নির্বাচন নিয়ে নতুন করে যা জানালেন মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১০ ২০:০৮:১৬
নির্বাচন নিয়ে নতুন করে যা জানালেন মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, বিএনপি যে কোনো সময় নির্বাচনকে স্বাগত জানাবে এবং প্রস্তুত রয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই বক্তব্য দেন।

থাইল্যান্ডে সফল চোখের অস্ত্রোপচারের পর দেশে ফিরে ঈদের পর বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের সময়সূচি, দলীয় সমঝোতা ও সরকারের কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বিএনপি সবসময় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাজ করে। আমরা কোনো বিপ্লবী দল নই, আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগনের ভোটে ক্ষমতায় যেতে চাই।”

মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও এ ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি এপ্রিলে নির্বাচন করার ব্যাপারে তীব্র সংশয় প্রকাশ করে বলেন, রোজা ও ঈদের সময়ে নির্বাচন আয়োজন রাজনৈতিক ও পরিবেশগত দিক থেকে উপযুক্ত নয়। এছাড়াও এ সময়ে রাজনৈতিক কার্যক্রমের ব্যয়ও বাড়বে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

জামায়াতে ইসলামী যে এপ্রিলেই নির্বাচন করার কথা বলেছে, সেটি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক এবং এর মধ্যে শত্রুতা বা দেশদ্রোহিতার প্রমাণ খুঁজে পাওয়া উচিত নয়। তিনি সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে মতামত প্রকাশের আহ্বান জানান এবং বলেন, “ডেমোক্রেসির চর্চা এবং সংস্কৃতি দেশের প্রতিটি স্তরে আনতে হবে।”

বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠক নিয়ে তিনি আশাবাদী যে, নতুন কোনো রাজনৈতিক সমাধানের পথ উন্মোচিত হতে পারে। তবে দ্রুত ফলাফল আশা না করে ধৈর্য ও সহমত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমের বিষয়ে ফখরুল বলেন, যদিও তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সীমিত, তবে আন্তরিকতার অভাব নেই এবং তারা দেশের সঠিক পথ অনুসরণে চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ১৫ বছরের শাসনকালে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন একটি বড় চ্যালেঞ্জ যা সময়সাপেক্ষ।

জাতীয় ঐক্যের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র উত্তরণের এই সময়ে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে এবং বিভাজন এড়িয়ে চলতে হবে।” একই সঙ্গে তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে চলমান নেতিবাচক প্রচারণার প্রসঙ্গে বলেন, “বিএনপি রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে এখনো টিকিয়ে আছে।”

কেয়ারটেকার সরকার পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়ে ফখরুল বলেন, “দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন রয়েছে।” তিনি ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিএনপির রাজনীতির নীতি স্পষ্ট করে জানান, নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠন এবং প্রয়োজন হলে শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করা হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আওয়ামী লীগ এক কার্যত অনুপস্থিত দল” এবং জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলগুলো নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট বিরোধপূর্ণ হলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে সহমত তৈরির জন্য কাজ করা হবে।

অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, “অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও সরকারের অনির্দিষ্ট নীতির কারণে বিনিয়োগ বন্ধ এবং দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে,” এবং দ্রুত নির্বাচিত সরকার গঠনের তাগিদ দেন।

বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে চলমান নির্বাচন-সংক্রান্ত উত্তেজনা ও সম্ভাব্য সমাধানের দিকে নতুন দৃষ্টিকোণ যোগ করেছে। তিনি বারবার জোর দেন যে, “বিএনপি নির্বাচনের দল, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী এবং দেশের স্থিতিশীলতার জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।”

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত