বিশ্লেষণ
বিএনপির ছায়ায় এনসিপি? তারেক-ইউনুস বৈঠকে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত!

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে বিএনপির সঙ্গে টক্কর দিয়ে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সমসাময়িক পরিস্থিতি বিচার করলে দেখা যায়, বিএনপির জনসমর্থন এখন এতটাই শক্তিশালী যে, তা এককভাবে অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত সমর্থনের চেয়েও এগিয়ে। এই বাস্তবতায় বিএনপির ছায়াতলে থেকে রাজনৈতিক কৌশল সাজানোই হতে পারে অধিকতর কার্যকর ও কৌশলগত সফলতা।
এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠেছে—নতুন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এই সম্ভাব্য সমঝোতার গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে ১৩ জুন, যেদিন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
ড. ইউনুস বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন একদফা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র–তরুণদের প্রতিনিধিরা। এ কারণে তরুণ প্রজন্মের 'নতুন বাংলাদেশ' গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ইউনুস সরকারের পক্ষ থেকেও দায়বদ্ধতা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৩ জুনের বৈঠকে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-কে বিএনপির ছায়াতলে এনে একটি বৃহৎ বিরোধী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে।
একইসঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে, জামায়াতে ইসলামীকেও একটি প্রভাবশালী বিরোধী শক্তি হিসেবে বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যৎ নির্বাচনকেন্দ্রিক রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে বিএনপি জয়ের সর্বোচ্চ সম্ভাবনায় রয়েছে। বিরোধী শিবির আপাতত এতটা শক্তিশালী অবস্থানে নেই যে, বিএনপির জোয়ারে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-র একাধিক নেতা মনে করেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা আসবে, পাশাপাশি ভোটাধিকারের প্রশ্নে জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাও পূরণ হতে পারে। অনেকের মতে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস নিজেই এই বৈঠক বা সমঝোতার উদ্যোগ নিতে পারেন, যা চলমান রাজনৈতিক জট খোলার অন্যতম সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এদিকে, সব মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো দেশে ফেরেননি। বিষয়টি নিয়ে দলের পক্ষ থেকেও কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। গুঞ্জন রয়েছে, নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা এবং বিদেশি অদৃশ্য চাপের কারণেই তারেক রহমান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারছেন না। বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার পর তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনার ঢেউ আরও জোরালো হয়েছে। এমনকি কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারও কি তার দেশে ফেরার পক্ষে নয়?
এসব প্রশ্নের উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে ১৩ জুনের লন্ডন বৈঠকের পর। এই বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক নিয়ে এখন পুরো রাজনৈতিক অঙ্গন তাকিয়ে রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে। সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা—এই বৈঠকের মাধ্যমেই বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির গতিপথ ও বিরোধী জোট গঠনের দিকনির্দেশনা আরও স্পষ্ট হবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- কবে থামবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভেদের রাজনীতি?
- ২০২৬ সালের এপ্রিলেই জাতীয় নির্বাচন: জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা
- নির্বাচনের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: বিএনপি অসন্তুষ্ট, জামায়াত সন্তুষ্ট, এনসিপি শর্তসাপেক্ষে সমর্থন
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রোজা, পরীক্ষা ও বাজেটের মাঝে নির্বাচন অযৌক্তিক: বিএনপি
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- তারেক রহমানের ঈদ শুভেচ্ছা
- আবদুল হামিদের দেশে ফেরা: স্বপ্ন না বাস্তব? সারজিস আলম যা বললেন