শীতে গলা ব্যথা সারাতে কোন পানীয় সবচেয়ে উপকারী

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১২ ১২:১৯:০২
শীতে গলা ব্যথা সারাতে কোন পানীয় সবচেয়ে উপকারী
ছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুম এলেই গলা ব্যথা, খুসখুসে ভাব, শুষ্কতা ও কাশির সমস্যা অনেকের জন্য নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে। ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে গলার ভেতরের শ্লেষ্মা ঝিল্লি দ্রুত শুকিয়ে যায়, ফলে সামান্য সংক্রমণ বা ঠান্ডা বাতাসেই ব্যথা শুরু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময় সঠিক পানীয় ও ঘরোয়া যত্ন গলা ব্যথা কমাতে ও দ্রুত আরাম পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শীতে গলা সুস্থ রাখতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর একটি হলো শরীর ও গলাকে ভেতর থেকে উষ্ণ ও আর্দ্র রাখা। এজন্য কিছু নির্দিষ্ট পানীয় নিয়মিত গ্রহণ করলে প্রদাহ কমে, সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং গলার অস্বস্তি অনেকটাই প্রশমিত হয়।

শীতে গলা ব্যথায় সবচেয়ে উপকারী পানীয়

উষ্ণ মধু ও লেবু মেশানো জল

গলা ব্যথা কমাতে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ও কার্যকর পানীয়গুলোর একটি। মধু প্রাকৃতিকভাবে গলার জ্বালা প্রশমিত করে এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। অন্যদিকে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সকালে বা রাতে এই পানীয় পান করলে গলা দ্রুত আরাম পায়।

গরম আদা চা

আদা একটি শক্তিশালী প্রদাহনাশক ও জীবাণুনাশক উপাদান। শীতে আদা চা পান করলে গলার ফোলাভাব ও ব্যথা কমে এবং ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হয়।

তুলসী চা বা তুলসী ভেজানো উষ্ণ জল

তুলসীর অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিভাইরাল গুণ গলা ব্যথা সারাতে বিশেষভাবে কার্যকর। নিয়মিত তুলসী চা পান করলে কাশি ও গলার খুসখুসে ভাব অনেকটাই কমে।

উষ্ণ স্যুপ

চিকেন স্যুপ কিংবা সবজি স্যুপ শুধু শরীর উষ্ণ রাখে না, গলার শুষ্কতাও কমায়। স্যুপ গলার ভেতর দিয়ে সহজে নেমে গিয়ে ব্যথা প্রশমিত করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।

গরম জল

সাধারণ উষ্ণ জলও গলা ব্যথায় অত্যন্ত উপকারী। এটি গলার শুষ্কতা কমিয়ে শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে আর্দ্র রাখে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে।

ঘরোয়া উপায়ে দ্রুত আরাম পাওয়ার কৌশল

গরম লবণ-পানি দিয়ে গার্গল

লবণ মিশ্রিত গরম জল দিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার গার্গল করলে গলার প্রদাহ কমে এবং জীবাণু নষ্ট হয়।

পর্যাপ্ত পানি পান

শীতকালে তৃষ্ণা কম লাগলেও শরীরকে পানিশূন্য হতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত পানি পান করলে গলা আর্দ্র থাকে এবং ব্যথা কমে।

যেসব বিষয় এড়িয়ে চলা জরুরি

শীতে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস সরাসরি গলায় লাগা থেকে রক্ষা করতে স্কার্ফ বা মাফলার ব্যবহার করা উচিত। ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া ও রাসায়নিক গন্ধ গলা ব্যথা বাড়াতে পারে, তাই এসব থেকে দূরে থাকা জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, যদি গলা ব্যথা কয়েকদিনের বেশি স্থায়ী হয়, সঙ্গে জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা গিলতে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


মাথায় আঘাত লাগলে কী করবেন, জানুন জরুরি করণীয়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ১০:৪৩:৩৮
মাথায় আঘাত লাগলে কী করবেন, জানুন জরুরি করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

মাথায় আঘাত পাওয়া এমন একটি ঘটনা, যা বাইরে থেকে সামান্য মনে হলেও ভেতরে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাথার আঘাতে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো মস্তিষ্কে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ, স্নায়ুর ক্ষতি কিংবা কনকাশন (Concussion), যার লক্ষণ অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ পায় না। ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে অবহেলা করলে পরে পরিস্থিতি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

মাথায় আঘাত লাগার পর প্রথম মুহূর্তে কী করবেন

আঘাত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে আক্রান্ত ব্যক্তি ঠিকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন কি না। যদি শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক না থাকে, দ্রুত জরুরি চিকিৎসা নিতে হবে। একই সঙ্গে মাথার কোনো অংশ থেকে রক্তপাত হলে পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে আলতোভাবে চাপ প্রয়োগ করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। তবে হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া যাবে না।

যদি কেউ আঘাতের পর অচেতন হয়ে পড়েন, চোখ খুলতে না পারেন বা প্রশ্নের জবাব দিতে না পারেন, তাহলে সেটিকে কখনোই হালকা হিসেবে নেওয়া উচিত নয়। এমন অবস্থায় দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স বা নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ সিদ্ধান্ত।

কোন লক্ষণগুলো দেখলে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে যাবেন

চিকিৎসকদের মতে, মাথায় আঘাতের পর কিছু লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে জরুরি বিভাগে যেতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময় জ্ঞান হারানো, মাথাব্যথা ক্রমশ তীব্র হওয়া, একাধিকবার বমি হওয়া, খিঁচুনি শুরু হওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া বা শরীরের কোনো অংশ অবশ হয়ে আসা। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া বা ডাবল দেখা এবং আচরণে হঠাৎ অস্বাভাবিক পরিবর্তনও মারাত্মক আঘাতের ইঙ্গিত হতে পারে।

বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের মস্তিষ্ক আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম।

হালকা আঘাত হলে করণীয়

যদি আঘাতের পর গুরুতর কোনো উপসর্গ না থাকে, তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে মাথায় আঘাতের পর ঘুমানো বিপজ্জনক। চিকিৎসকেরা বলছেন, গুরুতর লক্ষণ না থাকলে ঘুমানো সাধারণত ক্ষতিকর নয়, তবে কাউকে পাশে থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।

এই সময় ভারী কাজ, খেলাধুলা, দীর্ঘ সময় মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার এবং মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে হালকা ব্যথানাশক নেওয়া যেতে পারে, তবে নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ।

কেন মাথার আঘাত পরে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে

মাথায় আঘাতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, মস্তিষ্কে ধীরে ধীরে রক্ত জমা হওয়া। শুরুতে রোগী স্বাভাবিক থাকলেও কয়েক ঘণ্টা বা এমনকি কয়েক দিন পর হঠাৎ অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে। একে চিকিৎসা ভাষায় বলা হয় “ডিলেইড ইন্ট্রাক্রানিয়াল ব্লিডিং”। তাই আঘাতের পর অন্তত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সতর্ক পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

যদি মাথাব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে আসে, মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হয়, ঘন ঘন মাথা ঘোরে বা মানসিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তাহলে অবশ্যই নিউরোসার্জন বা নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করে ভেতরের অবস্থা যাচাই করা হয়।

চিকিৎসকেরা বলেন, মাথায় আঘাতের ক্ষেত্রে “ভাল আছি মনে হচ্ছে” এই ধারণার ওপর নির্ভর করা বিপজ্জনক। বরং সন্দেহ হলেই চিকিৎসা নেওয়া জীবন রক্ষার অন্যতম উপায়।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া, খেলাধুলা কিংবা মারধরের ঘটনায় মাথায় আঘাত লাগলে সেটিকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।


শীতে ডিহাইড্রেশন বাড়ে কেন, জানুন প্রতিরোধের উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ১০:১৪:২৮
শীতে ডিহাইড্রেশন বাড়ে কেন, জানুন প্রতিরোধের উপায়
ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল এলেই অনেকেই মনে করেন শরীরের পানির চাহিদা কমে যায়। বাস্তবে বিষয়টি ঠিক উল্টো। ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া, কম তৃষ্ণাবোধ এবং ঘরের ভেতরে হিটিং ব্যবস্থার ব্যবহার শীতকালে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি নীরবে বাড়িয়ে দেয়। শরীর তখন শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে আগের মতোই পানি হারায়, কিন্তু তৃষ্ণার সংকেত দুর্বল হওয়ায় সেই ঘাটতি পূরণ হয় না। ফলে অজান্তেই শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে ডিহাইড্রেশন শুধু ক্লান্তি বা মাথা ঘোরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না; এটি ত্বকের শুষ্কতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রস্রাবের সমস্যা এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণও হতে পারে। তাই শীতকালেও সচেতনভাবে পানি ও তরল গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

শীতকালে ডিহাইড্রেশন কেন বাড়ে

ঠান্ডা আবহাওয়ায় মানুষের তৃষ্ণাবোধ স্বাভাবিকের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শীতে তৃষ্ণার অনুভূতি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ফলে শরীরের প্রকৃত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা কম পানি পান করি।

শীতের বাতাস সাধারণত শুষ্ক হয়। এই শুষ্ক বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শরীর থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। ঘাম কম হলেও ত্বক ও ফুসফুসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পানি বাষ্পীভূত হতে থাকে, যা অনেক সময় আমরা টেরই পাই না।

এ ছাড়া ঘরের ভেতরে হিটার বা গরম রাখার যন্ত্র ব্যবহার করলে বাতাসের আর্দ্রতা আরও কমে যায়। এর প্রভাব পড়ে ত্বক, নাক ও শ্বাসনালীর ওপর, যা শরীরের পানিশূন্যতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

শীতে শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম তুলনামূলক কম হওয়ায় ঘাম কম হয়। এতে অনেকের মনে হয় শরীরের পানির প্রয়োজন কমে গেছে, যদিও বাস্তবে শরীর তখনও নিয়মিত পানি হারাচ্ছে।

শীতে ডিহাইড্রেশন এড়ানোর কার্যকর উপায়

তৃষ্ণা লাগার অপেক্ষা না করে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। দিনে অল্প অল্প করে বারবার পানি পান করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকে।

পানির পাশাপাশি তরলজাত খাবার গ্রহণ করা অত্যন্ত কার্যকর। গরম স্যুপ, ভেষজ চা, ফলের রস বা ডাবের পানি শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে এবং শীতেও আরাম দেয়।

ঘরের ভেতরের আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি। সম্ভব হলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। বিকল্প হিসেবে ঘরের ভেতরে ভেজা কাপড় ঝুলিয়ে রাখলেও আর্দ্রতা কিছুটা বজায় থাকে।

ত্বকের যত্নও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধের একটি অংশ। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা এবং খুব গরম পানিতে দীর্ঘ সময় গোসল না করাই ভালো, কারণ অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়।

খাবারের তালিকায় উচ্চ জলীয় অংশযুক্ত ফল ও সবজি রাখা উচিত। কমলা, আপেল, শসা, টমেটো ও শাকসবজি শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।

শীতকালেও নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের পানির চাহিদা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ে। ব্যায়ামের আগে ও পরে পানি পান করা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

সবশেষে শরীরের সংকেতের দিকে নজর রাখা জরুরি। প্রস্রাবের রং যদি হালকা হলুদ হয়, তাহলে বুঝতে হবে শরীর পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে। রং গাঢ় হলে দ্রুত পানি গ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন।

শীতকালে সুস্থ থাকতে শুধু গরম কাপড় নয়, শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সচেতন অভ্যাসই পারে নীরব ডিহাইড্রেশন থেকে আপনাকে নিরাপদ রাখতে।


শীতে ত্বক শুষ্ক ও র‍্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১২ ১৯:০৯:৪৮
শীতে ত্বক শুষ্ক ও র‍্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
ছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুমে অনেকেরই ত্বকে অস্বস্তিকর পরিবর্তন দেখা দেয়। ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, কম আর্দ্রতা এবং ঘরের ভেতরে হিটিং সিস্টেম ব্যবহারের ফলে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ও প্রাকৃতিক তেল দ্রুত কমে যায়। এর ফল হিসেবে ত্বক হয়ে ওঠে অতিরিক্ত শুষ্ক, রুক্ষ ও খসখসে। অনেক ক্ষেত্রে ত্বকে লালচেভাব, র‍্যাশ, চুলকানি কিংবা হালকা প্রদাহও দেখা দিতে পারে, যা দৈনন্দিন স্বস্তিকে ব্যাহত করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের পানি ধরে রাখার ক্ষমতাও হ্রাস পায়। বাইরে ঠান্ডা বাতাস এবং ভেতরে হিটার বা গরম বাতাস একসঙ্গে কাজ করে ত্বকের সুরক্ষাবলয় দুর্বল করে দেয়। ফলে সংবেদনশীল ত্বকের মানুষদের মধ্যে একজিমা, অ্যালার্জি বা দীর্ঘস্থায়ী র‍্যাশের প্রবণতা বাড়তে পারে।

শীতে ত্বক শুষ্ক ও র‍্যাশ হওয়ার প্রধান কারণ

শীতের শুষ্ক বাতাস ত্বকের উপরিভাগ থেকে দ্রুত আর্দ্রতা শুষে নেয়, যার ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ঘরের ভেতরে হিটার বা গরম বাতাস ব্যবহারের কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে যায়, যা ত্বকের শুষ্কতা আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া ঘন ঘন হাত ধোয়া বা সাবান ব্যবহারের ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়। কিছু প্রসাধনী বা সুগন্ধিযুক্ত পণ্যের প্রতি সংবেদনশীলতা থেকেও শীতকালে র‍্যাশ ও চুলকানি বাড়তে পারে। যদিও শীতে সূর্যের তেজ কম থাকে, তবু ইউভি রশ্মি ও বায়ুদূষণ ত্বকের ক্ষতির ঝুঁকি পুরোপুরি দূর করে না।

শীতে ত্বক সুরক্ষায় কার্যকর সমাধান

ত্বক ভালো রাখতে শীতকালে নিয়মিত ও সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। গোসলের পরপরই ত্বক সামান্য ভেজা থাকা অবস্থায় ঘন ও ইমোলিয়েন্টসমৃদ্ধ ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করলে আর্দ্রতা দীর্ঘ সময় ধরে রাখা যায়। খুব গরম পানি ত্বকের ক্ষতি করে, তাই হালকা গরম পানি দিয়ে দ্রুত গোসল করাই উত্তম। শরীরের ভেতর থেকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা প্রয়োজন, কারণ ডিহাইড্রেশন ত্বকের শুষ্কতা বাড়িয়ে দেয়।

সুগন্ধি বা অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে। ঘরের ভেতরের বাতাস অতিরিক্ত শুষ্ক হলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। বাইরে বের হলে শীতকালেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বক ইউভি রশ্মির ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকে।

যদি ত্বকের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা একজিমা, তীব্র র‍্যাশ কিংবা অসহনীয় চুলকানি দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসক মেডিকেটেড ক্রিম বা উপযুক্ত চিকিৎসা নির্ধারণ করতে পারেন।


শীতে ত্বক ফাটা বন্ধ করতে ঘরোয়া সহজ উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১২ ১২:১৩:০০
শীতে ত্বক ফাটা বন্ধ করতে ঘরোয়া সহজ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল এলেই ত্বকের সবচেয়ে সাধারণ ও বিরক্তিকর সমস্যাগুলোর একটি হলো ত্বক ফাটা, রুক্ষতা ও অতিরিক্ত শুষ্কতা। বিশেষ করে হাত-পা, গোড়ালি, কনুই, হাঁটু ও ঠোঁটে ফাটল দেখা যায় বেশি। আবহাওয়ায় আর্দ্রতা কমে যাওয়া, ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, গরম পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এবং ত্বকের স্বাভাবিক তেল দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ার কারণেই শীতকালে এই সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতে ত্বকের উপরের স্তর বা স্কিন ব্যারিয়ার দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ত্বক নিজের ভেতরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না এবং সামান্য অসতর্কতাতেই ফাটল সৃষ্টি হয়। তবে নিয়মিত ও সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

কেন শীতে ত্বক বেশি ফাটে

শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এর ফলে ত্বক দ্রুত পানি হারাতে থাকে। পাশাপাশি গরম পানিতে গোসল ও হাত ধোয়ার অভ্যাস ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে, যা ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে। তাছাড়া শীতকালে অনেকেই পানি কম পান করেন, যার প্রভাব পড়ে ত্বকের ওপরও।

ঘরোয়া উপায়ে ত্বক ফাটা কমানোর কার্যকর সমাধান

শীতকালীন ত্বক পরিচর্যায় প্রাকৃতিক উপাদান অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

মধু ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ ত্বক আর্দ্র রাখার অন্যতম পরীক্ষিত উপায়। এক চামচ খাঁটি মধুর সঙ্গে দুই চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫–২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে ত্বকের গভীরে পুষ্টি পৌঁছায়। এটি ত্বকের শুষ্কতা কমিয়ে নরম ও মসৃণ ভাব ফিরিয়ে আনে।

নারিকেল তেল বা ঘি শীতকালে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম নারিকেল তেল বা অল্প পরিমাণ ঘি পায়ে, গোড়ালিতে কিংবা হাতে মালিশ করলে সারারাত ত্বক আর্দ্র থাকে এবং ফাটা অংশ ধীরে ধীরে সেরে ওঠে।

পেট্রোলিয়াম জেলি ও লেবুর রস ফাটা গোড়ালির জন্য বেশ কার্যকর। পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বকে আর্দ্রতা আটকে রাখে এবং লেবুর রস মৃত কোষ দূর করতে সহায়তা করে। রাতে এটি ব্যবহার করে সুতির মোজা পরলে সকালে ত্বক অনেকটাই নরম হয়ে আসে।

দৈনন্দিন যত্নে যেসব বিষয় মানা জরুরি

শীতকালে ত্বক সুস্থ রাখতে শুধু ঘরোয়া উপায় নয়, দৈনন্দিন অভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হয়।

খুব গরম পানি দিয়ে গোসল বা হাত ধোয়া এড়িয়ে চলতে হবে। হালকা গরম বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো। গোসলের পর শরীর সামান্য ভেজা থাকতেই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার বা বডি লোশন ব্যবহার করলে ত্বক দীর্ঘক্ষণ আর্দ্র থাকে।

ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে তৃষ্ণা কম লাগলেও দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

ঠোঁট ফাটা রোধে নিয়মিত লিপ বাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা প্রয়োজন। বাইরে বের হওয়ার আগেও ঠোঁটে লিপ বাম লাগালে ঠান্ডা বাতাসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

যদি ত্বক ফাটার সঙ্গে রক্তপাত, তীব্র ব্যথা, চুলকানি বা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক সময় একজিমা বা অন্যান্য ত্বকজনিত রোগের কারণেও শীতে ত্বক অতিরিক্ত ফাটতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালীন ত্বক সমস্যাকে অবহেলা না করে নিয়মিত যত্ন ও সচেতনতা বজায় রাখলে ত্বক থাকবে সুস্থ, নরম ও উজ্জ্বল।


শীতে ঘর গরম রাখার সহজ কৌশল, খরচ কম ফল বেশি

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ২০:৪২:২৬
শীতে ঘর গরম রাখার সহজ কৌশল, খরচ কম ফল বেশি
ছবি: সংগৃহীত

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বহু পরিবারের জন্য ঘরের ভেতর আরামদায়ক তাপমাত্রা ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর-জানুয়ারির শৈত্যপ্রবাহে ঘর দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায়, ফলে ঘুমের মান কমে, ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা বাড়ে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মেও বিঘ্ন ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরের তাপ সংরক্ষণে কিছু সাধারণ পরিবর্তন বড় ধরনের পার্থক্য তৈরি করতে পারে।

জানালা-দরজার ফাঁক: ঘরের উষ্ণতার সবচেয়ে বড় শত্রু

বাড়ির মোট তাপের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায় জানালা ও দরজার ফাঁক দিয়ে। অনেক সময় ফাঁকটি খালি চোখে দেখা না গেলেও সেখানে মাইক্রো–এয়ার লিকেজ চলতেই থাকে, যার ফলে বাইরের ঠান্ডা বাতাস ঢুকে ঘরের উষ্ণতা দ্রুত কমিয়ে দেয়।ফোম গ্যাসকেট, রাবার সিল, ওয়েদারস্ট্রিপ বা কাপড় গুঁজে এই লিকেজ সহজেই বন্ধ করা যায়। গবেষণায় দেখা যায়, জানালার ফাঁক বন্ধ করলে শীতকালে ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়, যা বিদ্যুৎ বা গ্যাস হিটারের প্রয়োজন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।

থার্মাল পর্দা: ঘরের তাপ ধরে রাখার সবচেয়ে শক্তিশালী ঢাল

শীত থেকে ঘরকে রক্ষায় থার্মাল পর্দার কার্যকারিতা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। একাধিক পর্দা–স্তরযুক্ত এই কাপড়গুলো ঠান্ডা বাতাসের প্রবেশ রোধ করে এবং ভেতরের উষ্ণতা বাইরে বের হতে বাধা দেয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থার্মাল পর্দা ব্যবহার করলে জানালার মাধ্যমে তাপক্ষতি প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। ফলে হিটারের ব্যবহার অর্ধেকে নেমে আসে এবং ঘরে আরামদায়ক তাপমাত্রা দীর্ঘসময় ধরে থাকে।

মেঝে থেকে উঠা ঠান্ডা আটকাতে কার্পেট অপরিহার্য

টাইলস বা মার্বেল মেঝে শীতে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায় এবং সেই ঠান্ডা উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘরে মোটা কার্পেট বা একাধিক মাদুর বিছিয়ে রাখলে মেঝের ঠান্ডা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।মেঝে উষ্ণ রাখতে কার্পেট ব্যবহারের একটি বাড়তি সুবিধা হলো এটি দেয়াল ও আসবাবের ভেতর তাপ আটকে রাখে, ফলে ঘর অনেক বেশি সময় উষ্ণ থাকে।

ফ্যানের ঘূর্ণন বদলালেই বাড়বে উষ্ণতা

সিলিং ফ্যানের একটি সাধারণ বৈজ্ঞানিক ব্যবহার বাংলাদেশে এখনও ব্যাপকভাবে পরিচিত নয়। ফ্যানকে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরালে ঘরে নিচে থাকা উষ্ণ বায়ু ওপরের দিকে উঠে না গিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, যা ঘরের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয়।এই কৌশলটি বিশেষভাবে কার্যকর সেইসব ঘরে, যেখানে উঁচু ছাদ বা বড় কক্ষ রয়েছে।

বিছানায় উষ্ণতা ধরে রাখতে একাধিক স্তরের ব্যবস্থাপনা

শীতের রাতে ঘুমানোর সময় শরীরের তাপ দ্রুত কমে যায়। এ কারণে ফ্লানেল চাদর, থার্মাল বেডশিট এবং গরম কম্বল ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর।গরম পানি ভরা হট ওয়াটার ব্যাগ বিছানার নির্দিষ্ট অংশকে দীর্ঘসময় উষ্ণ রাখে। গবেষণায় দেখা যায়, হট ওয়াটার ব্যাগে প্রস্তুত করা তাপ প্রায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং শীতকালে ঘুমের মান উন্নত করতে ভূমিকা রাখে।

প্রাকৃতিক রোদ: শীতে ঘরের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি

বাংলাদেশের শীতকালীন রোদ কোমল হলেও ঘর গরম রাখায় এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলায় রোদ উঠলে জানালার পর্দা সরিয়ে দিলে সূর্যালোক ঘরের ভেতরের দেয়াল, মেঝে ও আসবাবের ওপর পড়ে সেগুলোকে উষ্ণ করে।শীতের রাতে জানালার পর্দা বন্ধ করলে এই সংরক্ষিত তাপ বাইরে বের হতে পারে না। ফলে ঘরের ভেতর দীর্ঘসময় উষ্ণতা বজায় থাকে, যা গ্যাস বা বিদ্যুতের খরচ কমায়।

দরজা ও জানালায় অতিরিক্ত সুরক্ষা: ছোট বিনিয়োগে বড় লাভ

পুরোনো ঘরে হালকা বাতাস ঢোকা রোধে দরজার নিচে ‘ড্রাফট ব্লকার’ বা মোটা কাপড় রোল করে ব্যবহার করা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ছোট পরিবর্তন ঘরের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম।

উষ্ণতা ধরে রাখতে কোন কাজগুলো এড়িয়ে চলবেন

অনেকে শীতে ঘর বন্ধ করে লিকুইড হিটার বা কয়লার চুলা ব্যবহার করেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়া হতে পারে, যা প্রাণঘাতী। তাই ঘর গরম করার জন্য নিরাপদ বিদ্যুৎ-চালিত ডিভাইস বা প্রাকৃতিক উৎস ব্যবহার করতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন।


শীতে শিশু অসুস্থ হচ্ছে? কোন রোগ কীভাবে চিনবেন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১০:৩৯:০৪
শীতে শিশু অসুস্থ হচ্ছে? কোন রোগ কীভাবে চিনবেন
ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, শীতের শুরুতেই সাধারণ সর্দি–কাশি, অ্যালার্জি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস এবং মৌসুমি ফ্লুর মতো রোগ বেশি দেখা দেয়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল থাকায় শিশু এবং প্রবীণরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। উপসর্গগুলো একাধিক রোগের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় অভিভাবকরা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারেন না রোগটি ভাইরাসজনিত নাকি অ্যালার্জিজনিত। সঠিক ব্যবস্থাপনা না হলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন জানিয়েছেন, শীতকালীন রোগগুলোর বেশিরভাগই ভাইরাসের সংক্রমণ, আর্দ্রতা কমে যাওয়া, শীতল ও শুষ্ক বাতাস এবং পরিবেশগত অ্যালার্জেনের প্রভাবে হয়। এসব রোগের লক্ষণ আলাদা হলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে সেগুলো আলাদা করে বোঝা সবসময় সহজ হয় না।

সাধারণ ঠান্ডা: সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যা

শীতকালে শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাধারণ ঠান্ডা। এই অবস্থায় নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, হালকা জ্বর, ক্ষুধামন্দা এবং গলাব্যথা দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, নাক বন্ধ থাকলে স্যালাইন ড্রপ সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে বাল্বসাকার ব্যবহার করে নাক পরিষ্কার করতে হয়। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে। কুসুম গরম পানি, স্যুপ কিংবা মধু মিশ্রিত তরল খাবার সাময়িক উপশম দেয়।

কোল্ড অ্যালার্জি: শীতের হাওয়াই বাড়ায় সংবেদনশীলতা

অনেক শিশুই শীত পড়লেই বারবার ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। এ অবস্থাকে চিকিৎসকেরা বলেন কোল্ড অ্যালার্জি বা শীতজনিত সংবেদনশীলতা। শুষ্ক আবহাওয়া, কম আর্দ্রতা এবং তীব্র ঠান্ডা বাতাস অ্যালার্জি শুরু হওয়ার প্রধান কারণ। ফলে হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, মাস্ক ব্যবহার করলে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ কমে এবং উপসর্গও নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রয়োজনে সালবিউটামল ইনহেলার বা দীর্ঘমেয়াদে মন্টিলুকাস্ট ট্যাবলেট দেওয়া যেতে পারে।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস: মৌসুমি অ্যালার্জির বড় কারণ

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই ব্যাপকভাবে দেখা যায় এবং রোগটি শীতের পাশাপাশি বসন্ত ও গ্রীষ্মেও হতে পারে। ফুল, গাছের পরাগ, ঘাস, ছত্রাকের স্পোর বা ধুলাবালির সংস্পর্শে এ রোগের উপসর্গ বাড়ে। এতে চোখে চুলকানি, ঘন হাঁচি, নাক বন্ধ, সারা শরীরে অবসাদ এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ শিশুই পরবর্তীতে হাঁপানিতে ভোগে।

হাঁপানি: শীতে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়ে

চিকিৎসকদের ভাষায় শিশুদের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ হলো হাঁপানি বা অ্যাজমা। শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, ধুলাবালি, ধোঁয়া এবং অ্যালার্জেনের প্রভাবে রোগের উপসর্গ বেড়ে যায়। হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, ঘনঘন কাশি এবং শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো সাইসাই শব্দ এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ধুলাবালি, সিগারেটের ধোঁয়া, তেলাপোকা কিংবা ঠান্ডা হাওয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখা এ রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা রাখে।

ব্রংকিওলাইটিস: RSV ভাইরাসে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট

দুই মাস থেকে দুই বছরের শিশুদের মধ্যে ব্রংকিওলাইটিসের প্রকোপ শীতকালে বেড়ে যায়। বিশেষত তিন থেকে নয় মাস বয়সি শিশু সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস (RSV) ছাড়াও রাইনো বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে শ্বাসনালির প্রান্তিক অংশে মিউকাস জমে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি, বুকের খাঁচা ডেবে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস–প্রশ্বাস এবং দুধ খেতে না পারা এ রোগের লক্ষণ। গুরুতর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে जल्दी চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা: এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই

অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, শীতকালীন এসব রোগের বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত হওয়ায় এন্টিবায়োটিক মোটেই প্রয়োজন হয় না। বরং

• নাক–গলা পরিষ্কার রাখা

• জ্বরে প্যারাসিটামল

• নেবুলাইজার বা ব্রঙ্কোডাইলেটর প্রয়োগ

• পর্যাপ্ত তরল ও পুষ্টিকর খাদ্য

সবচেয়ে কার্যকর উপায়। শিশুদের অতিরিক্ত গরম কাপড় পরানোর পাশাপাশি বাতাস চলাচল করে এমন উষ্ণ ঘরে রাখা উচিত।

মৌসুমি ফ্লু: শীতেই বাড়ছে সংক্রমণ

ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি ভাইরাসে মৌসুমি ফ্লু হয় এবং শীতকালে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ জ্বর, শুকনো কাশি, দেহব্যথা, দুর্বলতা, গলার ব্যথা এবং সর্দি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। সাধারণত ১০–১৪ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে গর্ভবতী নারী, কম বয়সি শিশু, বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস–হৃদরোগ–ফুসফুস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জটিলতা বেশি দেখা দেয়।

ফ্লু প্রতিরোধে টিকা সবচেয়ে কার্যকর

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বছরে একবার ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়াই মৌসুমি ফ্লু প্রতিরোধের সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়। দেশেও এখন নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।


শীতে চুল পড়া কমাতে ঘরোয়া ৫টি দারুন উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১০:৩৫:৪০
শীতে চুল পড়া কমাতে ঘরোয়া ৫টি দারুন উপায়
ছবি: সংগৃহীত

শীতের শুষ্ক আবহাওয়া অনেকের চুল পড়া বাড়িয়ে তোলে। মাথার ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, খুশকি বৃদ্ধি, রক্তসঞ্চালন কমে যাওয়া ও পুষ্টির ঘাটতির কারণে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে নিয়মিত কিছু প্রাকৃতিক ট্রিটমেন্ট ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে শীতে চুল পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। নারকেল ও ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ থেকে অ্যালোভেরা জেল, আমলকী–লেবুর প্যাক, দই–বেসনের মাস্কসহ বাড়িতে তৈরি বেশ কিছু উপায় চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে এবং শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার

১. নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ

হালকা গরম নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে আলতোভাবে মালিশ করলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এতে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

২. অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ধরে রাখে। পাশাপাশি খুশকি কমিয়ে স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

৩. আমলকী ও লেবুর মাস্ক

দুই চামচ আমলকী গুঁড়া ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা পরে ধুয়ে ফেললে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং শীতজনিত চুল পড়া কমে যায়।

৪. দই–বেসন হেয়ার মাস্ক

দই, বেসন ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে বানানো মাস্ক চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল হয় আরও কোমল ও উজ্জ্বল।

৫. পেঁয়াজের রস

অনেকের মতে, পেঁয়াজের রসে থাকা সালফার স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং চুল পড়া কমাতে সহায়ক। সপ্তাহে ১–২ দিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পরিবর্তন

প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার

চুলের মূল উপাদান প্রোটিন। তাই ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম, দুধ, পালং শাক, ব্রকলি এবং বিভিন্ন ফল–সবজি নিয়মিত খাবারে রাখলে চুলের শক্তি বাড়ে।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট

আখরোট, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড এবং সামুদ্রিক মাছের ওমেগা–৩ চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়।

স্ট্রেস কমানো

ধ্যান, হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা হরমোনগত কারণে হওয়া চুল পড়া হ্রাস করে।

গরম পানি ও অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন

খুব গরম পানি চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। তাই কুসুম গরম পানি সবচেয়ে ভালো। বারবার স্ট্রেটনার বা ব্লো ড্রায়ার ব্যবহারও কমাতে হবে।

অতিরিক্ত টিপস

• ঘুমানোর আগে বা চুল ধোয়ার পূর্বে চুল আলতোভাবে আঁচড়ে জটমুক্ত করুন।

• সালফেটবিহীন হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

• অতিরিক্ত চুল পড়লে চর্মবিশেষজ্ঞ বা ট্রাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে মিনোক্সিডিল বা অন্যান্য ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।


শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ০৯:৫১:১৪
শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান
ছবি: সংগৃহীত

শীতের শুরুতেই অনেকেই মাথার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা অনুভব করেন। বাড়তি চুলকানি, আঁচড়ালেই খুশকির ঝরঝর পতন, সঙ্গে চুল পড়ার প্রবণতা সব মিলিয়ে শীতকাল হয়ে ওঠে উদ্বেগের সময়। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে লেবুপাতা উল্লেখযোগ্য উপকার এনে দিতে পারে। এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট এবং এসেনশিয়াল অয়েল মাথার ত্বকের খুশকি কমানোর পাশাপাশি চুলকে করে আরও সুস্থ ও প্রাণবন্ত।

লেবুপাত্র উপকারিতা

১. অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ

লেবুপাতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান মাথার ত্বকে জমে থাকা ফাঙ্গাস কমাতে সাহায্য করে। যেহেতু খুশকির মূল কারণ প্রায়ই ফাঙ্গাল গ্রোথ, তাই নিয়মিত ব্যবহারে এটি খুশকি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

২. অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা

লেবুপাতা তেলতেলে স্ক্যাল্পের জন্য প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে খুশকি বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।

৩. চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে

লেবুপাতে স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকে এবং চুলে ফিরে আসে স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। চুলের গোড়া থেকে অগ্রভাগ পর্যন্ত ময়লা দূর হয়, ফলে চুল হয় নরম ও মসৃণ।

৪. স্ক্যাল্পের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা

স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক পিএইচ নষ্ট হয়ে গেলে খুশকি দ্রুত বাড়তে থাকে। লেবুপাতা সেই ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, যা চুল ও স্ক্যাল্পকে রাখে স্বাস্থ্যকর।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১. লেবুপাতা রিন্স

চুলে চমক আনার পাশাপাশি খুশকি কমাতে এই রিন্স সহজ ও কার্যকর।

উপকরণ: এক মুঠো লেবুপাতা, তিন কাপ পানি

প্রণালী: পানি ফুটে উঠলে তাতে লেবুপাতা দিন। পানি অর্ধেকে নেমে আসা পর্যন্ত জ্বাল দিন। ঠান্ডা হলে শ্যাম্পুর পর এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। আবার বাড়তি পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

২. লেবুপাতা হেয়ার প্যাক

খুশকি ছাড়া চুল পড়া বা ত্বকের জ্বালাভাবেও এই প্যাক উপকারী।

উপকরণ: ৫–৬টি লেবুপাতা, ১–২ চামচ নারকেল তেল বা টক দই

প্রণালী: লেবুপাতা বেটে তেল বা দই মেশান। মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ২০–৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় লেবুপাতা চুল ও মাথার ত্বকের জন্য নিরাপদ হলেও কেউ চাইলে ব্যবহারের আগে অ্যালার্জি টেস্ট করে নিতে পারেন।


কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১০ ১৯:৪১:০৬
কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে
ছবি: সংগৃহীত

রাত ৮টার পর খাবার গ্রহণ করলে শরীরের স্বাভাবিক হজমপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং বিভিন্ন পाचन–সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই ধীর হয়ে পড়ে, ফলে খাবার দ্রুত ভাঙতে পারে না। এর ফলে এসিডিটি, গ্যাস, বুকজ্বালা, অস্বস্তি এমনকি ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের সময় শরীর যখন বিশ্রামের প্রস্তুতি নেয়, তখন অপরিপাক খাবার পাকস্থলীতে থেকে যাওয়ায় অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা GERD হওয়ার প্রবণতাও বাড়ে।

কেন ঘটে এই সমস্যা?

বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়

রাতের দিকে শরীরের মেটাবলিক রেট কমে, তাই ভারী বা তেল–চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। এতে পেটে চাপ বাড়ে এবং হজমে অস্বস্তি দেখা দেয়।

অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি বাড়ে

খাওয়ার পরপরই শুয়ে গেলে পাকস্থলীর অ্যাসিড সহজেই খাদ্যনালীতে উঠে আসে। এতে বুকজ্বালা, টক ঢেকুর এবং অ্যাসিডিটির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

পাকস্থলীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে

দেরিতে খাওয়া খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থেকে গ্যাস ও বদহজম সৃষ্টি করে। এতে পেট ফাঁপা কিংবা জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।

ওজন বৃদ্ধি ও ঘুমের ব্যাঘাত

দেহ অপরিপাক খাবারকে সহজেই চর্বিতে রূপান্তরিত করে। একইসঙ্গে অস্বস্তির কারণে গভীর ঘুম ব্যাহত হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

কী করলে উপকার মিলবে?

হালকা খাবার বেছে নিন

রাতে খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হলে ভাত, ভাজাপোড়া বা মশলাদার খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য ও হালকা খাবার খান।

ঘুমানোর আগে অন্তত ২-৩ ঘণ্টার বিরতি

খাবার ও ঘুমের মধ্যে সময় রাখলে শরীর খাবার আংশিকভাবে হলেও হজম করতে পারে, ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, রাতের খাবারের সময় এগিয়ে আনা এবং খাবারের ধরনের প্রতি সচেতন হওয়া হজমপ্রক্রিয়া সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

আজকের টাকার রেট জানুন এক নজরে

আজকের টাকার রেট জানুন এক নজরে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ রেফারেন্স অনুযায়ী শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার হালনাগাদ বিনিময় হার... বিস্তারিত

৪.৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা এমডির

৪.৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা এমডির

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (SALVO)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কোম্পানির শেয়ার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক... বিস্তারিত