ১২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে সুদহার বেড়েছে ১৮ বেসিস পয়েন্ট। বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক খাতে তারল্য ঘাটতি এবং সরকারের অর্থসংগ্রহ চাহিদা বৃদ্ধিই এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মূল কারণ।

স্বল্পমেয়াদি এই আর্থিক ঋণপত্র (T-Bill) মূলত সরকারের তরফ থেকে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয় নির্ধারিত মেয়াদের জন্য। এর মেয়াদ সাধারণত ৯১, ১৮২ এবং ৩৬৪ দিন হয়ে থাকে। বর্তমানে ১৮২ দিনের বিলে সুদহার ১২ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ৩৬৪ দিনের বিলে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এবং নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন,

“যখন ব্যাংক খাতে তারল্য কম থাকে এবং সরকারের অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজন বাড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সুদহার বৃদ্ধি পায়। এটা মূলত চাহিদা ও জোগানের নীতির ওপর নির্ভর করে।”

একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান,

“বর্তমানে ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে। কারণ, রেপো সুবিধা থেকে নেওয়া অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে হয়, যার ফলে সেটেলমেন্ট সংক্রান্ত ঝুঁকি বেড়েছে। অন্যদিকে, ব্যাংকগুলোর তারল্য চাপ এখনও প্রকট।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের মার্চে ট্রেজারি বিলের সুদহার কিছুটা কমেছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে আবারো ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, বিশেষ করে ১০১ থেকে ১২৩ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত। জুনে এসে তা নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।

অর্থনীতিবিদদের মতে, সুদের নিশ্চয়তা ও কম ঝুঁকির কারণে ট্রেজারি বিল তুলনামূলক নিরাপদ বিনিয়োগ। তবে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট অব্যাহত থাকলে সরকারকে ভবিষ্যতেও উচ্চ সুদে অর্থ সংগ্রহ করতে হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য সরকার ট্রেজারি বন্ডও ইস্যু করে, যার মেয়াদ হয়ে থাকে ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত। তবে বর্তমানে স্বল্পমেয়াদি বিলেই সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সামগ্রিক অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে এক ধরনের চাপের ইঙ্গিত বহন করছে।

—আশিক নিউজ ডেস্ক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত