জামায়াতের নিবন্ধন ফেরানোর রায়ে আইনজীবী শিশির মনিরের প্রতিক্রিয়া

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০১ ১১:৪১:৩১
জামায়াতের নিবন্ধন ফেরানোর রায়ে আইনজীবী শিশির মনিরের প্রতিক্রিয়া

দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা আইনি সংগ্রামের পর অবশেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে। রোববার (১ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে দলটির নিবন্ধন পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছে।

তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আদালত দলটির ঐতিহ্যবাহী প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা দেননি এবং এই বিষয় নির্বাচন কমিশনের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জামায়াতের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন ও ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম। জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনির জানান, আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং হাইকোর্টের পূর্বের রায় বাতিল হয়েছে। এখন নির্বাচন কমিশনকে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রায়ের সংক্ষিপ্ত কপি পাওয়ার পর বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হবে। তবে আপিল বিভাগের নির্দেশনা থেকে প্রতীকের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

জানিয়ে রাখা যায়, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীকে অবৈধ ঘোষণা করে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনও দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপর জামায়াতে ইসলামী এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

তবে ওই আপিল শুনানিতে জামায়াতের আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ নির্দেশ দেন, যা আপিল খারিজের মতো হয়। ফলে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা বহাল ছিল।

সম্প্রতি, ১৪ মে আপিল শুনানি সম্পন্ন হয় এবং ১ জুন রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছিল। আজকের রায় জামায়াতের জন্য এক যুগের লম্বা আইনি যাত্রার পর বিজয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এদিকে, প্রতীকের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশ করবে ইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২১:০৯:১৬
প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি সম্পত্তির বিবরণ প্রকাশ করবে ইসি
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন, তাদের দেশি ও বিদেশি সব সোর্সের আয় ও সম্পত্তির বিবরণ নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দিতে হবে। এসব তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই নির্দেশনা দেন।

বিধান ও উদ্দেশ্য

বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি বিধান আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এই নির্দেশনা জারির মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রার্থীদের সম্পদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।


বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে রাখা যাবে না: সিইসিকে বিএনপির আহ্বান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৪:২৩:৪২
বিতর্কিত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে রাখা যাবে না: সিইসিকে বিএনপির আহ্বান
ছবিঃ সংগৃহীত

বিগত তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী বিতর্কিত কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এই তথ্য জানান।

জাতির স্বার্থ ও জনবলের উদ্বেগ

ড. আবদুল মঈন খান বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ নিয়ে এখানে আলোচনা করতে আসিনি। জাতির স্বার্থে আলোচনা করতে এসেছি।” তিনি বলেন, একটা পরিবর্তন চাই, যার মাধ্যমে দেশের জনগণ নির্ভয়ে চলতে পারবে।

বিতর্কিত কর্মকর্তা: বিএনপির এই নেতা বলেন, “বিগত তিন নির্বাচন, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। আমরা কমিশনকে সতর্ক করেছি এদের (বিতর্কিত কর্মকর্তা) বিষয়ে সচেতন থাকতে এবং তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে হবে।”

জনবল ও ইসির চ্যালেঞ্জ: তিনি বলেন, নির্বাচন একদিনে বিরাট কর্মযজ্ঞ। ইসি’র নিজস্ব জনবল সীমিত। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সরকার থেকে যে মিনিমাম ১০ লাখ কর্মকর্তা ধার করে নিয়ে আসা হয়, সেই জনবল সম্পর্কে তারা জানতে এসেছেন।

ড. আবদুল মঈন খান আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন একটি উৎসবমুখর পরিবেশে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যে শঙ্কা তা কেটে যাবে।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।


রায় ঘোষণার চূড়ান্ত দিন ধার্য: শেখ হাসিনার মামলার রায় নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৪:০২:৫৫
রায় ঘোষণার চূড়ান্ত দিন ধার্য: শেখ হাসিনার মামলার রায় নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিচারকাজ শেষ হয়েছে। এই মামলার রায় আগামী ১৩ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই তারিখ ঘোষণা করেন।

যুক্তিতর্ক ও প্রসিকিউশনের দাবি

রাষ্ট্রপক্ষের সমাপনী: এদিন মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তি খণ্ডন শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

অ্যাটর্নি জেনারেলের মন্তব্য: অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “এ হত্যাযজ্ঞ হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। শেখ হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি না হলে শহীদ-আহতরা অবিচারের শিকার হবে।”

মৃত্যুদণ্ড দাবি: চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) দাবি করেন। একই সঙ্গে আসামিদের সম্পত্তি বিক্রি করে শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও করা হয়।

রাজসাক্ষী: রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাজা আদালতের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেয় প্রসিকিউশন।

আসামিপক্ষের যুক্তি

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন যুক্তি খণ্ডন করেন।

খালাসের দাবি: তিনি দাবি করেন, আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি এবং হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি। তাই অপরাধ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে তিনি খালাস চেয়েছেন।

রাজসাক্ষী প্রসঙ্গে: আইনজীবী বলেন, দায় থেকে বাঁচতেই সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন।

মামলাটিতে মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হলেও, ট্রাইব্যুনালে ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। গত ১০ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।


বৈষম্যহীন ন্যায়বিচারের দাবি: গুমের ভুক্তভোগীদের কণ্ঠে বিচার, জবাবদিহিতা ও রাষ্ট্রীয় আস্থার প্রশ্ন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১০:২১:০৫
বৈষম্যহীন ন্যায়বিচারের দাবি: গুমের ভুক্তভোগীদের কণ্ঠে বিচার, জবাবদিহিতা ও রাষ্ট্রীয় আস্থার প্রশ্ন

আওয়ামী লীগের সাড়ে পনেরো বছরের শাসনামলে গুম ও নিখোঁজের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে আবারও ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তার হাজিরা পরবর্তী সময়ে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ভুক্তভোগী ও পরিবারদের মধ্যে গভীর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

তাদের মতে, এটি কেবল বিচারিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং রাষ্ট্রের নৈতিক প্রত্যাবর্তনের একটি প্রতীক। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে ন্যায়বিচার মানে প্রতিশোধ নয়, বরং বৈষম্যহীন আইন প্রয়োগের নিশ্চয়তা।

গুমের শিকার এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, “অভিযুক্তরা সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি নন, তারা ব্যক্তিগতভাবে অপরাধে জড়িত। তাদের অপরাধের দায় সমগ্র বাহিনীর ওপর চাপানো ঠিক হবে না।তিনি আরও বলেন, “যারা অপরাধ করেছে তারা শাস্তি পাক, তবে আদালতে নিজেদের বক্তব্য রাখার সুযোগও পাবে। এটিই ন্যায়বিচারের মূলনীতি।”তার বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান যেখানে প্রতিশোধ নয় বরং ন্যায্য বিচার ও আইনের সমান প্রয়োগই মুখ্য।

ভুক্তভোগী ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান প্রশ্ন তুলেছেন যে আটক অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা সুবিধা বা তথাকথিত “সাব জেল” ব্যবস্থা কার্যকর করা হচ্ছে কি না।তিনি বলেন, “যদি অভিযুক্তরা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করে বিচার প্রভাবিত করার সুযোগ পান, তাহলে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।”

তার এই মন্তব্য ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়াগত স্বচ্ছতার গুরুত্ব তুলে ধরে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুবার উচ্চপদস্থ অভিযুক্তদের জন্য আলাদা সুবিধা প্রদানের নজির রয়েছে, যা জনগণের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ণ করেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল চৌধুরী বলেন, “যারা বিদেশে পালিয়ে আছেন, তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে আদালতের সামনে হাজির করা হোক।”এই দাবি শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক আহ্বান। আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে ইন্টারপোল সহযোগিতায় যদি পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, তবে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা আন্তর্জাতিকভাবে আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

আরমান আরও বলেন, “জনগণের রক্ষক সেনাবাহিনীকে আর কোনো দিন জনগণের মুখোমুখি করা যাবে না।”এই বক্তব্য রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্কের গভীরতর সত্য তুলে ধরে। যদি নিরাপত্তা বাহিনী নাগরিক নিরাপত্তার বিপরীতে দাঁড়ায়, তাহলে আস্থা ও বৈধতার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে তাই একটি সাধারণ বার্তা প্রতিফলিত হয় যে, রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং তাদেরকে শুধুমাত্র নাগরিক স্বার্থরক্ষার জন্য নিয়োজিত রাখতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান বলেন, “আজ আমরা যে বিচার প্রক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি, এটি জনগণের চাপ ও আন্তর্জাতিক সচেতনতার ফল। কিন্তু অনেক অপরাধী এখনো মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্তদের যেন অফিসার্স মেসের খাবার বা এসি রুমের আরাম না দেওয়া হয়। যেভাবে আমাদের আটক রাখা হয়েছিল, সেভাবেই তাদের রাখা উচিত।”

এটি প্রতিশোধ নয়, বরং ন্যায়ের ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান যেখানে আইন সকলের জন্য সমানভাবে প্রয়োগ হবে।

এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় একটি বৃহত্তর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের বিষয়গুলো রাষ্ট্রের ওপর আস্থা দুর্বল করেছে।

এখন ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম যদি সত্যিকারের নিরপেক্ষ হয়, তবে এটি রাষ্ট্রীয় আস্থা পুনরুদ্ধারের পথ উন্মুক্ত করতে পারে। অন্যদিকে যদি এখানেও রাজনৈতিক প্রভাব বা প্রশাসনিক পক্ষপাত দেখা যায়, তবে এটি আরও গভীর নৈতিক সংকট তৈরি করবে।

ভুক্তভোগীরা বারবার উল্লেখ করেছেন যে তারা কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়, বরং অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান। তাদের মতে, আইনের চোখে সবাই সমান হওয়া উচিতএই অবস্থানই আধুনিক বিচারব্যবস্থার মর্মবাণী। ন্যায়বিচার তখনই পূর্ণ হয়, যখন তা দৃশ্যমানভাবে সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা হয়।

বর্তমান ট্রাইব্যুনাল কার্যক্রমকে অনেক বিশ্লেষক দেখছেন একটি নতুন সামাজিক চুক্তির সূচনা হিসেবে। এটি কেবল অতীতের অপরাধের বিচার নয়, বরং রাষ্ট্র ও নাগরিকের সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের প্রক্রিয়া।যদি এই বিচার নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়, তবে তা একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে যে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অন্যদিকে, যদি বৈষম্য বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তবে তা রাষ্ট্রের নৈতিক ভিত্তিকে আরও দুর্বল করবে।

গুম ও নিখোঁজের ইতিহাস বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্মৃতিতে এক গভীর ক্ষতচিহ্ন। আজ যখন সেই ক্ষত নিরাময়ের পথে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তখন ভুক্তভোগীরা বলছেন, “আমরা ন্যায়বিচার চাই, প্রতিশোধ নয়।”

তাদের আহ্বান শুধুমাত্র শাস্তি নয়, বরং একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা। যদি এই বিচার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, তবে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন নৈতিক সূচনা হতে পারে।


মিঠামইনের অঘোষিত রাজা,হারুন অর রশীদের দুর্নীতির সাম্রাজ্য

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৯:৫০:৩৪
মিঠামইনের অঘোষিত রাজা,হারুন অর রশীদের দুর্নীতির সাম্রাজ্য
ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি দখল করে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছিলেন অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল একটি প্রমোদাগার—‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’। মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা হারুন, তার পদোন্নতির তদবিরসহ নানা সহযোগিতা পেতেন। কিন্তু পরবর্তীতে হারুনই হয়ে ওঠেন মিঠামইনের ‘রাজা’।

শতকোটি টাকার রিসোর্ট ও জমি দখলের অভিযোগ

রিসোর্টের বিবরণ: মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে এই রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ২০ হাজার টাকা।

দখলের অভিযোগ: রিসোর্টটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হারুনের ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার। রিসোর্টের জন্য দখল করা অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের। এসব জায়গার মালিকদের অনেকেই পুরো দাম পাননি। মিঠামইন সদর ইউনিয়নের দিলীপ বণিক অভিযোগ করেন, হারুন তার ১ একর ১০ শতাংশ জায়গা নিয়েছেন, যার মূল্য ২০ লাখ টাকা হলেও তিনি পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। টাকা না পাওয়ায় অন্তত ১০-১২ জন জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে দেননি।

প্রেসিডেন্টের প্রভাব: এলাকাবাসী বলছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আশীর্বাদ ও সহযোগিতায় হারুন পুলিশের বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন হতে পারেন। তাকে খুশি করতেই রিসোর্টটির নাম দেওয়া হয় ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’।

এনবিআরের তদন্ত ও রিসোর্ট জব্দ

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে রিসোর্টটিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি হারুনের বিলাসবহুল এই রিসোর্টে অভিযান চালায়।

অভিযান: গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এনবিআর অভিযান চালিয়ে রিসোর্ট থেকে চারটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করে।

বর্তমান অবস্থা: তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর এখন এই প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট জব্দ করেছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


আজই মামলার রায়: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মুখে শেখ হাসিনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৯:৩২:১৭
আজই মামলার রায়: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মুখে শেখ হাসিনা
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ (বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর) ঘোষণা হতে পারে। এটি কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে প্রথম কোনো হত্যা মামলার রায় হিসেবে গণ্য হবে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়।

আসামিপক্ষ ও রাজসাক্ষীর অবস্থান

মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক ও রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

প্রসিকিউশনের প্রত্যাশা: যুক্তিতর্ক শেষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে এবং রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে বৃহস্পতিবার। প্রসিকিউশন মনে করে, রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দিতে ‘ট্রু অ্যান্ড ফুল ডিসক্লোজার’ হয়েছে।

আসামিপক্ষের যুক্তি: ট্রাইব্যুনাল নিযুক্ত শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তিতর্কে বলেন, আন্দোলন কোটা সংস্কারের দাবি কেন্দ্রিক থাকা পর্যন্ত বৈধ ছিল, কিন্তু সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ছিল অবৈধ। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি; তাই তাদের খালাস দেওয়া উচিত।

মামুন রাজসাক্ষী: সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার আবেদন জানালে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে। পরবর্তীতে তিনি সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

বিচারাধীন অন্যান্য মামলা

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়। এই মামলাটির পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে:

১. আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও হত্যার অভিযোগের মামলা।

২. রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলা।


ইচ্ছেপূরণ প্রকল্পে নতুন বিতর্ক: বাতিলের সিদ্ধান্ত বদলে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৯:০৬:৫৫
ইচ্ছেপূরণ প্রকল্পে নতুন বিতর্ক: বাতিলের সিদ্ধান্ত বদলে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংসদ সদস্যদের নিজস্ব এলাকায় উন্নয়নের নামে নেওয়া বিতর্কিত “ইচ্ছেপূরণ প্রকল্প” আবার আলোচনায়। সরকার পতনের পর প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও এখন সেটির মেয়াদ এক বছর ও ব্যয় প্রায় ৩৯ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, সর্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন২ নামের এই প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদন ছিল ২০২২ সালের মার্চে, ব্যয় ধরা হয়েছিল ১,০৮২ কোটি টাকা। নতুন প্রস্তাবে ব্যয় দাঁড়াবে ১,৫০০ কোটি টাকাঅর্থাৎ অতিরিক্ত ৪১৮ কোটি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প আবার সক্রিয় করার প্রচেষ্টা প্রশ্ন তুলছে নতুন সরকারের নীতিগত অবস্থান ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি নিয়ে। কারণ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা অর্জনযেখানে মসজিদ, মন্দির, এমনকি স্থানীয় নেতাদের পারিবারিক কবরস্থান পর্যন্ত উন্নয়ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে৫০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাই বাধ্যতামূলক হলেও “ইচ্ছেপূরণ প্রকল্পে” তা করা হয়নি। প্রতিবেদনে একে প্রকল্পটির “সবচেয়ে দুর্বল দিক” হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ফলে মাঠ পর্যায়ে অনেক কাজের প্রাক্কলন ভুল ছিল এবং কোথাও কোথাও অগ্রগতি প্রত্যাশিত হয়নি।

আইএমইডি সতর্ক করেছে, “স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব, সামাজিক বিরোধ, ও প্রশাসনিক দুর্বলতা প্রকল্পের সময়মতো সমাপ্তিতে বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।” সংস্থাটি ভবিষ্যতের জন্য সুপারিশ করেছে, এ ধরনের প্রকল্প শুরু করার আগে প্রকৃত প্রয়োজন নির্ধারণ এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি বাধ্যতামূলক করা উচিত।

পরিকল্পনা কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “প্রকল্পটি মূলত সংসদ সদস্যদের ইচ্ছা পূরণের হাতিয়ার ছিল।” তিনি জানান, “কেউ মসজিদ উন্নয়ন করেছেন, কেউ আবার ব্যক্তিগত কবরস্থান সংস্কার করেছেনএটা কোনো জাতীয় উন্নয়ন নয়, বরং রাজনৈতিক তুষ্টি।”

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর সিদ্ধান্ত ছিল, যেসব কাজ শেষ পর্যায়ে আছে সেগুলো দ্রুত শেষ করে বাকিগুলো বাতিল করা হবে। কিন্তু এখন উল্টো ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে, যা প্রশাসনিক ধারাবাহিকতার প্রশ্ন তোলে।

এলজিইডির নতুন প্রস্তাবে দেখা গেছে, প্রকল্পের বরাদ্দ বণ্টনে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় সর্বোচ্চ ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ, যেখানে মেহেরপুরে বরাদ্দ মাত্র ৫ কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বণ্টন উন্নয়ন পরিকল্পনার নয়, বরং রাজনৈতিক প্রভাবের প্রতিফলন।

এদিকে এলজিইডির যুক্তি হলো, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। তারা বলছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন ভাতা সংক্রান্ত নির্দেশনার কারণে প্রকল্পে “নতুন ইকনোমিক সাবকোড” অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যার জন্য বাজেট বাড়ানো আবশ্যক।

আইএমইডি তাদের প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছেপ্রকল্পটি স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব ও সামাজিক টানাপোড়েনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ। “যথাসময়ে কাজ শেষ না হলে প্রকল্পের উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব হবে না।” সংস্থাটি পরামর্শ দিয়েছে, অব্যবহৃত অর্থ সামাজিক নিরাপত্তা ও ধর্মীয় অবকাঠামো উন্নয়নে পুনর্বিনিয়োগ করা হলে জনকল্যাণমূলক ফল পাওয়া যেতে পারে।

তবে প্রশ্ন রয়ে গেছেযে প্রকল্পটি শুরু থেকেই বিতর্কিত, যার উদ্দেশ্যই ছিল এমপিদের জনপ্রিয়তা বাড়ানো, সেটি নতুন ব্যয় প্রস্তাবে টিকে থাকা কতটা যুক্তিযুক্ত? পরিকল্পনা কমিশনের এক সদস্য মন্তব্য করেন, “যদি এই প্রকল্পের নাম ‘ইচ্ছেপূরণ’ হয়, তবে তা নাগরিক উন্নয়নের নয়রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি।”

সূত্রঃ আমার দেশ।


বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, শুধু নিরপেক্ষতা চেয়েছে: ড. আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৭:২৩:১৩
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, শুধু নিরপেক্ষতা চেয়েছে: ড. আসিফ নজরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, বরং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ আচরণ আশা করেছে। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নিরপেক্ষতা ও প্রধান উপদেষ্টার তদারকি

নিরপেক্ষতা: আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যেটা বুঝেছি, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি। তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে।” তিনি মনে করেন, সব দলই অভিযোগ করছে যে অন্য দলের লোক আছে, তার মানে হলো—তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধান উপদেষ্টার তদারকি: অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার নিশ্চয়তা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন। জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় বদলির ব্যাপারটা তিনি নিজে দেখবেন।”

দলীয়করণের অভিযোগ: জনপ্রশাসনে নিয়োগ-বদলি দলীয়ভাবে হয় বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “না, আমরা মনে করি না দলীয়ভাবে হয়।”

নির্বাচন নিয়ে সংশয়

নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কি না, এই প্রশ্নে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনার বিষয়।”

নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে থাকা অনৈক্যকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, “আমার ধারণা, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেভাবে অনৈক্য থাকে, তারা একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে, ওটার কারণে হয়তো (নির্বাচন নিয়ে মানুষের সংশয়)।”

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “যখন আমরা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখব, এ সম্পর্কে সব সংশয় খুব দ্রুত কেটে যাবে।”


কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার নয়, ইউএনওদের প্রতি সিইসি’র কঠোর নির্দেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৬:২৩:১১
কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার নয়, ইউএনওদের প্রতি সিইসি’র কঠোর নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ইউএনওদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধনীতে তিনি এই আহ্বান জানান।

সিইসি’র হুঁশিয়ারি ও দায়িত্বের পরিধি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নাসির উদ্দীন ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, “কেন্দ্র দখল করে, বাক্স দখল করে বাড়ি চলে গেছে, আর আপনি গিয়ে হাজির হলেন, সেটা যাতে না হয়।”

তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা: তিনি বলেন, কোনো সংকট দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের চেষ্টা করতে হবে। ঘটনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হবে না।

কমিশনের অবস্থান: নাসির উদ্দীন জানান, নির্বাচন কমিশনও কারও চাপের কাছে নত হবে না এবং প্রচলিত আইন মেনেই সব নির্দেশনা দেবে। তিনি ইউএনওদের প্রতি ন্যায়, আইনসংগত ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

প্রবাসী ভোট ও আইন সংস্কার

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ইউএনওদের উদ্দেশ্য করে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচনী আচরণবিধির কিছু কিছু জায়গায় পরিবর্তন আসতে পারে, সেটি বিবেচনায় রাখতে হবে।

প্রবাসী ভোট: তিনি জানান, আগামী ১৬ নভেম্বরে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অনলাইন অ্যাপ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী কার্যক্রমে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য আইসিপিভি (ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট) সম্পর্কে প্রশিক্ষণার্থীদের ধারণা দেন।

নির্বাচনী আবহ: আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির কাজ এখন থেকেই করতে হবে। নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে হবে—এই আবহাওয়া এখন থেকে সৃষ্টি করতে হবে।

অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, তাহমিদা আহমদ ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

পাঠকের মতামত: